Breaking News

সেই বাড়িটা | Writer: Trisha Afrin

এই তৃষা উঠ,,আচ্ছা তোর কী প্রতিদিন দুপুর একটা পর্যন্ত ঘুমেতে হয় বল তো?? উঠ বলছি……..
নাহ কী ঝামেলাই পড়লাম সেই তখন থেকে ডেকে যাচ্ছে।আম্মুর ডাকে কোনো সাড়া দিলাম না।
-এই কী রে শুনতে পাচ্ছিস না,,আচ্ছা দাড়া তোর কান ধরে ঘুম থেকে উঠাচ্ছি।(বাচ্চারা ঘুম থেকে না উঠলে “কান ধরে উঠাবো” এটা প্রতিটা মায়েরই ডাইলক)
-আম্মু,এখনো তো একটা বাজেনি গো সবে তো সাড়ে নয়টা বাজে আর একটু ঘুমায় না??
-দাড়া তোর ঘুমানো দেখাচ্ছি?? এসে ব্রেকফাস্ট করে নে বলছি।
-আম্মু দুইদিন পরেই তো কলেজ খুলবে তখন তো আর ঘুমাতে পারব না,প্রীজ আম্মু আর একটু ঘুমাইনা ??
-আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমা,তবে একটু পরেই উঠে ব্রেকফাস্ট করে নিবি।না খেয়ে,খেয়ে শরীরের কী অবস্তায় না করছিস??(যাক বাবা শেষ পর্যন্ত ঘুমাতে দিলো)
.
কিন্তু আম্মু ঘুমাতে দিলেও শুরু হয়ে গেলো ছোটো বোনের অত্যাচার।একমাএ আমরা বড় ভাই বোনেরাই জানি ছোট ভাই বোনদের ছোট ছোট নির্যাতন কতটা নির্মম হতে পারে??ও এসেই দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলল,,
-এই আপু,এই উঠ বলছি।আর ঘুমাতে হবে না।
-ওই তুই আবার কোথা থেকে আসলি রে?? যা ভাগ এখান থেকে ।
-আহারে তুই বুঝি সারাটা দিন ঘুমাবি?? উঠ বলছি আমার চুল বেধে দে।
তবুও আমি কিছুতেই ঘুম থেকে উঠবো না।ও ডাকে ডাকতে থাক।কিন্তু ওর দরজা ধাক্কানোতে কিছুতেই ঘুমাতেও পারছিনা।সবাই বলে বড়দের নাকি অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়,তাহলে আমি না হয় আরেমের ঘুমকে হারাম করেই ত্যাগ স্বীকার করলাম।সবার মুখের প্রচালিত না হলে জীবনেও আজ ঘুম থেকে উঠতাম না।শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে জড়তাকে ফেলে রেখে রাগে রাগে দরজা খুললাম।দেখলাম তোয়া(ছোটবোন) ইউনিফরম পড়ে দাড়িয়ে আছে।
-ওই তোর সকাল সকাল আমার এখানে কী রে??
-কেনো আমার হাতে চিরনি আছে দেখতে পাচ্ছিস না?? আপু চুলটা বেধে দেতো।
-তোর চুল বেধে দিতে আমার বয়েই গেলো।তুই যা তো আমি ঘুমেবো।
-আর আমিও আবার দরজা ধাক্কাবো।দে না আপু চুলটা বেধে।
-আচ্ছা বিছিনাই বস দিচ্ছি।
ফ্রেশ না হয়েই ওর চুল বেধে দিলাম।চুল বাধার পরে তোয়া আমার সামনে এসে আস্তে আস্তে বলল,আমি ঘুমাতে পারব না আর তোমার কলেজ ছুটি বলে তুমি ঘুমাবে তা তো হয় না,তৃষা আপু আমার।বলেই খিলখিল করে হাসতে হাসতে বাহিরে চলে গেলো।দেখেছো তাহলে কতো বড় চুন্নি বলে কী না আমাকে ঘুমাতে দিবেনা?? আমি ওর জন্য ঘুম পর্যন্ত বাদ দিলাম আর ও এই কথা বলল?? চুন্নিটা যদি আগে এই কথা বলত তাহলে চুল বাধার জায়গাই মাথাটাই ফাটিয়ে দিতাম।যাই হোক নিজেকে অনেক বড় দয়াবান,ত্যাগী ত্যাগী মনে হচ্ছে।আহ আজ আমিও তাহলে ত্যাগ করলাম ছোটো বোনের জন্য,কী মজা।নিজের ঘুমটাই বাদ দিয়ে দিলাম।
যাই হোক আর কিছুতেই ঘুম হবে না জানি।উঠি,উঠে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিংয়ে যাই‌ দেখি আম্মু কী করছে?? তারপর টয়লেটে গেলাম।টয়লেটে আয়নার সামনে দাড়াতেই বুকের ভেতরটা চরাৎ করে উঠল।একি আমার নিজের মুখটা এমন লাগছে কেন?? নিজের চোখটা রক্তের মতো লাল হয়ে আছে কেন?? চোখের নিচে গাড়ো কালো দাগ পড়ে আছে।নিজেকেই চিনতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।মনে হচ্ছে আমি একজন মৃত মানুষ।আয়নার দিকে আবার তাকাতেই আমি দুই হাত পেছনে চলে আসলাম।একি আমার চোখের ভেতরে আগুন জ্বলছে কেন?? দেখে মনে হচ্ছে অতৃপ্ত কোনো আত্মা আমি ।এবার দেখি আয়নাই আমার প্রতিবিম্বের পাশে আমারই মতো দেখতে একটা মুখ।তবে এতক্ষণ আমার মুখটা যেমন ভংঙ্কর ছিল উনার মুখটাও সেম এক।একি এসব কী দেখছি আমি??কিন্তু এই আয়নার ভেতরের মেয়েটিও পুরোপোরি আমার মতো দেখতে । তারাতারি মুখে পানির ঝাঁপটা দিলাম।তারপর আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখি আয়নার ভেতরে কেউ নেই।চোখ বুঝে স্বস্তির নিংশ্বাস ফেললাম আমি।তাহলে আমি এতক্ষণ ভুল দেখছিলাম।হঠাৎ মনে হলো আমার পেছনে কিছু একটা খুসখুস করছে।ভয়ে পেছনে না তাকিয়ে আয়নার দিকে তাকালাম।তারপর প্রচন্ড ভয় পেয়ে চেচিয়ে উঠলাম।আমার পেছনে ঠিক আমার ডান কাধের পাশে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।ছেলে বললে ভুল হবে একটা আত্মা।যার চোখের কোটরে কোনো চোখ নেই।সেখান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।মাথাটা দেহ থেকে আলাদা করা।কিন্তু গলা থেকে কিছুটা উপরে মাথাটা আছে।আর সেই মাথা থেকে অঝরে রক্ত পড়ে ওই আত্মাটা পুরো লাল হয়ে গেছে।রক্ত ছাপিয়ে টয়লেটের ফ্লোরটাও লাল করে দিচ্ছে।রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে আমার পায়ের নিচ দিয়ে চলে যাচ্ছে।আমি মুখে আবার জোড়ে জোড়ে পানির ঝাপটা দিলাম।এবার তাকিয়ে দেখি আমার পেছনে আর কিছু নেই।আশে পাশে তাকিয়ে দেখলাম আমার চারপাশে কোথাও কেউ নেই আর কোনো রক্তও নেই।তখনই মনে পড়ল,কাল রাতেই তো আমি এই রকমই বাজে স্বপ্ন দেখেছিলাম।কাল রাত কেন বলছি,এই পাঁচ-ছয় দিন তো আমি এমন বাজে বাজে স্বপ্ন দেখছি।স্বপ্নের কথা মনে করার অনেক চেষ্টা করছি তবুও মনে পড়ছে না।শুধু এইটুকু মনে পড়ছে যে,যে স্বপ্নের ভেতরে কোনো একটা পুরনো বাড়ী ছিল।আর অনেক গুলো ভয়ানক চেহারার কিছু ভয়ানক মানুষ ছিলো।আর কয়টা আংটির মতো কিছু ছিল।
এরমধ্যে আমার চিৎকার শুনে আম্মু এসে হাজির।
-ওই মামনি,তোর কী হয়েছে রে এভাবে চিৎকার করলি কেন?? ভয় পেয়েছিস নাকি??(আম্মুর কথাই কী বলব বুঝতে পারছিনা)
-না আম্মু এমনিই,একটা তেলাপোকা দেখে ভয় পেয়েছিলাম আর কী??
-ওরে খোদা এই মেয়েটাকে নিয়ে যে আমি কী করি?? আর কখনো যেন এভাবে চিৎকার করবি না।ছোট ছোট বিষয়ে এমন ভাবে চিল্লাস যে সবাই ভয় পেয়ে যায়।
-সরি আম্মু।
-তোর এই অভ্যাসটা কখনো যাবেনা।আই এসে খেয়ে নে।
-আচ্ছা আম্মু তুমি যাও আমি আসছি।
আম্মু চলে গেলো।কিন্তু আমার সাথে এসব কেন হচ্ছে?? আচ্ছা,এটা কী কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে আমাকে?? ধেতত,আমি এসব পাগলের মতো কী ভাবছি?? এটা শুধুমাএ আমার চোখের ভুল ছিল।আসলে এই কয়দিন রাতে বাজে বাজে স্বপ্ন দেখার জন্য ঘুমাতে পারিনি তাই এমন হচ্ছে।আর আমি এই সামান্য বিষয় নিয়ে ভেবে ভেবে মরছি।আর এমন তো হবেই এই একটা মাস কলেজ ছুটি গেলো কিন্তু কোথাও গেলাম না।এই চার দেয়ালের মধ্যে কতক্ষণই বা থাকা যায়?? না কোথাও যেতেই হবে ।হঠাৎ মনে হলো, আমার পাশ থেকে ঠান্ডা একটা হাওয়া চলে গেলো। বাতাসে আমার শরীর শিহরিত হয়ে উঠল।ওই গরমের মধ্যেও এত ঠান্ডা বাতাস?? না এখনে আর থাকাই জাবেনা।তাই টয়লেট থেকে বের হয়ে এলাম।

টেবিলে বসে খাচ্ছি কিন্তু কিছুই ভালো লাগছেনা।খেতেও ইচ্ছা করছে না।মনে হচ্ছে কোথাও গেলে মনটা ভালো হয়ে যেতো।কিন্তু যাবোটা কোথায়??শুধু অর্ধেক পাউরুটি খেয়ে টেবিল থেকে উঠতে গেলাম।
-কী রে গোমড়ামুখী,মুখটা অন্ধকার করে রেখেছিস কেন??আবার অর্ধেক পাউরুটি খেয়েই উঠে যাচ্ছিস??(আম্মু)
-খেতে ভালো লাগছে না তাই খাচ্ছিনা।(আমি)
-কী রে মা,রাগ করিস কেন কী হয়েছে তোর আমাকে বল তো??(আম্মু)
-কী আর হবে ওতদিন ছুটি গেলো কিন্তু কোথাও নিয়ে গেলেনা।চার দেয়ালের মধ্যে বোরিং লাগছে আমার।(আমি)
-তোর ছুটি ছিল তবে তোয়ার তো ছিল না আর তাই তো কোথাও যেতে পারিনি।দেখ মামনি রাগ করিস না।আবার কলেজ গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।আর তোকে যে বন্ধুদের সাথে যেতে দিবো তারও উপাই নেই।ওদের সাথে গেলেই রহস্য নিয়ে পড়িস।সেই #রক্তিম_ফরেষ্ট জঙ্গলে তোর বিপদের কথা মনে পড়লে এখনো আমার গায়ে কাটা দিয়ে ওঠে।
-ওই দেখো তুমি আবার পড়লে আমার রহস্যকে নিয়ে।শোনো আমি ঘুরতে যাবোই না হলে আর আমি কলেজে যাবোনা বলে দিলাম।
আম্মুকে এই কথা বলেই বেলকোণিতে এসে দাড়ালাম।আমার যতই মন খারাপ থাকুক না কেন বেলকোণীতে গেলে আমি সব কষ্ট ভুলে যায়।কিন্তু আজ এখানেও ভালো লাগছেনা।বেলকোণীর দোলনাই কিছুক্ষণ দোল খেলাম তবুও মনটা অস্তির হয়ে আছে।যেন মনে হচ্ছে কোথাও যেতেই হবে ।
নাহ এখানেও ভালো লাগছে না যাই আম্মুর কাছে গিয়ে একটু গল্প করি।
-আম্মু তুমি কী করছো??
-এইতো মা কাপড় চোপড় গুছাই।আই ভেতরে আই।
-আম্মু দাও আমাকে দাও আমি করছি।
-ওমা,আজ সূর্য কোন দিক থেকে উঠল?? না তুই বস মা।আচ্ছা তুই যে বলছিস ঘুরতে যাবি আগে কেনো বলিসনি?? দুই দিন পরেই তো তোর কলেজ খুলবে।
-দেখো আম্মু আমি ঘুরতে যাবোই যাবো।আমার কেন জানিনা কোথাও যেতে খুব ইচ্ছা করছে।
হঠাৎ দেখি ফোনটা বেজে উঠল।দেখি ঈশান ফোন দিছে।ওর ফোনটা দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠল।হ্যাঁ,এদেরকে বললেই তো সব জায়গাই যাওয়া যাই।ফোনটা রিসিভ করতে যাবো আর আম্মু বলল:
-এই দেখ ফোন রিসিভ করবি না।এমনিতেই এইভাবে আমার সাথে কথা বলতে কখনোই আসিস না।আজ একটু আসলি তাও ফোন!!ফোন রিসিভ করবি না বললাম।
-আম্মু ওর সাথে আমারও অনেক কথা আছে।
ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে,,,
-হ্যালো তৃষা!!
-হ্যাঁ,ঈশান বল।
-তৃষা এখনি ফ্রেন্ডসক্লাবে চলে আই তো।
-কেন রে কী করতে আসব??
-একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে তারাতারি আই।
আম্মুকে কোনো রকম ম্যানেজ করে ফ্রেন্ডসক্লাবে গেলাম।ওখানে গিয়ে দেখি রণি,ঈশান,রাসেল,অয়ন,ফাহিম,মীম,যারিন,ইবনাত,ফারিহা এরা সবাই বসে আছে।আমাকে দেখেই রণি বলল,,
-তৃষা বাবু তুমি এসেছো??
-হুমম, আসলাম তো কিন্তু এখানে এসে দেখি তোমরা সবাই এসে হাজির।
-হুমম,তোমার জন্যই তো আমরা সবাই অপেক্ষা করছিলাম,অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।

((রণির সাথে আমার এই পাঁচ মাসের রিলেশন।ওর পুরো নাম রণি আহম্মেদ।এখানে যারা আছে আমরা সবাই ক্লাসমেট তবে রণিই আমাদের সবার সিনিয়র।রণির সাথে আমার পরিচয়টা হয়েছিল আকষ্মিকভাবে।একদিন কলেজ যাচ্ছি।আর ওইদিন কলেজে পরীক্ষা থাকার কারণে তাড়াহুড়া করে কলেজ যাচ্ছিলাম।পথিমধ্যে একটা গাড়ী এসে আমাকে ধাক্কা দিতে যাই।তবে ধাক্কা দেওয়ার আগেই রণি আমাকে ঠেলে ফেলে দেই।
-এই ছেলে আপনার সাহস তো কম নয় যে আমাকে ঠেলে ফেলে দিলেন!!আমার বাবাকে বললে আপনার দুইটা পাই ভেঙে দিবে।
-আজব তো,এই জন্যই বলে মেয়েদের সাহায্য করতে নেই।ওই গাড়ীর নিচে পড়ে পিষে গেলেই মনে হয় ভালো হতো।
-হুমম জানেন যখন তাহলে উপকার করতে গেলেন কেন?? আমি কী আপনাকে বলেছি আমাকে ফেলে দিতে??
-মহা মুশলিক তো।
-কোনো মুসকিল ফুসকিল নয় ফেলে দিছেন যখন এখন হাত ধরে উঠান।
-বয়েই গেছে আমার তোমার হাত ধরে উঠাতে।
-উঠান বলছি।নাহলে আমি কিন্তু চিৎকার করব।(আমিও কম জেদী নয়)
-পারব না আমি পারলে উঠো।বলেই রণি চলে যেতে লাগল।
(আজব ছেলে তো,একটা মেয়েকে ফেলে দিলো কিন্তু তুলবে না??)
রণি কিছুদুর গিয়েই আবার আমার দিকে ফিরে তাকালো।আর আমার মাথায়ও কেমন চক্কর দিয়ে উঠল।ওর চাহণীটা এমন চেনা চেনা কেন লাগল আমার?? রণিও কী ভেবে আবার ফিরে আসল।
-চলে যেতে পারলাম না কেন জানিনা একটা মনের টান অনুভব করলাম।দাও তোমার হাত দাও।
রণির কাছে হাত দিতেই ও ছিটকে দূরে গিয়ে পড়ল।আমিও অবাক হয়ে গেলাম।একি আমার হাতে এমন কারেন্টের শক কেনো লাগল??
রণি আবার এগিয়ে এসে বলল,
-তোমার হাতটা আবার দাও।
আমি এবারও হাত দিতে রণি ছিটকে পড়ল ।এমনি ভাবে তিনবার হওয়ার পর আমি নিজেই উঠে দাড়ালাম।কিন্তু রণি চুপচাপ দাড়িয়ে আছে কিছু একটা জেনো ভাবছে রণি ।
-আচ্ছা চলুন সামনে এগুনো যাক।(আমি)
-তোমার নাম কী বলো তো??(রণি)
-তৃষা আফরিন,আপনার??(আমি)
-রণি আহম্মেদ।আচ্ছা তোমার হাত ধরাতে তুমি কী কিছু ফিল করলে??(রণি)
-হ্যাঁ,একটা কারেন্টের শকের মতো।(আমি)
-কিন্তু এটা কেন হলো?? এর কারণ কী??
-আমি জানিনা তো।(আমি)
এইদিনেই রণির সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেলো।তারপর থেকে রণি ইচ্ছা করে আমার হাতে হাত দিয়ে দেখে যে পর শক লাগে কী না ।তবে এখন আর আগের মতো শক লাগেনা। এইভাবে দুইমাস আমাদের বন্ধুত্ব চলল।একদিন রণির সাথে ঘুরতে গেলাম।ঐদিন আমার চুলগুলো কাধের একপাশ দিয়ে ফেলানো ছিল।অন্যপাশ খালি ছিল ।হঠাৎ রণি আমার গলার দিকে তাকিয়ে খুব জোড়ে আমার হাত এটে ধরে।
-কী হলো রণি হাত ধরলে কেন??
-তৃষা তোমার সাথে নিশ্চয় আমার কোনো সম্পর্ক আছে।
-হঠাৎ এমন মনে হওয়ার কারণ কী??
-তোমার গলাই যে চাঁদের চিহ্নটা আছে ওটা কী সত্য??
-হুমম, ওইটা তো আমার জন্মগত।কেন??
রণি তখন ওর গলাটা এগিয়ে দিয়ে বলল,,
-দেখো তো তৃষা আমার গলার এই চাঁদ চিহ্নের মতো তোমার টা এক কী না??আমারও কিন্তু জন্মগত।
ওহ হ্যাঁ তো আমার চিহ্ন আর আপনার চিহ্ন একই রকম।আর আমারও ডান দিকে আপনারও ডান দিকে।
-তৃষা আমার মনে হয় তোমার আর আমার মধ্যে আগে থেকে কোনো সংযোগ আছে।
-হুমম, হতে পারে।
তারপর থেকেই রণি আর আমার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।আর সেই দিন থেকেই আমি রাতে আলতু ফালতু স্বপ্ন দেখি।কিন্তু যত আমাদের মধ্যে ভালোবাসা গভীর হচ্ছে ততই রাতে ভয়ানক স্বপ্ন দেখাটা বাড়ছে।))
-আচ্ছা ঈশান আমাকে কেন আসতে বললি বলতো দেখি কী এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
-তৃষা এই ছুটিতে ঘুরতে যাইনি আমরা কেউ চল কোথাও থেকে ঘুরে আসি।(ফাহিম)(ওর মুখে ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে মনের ভেতরে ঘন্টা বেজে উঠল)
-কিন্তু সামনেই যে পরীক্ষা।(মীম)
-আরে পরীক্ষা শুরু হওয়ার এখনো পনেরো দিন বাকি।আর আমরা যাবো মাএ সাত দিনের সফরে।(রাসেল)
-ওই তোরা যে যাই বলিস আমি কিন্তু রাজি।আমিও তোদেরকে এই কথা বলতে চেয়েছিলাম।(আমি)
-আরে তৃষা তুমি রাজি আমি তো তোমাকে নিয়েই ভয় পাচ্ছিলাম।কেনো জানিনা আমারও ঘুরতে যেতে অনেক ইচ্ছা করছে।(রণি)
-ওকে তাহলে চল সবাই মিলে আড্ডা দিয়েই আসি।(ইবনাত)
-কিন্তু জায়গা ঠিক করা হলো তোদের??(আমি)
-হ্যাঁ তৃষা,, সিলেটের দিকেই যাবো পাহাড়ী এলাকাই।(যারিন)
-ওহ সত্যিই সিলেট আমার অনেক ভালো লাগে।ওখানে গেলে তো মজাই হয়।(ফারিহা)
-আচ্ছা কিন্তু এই প্লানটা কে করল??(আমি)
-আমি রে তৃষা ।হঠাৎ কী যেনো মনে হলো কিছুই ভালো লাগছিলো না শুধু মনে হচ্ছিলো কোথাও ঘুরতে যাই।আর সেই সময় ইবনাতও ফোন দিয়ে একই কথা জানাই।তারপর আমি সবাইকে রাজি করাই।(অয়ন)
-বাহ তাহলে আমার, তোর, রণি,ইবনাত এই চারজনেরই ঘুরে বেড়ানোর এত ইচ্ছা।তাহলে আমরা কয়জন ভালো নয় হি হি হি হি ।(আমি)
-আচ্ছা তৃষা এমন তো কখনো হয়না,,মনে হচ্ছে কোথাও না গেলে মরেই যাবো।(রণি)
-আচ্ছা কিন্তু জাবিটা কবে??(ফাহিম)
-আমরা আজই যাবো।(অয়ন)
-কিন্তু এত তারাতারি যাবি কী করে?? আর গাড়ী ভাড়াও তো করা হয়নি।(যারিন)
-আরে তোমরা টেনশন করোনা অয়নের মুখে শুনেই আমি অলরেডি সবকিছুর ব্যবস্তা করে ফেলেছি।আসলে আমার নিজেরই এখানে ভালো লাগছেনা।কোনো দিকে যেন মন চাইছে।আমরা সবাই সন্ধ্যায় বের হবো।রাতের নিস্তব্ধ পরিবেশটা অনেক ভালো লাগবে।বন্ধুরা অনেক আড্ডা দিতে পারব।সন্ধ্যায় গাড়ী তৃষাদের বাসার সামনে দাড়াবে।আমরা সবাই ওখানে আসব।(রণি)
-আচ্ছা তাহলে চলো এখন বাসায় যাই।(আমি)
..
আমরা সবাই ক্লাব থেকে বের হতে যাবো ঠিক তখনই আমাদের সামনে একটা ছোট ছেলে এসে দাড়াই।যার বয়স পাঁচ থেকে ছয় বছর হবে।তারপর সে আমার দিকে………..
চলবে……….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com