বস যখন বর | Part-7 | Writer : Eti Chowdhury

ইতি- দোড়ে পালিয়ে এলাম। ওনার বলা প্রত্যেকটা কথা কানে বাজছে। 😭 চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।😭😭 ওনার সব কিছু মেনে নিতে পারছি কিন্তু এই রূপটা যে মানতে পারছি না।
রোদ- চুপ চাপ দারিয়ে কিছুক্ষণ দেখলাম। পাগলীটা কান্না করছে। করবেই তো এসব কথা কি কেউ কাউকে বলে নাকি। উফ....এতো কান্না করছে কেনো। আমি কি মরে গেছি নাকি😠😠
ইতি- মনে হলো পিছনে কেউ দাড়িয়ে আছে Sir নয়ত তো। পিছনে ঘুড়লাম কিন্তু কাউকে পেলাম না।
রোদ- আরেকটু হলেই দেখে ফেলতো। ভাগ্যিস খেয়াল করে ফেলেছিলাম। চলে এলাম কেবিনে।
ইতি- মুখে পানি দিয়ে কেবিনে চলে এলাম। চেয়ারের বসতে বসতেই ওনার দিকে চোখ পরল। ওনাকে দেখে মনেই হয় না একটু আগে এই মানুষটা.... না আর ভাবতে পারছি না ওসব।
রাফসান- তাহলে রিমি ঠিকি বলেছে।
ইতি- আচমকা রাফসানের আওয়াজ পেয়ে ভয় পেয়ে গেলাম। কেহ ও তুমি বলেই রাফসানের থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম।
রাফসান- ইতির কাছাকাছি গেলাম। আমার দিকে তাকাও তো।
ইতি- মাথা নিচু করে জিঙ্গেস করলাম কেনো???
রাফসান- তাকাও বলছি। ইতি Plz...
ইতি- মাথা উচু করে তাকালাম।
রাফসান- এসব কি😮😮??? এইটুকু সময়ের মধ্যে কি হয়ে গেলো যে তোমার চোখ মুখের এই অবস্থা।
ইতি- কিছু হয় নি।
রাফসান- বলবা না???
ইতি- বললাম তো কিছু না।
রাফসান- ওকে ফাইন আমাকে না বলা পর্যন্ত তোমার সাথে কথা বলছি না Bye😠
রোদ- বসে বসে সিসি ক্যামেরায় ইতির রুমের ফুটেজ টাই দেখছিলাম। ইতিকে ফোন দিলাম। আমার কেবিনে আসো।
ইতি- আসবো???
রোদ- এই ফালটা চেক করো তো।
ইতি- জি। ফাইল নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম।
রোদ- এখানে বসেই দেখো।
ইতি- উফফ.....যত ওনার থেকে দূরে থাকতে চাইছি পারছি না।
রোদ- অনেক কান্না করেছে চোখ, মুখ লাল হয়ে গেছে। খায়ও তো নি আজ। সব আমার জন্য। ইচ্ছে করে কাজ টা করেছি খুব দেখতে মন চাইছিলো ওকে। মন চাইছে একটু ছুয়ে দেই।
ইতি- যলদি কাজটা শেষ করে বেরিয়ে এলাম। ভালো লাগছে না। অফিস থেকে বের হতে পারলে ভালো লাগতো কিন্তু বাসায় ও তো ওনিই থাকবেন। উফফ... আর পারছি না।
অফিস টাইম শেষ।
রাফসান- চলো
ইতি- কোথায়???
রাফসান- ঘুরতে যাবো আমরা আজ।
ইতি- আমি যাবো না Plz.
রাফসান- তোমার কোন কথা শুনছি না। তুমি যাবে।
ইতি- আমার একহাত রাফসান ধরলো আরেক হাত রিমি ধরে টেনে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। ভালোই হলো বাসায় গেলে ওনাকে Face করতে কষ্ট হতো। এর চাইতে বাইরেই থাকি।
রাফসান- চলো আজ আমরা আমার পছন্দের জায়গায় ফসকা খেতে যাবো।
রিমি- এজন্যই Sir আপনি আমার আর মেম এর এতো পছন্দের।
রাফসান- কেমন???
রিমি- এই যে আপনি ফুসকা পছন্দ করেন। অন্য ছেলেরা তো ফুসকার নাম ও পছন্দ করে না।
ইতি- রাফসান বুঝে যায় কোন কারণে আমার মনটা অনেক খারাপ। ওদের কথা শুনে হাসতে হাসতে আমি ভুলেই গেলাম আমার মন খারাপের কথা। এদিকে যে রাত হয়ে যাচ্ছে সে দিকে আমাদের খেয়ালি নেই।
রোদ- উফফ.....৯টা বাজে প্রায় মেয়েটা গেলো কোই। আসার নাম গন্ধ নাই। কি করি ওকে Got it।
ইতি- প্রায় ১০টা বাজে। ফোনটা বেজে উঠলো। হাতে নিতেই দেখি ওনার ফোন। রিসিভ করলাম না।
রিমি- মেম ফোন বাজছে??
রাফসান- কি হলো??? কোন সমস্যা??? কেউ ডিস্টার্ব করছে???
ইতি- আরে না না তুমি এতো সিরিয়াস হয়ে যাও কেন। কিছু হয় নি। ওনি এ পর্যন্ত ৫টা ফোন দিয়েছে। ৬বারের মতো ফোন বাজছে। এবার রিসিভ করেই ফেললাম।
রোদ- বাইরে অপেক্ষা করছি অনেক রাত হয়ে গেছে। বলেই ফোন রেখে দিলাম।
ইতি- ফোন রেখে দিলেন। আমাকে কিছু বলার সুযোগ ও দিলেন না। অনেক রাত হয়ে গেছে এখন উঠি।
রাফসান- চলো তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি।
ইতি- না না আমি যেতে পারবো
তুমি বরংচ রিমিকে দিয়ে আসো একা কিভাবে যাবে। বলেই বেরিয়ে গেলাম আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না। তাছাড়া ওনি বাইরে অপেক্ষা করছে ওদের সাথে গেলে যদি দেখে ফেলে পরে হাজার প্রশ্ন করবে। চুপচাপ গাড়িতে বসে পরলাম ওনার দিকে তাকালম ও না।
বাসায় চলে এলাম। ফ্রেস হয়ে বাথরুম থেকে বের হতেই আহ.... বলে চিৎকার দিলাম। ওনি আচমকা আমার হাত ঘুড়িয়ে পিছনে মুড়ে ধরলেন আমাকে দেয়ালের সাথে আটকে ধরলেন। গালের সাথে দেয়ালে ব্যথা লাগছে। না চাইতেও নিঃশব্দে কেঁদে দিলাম।
রোদ- খুব হাসি আসছিলো তাই না। অন্যদের সাথে গা ঘেষা ঘেষি করতে খুব ভালো লাগে তাই না। এখন কেমন লাগছে।
ইতি- আমি চুপচাপ কাঁদছিলাম
কিছুই বলিনি।
রোদ- কোন দিন আমার বউ হবার চেষ্টা করবা না একদম না। বলেই ওকে ছেড়ে দিলাম।
ইতি- আমি ওখানেই বসে পরলাম। উঠে বাথরুমে চলে গেলাম সাওয়ার ছেড়ে সাওয়ারের নিচে বসে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলাম। অনেক কাঁদলাম অনেক। কিন্তু আমি কেনো কাঁদছি। ওনার কথায় কাজে কেনো এতো কষ্ট পাচ্ছি আমি। কাঁদতে কাঁদতে সাওয়ারের নিচেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।
রোদ- এ নিয়ে তিনবার ঘরে গেলাম। মেয়েটা এখন বের হয় নি। আবার মনে হয় কান্না করছে। আচ্ছা মেয়েটা এতো কাঁদে কেনো??? ওকি বুঝে না ও কাঁদলে আমার কষ্ট হয় তখন মন চায় ওকে বুকে টেনে নেই। কেনো বুঝে না মেয়েটা। সকালে আর একটু কান্না করলে হয়ত তখনি ওকে বুকে টেনে নিতাম। আমি তো ওর জন্যই করছি এসব। যেনো পরে ওর কষ্ট না হয়। না আর পারছি না। সাওয়ারের শব্দ পাচ্ছি এতো ভিজলে তো ঠান্ডা লেগে যাবে। Knock করলাম কিন্তু কোন শব্দ নেই। কয়েকবার Knock করলাম এখন ভয় করছে আমার। দরজা ভেঙ্গে ফেললাম। ইতুউউউউউউউ। ও সাওয়ারের নিচে পরে আছে ভিজে অবস্থা খারাপ। কোলে তুলে বাইরে নিয়ে এলাম। ইসস.... এই কাপড় পরে থাকলে যে আরো বিপদ হবে এখন নি করি। না কিছু করার নেই কোন উপায় না পেয়ে চোখ বন্ধ করে ওকে তুলে বসালাম। আমার হাত কাঁপছে। হাত আটকে যাচ্চে। কাপা কাপা হাতে ধীরে ধীরে ওর জামার চেনটা টেনে খুললাম। ধীরে ধীরে ওর শরীর থেকে ভিজা কাপড় গুলো খুলে অন্য কাপড় পরিয়ে দিলাম। চোখ খুলতে ভয় করছে ঠিক ভাবে আছে তো। তাকিয়ে দেখি ওর ঠোঁকগুলো একদম সাদা হয়ে গেছে ওনেক কাঁপছে ও ভয়ে পেয়ে গেলাম। ডাক্তারকে ফোন দিলাম। তিনটা কম্বল দিয়ে ওকে ডাকলাম তাও ওর কাঁপানি কমছে না।
অল্প সময়ের মধ্যে ডাক্তার চলে এলো-
DOC- এ অবস্থা কিভাবে হলো???
রোদ- জ্ঞান হারিয়ে সাওয়ারের নিচে পরে ছিলো।
Doc- কি বলো। এতো একদম সাদা হয়ে গেছে।
রোদ- ইনজেকশন দেওয়া হলো ওকে।
Doc- রোদ আমি তো ডাক্তার অনেক সময় রোগীর ভালোর জন্য আমাদের সরম-লজ্জা ভুলে অনেক কথাই বলতে হয়।
রোদ- Any thing serious????
Doc- ও একদম ঠান্ডায় সাদা হয়ে গেছে। She need hit warm। ওকে এখন তিনটা না পাঁচটা কম্বল দিলেও ওর শরীর গরম হবে না।
রোদ- তাহলে উপায় হাসপাতালে নিবো??
Doc- হালকা একটা হাসি দিয়ে। না না তার প্রয়োজন নেই। ওর যেহুত তুমি আছো ওর হাসপাতালে যাওয়া লাগবে না।
রোদ- আমি??
Doc- হ্যা তুমি। সরাসরি বলছি তোমার শরীরের গরমটাই ওর দরকার এখন। আজ না হয় বউকে একটু বেশি আদর করো। আমি আসি। আশা করি আর details বলা লাগবে না। কি আদর দিবে তা তুমি ভাবো করেই বুঝ।
রোদ- আমি পাশে ওর মাথা হাত দিয়ে বসে পরলাম। ডাক্তার এটা কি বলে গেলেন। যেখানে আমরা একসাথেই থাকবো না এখন কিভাবে আমি ওকে কাছে টেনে নিবো। হঠ্যাৎ করেই রুমের লাইটটা Off হয়ে গেলো বাইরে প্রবল বেগে ঝড় শুরু হয়ে গেলো তাই কারেন্ট চলে গেছে। সাথে যে আমার ভিতরেও এক বিশাল ঝড় শুরু হয়ে গেছে। খুব বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। প্রকৃতিও মনে হয় চায় যা হচ্ছে তা হোক। উঠে শার্টটা খুলে গিয়ে ওর পাশে শুয়ে পরলাম। ও আমাকে পেয়ে যেনো আমার কাছে ঘেষে এলো। আমি ওকে ধরতে নিয়েও ধরছি না। ওর নিঃস্বাস এসে আমার বুকে লাগছে। আমি যেনো পাগল হয়ে যাচ্ছি। আচমকাই ওকে বুকে জড়িয়ে নিলাম।

চলবে.......
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url