ব্যাচেলর লাইফ | সানি আদনান

১. উপর দিয়ে যতই ফিটফাট থাকুন না কেন, প্রত্যেক ব্যাচেলরের বিছানার উপর
দেখবেন, লুঙ্গি গোল করে পড়া আছে। লুঙ্গি চেন্জ করে প্যান্ট পড়ার পর,
লুঙ্গি গুছিয়ে রাখার মত পর্যাপ্ত সময় ব্যাচেলরদের হাতে থাকে না! তাছাড়া,
আরেকটা সুবিধা হচ্ছে, বাইরে থেকে এসেই আবার সেই “গোল করা” লুঙ্গির ভিতর
ঢুকে পড়া যায়!
…… ইটস সিম্পল!
২. ব্যাচেলর সাহেবদের শার্ট, টিশার্ট থাকবে ঝকঝকে। কিন্তু প্যান্ট! একমাস
ধরে একই জিন্স প্যান্টের উপর অত্যাচার চলে। দুর্গন্ধ সৃষ্টি হলে, সেন্ট
মারলে ঝামেলা শেষ। …. দারুণ!
৩. ধরুন, মেস বা হোস্টেলের একজনের ভাইভা আছে কিংবা “বালিকাবন্ সাথে ১ম সাক্ষাত করতে যাবেন! ব্যাস,
ধার করার হিড়িক পড়ে যাবে। নিজের ভালো ড্রেস থাকা সত্বেও অমুকের প্যান্ট, তমুকের শার্ট, আরেকজনের সু ধার করে নিয়ে যাবেনই।
৪. মেসে যদি বুয়া না আসে, সেদিন লঙ্কাকান্ড হয়। নিজেরাই তখন কুক। কেউ হয়ত পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে চোখের
জলে বুক ভাসাবেন, আরেকজন আলু কাটতে গিয়ে নিজের আঙ্গুল কাটবেন, আরেকজন
হয়ত গরম পাতিলে হাত পূড়বেন। অবশেষে যুদ্ধ জয়। স্বাদ যেমনই হোক, সবাই
বলবে, উফফ দারুণ হইছে …..
৫. পত্রিকা নিয়ে কারো মাথাব্যাথ একজন পত্রিকা পড়া শুরু করলে সবার তখন আগ্রহ বেড়ে যায়। টানাটানি শুরু হয়।
৬. বাইরে থেকে কেউ মেসে/ হোস্টেলে আসলে খুবই অবাক হবেন। রাত বারোটার পর, কিসের যেন গুণগুণ
শব্দ! খেয়াল করলে দেখা যাবে, সবার কানে মোবাইল ফোন। যদি রুমমেটদের গুণগুণানির অভ্যাস না থাকে,
তবে রুমের “রোমান্টিক বেচারা”কে অনেক কষ্ট করতে হয়। প্রচন্ড শীতেও মোবাইল কানে নিয়ে ছাদে কিংবা বারান্দায় চলে যেতে হয়! আহ! কষ্ট!৭. মেসে/ হোস্টেলে লাইট অফ করা নিয়ে কমন ঝামেলা বাধে, ঝগড়াও হয়। কেউ
হয়ত তারাতারি ঘুমিয়ে যান। লাইট জালানো থাকলে তার ঘুম আসে না। রুমমেটের
গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাস। কি আর করা!
৮. মহামতি
ব্যাচেলররা টাকা ধার করতে অসাধারণ দক্ষ। “দোস্ত! খুব ইমার্জেন্ছী। ১০০ টাকা
দে। আগামী কালকে দিয়ে দেব।” ধারকারী এবং ধারদাতা উভয়েই জানেন, এই
আগামীকাল হয়ত ১৫ দিনেও আসবে না। তবুও ধার দিতে হয়।
৯. একজনের হয়ত
বার্থডে। সবাই তাকে বাঁশ দেওয়ার চেষ্টা করবে। “দোস্ত! তোর বার্থডে
পার্টির আশায়, সারা বছর ওয়েট করি। খাওয়া, খাওয়া।”
১০. যদি কেউ
কোন বিপদে পড়ে, এক্সিডেন্টের শিকার হয় কিংবা কারো আত্মীয় স্বজন মারা
যায়, সহপাঠিদের মাঝেও নেমে আসে শোকের ছায়া। হাসি কান্না আনন্দ বেদনা
ঝগড়া খুনসুটি নিয়েই ব্যাচেলরদের মেস/ হোস্টেলজীবন।
একটা সময় এই জীবনের সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু সুমধুর স্মৃতি গুলো কি ভোলা যায…. সত্যিই জীবনের এক মধুরতম সময় এই ব্যাচেলর লাইফ..

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url