"আমি এক অসহায় বাবা"
ছোট খাট একটা চাকরি করি।
গত মাসে ছোট মেয়ে কে
বিয়ে দিয়েছি,
প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ করে।
আজ
ইফতারি দিয়েছি জামাইয়ের বাড়িতে,
প্রায় ১৫০০০
টাকা খরচ করে।
একটু আগে মেয়ের ফোন।
মেয়ে:-বাবা কেমন আছেন?
বাবা:-হ্যা মা ভাল।তুই ভাল আছিস তো?
মেয়ে:-আছি বাবা ভাল।
বাবা:-এইভাবে বলছিস কেন??তোর শ্বশুর শাশুড়িরা খুশি হয়েছে তো?
মেয়ে:-উনারা বলেছে
ইফতারি একটু কম হয়েছে।
-(তখন আমার চোখের পানি টলটল করছিল) বাবা:-আচ্ছা মা
বলে দিস, পরের বার থেকে আরো বাড়িয়ে দিব।
মেয়ে:-বাবা শুনো। তুমি আমার শ্বশুর বাড়িতে ঈদে কাপড় দিবে না?
বাবা:-হ্যা মা দিব। কেন?
মেয়ে:-তুমি কাপড় দিওনা। ওরা বলছে
কাপড় দিলে সবার পছন্দ হবে না। কাপড় না দিয়ে
টাকা দিয়ে দিতে। ৩০,০০০ টাকা দিলে,সবার নাকি
হয়ে যাবে।
বাবা:-আচ্ছা মা। তুই চিন্তা করিস না। আমি এখন ও বেঁচে আছি।
(আমার বোঝতে দেরি হলনা,এতক্ষনে মেয়ের
চোখের অনেক জল গড়িয়ে পড়েছে)
মেয়ে:-আচ্ছা বাবা,এখন রাখি।
——-
রাতে ছোট ছেলে নামাজ থেকে আসল।
বাবা তুমি আছ?
-হা আছি।কিছু বলবি?
হ্যা,ঈদের পর ২য় সপ্তাহে
ভার্সিটির সেমিস্টার ফাইলান।
আমার টিউশনির কিছু টাকা আছে। আপনি ২০ হাজার দিলে হবে।
-আচ্ছা দেখি। খেয়ে ঘুমিয়ে পর।
না বাবা,লেট হলে এক্সাম দিতে পারব না।
ঈদের পরে আবার কোরবান,মেয়ের বাড়িতে গরু দিতে হবে।গরুর যে দাম,কমপক্ষে ৫০,০০০ টাকা তো
লাগবে। আবার নিজের জন্য ও একটা লাগবে।
এইখানে শেষ নয়,,আরো রয়েছে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে দেওয়ার বিভিন্ন মৌসমে বিভিন্ন আয়োজন।
এই সব চিন্তা করতে করতে না খেয়ে শুয়ে পড়েছি।
মাথায় একটা বিষয় কাজ করছে। টাকা!!টাকা!! আর মেয়ের সুখ।
এইভাবে রাত ১২ টা। সবাই কান্না কাটি করছে। আমার
ছোট মেয়ে আর আমার প্রিয় স্ত্রী কাঁদছে। সবার দিকে চেয়ে থাকলাম।ঠিক ২ মিনিট পর আর কিছু জানিনা।
এইভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের অনেক বাবা।হয়তো অনেকে এখন ও জানে না,তাদের বাবার
মৃত্যুর রহস্য।
আপনারা বলেন? মধ্যবিত্ত বাবার পক্ষে এত কিছু সম্ভব?
তারা তা বোঝেনা কেন?বোঝেও এইভাবে হত্যা
করছে কেন বাবাদের?
[লিখতে গিয়ে নিজে ও কান্না করে দিয়েছি।
এইভাবে প্রতিনিয়ত আমরা হারাচ্ছি আমাদের প্রিয়
বাবাদের।।
আমাদের সমাজের এই কু-প্রচলন কি পরিবর্তন
হবেনা??
হচ্ছেনা কেন??
চলুন আমরা জেগে উঠি।
ধ্বংস করি এই অপসংস্কৃতি।
এই হল অসহায় এক পিতার কাহিনি।