Breaking News

গল্পঃ - পিচ্চি বউ 2 | লেখকঃ - নিরব ইসলাম | পার্টঃ - 3

সকাল বেলা কি থাপ্পর খাওয়ার সাধ জাগছে?
মারবা কেন নানীই ত কাল রাতে বলে গেল ওনার আর আমার কথা কেউ কিছু জিগ্গেস করলে কথা না বলতে,
তিথি তুই এমন কেন? তর কি বুদ্ধি শুদ্ধি কিছু হবেনা কখনও?
কেন মা আমি আবার কি করলাম? আর আমার বুদ্ধি না্ই কে বলল? বুদ্ধি না থাকলে কি আমি ক্লাশে সব সময় ১ম হতাম? আর বৃত্তিও ত পাইছি এইটে, তুমিই ত তখন বলছিলে আমার ব্রেইন অনেক ভাল বলনাই?(তিথি)
হুম বুঝতে পারছি ভুল আমারই, তকে যদি সবার সাথে মিশতে দিতাম তাহলে আর আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না, চোখে চোখে রাখলেও দুষ না রাখলেও দুষ, এখন থেকে তর স্কুলে যাওয়া বন্ধ, পড়ালেখাও বাদ, তুই এখন শুধু পাড়ায় পাড়ায় গল্প করে বেরাবি আর দুনিয়া সম্পর্কে জানবি,
ইয়াহুওওওও, আমি আর স্কুলে যাবনা, বলেই নাচতে শুরু করছে, দৌড়িয়ে এসে আমায় বলতেছে ভাইয়া ভাইয়া ধ্যাৎ ওগো ওগো শুনছেন আমার আর স্কুলে যেতে হবে না, আমি এখন সারাদিন ঘুরাঘুরি করমু, আর খেলমু।আমার যে কি খুশি লাগতেছে বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরল,
এদিকে ওর চিৎকার শুনে বাবা মা দৌড়িয়ে আসছে, এসে দেখে তিথি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে, এটা দেখে বাবা মা আর রুমে ঢুকলনা, হাসতে হাসতে চলে গেল,ফুফুও তাদের সাথে গেল,
এবার আমি আর সহ্য করতে পারলাম না, ঠাটিয়ে কানের নিচে একটা দিয়ে দিলাম, হঠাৎই তার মুখটা মলিন হয়ে গেল, সে বিছানার এক কোনে বসে পরল, আর গাল ধরে নিরবে কাদতে লাগল, আশ্চর্যের বিষয় কোন শব্দ করতেছেনা, আর বাবার কাছেও কোন নালিশ দিতেছেনা, তার পরেও আমার রাগ কমলোনা, ওঠে ফ্রেস হয়ে বাবা মা কে বলে জোড় করে চলে আসলাম আমার কর্মক্ষেত্র চট্রগ্রামে, আসার সময় দাদীকে বলে আসলাম যে তোমার নাতীন কে পারলে কিছু শিখাইও না হলে আমার দ্বারা ওকে নিয়ে চলা সম্ভব না,
পৌছিতে প্রায় ১৬ ঘন্টা লাগল যানজটের কারনে, ফোনটাও বন্ধ রাত্রি তখন ৩টা, ফোনটা চার্জে বসিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম, সকাল ৮টার দিকে ফোন খোলার সাথে সাথেই বাবার ফোন,
নিলয় তুই কই?
বাবা আমি ত বাসায়, অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি,
যত দ্রুত সম্ভব তুই বাড়িতে আয়, তিথি হাসপাতালে বলেই বাবা ফোনটা রেখে দিল,
এই কথা শুনে আমার ভয় ঢুকে গেল, যেভাবে ছিলাম সেভাবেই বেরিয়ে পরলাম, চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট এ বন্ধুকে বলে টিকিট এর ব্যবস্থ্যা করলাম তারপর ১২ টার দিকে ঢাকায় পৌছিলাম আর ঢাকা থেকে প্রাইভেট কার ভাড়া করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম, পৌছিতে প্রায় ৫টা বেজে গেল, হাসপাতালে গিয়ে দেখি তিথি বেডে শুয়ে আছে আর সেলাইন চলতেছে,
বাবা কি হয়েছে?
ঠাসসসসসস! হারামজাদা তর মত একটা স্টুপিড ছেলের বাবা কি করে হলাম সেটাই আমি চিন্তা করতেছি, কি করে তুই ওকে মারতে পারলি? ও একটু চঞ্চল টাইপের সেটা জানিস, আর ওর বয়সই বা কত হইছে? মায়ের ইচ্ছাতেই বিয়েটা হল। কই একটু শিখানোর চেষ্টা করবি তা না, তুই ওকে মারলি? তুই জানস তুই না খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছিস সে জন্য ও এখনও কিছু খাইনাই, মা নাকি বলেছে স্বামিকে রেখে কখনও খেতে নেই, ওদিকে তর ফোনটাও বন্ধ, যতক্ষন জানতে না পারবে তুই খাসনাই ততখন ও কিছু খাবেনা, আর এভাবে থাকতে থাকতে রাত ৯টার দিকে অজ্ঞান হয়ে যায়, যে মেয়েটা দিনে ৬/৭ বার খেয়েও খাওয়ার জন্য চিল্লাচিল্লী করত সেই মেয়েটা পরশু রাতের পর এখন পর্যন্ত কিছুই খায়নাই, পরে সেলাইন এর মাধ্যমে খাবার দেওয়া হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কিছু খাওয়াতে পারিনাই, আর তুই ওকে?!!!!
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না, সত্যিই কাজটা অন্যায় করেছি, গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি আর আমায় দেখে তিথি মিট মিট করে হাসতেছে,
হাসতেছিস কে? সরি হাসতেছ কেন?
আপনাকে বাবা মেরে গাল কেমন লাল করে দিছে হিহিহি,
ওর নিশ্পাপ হাসি দেখে আমিও হাসলাম, পাশে গিয়ে বসতেই ওঠে আমার বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরল,
মা, ফুফু ওখান থেকে গায়েব হয়ে গেল, দাদী শুধু মিটমিট করে হাসতেছে,
কি হল তিথি এখন আবার এমন করতেছ কেন? (আমি)
নানী না বলছে আপনার বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে? আপনি ত এতখন ছিলেন না, তাই বালিশে শুয়ে থাকতে আমার একদম বাল্লাগতেছেনা। কিন্ত এখন ত আপনি আছেন তাই শুয়ে আছি,(তিথি)(দুঃখ শুখের পাখি তুমি।তোমার খাচায় এই বুক।সারা জীবন,নয়ন যেন,দেখে তোমার ঐ মুখ।)
দাদী একটু এই দিকে আস ত, (আমি)
বল,(দাদী)
তোমার পা টা একটু উপরে তুলবা?
কেন?
তুমার পা টা ধরে বলি ওকে আর কিছু শিখাইতে যাইও না, যা শিখানোর আমিই শিখামু। সময় হলে, আমার ইজ্জত নিয়ে আর সাপ লুডু খেইলও না,
আর তুই না না তুমি আমার জন্য না খেয়ে থাকবে কেন?(আমি)
স্বামীর আগে খেলে নাকি স্বামির অমঙ্গল হয় তাই,(তিথি)
ধুর পাগলি ওগুলো এমনিই বলে আর কোন দিন এমন করবেনা, আর আমিও তোর সাথে কখনও এমন করবনা, বলেই অতিরিক্ত ভালবাসায় কপালে এটা চুমু দিলাম,
সেও বলল আচ্ছা ঠিক আছে,
পরে বাবা দাদীকে ডেকে কিছু খাবার পাঠিয়ে দিল, আমি ওকে খাইয়ে দিলাম,
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম, মাঝ পথে বাবা আবার আমাকে ঝাড়ি দেওয়া শুরু করল,
তিথি বল্লো, বাবা ওনাকে কিছু বইলেন না, ওনি বলছে আর কখনও এমন করবেনা, আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিছে, কিন্ত ভাল করে মাখাইতে পারেনা, আমার কপালে একটা চুমুও দিছে।
” চলবে…………….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com