Breaking News

ঝগড়াটে জুটির বিয়ে|পর্বঃ০৩ ও শেষ

অতঃপর খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম..তারপর নিচ থেকে উপরে চলে আসলাম..
এসেই ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম..
অবশেষে তৃনার পরীক্ষার দিন আসলো..বাবা বাইক রেখে গেছে তৃনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য..
আমি রেডি হয়ে নিচে এসে গ্যারেজ থেকে বাইকটা বের করে তৃনাকে ডাক দিলাম..
তৃনা এসে বাইকে বসলো..বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তাতে আসলাম..আসতেই দেখি নেহা আমাদের এদিকে আসছে..নেহাকে দেখে তৃনা পেছন থেকে বলে উঠলো..তাই আমি ব্রেক করলাম..
:-নেহা জানু..(চিৎকার করে)
:-তৃনা জানু..আমাকে রেখেই চলে যাচ্ছিস?
:-তুই আমাকে বলেছিস?তুই আমার সাথে যাবি?
:-বলতে হবে কেনো?আমি কখনো আমার তৃনা জানুকে রেখে কোথাও গেছি?
:-উফফফ!সরি..আয় একসাথেই যাবো
:-হু চেপে বস..
অতঃপর নেহা সুন্দরীও আমার ঘাড়ে চেপে বসলো থুক্কু বাইকে চেপে বসলো..ভাবতেই কেমন লাগছে..আমি বাইকে করে দুই সুন্দরীকে নিয়ে যাচ্ছি..
দুই সুন্দরীকে বাইকের পিছনে বসিয়ে রওনা দিলাম..রাস্তায় সবাই আমদের দিকেই তাকিয়ে ছিলো..মনে হচ্ছে রোড শো করছি..
কিছুক্ষন বাদে পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌছালাম..তারপর ওর দুজনে বাইক থেকে নামলো..আর তৃনা বললো..
:-চয়ন তুই বাড়িতে যা..৩ঘন্টা পরে এসে নিয়ে যাবি আমাদের
:-আচ্ছা..ঠিক আছে..
তারপর নেহা আর তৃনা দুজনে ভিতরে চলে গেলো..আমিও বাড়িতে ফিরে আসলাম..
বাড়ি এসে খাওয়া দাওয়া করে..বই পড়ছিলাম..বই পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নাই..
ঘুম থেকে উঠে দেখি..তৃনাকে আনতে যাওয়ার সময় পেরিয়ে ১৫ মিনিট বেশি হয়ে গেছে..আমি ভাবলাম হয়ত ওরা ফিরে এসেছে..তাই শিওর হওয়ার জন্য নিচে গেলাম..কিন্তু তৃনাকে দেখলাম না।তাই দ্রুত বাইক নিয়ে রওনা দিলাম..
পৌছে দেখি তৃনা,নেহা দুজনেই দাড়িয়ে গল্প করছে..আমি ওদের কাছে যেতেই তৃনা মারতে মারতে বললো..
:-কুত্তা আসতে এত দেরি হলো কেনো?কতক্ষন থেকে দাড়িয়ে আছি..পা ব্যাথা হয়ে গেছে
:-তৃনা জানু..ওকে মারা বন্ধ করো।এইটা পাবলিক প্লেস
:-হুম..আয় বাইকে ওঠ
:-হুম..
অতঃপর আবার দুজন বাইকে উঠে বসলো..তারপর সোজা বাড়িতে এসে থামলাম..তৃনা নেমে পড়লো কিন্তু..নেহা নামলোনা
:-চয়ন জানুকে একটু বাড়িতে পৌছে দিয়ে আয়(তৃনা)
:-আচ্ছা..
অতঃপর নেহাকে নিয়ে রওনা দিলাম ওদের বাড়ির দিকে..রাস্তায় নেহার সাথে একটাঔ কথা হয়নি..
নেহাদের বাড়িতে আসার পর নেহা বাইক থেকে নেমে বললো..
:-চয়ন ভিতরে আসো..
:-না আজ থাক..অন্য একদিন যাবো
:-আচ্ছা..তাহলে তোমার নাম্বারটা দিয়ে যাও
:-আমার নাম্বার কি করবেন?
:-এমনিতেই..
:-আচ্ছা নিন ০১৭১১*******।আসি তাহলে
:-ওকে..সবধানে যেও
নেহাকে ওদের বাসার সামনে রেখে আমি বাড়িতে ফিরে এলাম..
এরপর থেকে নেহা আর তৃনাকে প্রতিটা পরীক্ষায় নিয়ে যেতাম আর নিয়ে আসতাম..নেহাকে ফোন নাম্বার দেওয়ার পর থেকে নেহা মাঝে মাঝে কল দিতো আমাকে টুকটাক কথা হতো…
দেখতে দেখতে ওদের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো..তারপর থেকে নেহা আরো বেশি ফোন দিতো..আর এদিকে বাড়িতে তৃনা জ্বালাতন করতো..
একদিন পড়ছিলাম তখন নেহা ফোন করলো..
:-কি করছো?
:-এইতো পড়ছি..তুমি?
:-তোমার সাথে কথা বলবো ভাবছিলাম..কিন্তু তুমি যেহেতু পড়ছো তাই তোমার সময় নষ্ট করবনা..একটা কথা কাল……..এখানে চলে আসবে
:-কেনো?
:-আসলেই বলবো..আর টাইমটা আমি টেক্সট করে দিবো..
:-আচ্ছা..বাই
:-মন দিয়ে পড়ো..বাই
:-হুম..
নেহার সাথে কথা শেষ করে আবার পড়াতে মন দিলাম..রাতে নেহার টেক্সট করে টাইম জানিয়ে দিলো..
পরেরদিন বাবা অফিসে যাইনি তাই বাইক বাড়িতে ছিলো..আমি বাইক নিয়ে সোজা তৃনার দেওয়া ঠিকানাতে..চলে আসলাম।দুর থেকে যতটুকু দেখা যাচ্ছিলো মনে হলো তৃনা শাড়ি পরে এসে..
কাছে গিয়ে দেখলাম সত্যিই শাড়ি পরে এসেছে..এমনিতেই সুন্দরী আবার শাড়ি পড়েছে একেবারে সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে..
:-এই পরে দেখার অনেক সময় পাবে বসো
:-ওহ..হুম
:-আসতে অসুবিধা হয়নিতো?
:-না..এখন বলো কিজন্য ডেকেছো?
:-দেখো চয়ন তুমি হয়ত ভাববে আমি মজা করছি..কিন্তু আমি সিরিয়াস।তোমার সরলতা,ভদ্রতার প্রেমে পড়ে গেছি।আমি তোমাকে ভালোবাসি..
:-(সত্যিই আমার কাছে এটাকে মজা মনে হচ্ছে..কারন ওর মতো সুন্দরী আমাকে কিভাবে ভালোবাসবে)
:-এই কিছু বলো..?
:-নেহা আমি উত্তরটা একটু ভেবে রাতে জানাই?
:-ঠিক আছে তবে হ্যা উত্তর চাই..চলো এখন ঘুরবো
:-আচ্ছা চলো..
অতঃপর নেহাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরলাম..বাড়ি ফিরতে ফিরতে বিকাল হয়ে গেলো..বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখলাম..অনেক পরিচিত আত্মীয় এসেছে..বাড়িটা হালকা সাজানো..মাত্র কয়েক ঘন্টার ভিতরে এত কিছু হয়ে গেলো..কিন্তু কেনো?সেইটা জানার জন্য উপরে উঠছিলাম..তখন পাড়ার কয়েকটা বৌদি এসে ধরলো..
:-চলো দেবরজি?
:-কোথায় যাবো?
:-স্নান করাতে হবে না?
:-আরে ধুর স্নান আমি একাই করতে পারি..
:-কিন্তু আজ যে আমরা তোমাকে স্নান করাবো?
:-কোন উপলক্ষে?
:-এমা!আজ তোমার না বিয়ে?
:-আমার বিয়ে?
:-হ্যা তোমার বিয়ে..চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে স্নান করাতে হবে
:-বৌদি ১মিনিট আমি বাবার সাথে কথা বলবো..
:-আচ্ছা যাও..
আমার বিয়ে অথচ আমি জানিনা?দ্রুত বাবার রুমের এলাম..তারপর বাবাকে জিজ্ঞাস করলাম..
:-বাবা এসব কি শুনছি?আজ নাকি আমার বিয়ে?
:-ঠিকই শুনেছো..আজ তোমার বিয়ে
:-মানে হঠাৎ করে বিয়ে কেনো?
:-আজ যখন তুমি আমার বাইক নিয়ে প্রেম করতে গেছিলে..তখন আমি বাইক নিতে গেছিলাম তোমার থেকে..কিন্তু গিয়ে দেখলাম তুমি প্রেম করছো..ছোট থেকেই তোমার আর তৃনার বিয়ে ঠিক করে রেখেছি..ভেবেছিলাম তোমার পড়া শেষ হলে বিয়েটা দিবো।কিন্তু বাধ্য হয়ে বিয়েটা আজই দিতে হচ্ছে..
:-বাবা…
:-আমি কোন কথা শুনতে চাইনা..বিয়ে হবে এটাই ফাইনাল..
.
শেষমেষ আমার আর তৃনার বিয়েটা হয়েই গেলো..আমি গিয়ে বাসর ঘরে ঢুকলাম..
:-ওই তুই নাকি নেহার সাথে প্রেম করিস?
:-নারে!আজই মাত্র প্রপোজ করলো..
:-শোন আজ থেকে নেহা টেহা বাদ..আজ থেকে তুই আমার আর আমি তোর..বুঝেছিস?
:-হুম
অতঃপর ফোনটা নিয়ে নেহাকে টেক্সট করলাম.”নেহা তোমাকে নিয়ে ভাববার আগেই তৃনা আমার গলায় ঝুলে পড়েছে..”
.

                                                             >>THE END<<

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com