Breaking News

কাছে থেকেও সে অচেনা । পর্বঃ ৪০

তাছাড়া প্রিন্স কেবিনের ভিতরে যতক্ষণ ছিল একবারও মেহেকের দিকে তাকিয়ে দেখেনি।
মেহেক মনে মনে বলছে, মানুষটা এমন নীরব হয়ে গেছে কেন?
এটা নীরবতা নাকি বড় কোনো ঝড়ের পূর্বাভাস?
আচ্ছা ঝড়ের কবলে পড়ে আমার সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে না তো?
নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে না তো?
সময় মানুষকে অনেক বদলে দেয় মেহেক এতদিন তা শুনে এসেছে ।
আজকে প্রিন্সের এই পরিবর্তন যেনো ওকে সেটাও দেখিয়ে দিয়েছে ।
এই প্রিন্স কি সেই যে মেহেকের একটু সান্নিধ্যে পেতে পাগলের মতো আশেপাশে ঘুরঘুর করছে।
তবে মুখে তা কখনো প্রকাশ না করলেও চোখে মাঝে তা ফুটে উঠেছে সব সময়।
মেহেক তা দেখেও অদেখা করে যেতো।
ভাবতো হয়তো এগুলো সব প্রিন্সের অভিনয়।
প্রিন্স সে সময়ে মেহেককে যত কাছে টানতে চেয়েছে মেহেক ইচ্ছে করে প্রিন্সের থেকে দূরে সরে থাকতো।
কিন্তু আজকে প্রিন্সের একটু হাত ধরতে বড্ড ইচ্ছে করছে।
ইচ্ছে করছে মানুষটার কষ্টগুলো উপলব্ধি করতে।
ইচ্ছে করছে মানুষটি ওর কাছে এসে একবার বৌ বলে ওকে বুকে জড়িয়ে নেক।
আদৌও কী ওর চাওয়া পূর্ণ হবে?
দেখে তো তা মনে হচ্ছে না।
প্রিন্স তো ওর ধারের কাছেও আসছে না।
বরং এখন হয়তো মেহেকের ছায়াও তাকে কষ্ট দেয়।
নাহলে এতক্ষণে একবারও ওর দিকে তাকায়নি কেন?
মেহেক বুঝতে পারছে না সে এখন সন্তান হারানোর শোক করবে নাকি স্বামীর বদলে যাওয়া নিয়ে চিন্তা করবে।
মেহেক এতদিনে একটা বিষয় লক্ষ্য করছে , প্রিন্স তার সাথে যতটা কঠিন মুনের সাথে তার থেকে বেশি নমনীয়।
তাই সুস্থ হয়ে মুনকে দিয়েয় প্রিন্সের সাথে ওর আলাপের ব্যবস্থা করতে হবে।
দরকার হলে প্রিন্সের পায়ে ধরে ক্ষমা চায়তে হবে।
কারণ সে নিজের অজান্তে স্বামী নামক মানুষটিকে সবচেয়ে বড় কষ্ট দিয়ে ফেলেছে।
একজন বাবার কাছে থেকে তার সন্তানকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে সারাজীবনের জন্য।
আচ্ছা প্রিন্সকে শুধু কষ্ট দিয়েছে নিজেকে দেয়নি?
এর উত্তর আদৌও আছে!
মেহেক প্রিন্সকে এতটাই কষ্ট দিয়েছে যে এখন প্রিন্সের সাথে কথা বলতেও ওর সাহস হচ্ছে না‌।
অবশ্য এসব তার ভুলের জন্য হয়েছে।
তবে মেহেক যদি আগে জানতে পারতো প্রিন্স ওর মামাতো ভাই হয়।
আর প্রিন্স ও তার মতো ছোট বয়সে মা ও বাবাকে হারিয়েছে।
এই পর্যন্ত আসতে তাকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে।
তাহলে এমন ভুল মেহেক কখনো করতো না।
মেহেক এখন মনে মনে বিশ্বাস করে প্রিন্স এতদিন যাদের খুন করেছে তারা হয়তো মানুষ রূপি কোনো জানোয়ার ছিল ।
যাদের এই সমাজে থেকে নির্মূল করা দরকার ছিল।
ইস্ সে কি বোঁকা!
ওর সরলতার সুযোগ নিয়ে রাশেদ হাসানের মতো জানোয়ার এতবড় ক্ষতি করতে পেরেছে।
একমাত্র ওর বোকামির জন্য নিজের সন্তানকে হারিয়েছি।
আজ যদি আমাদের সন্তান বেঁচে থাকতো তাহলে তো প্রিন্সের মনের মাঝে শুধুই আমার রাজত্ব থাকতো।
সে তো দেখেছে লোকটা বাচ্চা আসার খবরে কতটা প্রফুল্ল ছিলো তা তো নিজের চোখেয় দেখেছে।
নিজের বোকামির কারণে সন্তানকে তো হারিয়েছে সেই সাথে স্বামীর ভালোবাসা।
মেহেক যতদিন বেঁচে থাকবে নিজেকে নিজের সন্তানের খুনি ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারবে না।
ওর জীবনের সব রঙ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে রাশেদ হাসানকে বিশ্বাস করে।
ঐ লোকটাকে মানুষ বললে ভুল হবে সে তো মানুষ রূপি একটা জানোয়ার।
ওর কারণে মেহেক এবং মুন এতিম হয়ে গেছি।
ওকে খুন করতে পারলে হয়তো মেহেক শান্তি পেতো।
মেহেক যখন প্রিন্সের ভাবনায় ডুবে ছিল সে সময়ে মুন বললো আপু তোমার ব্যথা করছে বা খারাপ লাগছে?
এই আপু কথা বলছো না কেন?
মুনের ডাক শুনে সকল ভাবনা গুলোকে ছুটি দিয়ে মুনের দিকে তাকিয়ে মেহেক বলে,না আমি ঠিক আছি , তবে
একটা বিষয় মনে থেকে সরাতে পারছি না।
তা ভেবে কষ্ট হচ্ছে ছুটকি।
মুন বোনের কথা শুনে বলে,কি বিষয় তোমাকে কষ্ট দিচ্ছে আপু?
আমি কি ভাইয়াকে ডেকে আনবো তুমি তাকে কথাটা বলবে?
মুনের কথা শুনে মেহেক বলে,তোর ভাইয়াকে ডাকতে হবে না।
জানিস বোন সিকান্দার মির্জার আসল নাম রাশেদ হাসান।
ঐ লোকটা আমাদের বাবা না।
মেহেকের কথা শুনে মুন বলে,এটা নতুন কিছু না।
যে লোক মেয়েদেরকে টাকার কাছে বিক্রি করে সে আর যায় হোক বাবা হতে পারে না।
তাছাড়া তুমি একবার ভেবে দেখছো আপু, কোন পিতা সন্তানকে ভালো না বেসে থাকতে পারে?
সন্তানের কষ্ট যে পিতার হৃদয় স্পর্শ করে না সে আবার পিতা হয় কি করে?
তাইতো সেদিন আমি তোমার সাথে যায়নি।
তোমাকেও ঐ লোকটির সাথে যেতে আমি আর ভাইয়া নিষেধ করেছি কিন্তু তুমি ঐ লোকের মিষ্টি কথায় এতটাই ভুলে গেছো যে আমাদের কথার মূল্য দাওনি।
মেহেক মুনের কথা শুনে বলে,বোনরে সেদিন তোদের কথা না শুনে এখন তার শাস্তি পাচ্ছি ।
আর আমার বোকামির শাস্তি আমার নিষ্পাপ বাচ্চাটা পেয়েছে।
পৃথিবীতে আসার আগে আল্লাহর মেহমান হয়ে গেছে।
মুন বোনের কথা শুনে বলল,কি!
আমাদের পুঁচকো আর নেয়?
আপু তুমি এসব কি বলছো?
তুমি কেন গেলে ঐ লোকের সাথে।
না গেলে তো পুঁচকো আজ আমাদের মাঝে থাকতো।
মুনের কথা শুনে মেহেক ঠুকরে কেঁদে উঠলো।
তা দেখে মুনের মনে পড়ে গেল এখানে আসার আগে প্রিন্স ওকে সাবধান করেছে।
মেহেকের জ্ঞান ফিরলে এমন কিছু না বলে যাতে সে কষ্ট পায়।
কারণ এই মুহূর্তে মেহেকের মানসিক অবস্থা খুবই নাজুক ।
এঞ্জেল এখন তুই আর এতো ছোট নেয়
যে ভালো মন্দ বুঝতে পারবি না,
আমি মনে করি মেহেকের থেকে তোর বোঝার ক্ষমতা ভালো।
বোঝার ক্ষমতা যদি ভালোয় না হতো তো তুই সিকান্দার মির্জার সাথে যেতে রাজি থাকতি মেহেকের মতো।
ঐ লোকের কথার জালে যেহেতু তোকে আটকাতে পারেনি তার মানে তোর বুদ্ধি তোর বোনের থেকে যথেষ্ট ভালো।
সেজন্য তোর প্রতি আমার আসা বেশি এঞ্জেল।
আমি মনে করি,এই মুহূর্তে তোর দায়িত্ব হচ্ছে বোনকে সাপোর্ট দেওয়া।
যাতে তোর বোন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।
প্রিন্সের বলা কথাগুলো মনে পড়ায় মুন দ্রুতো বোনকে জড়িয়ে ধরে বললো, আপু তুমি কেঁদো না।
সব ঠিক হয়ে যাবে ।
তুমি দেখো সিকান্দার মির্জা ঠিক শাস্তি পাবে।
আর সে শাস্তি ভাইয়া নিজের হাতে দিবে।
মেহেক বোনের কথা শুনে বললো, ছুটকি জানিস সিকান্দার মির্জা কিন্তু আমাদের জন্মদাতা পিতার নাম।
ঐ লোকটা আমার বাবাকে খুন করে শুধু তার নামটায় নেয়নি।
আমাদের কাছে থেকে আমাদের মা’কে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
বাবার মতো মাকেও খুন করেছে।
জানিস আমাকে হেসে হেসে অনায়াসে কথাগুলো যখন বলছিলো সে সময়ে আমার হৃদয়ের গহীনে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিলো।
ভুল মানুষকে এতদিন বাবা ভেবে আসার জন্য।
লোকটার কথা শুনে আমি সে সময়ে এতটায় অসহায় হয়ে পড়ে ছিলাম যে ওকে কিছুয় করতে পারিনি।
একবার ভেবে দেখ, আমারা এতো বছর সেই খুনিটার সাথে নিশ্চিন্তে ছিলাম ।
জানিস ছুটকি শেষের কিছু দিন লোকটা বাবা না হয়েও আমার সাথে বাবার অভিনয় করেছে।
আমাকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিল সে সব কথা ভাবলে ।
আমার গা ঘৃণ ঘৃণ করছে।
মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
মুন অবাক হয়ে বলে, ঐ লোকটা আমাদের বাবা মাকে খুন করেছে?
আপু এ তুমি কি বলছো?
মেহেক মুনের দিকে তাকিয়ে বললো, আমি সত্যি বলছিরে ছুটকি।
মেহেক এতক্ষণ ভালোভাবে কথা বলছিল কিন্তু হঠাৎ করে মেহেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়।
এমনিতেয় জ্ঞান ফিরেছে বেশি সময় হয়নি কিন্তু অনবরত এতক্ষণ কথা বলায় ব্রেনে চাপ পরেছে।
তাই নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
মুন তা দেখে চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে নার্সকে ডাকে।
এদিকে প্রিন্স ডাঃ এর সাথে কথা শেষ করে মেহেকের কেবিনে দিকে আসছিল সে সময়ে মুনের ডাক শুনে প্রিন্স দৌড়ে কেবিনে ঢুকে এমন অবস্থা দেখে ডাক্তারকে ডেকে আনেন।
ডাক্তার এসে মেহেকের অবস্থা দেখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে দিলেন।
যাতে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট না হয়।
মুন বোনের এমন অবস্থা দেখে ভয় পাচ্ছে তা দেখে প্রিন্স মুনকে কেবিনের বাহিরে নিয়ে এসে বলেন, এঞ্জেল আমি থাকতে ভয় পাচ্ছিস কেন ?
আমার জীবন থাকতে তোদের কিছু হতে দিবো না।
তোরা আমার কাছে ফুফুর আমানত।
তোদের দুজনের দায়িত্ব আমার ।
সে দায়িত্ব পালনে তো অবহেলা অবজ্ঞা করতে পারি না।
প্রিন্স মুনকে সান্ত্বনা দিচ্ছে আর জিজ্ঞেস করছে যে,মেহেক তো কিছুক্ষণ আগে ঠিক ছিল তাহলে হঠাৎ করে মেহেকের শরীর খারাপ হলো কিভাবে?
প্রিন্স জিজ্ঞেস করতে যতটা সময় নিয়েছে মুন তার উত্তর দিতে একটু দেরি করেনি।
মুন প্রিন্সকে মেহেকের বলা সব কথা বলেছে এটাও বলেছে যে সিকান্দার মির্জা ওরুফে রাশেদ হাসান নিজের মুখে মেহেকের সামনে স্বীকার করছে সে ওদের বাবা না।
এমনকি ওর মা বাবাকেও নাকি এই লোক খুন করেছে।
কথাটা শুনে প্রিন্স হাতের মুঠো শক্ত করে আছেন।
মুন প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বললো, ভাইয়া যে লোকটার জন্য আমরা এতিম হয়েছি তাকে তুমি শাস্তি দিবে না?
আমাদের পুঁচকোকে আমাদের কাছে আসার আগেয় শেষ করার শাস্তি কি ঐ জানোয়ার পাবে না?
প্রিন্স মুনের কথা শুনে বললেন,এ বিষয়ে পড়ে কথা বলবো।
অযথা এসব ফালতু বিষয়ে কথা বলতে ভালো লাগছে না । প্রিন্সের কথা শুনে মুন কিছুটা কষ্ট পেয়েছে।
ভাইয়া ওদের বাবা ও মায়ের খুন হওয়াকে ফালতু বিষয় কি করে বলছেন?
প্রিন্স মুনের মন খারাপ দেখেও কিছুই বলেনি।
এরমধ্যে সোনালী এসে বললো,বস আমি এসে পড়েছি।
কি করতে হবে বলুন।
প্রিন্স ডাক্তারের সাথে কথা বলার আগে সোনালীকে এখানে আসার জন্য ফোন করেছিলেন।
বসের ফোন পেয়ে সোনালী আর এক মুহুর্ত দেরি করেনি।
সাথে সাথে হসপিটালে রওনা দেওয়ার কারণে এতো জলদি এসে পড়েছে।
প্রিন্স সোনালীকে দেখে সুস্থির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, সোনালী মুনের বড় বোন মেহেক এই কেবিনে আছে।
আজকে রাতে তোমাকে ওর খেয়াল রাখতে হবে ।
আমার একটু কাজ আছে সেজন্য হসপিটালে থাকতে পারছি না।
আমি জানি, তুমি তোমার জীবন থাকতে মেহেকের ক্ষতি হতে দিবে না।
দরকার পড়লে ওকে বাঁচাতে নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করবে না।
তোমার প্রতি আমার সে বিশ্বাস আছে বলে মেহেকের এখানে অন্য কাউকে না রেখে তোমাকে রেখে যাচ্ছি‌
সোনালী প্রিন্সের কথা শুনে বললো,জী বস ।
আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
অন্যদিকে মুন প্রিন্সের কথা শুনে বললো, ভাইয়া কিছুক্ষণ আগে না বললে আমাকে সোনালী আপুর সাথে বাড়িতে পাঠাবে?
এখন আবার আপুর কাছেও থাকতে বলছো ব্যাপার কি!
কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
মুনের কথা শুনে প্রিন্স বলেন , তোকে বাড়িতে আমি নিয়ে যাবো।
তোকে ওখানে রেখে আমাকে একটু কাজে যেতে হবে।
আর তুই মেহেক সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সেলিম মিয়া ও সুরমা আন্টির কাছে থাকবে।
ওদের বয়স হয়েছে সে কথা মাথায় রেখে একদম তাদের বিরক্ত করবে না।
প্রিন্স মুনকে কখনো তুই আবার কখনো তুমি করে বলেন।
মুনও প্রিন্সের এই তুই তুমিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
কিন্তু মুনের এই মুহূর্তে প্রিন্সের কথা শুনতে ভালো লাগছে না।
প্রিন্স ওকে বোনের কাছে থাকতে দিচ্ছে না।
আবার আগের বাড়িতে যাওয়ার কথা না বলে , সেলিম আঙ্কেল ও সুরমা আন্টির কাছে রেখে আসতে চাচ্ছে।
আবার সেখানে সোনালী আপুও থাকবে না এসব কারণে ওর এখন কিছু ভালো লাগছে না।
প্রিন্স মুনের ফেস দেখে বললো, বাচ্চা তোর মন খারাপ দেখলে আমার কষ্ট হয় তো একটু বোঝার চেষ্টা কর।
তোকে বেশি অপেক্ষা করতে হবে না।
তোর বোন একটু সুস্থ হলেয় বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।
তখন সব সময় বোনের কাছে থাকতে পারবি ‌
প্রিন্সের কথা শুনে মুন বললো,প্রমিজ?
হ্যাঁ বাবা প্রমিজ ।আর কালকে সকালের মধ্যে তোর সামনে সোনালী হাজির হবে ।
এবার খুশিতো?
প্রিন্সের কথা শুনে মুন হ্যাঁ বলে।
এদিকে প্রিন্সের মনের মধ্যে যে ঝড় উঠেছে তা মুন দেখতেও পারলো না।
প্রিন্স মনে মনে বললেন, রাশেদ হাসান তৈরি হ্ আমি আসছি ,,,,
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com