বোকা ছেলে। পর্ব -০৯



হঠাৎ করেই এ্যাম্বুলেন্সের গাড়ি এসে দাঁড়ালো। ভোরের আলো হালকা ফুটছে।

এলাকার লোকজন বাড়িটার দিকে তাকিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে পড়লো।

হা হয়ে যেয়ে আছে৷ সবাই পুরো নিস্তব্ধ হয়ে গেলো এলাকার লোকজন।

মিডিয়ার লোকজন ক্যামেরা ওদিকে ফিরিয়ে হা হয়ে গেলো৷

থানার অফিসারের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। কিছুটা পিছনে সরে গেলো।

এলাকার লোকজন কি দেখছে এসব। নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতেই পারছে না৷

বড় অফিসার সামরিক বাহিনীর অফিসার র্যাব সবাই বাড়িটার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে।
রিক্ত রক্তাক্ত অবস্থায়। দুজন দৌড়ে যেয়ে রিক্তকে স্ট্রেচারে উঠিয়ে নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে তুললো।
এ্যাম্বুলেন্স দ্রুত গতিতে চলে গেলো।
চারপাশ টা পুলিশ র্যাবের লোকজন সামরিক বাহিনী ঘিরে ফেলছে৷
থানার অফিসার এগিয়ে যেয়ে
- স্যার স্যার আপনি এখানে কি ভাবে।
- অবাক হচ্ছো। কেনো এখানে জানতে পারবে একটু পর।
আগে মিডিয়ার সাক্ষাৎ দিয়ে নি।
পিছনে সেনা বাহিনীর সৈনিকের ঘাড়ে লাশ নিয়ে এগিয়ে আসছে।
কয়েক জনকে হাত বেঁধে নিয়ে আসছে।
র্যাবের লোকজন কিছু জিনিসপত্র নিয়ে এগিয়ে চলে এলো।
.
সবার সামনে লাশগুলো ফেললো। হাত বাধা গুলোকে বসিয়ে দিলো।
বড় অফিসার সবার উদ্দেশ্যে বললো
- আপনারা যারা এতোদিন ভূত আত্মা র ভয় পেয়ে আসছেন।
এতো মানুষ মেরে ফেলে রাখছে কিন্তু কোনো প্রমাণ মিলে নি তারা ভূত পেত না তারা হলো
এই নরপশু মানুষগুলো। বাড়িটার অপব্যবহার করতে চেয়েছে।
তারা একে একে সব কিছুতে সাফল্য পেয়ে গেছে কিন্তু তারা একটা জায়গায় ভূল গেইম খেলে ফেলছে।
যার জন্য আমরা এদের ধরতে সক্ষম হয়েছি। আর কাউকে ভয় পেয়ে চলতে হবে না।
বাড়ি টা নিয়ে আর কেউ ভয় পাবেন না।
এই বাড়ির ভেতরে যারাই ঢুকেছে তাদেরকে এরা টার্গেট করে মেরেছে।
.
মিডিয়ার একজন লোক বললো
- আপনারা কিভাবে জানতে পারলেন।
- আমরা গোপন সূত্রের মাধ্যমে ব্যাপার টা জানতে পেরেছি৷
জানা মাত্রই আমি একটা বৈঠকের ব্যবস্থা করি সেখানে সেনাবাহিনীর অফিসার ও র্যাবের
অফিসারের সাথে কথা। তাদের প্ল্যান জানাই। তারা প্ল্যানে সম্মতি দেয়।
তারপর মিশনে নেমে পড়ি। একটু কষ্ট হয়েছে তবে সবকিছু সুস্থ ভাবে করতে পেরেছি।
- স্যার এরা কেন বাড়ির ভেতরে এগুলো করতো
- এরা অন্য সংগঠনের লোক। ওদের সাথে যোগ দিয়ে এই এলাকার সবাইকে মারার প্ল্যান করছে।
এলাকাটা দখল নিতে পারলে তারা অন্য জায়গা দখল নিবে। মারা পড়বে সাধারণ মানুষজন।
বোমা মাটির তলে আগে থেকে রেখে দিছে।
আজকে এদের ধরতে না পারলে অনেক ক্ষতি হয়ে যেতো।
- স্যার কিভাবে কি করলেন যদি বলতেন।
বড় অফিসার বললো
- ওকে একটা কথা বাকী আছে৷ তা না হলে তো পালিয়ে যাবে
কথাটা বলা মাত্র ই থানার অফিসারকে ধরলো। সবাই অবাক হয়ে গেলো।
বড় অফিসার বললো
-পুলিশের ইউনিফর্ম পড়ে এর অপব্যবহার করছে। এদের হেড লিডার হলো এই ব্যক্তি।
থানার অফিসার আর পালানোর পথ পেলো না। তাকে ধরে ফেললো।
বড় অফিসার বললো তাহলে শুনুন
.
( বড় অফিসারের ফোনে ফোন আসলো। বড় অফিসার ফোনটা রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে
- স্যার আমরা যে ঘাঁটি খুজতেছিলাম পেয়ে গেছে।
- গুড। কোথায় আমাকে লোকেশন দাও।
- স্যার পরিত্যক্ত যে বাড়ি টা আছে ওটাই।
বড় অফিসার উঠে দাড়িয়ে অবাক হয়ে
- কি বলছো? তোমার মাথা ঠিক আছে। ওটা তো ভূতুরে বাড়ি।
- স্যার ওরা মানুষ মেরে ওখানে ফেলে যাতে সবাই বুঝতে পারে ভূত পেত দের কাজ।
যাতে কেউ পরিত্যক্ত বাড়িতে ঢুকতে না পারে।
- কি বলছো কি তুমি। ওখানের তো অফিসার আছে তাহলে ওখানে কিভাবে সন্ত্রাসী দের ঘাঁটি হবে।
- স্যার আপনি পোস্ট মডেম এর রিপোর্ট দেখছেন
- হ্যা। রিপোর্টে তো দেওয়া ভূতুরেরা মারছে।
- স্যার আমাদের ভেতর আসল কালপিট আছে।সে ডাক্তারকে দিয়ে ভূল রিপোর্ট করায়।
যাতে সবাই বিশ্বাস করে।
- তাহলে এক্ষনি আসছি।
- না স্যার। এখানে আসাটা রিক্সের কাজ।
বাড়ির ভেতর ঢোকার আগেই গুলি খেয়ে পড়ে থাকতে হবে৷
- তাহলে কিভাবে ওদেরকে ধরবো।
- আপনি একটা কাজ করে র্যাবের অফিসার আর সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়ে বৈঠক
করেন আমি প্ল্যান টা বলে দিবো৷
- ঠিক আছে।
.
ফোনটা কেটে দিলো। বড় অফিসার দুজনকে ডাকলো। দুজনে বসলো।
সামনে বড় একটা প্রোজেক্ট চালিয়ে দেওয়া হলো
পরিত্যক্ত একটা বাড়ি তার চার পাশে সন্ত্রাসী রা অস্ত্র হাতে পাহাড়া দিচ্ছি।
বড় স্যার ফোনটা ধরলো। বড় স্যার কে বললো
- প্রথমে আপনি আর ওনি দুজনে পিছন থেকে ঢুকবেন। আর আপনি সামনে থেকে।
যাতে সন্দেহ না করতে পারে। আর হ্যা স্যার থানার অফিসার কিন্তু ওদের ই লোক।
তাই তার কাছে কিছু সন্দেহ হতে দেওয়া যাবে না।
- কি বলছো কি তুমি। থানার অফিসার।
- হ্যা। আপনি সবার আকর্ষণ সামনের দিকে রাখবেন।
যাতে করে বুঝতে না পারে ভেতরে কি ঘটছে। শব্দ যায় হোক কৌশলে করতে হবে।
ওদের কাছে খবর গেলে আমরা কেউ মিশনে সাফল্য পাবো না।
ওরা এতোদিনে বড় ঘাঁটি করে ফেলছে।
সব প্ল্যান শেষ।
সবাই যে যার ডিপার্টমেন্টের লোকজনকে সবকিছু বুঝিয়ে তৈরি করে নিলো৷
একটু ও জেনো ফাক না যায়। সবাই প্রস্তুত হয়ে পড়লো।
.
রাত ৯ টা
বাড়িটার চারপাশ ঘিরে ফেললো ভালোভাবে। এক টিম করে আস্তে আস্তে ঢুকলো।
কৌশলে ভেতরে থাকা লোকগুলোর উপর গুলি চালালো। শব্দ ছাড়াই এক ধাপ এগিয়ে গেলো।
শুরু থেকে ভেতরের সন্ত্রাসীদের গুলি চালিয়ে মেরে ভেতরে ঢুকে গেলো।
মাঝখান পথে যেতে বিপত্তি ঘটলো। সন্ত্রাসীর লোকরা বুঝতে পেরে গুলি ছুঁড়ে।
সবাই পিছু হাটলো। নিরব হয়ে গেলো সবকিছু।
ভেতরের সন্ত্রাসীরা গুলি করা থামিয়ে একজন বললো
- যদি বাঁচতে চাস তাহলে বেরিয়ে আয় না হলে আমার তোদের কে মেরে ফেলবে।
কি ভাবে ঢুকলি তোরা। ঢুকেই যখন পড়েছিস তাহলে আর ফেরত যেতে পারবি না।
.
অফিসারদের প্ল্যান করে দেওয়া লোকটা বন্দুক উঠিয়ে গুলি ছুড়লো।
প্রসাশনের সবাই গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ভেতরে ঢুকে পড়লো।
প্রসাশনের কয়েক জন আহত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের সবাই মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে।
৬ জনকে জীবিত রেখেছে তদন্ত করার জন্য। মিশন টা ৭ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর ছিলো। )
সাংবাদিকরা তাদের সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলো। গ্রামের লোকজন সবাই অনেক খুশি।
কাউকে আর ভয় নিয়ে চলাচল করতে হবে না। রাতে আর বন্দি রাখবে না নিজেদের।
থানার অফিসার সহ সন্ত্রাসী দের গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেলো।
সাথে বোমা,বন্দুক কিছু জিনিস নিয়ে চলে গেলো।
মিডিয়ার লোকজন খবর প্রচার করতে লাগলেন
- যে বাড়িটার রহস্য কেউ উদঘাটন করতে পারে নি তা প্রসাশন করে দেখিয়েছে।
তাদের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে কিছু অমানুষের কবল থেকে এলাকার সব মানুষদের বাঁচিয়েছে।
বাড়িটার ভেতর যেই যেতো সেই মরতো।
সবার ধারণা ছিলো এগুলো ভূতের কাজ কিন্তু আসলে ভূত হচ্ছে মানুষরপি কিছু অমানুষ।
ফিরে এলো শান্তি এলাকায়। আমরা এলাকার সবাইকে জিঙ্গেস করবো।
একজন মুরব্বিকে জিঙ্গেস করলেন
- আজকের এমন একটা দিনে কেমন লাগছে।
.
- কি আর বলবো এতোটা খুশি হয়েছে এরকম মানুষের কবলের হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়ে দিলো।
না হলে বাড়িটার আসল রহস্য জানতে পারতাম না।
আগে তো বের হতেই ভয় লাগতো কিন্তু এখন থেকে মনোবল বেড়ে গেলো৷
ধন্যবাদ জানাই প্রশাসনকে। তাদের জন্য সম্ভব হয়েছে সবকিছু ।
মিডিয়ার লোক জন চলে গেলো।
এলাকার লোকজন আশপাশের লোকজন একে অপরের মত বিনিময় করতে লাগলো। সবার মুখে হাসি।
হাসপাতালের বারান্দায় রেজা, সিয়াম, প্রান্ত বসে আছে। তিন জনে খুব ভয় পেয়ে আছে।
রিক্তর কিছু হলে ওদের কে ও শাস্তি পেতে হবে।
তিনজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে জোড়ে হেঁসে দিয়ে কেঁদে দিলো.......
(Waiting for next part..........)
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url