গল্প: প্রতিক্ষা | লেখা: সানজিদা বৃষ্টি
হ্যালো
– রুপাকেমন আছো?আমি বলছি!চিনতে পারছো?
– হুম
– কেবলোত?
– তূর্য,কারন তুমি তো শুধু এইঅবনি কে রুপা বলো।
–তাঠিক।অবনি আজ কি একটুদেখা করতে পারবে…?
– কখন
– এখন
– কিকরে সম্ভব
– প্লিজএকটু আসো না।খুব দেখতে ইচ্ছে করছে….
– কিভাবে….? এখন তো রাত ৯টা বাজে….
-একটুকিছু সময়ের জন্য।গেট এ আসবে দেখেইচলে আসবো।
– আচ্ছাদেখছি।
– একটাকথা রাখবে….?
– বলোতূর্য।
– আসারসময় প্লিজ নীল শাড়ী পড়ে আসবে।জানি নীল রং তোমার ভাললাগে না।আমার জন্য হলেও….নীল শাড়ী, নীল চুড়ি,চোখে হালকা কাজল, আর খোলা চুলেদেখতে খুব ইচ্ছে করছে।
– হুমদেখছি।তবে তুমি আজ আসবে তো?কারন তুমি তো হিমু,আমায়অপেক্ষাই রেখে কই যেন নিরোদ্দেশহও।
– আসবো….
– ওকেফোন রাখো।আমি শাড়ী পড়ছি
– হুম,সময় ৩০ মিনিট।
– নীলশাড়ী, হাতে নীল চুড়ি পড়েছি, চোখে হালকা কাজল ও একেছি চুলও খোলা রেখেছি।গেট খুলে দাড়িয়ে আছি।হিমু রুপি তূর্যের দেখা নেই আসার….
-আমারঅবনি নামে রুপা পাগলি টা হয়ত এতক্ষনগেটে দাঁড়িয়ে আছে।তবে আমি আজ যাবো না।আবারকয়েক মাসের জন্য ডুব দিবো।কারন “ভালবাসার মানুষের বেশি কাছে যেতে নেই।”
– অবনিআপা আপনি কাঁদছেন কেনো? আর আজ গেটলাগাবো না।
– রহিমভাই আপনি গেট লাগিয়ে দেন।
– তূর্যতুমি আজ ও এমনকরলে।তুমি আমায় আর কত অপেক্ষাইরাখবে।সমস্যা নেই।আজ থেকে প্রতিদিন রাতে আমি নীল শাড়ী পড়ে থাকবো।যাতে তুমি ডাকলেই আমি ছুটে যেতে পারি।
– আজ৪ মাস হতে চললো। তূর্য তুমি কোথায়। দেখো… আমি আজ নীল শাড়ী,নীল চুড়ি, কাজলও চুল গুলোও খোলা রেখেছি।তুমি আসছো না কেনো।
ক্রিংক্রিং…. হ্যালো
– রুপাআমি বলছি।
– তুমিকোথায়!
জানোআমি প্রতিদিন প্রতি মূহত্য ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকি।এই বুঝি ফোনের স্কিনে তোমার নাম ভেসে ওঠবে….
– অবনিআমি বেশি কথা বলতে পারব না।তোমার বেলকোনিতে একটা জিনিস আছে।আর শুনো ওইটা তোমার জীবন দিয়ে হলেও আগলিয়ে রাখবে।আর বেশি কথা বলতে পারছি না।ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় আছে।
– ফোনকেটে গেলো….
– আমিএলোমেলো পায়ে দরজা খুলে যা দেখলাম তাঁরজন্য মুটেও প্রস্তুত ছিলাম না।দেখলাম তূর্য নেভী ব্লু পাঞ্জাবি পড়ে দাঁড়িয়ে আছে।
-আমিদৌঁড়ে গিয়ে তূর্য কে জড়িয়ে ধরেকাঁন্না করছি
– আমারখুব ইচ্ছে করচ্ছে আমিও অবনি কে জড়িয়ে বুকেরসাথে মিশিয়ে ফেলি।কিন্তু আমি তা করব না।কারনআমি তো বেশি মায়ায়বাঁধতে পারি না।আমার ভিতরে যে হিমুর কিছুঅস্তিত্য আছে।
– তূর্যতুমি আমায় কেনো এত কাঁদাও?
– আমারভাল লাগে যে।
-অবনিআমি না কিছু খাইনি।আমার জন্য কিছু খাবার আনবে।
– হুম,তুমি রুমে বসো।আমি খাবার আনছি।আর আমি না আসা পর্যন্ততুমি বসে থাকবে,কোথাও যাবে না।
– আমিখাবার নিয়ে ফিরে এসে দেখলাম।তূর্য নেই।এলোমেলো পায়ে বেলকোনিতে গিয়ে দেখলাম সেখানেও তূর্য নেই।তুমি আবার ও….
– ব্যাস্তরাস্তাই হাঁটছি আর ভাবছি…. আমারখুব ভাল লাগে।যে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করবে।আমার শত অবহেলা সহ্যকরেও আমার জন্য প্রতিক্ষা করবে।আমার কথা ভেবে চোখের জল ফেলবে।এই সবইএকজন করে আর সে হলোআমার ভিতরের হিমুর রুপা, AH এর SB আর আমার আমিতূর্যের অবনি।জানি তুমি প্রতিদিন আমার প্রতিক্ষাই থাকবে।আর চোখের জল ফেলবে….।আরআমি যখন সামনে দাঁড়াব তখন সব অভিযোগ অভিমানভুলে আমায় নিয়ে বাস্ত হয়ে পড়বে।
-তূর্য তোমায় তো আমি চিনি।তুমি আবার আমায় নতুন করে প্রতিক্ষাই রাখছো।সমস্যা নেই, আমি প্রতিক্ষা করব।আর তুমি তো জানো আমার প্রতিক্ষা করতে ভালো লাগে….।
