আমার নাম সুলতান রাহুল সুজন।
আমার নাম সুলতান রাহুল সুজন।
আমি বাংলাদেশের ফেনী জেলার সন্তান
আজ আমি একটি মেয়ের কথা দিয়ে আমি আমার কথা শুরু করতে চাই। মেয়েটা হলো আমার ক্লাসমেট ।মেয়েটি এই গ্রুপে এড আছে তাই নামটা বলতে পারতেছিনা বলে Sorry.
সময়টা ছিল ক্লাস 10 পড়ার সময়।তখন সবে মাত্র ক্লাস 10 এর এর ছোঁয়া লেগেছে। তো আমি কোচিং করতাম শুরুর দিক থেকেই।ছেলে মেয়ে একসংগেই ক্লাস হত।কোচিং এর একজন স্যার ছিল যার কথাগুলা আমাকে খুব অনুপ্রেরণা দিত।স্যার এর ক্লাস করার জন্যই আমার প্রতিদিন কোচিং এ যাওয়া ছিল।নইলে খুব একটা ক্লাস করতে ইচ্ছা করত না ভীষন ফাঁকিবাজ ছিলাম।
একদিন ক্লাসে আমার মেয়ে বন্ধুটি একটু পর পর ওয়াশরুমে যাচ্ছে। তো আমার সেই পছন্দের স্যার ই ক্লাস নিচ্ছিলেন। স্যার হটাৎকরে মেয়েটিকে বলে উঠলেন রক্তের আর সময় নাই।আর নিজের ডেট নিজে মনে রাখতে পার না? নাকি এইটাও বয়ফ্রেন্ড এর দায়িত্ব। কথা শুনে ক্লাসেরঅধিকাংশ ছেলে মেয়ে হেসে উঠল আর আমার মেয়ে বন্ধু কে নিয়ে শুরু করল গবেষণা। স্যার ও তাদের সংগে সেই বিকৃত খেলায় মেতে উঠল।স্যার বলল দেখত বেঞ্চ এ কিছু লেগে আছে কিনা। মেয়েটি মাথা নত করেই দাঁড়িয়ে ছিল।আমার তখন অসহ্য লাগছিল ক্লাসটা মনে হচ্ছিল জাহান্নমের মাঝে বসে আছি।আমি মেয়েটাকে ইশারা দিয়ে বের হতে বললাম আর আরেকটা মেয়েকে বললাম ওর সংগে যেতে। নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছিল যে মানুষটাকে আমি এত শ্রদ্ধা করি তিনি কিভাবে এইরকম করেন আর এত নিচ মনের একজন মানুষ হতে পারেন।
আমি হঠাৎ দাঁড়িয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যাব পিছন থেকে এক ফ্রেন্ড বলল দোস্ত তর ও কি রক্ত বের হয় নাকিরে নাকি ও তোর গার্লফ্রেণ্ড। মেজাজ একদম খারাপ হয়ে গেল। অই স্যার নামক মানুষটার সামনেই আমি অকে একটা গালি দিলাম স্যার আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আমাকে ডাকছেন আমি না শুনার ভান ধরে বের হয়ে আসলাম ক্লাস থেকে।আমার মেয়ে বন্ধুটি তখন দাঁড়িয়ে কান্না করতেছিল আমাকে বলল এইসময় আমার অনেক কষ্ট হয় ব্যাথা হয়।মেয়েটি হোষ্টেল এ থেকে পড়াশুনা করত।তো আমি ফার্মাসি থেকে একটি প্যাড এনে দিলাম সে লজ্জায় নিচ্ছিল না।আমি বললাম আমার জন্মও একজন মায়ের গর্ভেই আমার ও বোন আছে তাই কিছু মনে করোনা । যে পিরিয়ড নিয়ে সবাই এমন হাসাহাসি করে অই বাজে নোংরা রক্তটার জন্যই আমাদের জন্ম। এইটা মজারকিছু না।
সেই স্যার কে আমি আর কখনও সম্মান করি নাই।তবে সেদিন আমার স্যার এর থেকেও বেশী রাগ লেগেছিল ক্লাস এর কিছু মেয়ের ওপর ওরাও হাসাহাসি করছিল। সব সময় পিরিয়ড নিয়ে শুধু বলা হয় ছেলেরা মজা করে বাজে মন্তব্য করে কিন্তু সেদিন দেখলাম শুধু ছেলেরা নয় মেয়েরাও একজন আরেক জনকে হেনস্তা করে। হ্যাঁ আমিও অনেক খারাপ কাজ করি আমিও ভালো ছেলে না কিন্তু যে প্রক্রিয়াধীন এর মাধ্যমে আমার জন্ম আমার মা আমাকে জন্ম দেওয়ার জন্য এতদিন কষ্ট করেছে সেইটাকে তো আমি অসম্মান করতে পারি না।তাহলে নিজের জন্মকে অসম্মান করা হবে। আজকে কথাগুলা বলার কারণ আমি কাল ফার্মাসিতে মায়ের জন্য ঔষধ আনতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে একটি মেয়েকে দেখলাম প্যাড কিনেনিয়ে যাচ্ছে আর কিছু পাড়ার বড় ভাইরা মন্তব্য করছে হাসাহাসি করছে। যার জন্য ভাবলাম এই বিষয়টি নিয়ে কিছু লেখা দরকার। তাই সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলি এইটা লজ্জার কিছু না।এই জিনিস না হলে আমার আপনার মত কুলাঙ্গার এর জন্ম হত না।আর জন্ম না হলে আমরা এইটা নিয়ে এত মজা করতাম কিভাবে? আমরা না পুরুষ।
মেয়েদের এই কষ্টটা একবার বুঝতে চেষ্টা করোন।আর পারলে তাদের সম্মান করোন।এটা আমার গল্প না,এটা বাস্তবতা।হঠাৎ কথা গুলা মনের মাঝে ঘেথে গেলো তাই শেয়ার করলাম এটা ভেবে।হয়তো কিছুটা শিক্ষা গ্রহন করতে পারবে।আসলে এই কথাগুলি আমি না বলে পারলাম না কারন আমার ও মা বোন আছে।এটাই শুধু আমার মনে ঘুরচিলো যে আমি আজ এ কথা গুলো বললে হয়তো কিছু মানুষ রুপের জানোয়ার রা হয়তো কিছুটা হয়তো বুঝতে পারবে.যে তারা অন্যের বোনদের নিয়ে বাজে কথা বলে তারা একবার ওকি নিজের মা বোনের কথা মনে করেনা ।যে তাদের মা বোনরা ও এই সময় পার করছে বা করতেছে। আমি হয় তো সাধারণ একজন ছেলে ।আমার কথা কেউ হয়তো শুনবেনা।তার পর ও বললাম। আমার এই কথা গুলো হয় তো অনেকে খারাপ চোখে নেবেন" হয় তো বলবেন আমি মেয়েদের পক্ষে কথা বলছি ।আসলে তা না আমি ছেলে বা আমি মেয়েদের পক্ষের কথা নয় আমি একজন বোনের ভাই আর একজন মায়ের সন্তান হিসেবে এই কথা গুলো বলছি। বেশি কিছু বললে আমাকে মাপ করে দেবেন।সবাই ভালো থাকুন আল্লাহ হাফিজ।
ভালো লাগলে শেয়ার করবেন।আর খারাপ লাগলে I'm sorry...