Breaking News

পারিবারিক বিয়ের প্রথম রাতে যা ঘটে



দেখুন ভাইয়া, আজকের রাতে শারীরিক মেলামেশা না করলে হয়না, আমার এসব ভীষণ ভয় লাগে!”
মানিব্যাগ থেকে জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতির উপকরণ বের করে টেবিলের ওপর রাখার সময় নববধূর মুখে এমন কথা শুনে হেসে ফেললো অভি, কেমন বাচ্চাদের মতো কথাবার্তা।
অভি ঘুরে দাড়িয়ে হাসিমুখে বললো,– কি বলছো এসব দৃষ্টি! আর স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে তো এসব বৈধ।
“তবুও আমি ওসব কাজ করতে পারবো না” আমতা আমতা করে দৃষ্টি বললো।
“আচ্ছা ওসব করতে হবেনা,” বলে অভি চেয়ার টেনে দৃষ্টির মুখোমুখি বসলো।
“ তাহলে ঐ যে মানিব্যাগ থেকে ঐ প্যাকেটগুলা বের করে রাখলেন, ওগুলো কেন? ওগুলো দিয়ে কি হয় ভাবি কিন্তু আমাকে বলেছে,” বলে দৃষ্টি মাথা নিচু করে রইলো।
.
অভি বললো,– তোমাকে যেমন ভাবী এটার সম্পর্কে বলেছে,
আমাকেও তেমন বন্ধুরা এটা ফাজলামো করে দিয়েছে।
লাল শাড়ীতে দৃষ্টিতে লাজুক মুখটা ভীষণ মায়াবী লাগছে,
এ যেন স্বর্গের অপ্সরী বসে আছে অভির সামনে।
দৃষ্টির বয়স বেশী হলে ষোলো কি সতেরো হবে।
অভির আম্মুর বান্ধবীর একমাত্র মেয়ে দৃষ্টি,
গতবছর দৃষ্টির মা-বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাবার
পরে অভির আব্বু আম্মু দৃষ্টিকে অভিদের এখানে নিয়ে আসে।
এবং আব্বু আম্মুর ইচ্ছে দৃষ্টিকে অভির বউ করা।
এবছর তাদের ইচ্ছেটা পূর্নতা পেলো।
দৃষ্টিকে অভিরও ভীষণ পছন্দ, যেমন দেখতে দুধে আলতা গায়ের বরণ,
তেমনি নম্র ভদ্র স্বভাবের মেয়ে ও।
অভী কিছুদিন হলো বসুন্ধরা গ্রুপে একটা সেকশনের প্রডাকশন
সুপারভাইজার হিসেবে চাকরি পেয়েছে। দেখতেও সুদর্শন এবং স্মার্ট,
তবুও দৃষ্টির কেমন যেন লাগছে,
এত কাছাকাছি কেউ আসবে ভাবতেই শরীরের লোম কাটা দিয়ে ওঠে!
ঘোমটা দিয়ে রাখায় সম্ভবত গরমে এবং ভয়ে লাজে ঘামছে দৃষ্টি, তাই দেখে অভি বললো,
– এবার তো খোলো দৃষ্টি।
অভির মুখে এই কথা শুনে দৃষ্টি ভয়ে গুটিশুটি মেরে বললো,
– আপনাকে না বললাম ওসব আমার ভয় লাগে!
অভি হা হা করে হেসে ফেলে বললো,
– আরে ভয়ে কীসব উল্টাপাল্টা ভাবছো দৃষ্টি!
আমি ঘোমটা খুলতে বলেছি, গরম লাগছে তো তোমার।
শাড়ী খুলে নরমাল ড্রেস পরো, ভালো লাগবে।
দৃষ্টি একটু দূরে সরে গিয়ে বললো,
– আমি শাড়ী খুলে ফেলি আর আপনি সেই সুযোগে আমাকে ধরবেন, তাই তো? আমি সব বুঝি!
.
: হা হা হা, তুমি আমার সামনে বদলাতে যাবে কেন।
: সামনে তো আপনি বসে আছেন, বদলালে তো আপনার সামনেই বদলাতে হবে!
: কীসব বলছেন! লজ্জা করেনা আপনার?
: স্বামী স্ত্রীর মাঝে আবার লজ্জা কিসের দৃষ্টি? আচ্ছা তোমার লজ্জা পেতে হবেনা, আমি কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যাচ্ছি।
.
কথা শেষে অভি উঠে রুমের বাইরে চলে গেল, দৃষ্টি শাড়ী বদলে স্বাভাবিক কাপড় পরলো।
এদিকে অভি রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে দেখে দাদি এগিয়ে এসে অভির গাল টেনে দিয়ে বললো,– বাসর ঘরে বিউটি রেখে বাইরে ডিউটি করার মানে কী হতচ্ছাড়া? এই রাতে এক মুহূর্তও নষ্ট করতে নেই।
অভি মুচকি হেসে বললো,– দাদা বেঁচে থাকলে আজকে নতুন করে তোমার আর দাদার বাসর দিতাম বুড়ী।
দাদি ভেংচি কেটে বললো,– আমাদের সফটওয়্যার এখন হ্যাং হয়ে গেছে রে বলদ, তোদের তরতাজা সফটওয়্যার কাজে লাগা।
.
কথা শেষে ধাক্কা দিয়ে অভিকে রুমে ঢুকিয়ে দিয়ে দাদি হাসতে হাসতে চলে গেল।
অভি এসে খাটে বসতেই টেবিলের ওপর রাখা দুধের গ্লাসটা এনে অভির হাতে দিয়ে দৃষ্টি বললো,– দাদী বললো আপনাকে এই দুধ দিতে, আচ্ছা আপনি কি ছোট বাবু যে আপনার এখনও দুধ খেতে হয়।
দুধের গ্লাস হাতে অভি হেসে ফেলে বললো,– ছোট্ট বাবু হলে তো দুধ ফিডারে ভরে খেতাম, এটা একটা রীতি, বাসর ঘরে স্ত্রী স্বামিকে দুধ খাওয়ানো।
.
দৃষ্টি বিরক্তির ভাব নিয়ে বললো,– ইশ! কেমন পচা রীতি, এতে কি হয়?
অভি হাসিমুখে বললো,– বাসর রাতে স্বামীকেই শুধু দুধ খেতে দেওয়া হয় যে তা নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজের বিয়ের বর্ণনা থেকে জেনেছি যে, বিয়ের দিন শাশুড়ি দুধের পেয়ালা সামনে দিলেন এরপর তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কতটুকু পান করে উম্মুল মু’মিনীন রা. (স্ত্রী) এর দিকে এগিয়ে দিয়ে তাঁকে একটু পান করালেন এরপর বাকিটুকু আবার নিজে পান করে নিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বামী স্ত্রীর অভ্যন্তরিন ভালোবাসা কিভাবে শুরু করলেন দেখলে তো?
তাছাড়া দুধ সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকরী, এবং সুস্বাস্থ্যের সাথে জড়িয়ে থাকে দীর্ঘায়ু, জীবনের সমৃদ্ধি, এসব।
তাই, বাসর রাতে স্বামীকে দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে, একটি সুখী, সমৃদ্ধিশালী, দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনেরই কামনা করা হয়,
এবং, বাসর রাতে, এই শুভ কামনার প্রতীকী হয়ে উঠে, দুধ।
দৃষ্টি মাথা নেড়ে বললো,– এবার বুঝলাম।
অভি মুচকি হেসে বললো,– আরও কারণ থাকতে পারে, কিন্তু বলা যাবেনা।
: কেন বলা জাবেনা?
: লজ্জাবতী বউ তো তুমি, তাই!
: তাতে কি?
.
: শুনে কিনা আবার লজ্জাবতীর মতো লাজে কুঁকড়ে গিয়ে খাটের তলায় ঢুকে বসে থাকো, তাই।
: তাইলে থাক, বলতে হবেনা আপনার।
শোবার কথা ভেবে অভি উঠে গিয়ে রুমের লাইট অফ করতেই দৃষ্টি চেচিয়ে উঠে বললো,– এই লাইট বন্ধ করলেন কেন! আমি কিন্তু চেচামেচি করে সবাইকে ডাকবো বলে দিচ্ছি।
অভির অবুঝ মন বলে উঠলো,– এমন বিয়ে করার চেয়ে চিরকুমার থাকা অনেক ভালো।
লাইট অন করে খাটের ওপর এসে শুয়ে পড়লো অভি, দৃষ্টিও গুটিসুটি মেরে অভির থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে শুয়ে আছে চুপচাপ।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com