Breaking News

বান্ধুবী যখন বউ

দুনিয়াতে বেঁচে থাকতে যদি নরকের স্বাদ উপভোগ করতে চান তাহলে নিশ্চই বান্ধুবীকে বিয়ে করার মতো ভুল করবেন.
ইন্টারমিডিয়টে রিমন আর বাধন একসাথে ভর্তি হয়.
সেই থেকে তাদের পরিচয় আস্তে আস্তে তাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বে পরিণত হলো.
আর সেই বন্ধুত্ব থেকে কখন যে ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেল তা দুজনের কেউ ঠের পাই নি.
একে অপরকে মনের কথাটা না বলে বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় রিমন.
আর বাদন ফ্যামিলিও কোন প্রকার অজুহাত না দেখিয়ে সোজা বিয়েতে সম্মতি দিয়ে দিলো.
মেহেদী রাত পার হয়ে গেল.
আজ রিমন আর বাধন বাসর রাত.
গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করলে হয়ত তেমন একটা আনইজি ফিল হতো না.
কারন যার সাথে রিলেশন তাকে যদি পাওয়া যায় সামাজিক বৈধতার মাধ্যমে তাহলে তো আর খুশির সীমা থাকেনা.
সোজা বাসর রাতে ডুকা মাত্রই বিড়াল মারা.
আর যদি এরেন্জ মেরেজ হয় তাহলে ও তেমন একটা দুঃচিন্তা নেই.
সোজা বাসর ঘরে ডুকে একটু-আধটু কুশল বিনিময় করে বিড়াল মারা.
কিন্তু বান্ধুবীর বেলায় পুরোটাই ভিন্ন.
যে মেয়েটির সাথে পাঁচ বছর চলাফেরা করছিলেন,,একসাথে রেস্টুরেন্টে খায়ছিলেন,,এক অপরের চুল ছিড়াছিড়ি দিছিলেন,,একে অপরকে থাপ্পর মেরে পালিয়ে গেছিলেন,,যার সাথে অধিকাংশ সময় কুত্তী,,কালুনি,,বাল এধরনের আচার-ব্যবহার করছিলেন সে যদি হয় বউ তাহলে তো ধরা খাবেনই.
বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে রিমন আর বাধন আর কোনদিন ফোনে কথা বলে নাই.
তাছাড়া ফেইসবুক,, হুয়াটসপ সহ অনলাইনে সব মাধ্যম গুলো তে বল্ক মেরে একে অপরের প্রতি ইমপ্রেসটা আরো বেশি বাড়িয়ে দিলো.
কোন রকম মেহেদী রাত টা পার করেই দিনের বেলা প্রচুর ঘুম দিয়ে রাতে বাসর ঘরে ডুকলো রিমন
অপরদিকে বাধন বউয়ের সাজে সজ্জিত হয়ে আগে থেকে বাসর ঘরে ডুকে বসে আছে.
রিমন মুখে রুমাল দিয়ে রাতের বেলায় চোখে কালো সানগ্লাস দিয়ে বাসর ঘরে ডুকে পড়লো.
রুমের দরজাটা বন্ধ করে যে খাটে উঠবে সেই মুহুর্তে রাতের বেলায় রিমনের চোখে সানগ্লাস দেখে একগাল হাসি দিয়ে লাজ-শরমের বারোটা বাজিয়ে দিলো বাধন.
বাসর ঘরে সাধারণত স্ত্রী তার স্বামীকে সালাম করে কিন্তু রিমনের সাথে এমনকিছুই ঘটেনি.
ওল্টো বাসররাতে রিমনকে রাতকানা বলে এক্কেবারে মুরগি বানিয়ে দিলো বাধন
রিমন কোন রকম চোখ নিচু করে সোফায় বসে পড়লো.
মনে মনে ভাবতে লাগলো বিয়েটা করছিলাম একে অপরকে ভাল মতো বুঝবে,,বিয়ের আগে যেমন শেয়ার প্রথার মাধ্যমে সেক্রিফাইজ চলতো এখনো সেরকম কিছু ঘটবে.
কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই ঘটলো না.
সোফাতে বসে বসে ভোর হওয়া প্রহর ঘুনতেছে রিমন
অপরদিকে এখনো হাসি থামাইতেছেনা বাধন
বাধন বাসর রাতে বিড়াল মারতে এসে নিজেই যে এইভাবে ভেজা ভেড়াল হয়ে যাবে তা কল্পনাও করতে পারে নাই.
টেবিলের উপর রেখে যাওয়া দুধের গ্লাসটি কোন রকম শেষ করলো রিমন.
তার বউ বাধন তাকে কোন রকম সালাম,,সম্মান কিছুই করতেছেনা.
বেচারা রিমনের মন খারাপ হয়ে গেল ভীষন.
মাঝে মাঝে বাসর রাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার ডিসিশন নিলেও পরে সকালে মুখ দেখাতে পারবেনা এই ভয়ে সোফায় বসে থাকলো রিমন.
একে অপরের সাথে কোন কথা বা কুশল বিনিময় এখনো হয়নি.
হওয়ারই বা কি আছে একে অপরকে তো পাঁচ বছর যাবৎ ভালোভাবে চিনে আর জানে.
নতুন করে জানার তেমন কিছুই তো নেই.
যাই হোক রাত ২ টা পার হয়ে গেল অথচ রিমন এখনো খাটে পা রাখতে পারে নাই.
কোন মুখে কি বলবে আর কি করবে তা দুইজনেই ভেবে উঠতে পারতেছেনা.
রিমনের চেহারাতে যে হতাশার ভাব নেমে আসছিলো তা বুঝতে দেরি হয়নি বাধন.
বাধন এবার হাসি থামিয়ে দিয়ে রিমনের দিকে থাকালো.
রিমন তো আরো লজ্জায় লাল হয়ে গেল.
রিমন যে নিজ ইচ্ছায় খাটে উঠবেনা তা বুঝতে দেরি হয়নি বাধন.
বাধ্য হয়ে বাধন নিজেই খাট থেকে নেমে রিমনের হাত ধরলো.
বড় বড় লাল চোখে রিমনের চোখে চোখ রেখে যখন বলল চলো ঘুমায় তখন রিমনের গলায় পানি আসলো.
কোন রকম হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো রিমন
খাঠের উপর বসে রিমন তার মুখের ভাষার হালখাতা শুরু করলো.
——– আপনার ঘোমটা টা সরাবেন প্লিজ…??? [ রিমন]
——— কেন ঘোমটা সরিয়ে তুই কি করতে চাস….??? [বাধন]
———- তেমন কিছু না.
আপনার চেহারাটা একটু দেখতাম.
——- বিগত পাঁচ বছর আমার চেহারা দেখস নি….???
আজ আবার নতুন করে দেখার কি আছে……???
—— আচ্ছা থাক.
তাহলে দেখার দরকার নেই কথাটা বলতে বলতে ভয়ে পুরোপুরি ঘেমে গেলো রিমন
—— আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমটা তুই সরায় দাও.[ বাধন)
—– না থাক সরাতে হবে না.
—— ঐ তুরে না বলছি ঘোমটা খুলতে.
এখন ঘোমটা খুলবি নাকি তুর জামা খুলব একটা বল.
—- না না থাক.
আমি ঘুমটা সরায়তেছি.
এই বলেই ঘুমটা সরিয়ে দিলো রিমন
—- দেখা হয়ছে…..????[ বাধন]
—হুম হয়ছে.
আপনাকে আজকে অনেক সুন্দরী লাগতেছে.[ লাজুক চেহারায় মিষ্টি কন্ঠে বললো রিমন]
—- তার মানে কি বুঝাতে চাস আমাকে এতোদিন বিশ্রী লাগতো..??
—- আরে না না.
তা কেন হবে.
আজকে একটু বেশি ভালো লাগতেছে এটাই আর কি.
——ওওও.
বিগত পাঁচ বছর যাবৎ বকবক করছস সব শুনছি.
আজকে রাতটাও কি এইভাবে বকবক করতে করতে পার করে দিবি..????
—- না না তা কেন হবে.
—– তাহলে কি কি করতে চাস….???[বাধন]
—— এহম এহম.
অনেক সহ্য করচি বাধন তুর ভাব.
আর করুম না.
বিয়ে করছি বলে কি পাপ করছি নাকি সেই রাত ১২ টা থেকে এখন ৩টা অব্দি আমায় পঁচানি দিতাছস.
আজকে তুরে শেষ.
এই বলে রুমের লাইটটা বন্ধ করে বাধন গাল চেপে ধরে বাধনকে জড়িয়ে ধরে পুরো খাট কাঁপিয়ে এক বালিশের উপর জাম্প মারলো দুইজনই.
এরপর রিমন আর বাধন কি কি করছে তা আমি জানতে পারি নাই.
রুমের লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় সিসি ক্যামরা আর কাজ করতেছেনা…??
অতঃপর রিমন আর বাধন বাসর রাতে বিড়াল মারতে পারছে কিনা তা নিয়ে আমি এখনো কনফিউস.
কারন সকাল তাদের রুমে মরা বিড়ালটাকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু কোনভাবেই জীবিত কিংবা মৃত বিড়ালটি পাওয়া যায় নি………!!!

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com