Breaking News

তারে আমি চোখে দেখিনি

মাহির ডায়েরীটা নিয়ে পড়ছে যেখানে শুধুই অনুভবকে নিয়ে লেখা আর অনুভবের বলা প্রত্যেকটা কথার শব্দ চয়ন।একটা একটা করে ডায়েরীর প্রত্যেকটা পাতা শেষ করে মাহির মায়ার দিকে এক অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়।এই মায়াকে যেন প্রথমবার দেখছে মাহির। আর কিছু ভাবার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।সে শুধুই চেয়ে আছে ঘুমন্ত মায়ার মুখপানে।আবার এক অজানা ভালো লাগার সৃষ্টি হচ্ছে মায়ার প্রতি।যেন পুরোনো সব ভুল বুঝাবুঝি আর রাগ মুহূর্তেই ভালো লাগাতে পরিণত হচ্ছে।মাহির আস্তে করে মায়ার খুব কাছে এগিয়ে আসে।মায়ার মুখের উপরে চলে আসা এলোমেলো চুলগুলো হাতের আলতো স্পর্শে সরিয়ে দিতেই মায়ার ঘুম ভেঙে যায়। মায়া কেঁপে উঠে তাকিয়ে দেখে সামনে মাহির দাড়ানো।
মায়াঃ একি আপনি?
মায়া উঠে দাড়িয়ে একটানে মাহিরের হাত থেকে ডায়েরীটা ছিনিয়ে নেয়।
মায়াঃ আমার ডায়েরীতে কেন হাত দিয়েছেন?
মাহিরঃ তার আগে বলো তুমি কাকে ভালোবাসো?
মায়াঃ আমি যাকেই ভালোবাসি তাতে আপনার কি?
মাহিরঃ তুমি জানো আমি স্নিগ্ধাকে ভালোবাসি?
মায়াঃ হ্যাঁ জানি আমিও অন্য কাউকে ভালোবাসি।
মাহিরঃ সেই অন্য কেউটা কে? যাকে কখনো দেখো নি। যার সম্পর্কে কিছুই জানো না তুমি! সেই অনুভব?
মায়াঃ আপনি কিন্তু আপনার অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করছেন! আপনার আর স্নিগ্ধার ব্যাপারে আমি কি কখনো নাক গলিয়েছি? দয়া করে আমার ব্যাপারে কিছু বলবেন না।তাহলে খুশি হবো।
কথাটা বলে মায়া বালিশটা নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে লাগে।আর মাহির মায়ার হাতটা ধরে বসে।
মায়াঃ হাতটা ছাড়ুন!
মাহিরঃ কোথায় যাচ্ছো?
মায়া নিজের হাতটা মাহিরের থেকে ছাড়িয়ে নেয়।
মায়াঃ বেলকনিতে! আমার জন্য সেদিন আপনি আপনার রুমে ঘুমাতে পারেন নি তাই না? আজ আমি চলে যাচ্ছি আপনি ঘুমান আপনার রুমে।
মাহিরঃ বাইরে খুব ঠান্ডা আর প্রচুর মশা।তোমার কষ্ট হবে ঘুমাতে।
মায়াঃ যে কষ্ট আমাকে দিয়েছেন তার কাছে এটা কিছুই না।
মাহিরঃ মানে?
মায়াঃ মানে জানতে চাইছেন? আমার বাবা হসপিটালে।এতোটা অসুস্থ কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আমি আমার বাবাকে দেখতে পারি নি।আপনি তো ডাক্তার চাইলে কি পারতেন না দেখতে দিতে?
মাহিরঃ মায়া ছরি আমি রেগে গিয়েছিলাম।তুমি স্নিগ্ধার সাথে অমনটা না করলে আমি…
মায়াঃ থাক আর কিচ্ছু বলবেন না।আমি সত্যিই খুব খারাপ।যার জন্য আমাকে আপনি ওইভাবে ঘার ধাক্কা দিয়ে বেড়িয়ে দিয়েছেন হসপিটাল থেকে।তবে খারাপ লেগেছে কিসে যানেন আমার মা আমার কোনো কথা শুনতে চায় নি।
মাহিরঃ মায়া তুমি যদি চাউ কাল সকালে তোমাকে তোমার বাবার কাছে নিয়ে যাবো।
মায়াঃ দরকার নেই! আমার একটা উপকার করবেন? যতোদ্রুত সম্ভব আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন।আমি চাই না আপনার আর স্নিগ্ধার মাঝে এভাবে থাকতে।
কথাটা বলেই মায়া বেলকনিতে চলে আসে।একান্তে বসে জোস্ন্যার আলোয় উপরের আবছা আকাশটাকে দেখতে থাকে।আর চারপাশ থেকে শীতের কুয়াশা ঘিরে এসে মায়াকে স্পর্শ করে যায়।যার জন্য কিছুক্ষণ পর মায়ার শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়।মায়া বুঝতে পারে সত্যিই বাইরে খুব শীত। হঠাৎ মাহির এসে মায়াকে একটা চাদর জড়িয়ে দিয়ে রুমের ভেতরে নিয়ে আসে।
মাহিরঃ বলেছিলাম না বাইরে শীত? সব সময় জেদ দেখাও তুমি।
মায়াঃ আমি জেদ দেখায়নি
মাহিরঃ চুপপ করো! এসো এদিকে।
মাহির মায়ার হাত ধরে টেনে বিছানায় বসায়।
মাহিরঃ এখানে ঘুমাবে তুমি।
মায়াঃ আর আপনি?
মাহিরঃ আমি বিছানার অন্য পাশটায় ঘুমাবো।তোমার কোনো অনুবিধা আছে তাহলে বলো আমি গিয়ে সোফায় ঘুমাচ্ছি?
মায়াঃ নাহ নাহ আমার জন্য আপনার রুমে আপনি কেন সোফায় ঘুমাতে যাবেন? তার চেয়ে বরং আমিই…
মাহিরঃ একটাও কথা বলবে না! যা বলেছি তাই করো আমি আমাদের মাঝে একটা বালিশ দিয়ে দেবো।
তারপর মায়া আর কিছু না বলেই বিছানার একপাশে গিয়ে শুয়ে পরে।আর মাহির ফোনটা নিয়ে বাইরে এসে তার বন্ধু আবিরকে কল দেয়।
আবিরঃ হ্যালো(ঘুম ঘুম চোখে বলে)
মাহিরঃ হ্যালো আবির!
আবিরঃ হ্যাঁ মাহির বল কোনো সমস্যা? বাড়িতে সবাই ঠিক আছে তো?
মাহিরঃ হ্যাঁ সব ঠিক আছে। বলছিলাম আমার একটা উপকার করবি দোসত?
আবিরঃ কেমন উপকার যার জন্য এতো রাতে ফোন করেছিস?
,
,
,
চলবে,,,,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com