আদরীনি বউ|শেষ পর্ব
অফিসে আসলাম মনটা বাসায় পরে আছে….কেনো জানিনা অফিসে ও ভালো লাগতেছে না ……বউকে মনে হয় বড্ড বেশি ভালোবেসে পেলেছি…….ইসসসস…..বসে বসে শুধু রিমিকে নিয়েই চিন্তা করতেছি…… অবশেষে অফিসে শেষ করে বাসায় ফিরলাম…….বাসায় এসেই রুমে আসলাম দেখি আমার পাগলিটা মন খারাপ করে খাটের উপর বসে আছে….. আমি রুমে ডুকতেই….
রিমি:অফিস কেমন কাটলো…..?
আমি:অফিসে তো গেলাম কিন্ত মনটা তো আমার বউয়ের কাছে পড়ে ছিলো…..
রিমি একটা মৃদ্যু হাসি দিয়ে বললো ফ্রেস হয়ে নিন আমি আপনার জন্য চা করে আনতেছি…….
আমি ফ্রেস হয়ে রুমে বসে আছি একটু পর আমার পাগলিটা চা নিয়ে আসলো……
আমি:তোমার মন খারাপ কেনো….? কি হইছে?..
রিমি:না তেমন কিছু না…..
আমি:বাবা মায়ের জন্য মন খারাপ করতেছে…..
রিমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উওর দিলো…..
আমি বুঝতে পেরেছিলাম বাবা মা কে ছাড়া একটা মেয়ে একটা অপরিচিত পরিবেশে থাকলে মন খারাপ হবেই …..তাই ভাবলাম রিমি কি নিয়ে একটু ঘুরে আসি….এতে ওর মনটা ভালো হবে…..তাই আমি বললাম….
আমি:রিমি আমরা একটু বাহিরে ঘুরতে যাবো চলো…..!
রিমি:না আমি যাবো না আমার ভালো লাগতেছে না……
আমি:চলো না please….
আমার রিকুয়েস্ট রাখতে অবশেষে পাগলিটা রেড়ি হয়েছে….. একটা বেনারশী শাড়ী….চোখে একটু কাজল…..হালকা মেকাপ……আর খোলা চুল…..সাথে কিছু রেশমী ছুড়ি পাগলির দিক থেকে যেনো নজরই সরাতে পারতেছি না………
রিমি:অই অই এমন করে কি দেখতেছেন……
আমি:তোমাকে দেখি……
রিমি:এহহহহ দেখতে হবে না নজর লাগবে…..
আমি:কিইইইই আমি দেখলে নজর লাগবে……
পাগলিটাকে কাছে টেনে……উমমমমমমমমমম্মাহ……
রিমি:অই অই এটা কি হলো দিলেন তো সব শেষ করে…..এখন আবার সব ঠিক করতে হবে…..
পাগলিটা সাজুগুজু করে না এজন বসেছে আবার সাজতে আহারে ঢং……
রিমি:ঐ মনে মনে কি বলতেছেন……আমি সব শুনতেছি…..
এ বা বা সেরেছে এই মেয়ে তো মনে হয় মনোবিজ্ঞানী…….
যাক অবশেষে ওর সাজুগুজু শেষ হলো……মাকে বলে আমরা রিমির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম……
রিমি:আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি……. আমি:বলবো না সাপ্রাইজ…..
রিমি:হুহ বলা লাগবে না দেখা যাবে কেমন সাপ্রাইজ……
কিছু সময় পর রিমির বাসার সামনে আসলাম রিমি তো অভাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে এতক্ষনে ও নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে ওর সাপ্রাইজটা … কিছু বললো না একটা মুচকি হাসি দিলো…….আহ
কি হাসি এই হাসিই যে আমার মন কাড়ে এই মেয়েটা বুঝতে পারে না…..কথায় আছে না মশার কামড় আর মেয়েদের হাসি দুইটার ছেলেদের রাতের ঘুম গুম করে দেয়….যাক গেইট থেকে বাসার ভেতরে আসলাম…
…….কলিং বেল বাজাতেই আমার শালী এসে দরজা খুললো….. শালী আমাদের দেখে একটা হাসি দিলো….
আহ কি মেয়েরে বাবা একজনের হাসিতে পাগল হয়েছি আরেক জন দুই টাকার চকচকা নোটের মতো এমন একটা হাসি দিলো একেবারে কাহিল করে ফেললো……..
ভেতরে ডুকে শাশুড়ি মাকে সালাম করলাম…
.আর আমার পাগলিটা তো মা আর বোনকে নিয়ে মহা খুশি……… আমি ও রুমে এসে একটু রেস্ট নিলাম….
কিছুক্ষন পর আমার শালীকা আমার রুমে আসলো…..
ওর সাথে গল্প করতেছি আর অনেক দুষ্টুমি করতেছি…….এমন সময় রিমি রুমে আসলো………
রিমি আসার পর ….
শালীকা:আচ্ছা ভাইয়া আমি এখন আসি তোমরা কথা বলো……
আমি: তুমি ও থাকো না একটু……..
শালীকা:না আমি থাকলে তো আপুর জ্বলবে……হি হি হি হি হি
রিমি:গেলি তুই……
আমি :হি হি হি হি হি তোমার থেকে একটু বেশি দুষ্টু তোমার বোনটা…..
রিমি:শয়তান একটা…..আর হুম আমাকে এতোটা দেওয়ার জন্য আপনাকে এওো গুলা Thanks…..
আমি:ঐ তুমি করে বলবা ……
রিমি:না পারবো না ……..
আমি:কিইইই পারবা না ………
রিমি:এইই কাছে আসবা না বললাম…..
আমি:কেনো আসবো না হুম……
রিমি:তুমি তুমি তুমিইইইইইই
যাক এইযাএায় বেঁচে গেলে……
রিমি:হি হি হি হি আপনি একটা পাগল……
আমি:আবার ও…….
রিমি:সরি সরি তুমি…….
আমি: হুম এবার ঠিক আছে………
পরদিন সকালে রিমিকে নিয়ে বাসায় আসলাম ….. পাগলিটা এখন খুব খুশি…..বাসায় এসে একটু রেস্ট নিলাম…….
এভাবে আমাদের দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসায় কেটে যায় দিন বেড়ে যায় ভালোবাসা …..প্রায় দুইবছর কেটে গেলো..
অফিসে বসে পাগলিটার কথা ভাবতেছি এমন সময় আমার ফোনটা বেজে উঠলো…স্কিনে তাকিয়ে দেখি পাগলিটা ফোন করেছে……….কল রিসিভ করতেই……
রিমি:কি ব্যাপার জনাব দুপুরে খাওয়া হইছে……?
আমি:হুম মাএ খেয়েছি তুমি খাইছো……
রিমি:তুমি খেয়েছি কিনা তা না জেনে কিভাবে খাই বলো……
আমি:আচ্ছা তারাতারি খেয়ে নাও….
রিমি:এই শুনো না একটু তারাতারি বাসায় আসো না please …..
আমি:হুম আসবো জান…….
ফোনটা কেটে দিয়ে নিজেই মুচকি হাসলাম……. আমার পাগলিটা হয়তো ভেবেছে কাজের চাপে হয়তো আমি সব ভুলে গেছি…..কিভাবে ভুলবো …..চাইলে ও যে ভুলা সম্ভব না ….. আজকের এই দিনে যে ও আমার জীবনে আলোর প্রদীপ নিয়ে এসেছে……আজ আমাদের ২য় বিবাহ বার্ষিকী…..অফিস থেকে ছুটি নিয়ে তারাতারি তাই বাসার উদ্দৈশ্যে রওনা হলাম……আসার পথে দোকান থেকে ওর জন্য কিছু ফুল আর কিছু চকলেট…..এবং একজোড়া নুপুর নিয়ে আসলাম…….এটাই হবে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী তে ওর জন্য উপহার……
বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতেই পাগলিটা এসে দরজা খুললো …….. আমি সব কিছু আগে থেকেই বাসার ছাঁদে লুকিয়ে রাখলাম…….. পাগলিটা একটু মন খারাপ করে বসে আছে……….
হঠাৎ রিমি বলে উঠলো…….
রিমি:আচ্ছা আজকে কি তোমার মনে আছে ……
আমি:কি না তো…..
রিমি:আজকে একটা বিশেষ দিন তোমর মনে নেই….
আমি:উহু আমি তো জানি না ………
রিমি………রাগি মাখা মুখটা নিয়ে বসে আছে……..
একটু পর সন্ধ্যা গনিয়ে এলো…..
আমি:এই রিমি চলো না একটু বাসার ছাঁদে যাবো……
রিমি:না আমি যাবো না…..(অভিমানী সুরে)
আমি জোর করে রিমিকে কোলে নিলাম আর বাসার ছাঁদে নিয়ে আসলাম……. পাগলিটা অভিমান করে
ছাঁদের এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে…….
আমি পেছন থেকে বললাম রিমি………. পাগলিটা আমার দিকে ঘুরে তাকালো……….
আমি:I Love you রিমি ….চিৎকার কবে বললাম আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি রিমি………I Love you….
আমার পাগলিটা তো মজা খুশি …..দৌঁড়ে এসে আমার বুকে ঢলে পরলো………
রিমি কান্না জড়িত কন্ঠে…. আমি ভেবে ছিলাম তুমি ভুলে গেছো…. তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো…..সত্যি আমি খুব ভাগ্যবান তোমাকে পেয়েছি…….I Love you too.…. খুব ভালোবাসি তোমাকে……
আমি পাগলিটাকে বুকে থেকে সরিয়ে নুপুর গুলো ওর সামনে ধরলাম ……
আমি:এই নাও তোমার জন্য ….
রিমি:এজন্য তোমার উপর রাগ হয়…….পরিয়ে দিবা না …..
আমি:হুম….দেবো……
অতঃপর পাগলিটা কে নুপুরটা পরিয়ে দিলাম……
রিমি:এই শুনো…..
আমি: হুম বলো…….
রিমি:আমার কাছে আসো……….
আমি রিমির কাছে যেতেই রিমি আমার কানে কানে
রিমি: আমি না মা হতে যাচ্ছি আর তুমি বাবা তাই আজকে তোমাকে অফিস থেকে তারাতারি আসতে বললাম …
আমি কিছু না বলে রিমিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম
খুব খুশি লাগতেছে এমন একটা পাগলি কে আমার জীবনে পেয়ে……….
.
.
দোয়া করবেন আমাদের জন্য আমাদের ভালোবাসার বন্ধনটা যেনো সারাজীবন অটুট থাকে……..
উৎসর্গ…. সিমরান সাফরিন……
……………সমাপ্ত………….