গল্পঃ সিনিয়র ফুফাতো বোনের সাথে প্রেম || পর্ব -০৩



মা ফোন করে বলল তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে ৷
আমি আর কিছু না ভেবে বাড়ি চলে আসৱাম বাড়ি এসে দেখি বাড়িতে অনেক লোকজন
সব আত্বিয় স্বজন রা এসেছে আবার বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজানো আমি বেশ অবাক হলাম

তারপর আমি নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে যেই বাইরে আসব তখন মা এসে বলল যে এইনে এই পান্জাবী পড়ে শিঘ্রই বাইরে আয় কিন্তু কেন মা আর আমাদের বাড়ি এভাবে সাজানো কেন আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা ৷

আজ তোর আর মিমের বিয়ে আর এখনি বিয়ে হবে কিহহহহহহহহহ, কি বলছ মা তুমি আমাকে না বলে বিয়ে ঠিক করছ কিভাবে আমাকে একবার শুনার প্রয়োজন মনে করলে না আমি তোকে বলব কেন মেয়ে কি বাইরের কেউ মেয়ে তো আমাদের নিজের মানুষ আর তুই ছোট কালে মিম কে ভালবাসতি ৷

মা এটুকু বলে চলে গেল আর আমি ঘড়ের দড়জা বন্ধ করে কান্না করছি ৷
আপনারা এই টা ভেবেছেন তাই তো ৷ আরে না আমি তো ঘড়ের দড়জা বন্ধ করে গামছা ড্যান্স দিচ্ছি

কারন আমি আজ অনেক খুশি অবশেষে আমি তাহাকেই পেলাম ৷
অনেক আনন্দ লাগছে মিমকে আমি নিজের করে পেলাম তবে কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবেনে
যে আমি অনেক খুশি আর হ্যা পাঠক ভাইয়া আপুরা আপনারা যেন আবার কাউকে বলবেন না ৷
কিন্তু আপনাদের দাওয়াত রইল এসে ফ্রী খেয়ে যাবেন ৷
আমি মুখ গোমরা করে পান্জাবী পড়ে নিচে এসে দেখি সব কিছু রেডি আমার জন্য
সবাই অপেক্ষা করছে আমার যাওয়ার সাথে বিয়ে পড়ানো সব
ভালভাবে কার্যক্রম শেষ হল আমি জীবিত থেকে বিবাহিত হয়ে গেলাম ???৷
দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেল আমি ছাদে একা একা ভাবছি যে মিম
আমাকে প্রথমে অবহেলা করল ৷ আবার আমাকে বিয়ে করল কিছুই বুঝলাম না ৷
তবে আমিও কম না আমার যেরকম ভাবে কষ্ট দিয়েছে আমিও সেভাবে কষ্ট দেব ৷
আমিও ওকে প্রথমে অবহেলা করব তারপর ভাললবাসব ৷

যখন প্রিয় মানুষ অবহেলা করে তখন কেমন কষ্ট হয় তা ওকে বুঝাব ৷
তারপর আমি রুমে ডুকে পরলাম সবাই বলে বাসর ঘরে ডুকতে একটু ভয় পাই ৷
কিন্তু আমি ভয় পেলাম না মনে হয় আমি একটু বেশি সাহসি হি হি হি হি ৷
আমি যেই মিমের সামনে দাড়ালাম তখন মিম উঠে এসে আমার পা ধরে সালাম
করল আহহহ সে কি ফিলিংস আমাকে প্রকৃত স্বামী স্বামী লাগছে ৷ তারপর মিম কে উঠতে বললাম ৷
আমিঃ তুমি আমাকে বিয়ে কেন করলে  তোমার তো বয়ফ্রেন্ড ছিল
তো তাকে ছেড়ে দিয়ে আমাকে কেন বিয়ে করলে ৷
মিমঃ তোমাকে আমি ভালবালি তাই বিয়ে করছি ৷
আমিঃ কবে থেকে ভালবাস৷
মিমঃ সেই ছোটবেলা থেকে ৷

আমিঃ নাটক করছ আমার সাথে 【ঝাড়ি মেরে বললাম】 তাহলে এতদিন তুমি কার সাথে প্রম করছ ৷
মিমঃ কারও সাথে না আমি শুধু তোমাকে ভালবেসে গেছি ৷
আমিঃ মিথ্যা বলবেনা আমি মিথ্যা বলা একদম পছন্দ করিনা ৷ 【 রাগি কন্ঠে বলছি】
যারা গল্প পড়তে ভালোবাসেন চাইলে আমাকে এড করতে পারেন
মিমঃ আমি সত্যি বলছি আমি কারও সাথে প্রেম ভালবাসা করিনি ৷【 একটু ভয় পেয়ে বলল】
আমিঃ তাহলে সেদিন কার বাইকে উঠে চলে গিয়েছিলে  আর সেদিন রুমের মধ্যে জান বলে কাকে ডাকছিলে ৷

মিমঃ সেদিন যার বাইকে উঠেছিলাম সে আমার বন্ধু ছিল এর বেশি কিছু না ৷ আর সেদিন রুমের মধ্যে কথা বলছিলাম ওটা মিথ্যা ছিল ৷
আমিঃ হুমমম বুঝলাম কিন্তু তুমি যদি আমাকে ভালবাসতে তাহলে আমাকে এতদিন অবহেলা করছ কেন ৷
মিমঃ তো কি করব তোমাকে আমি সেই ছোট বেলা থেকে ভালবাসি  তুমি সেই 7 বছর আগে গিয়েছিলে আর আসনি ৷ আমার কোন খোজ খবর নেওনি ৷ কোন ফোন করনি  আমার বুঝি কষ্ট হতনা ৷
তোমাকে একবার দেখার জন্য কত ছটফট করেছি তুমি জানো তুমি যদি আমার ভালবাসতে তাহলে 7 বছরের মধ্যে একবার হলও আমার সাথে দেখা করতে ৷ 【 এবার কেদে কেদে বলল】
আমার এবার অনেক কষ্ট হচ্ছে মিমের কথা শুনে ৷

আমারও কান্না আসছে কিন্তুু কষ্ট করে আটকিয়ে রাখলাম ৷
আমিঃ কিন্তু তোমায় আমি এখন ভালবাসি না তোমার জন্য আমার মনে কোন ফিলিংস নেই ৷
আমি তোমাকে ভালবাসতে পারবনা ৷ তোমার অবহেলা যখন আর সহ্য করতে পারছিলাম না তখন মিষ্টি আমার পাশে এসে দাড়িয়ে ছে ৷
মিষ্টি আমাকে ভালবাসে আর আমিও মিষ্টিকে অনেক ভালবাসি ৷【পুরো মিথ্যা কথা শুধু মিমকে রাগানোর জন্য】
এবার মিমের দিকে তাকিয়ে দেখি মিম আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে ৷ মিমের চোখে পানি দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ৷
মনে হচ্ছে মিমের চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর বুকের সাথে জড়িয়ে ধরি ৷
আর বলতে ইচ্ছা করছে ভালবাসি তোমায় আমি অনেক ভালবাসি ৷
কিন্তু এখন এসব করলে সব মজা নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে ৷
মিমঃ মিষ্টি কে তুমি কতদিন ভালবাস ৷
আমিঃ এই 2 মাস মত হবে ওকে ভালবাসি ৷

মেয়েটি ভীষন ভালবাসতে পারে ৷
আর দেখতে অনেক কিউট ৷ 【 মিম কে রাগানোর জন্য বললাম】
মিমঃ বিয়ের আগে কেন বললে না যে তুমি আরএকজনকে ভাল বাস তাহলে আর তোমাদের দুই জনের মধ্যে বাধা হয়ে দাড়াতাম না ৷ 【 কেদে কেদে বলল】
আমিঃ তখন বলার পরিস্থিতি ছিলনা ৷ আর তুমি চিন্তা করনা মাত্ত 6 মাস ৷ছয় মাস পরে তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেব তখন আমি মিষ্টিকে বিয়ে করব ৷

মিম এবার জোরে জোরে কান্না করতে লাগল ৷
আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে ৷ মিমের এভাবে কান্না করতে দেখে ৷
কিন্তু কথাই আছেনা সবুরে মিঠা ফলে ৷ তাই আমি একটু ধর্য্য ধরলাম ৷
মিমঃ ঠিক আছে আমাকে 6 মাস পড়ে ডীভোর্স দিয়ে দিও
তারপর তুমি মিষ্টি কে বিয়ে কর 6 মাস পর তোমার সামনে থেকে
আস্তে করে হারিয়ে যাব  তুমি মোটেও টের পাবেনা ৷
তারপর আর কোনদিন আসবনা তোমার সামনে অনেক দুরে চলে চলে যাব ৷
তুমি চাইলেও আর আমাকে খুজে পাবেনা  অনেক দূরে চলে যাব
তাই বলে বিছানায় একপাশ হয়ে শুয়ে পড়ল  আর কান্না করতে লাগল ৷
মিমের শেষ কথাটাই ভীষন কষ্ট হল মনে হচ্ছে মিম কে এখনই জড়িয়ে ধরে অনেক ভালবাসা দিয়ে আগলিয়ে রাখি

তবে মিমের শেষের কথা গুলো আমার অন্যরকম ইঙ্গিত করল তুমি চাইলে ও আর আমাকে খুজে পাবেনা এর মানে কি ৷
 আমার খুব ভয় হল ৷ মিমকে আমার চোখে চোখে রাখতে হবে ৷
তা নাহলে আমি মিম কে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলব আর তার জন্য পুরোপুরি আমি দায়ি ৷
তারপর আমি একটা চাদর নিয়ে ফ্লোরে শুয়ে পড়লাম  মাঝরাতে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে গেল তাকিয়ে দেখি মিম বিছানার উপর বসে বসে কানছে আমার খুব খারাপ লাগছে মিমের কষ্ট দেখে ৷
আমি বললাম কি ব্যাপার তুমি কান্না করছ কেন আমার ঘুমে ডিস্টার্ব হচ্ছে ৷
আর কান্না করলে বাইরে গিয়ে কান্না কর ৷【 একটু ঝাড়ি দিয়ে বলছি】 আর হ্যা আমাদের মাঝে যে সম্পর্ক তা যেন মা যানতে না পারে ৷
আর যদি কেউ জানে আমার থেকে খারা প কেউ হবে না ৷
মিম শুধু দুই বার মাথা নারালো ৷
এবার চুপ করে ঘুমাও  আর কোন শব্দ করবে না ৷
সকালে ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ পানির ছিট এসে ঘুম ভেঙে গেল  আমি তাকিয়ে দেখি মিম কেবল মাত্র গোছল করে বের হল ৷

আহহহ কি সুন্দর লাগছে আমার বউকে মানে হচ্ছে সারাজিবন দেখে যাই ৷
আমার তাকিয়ে থাকা দেখে মিম মুখটা কাল করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল ৷ আমার মনটা ও খারাপ হয়ে গেল কি অপরূপ লাগছিল আমার বউ টাকে ৷ কিন্তুু বেশিক্ষন দেখার সৌভাগ্য হল না ৷ তারপর উঠে আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ৷

তারপর নিচে এসে নাস্তা করে বাইরে বেড়িয়ে পড়লাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ৷
সবাই আড্ডা দিচ্ছে আর আমার মন মিমের কাছে পরে আছে  এই দুই চোখ বার বার মিমকে খুজছে আমার এমন উদাস থাকা দেখে এক বন্ধু বলল কিরে কি হয়েছে মন খারাপ নাকি ভাবি রাতে ঘুমাতে দেয়নি  তা বলে সবাই 36 টা দাত বেড় করে হাসতে লাগল ৷
তারপর সবাইকে চুপ করিয়ে এই পর্যন্ত মিমের সাথে যাকিছু হয়েছে সব খুলে বললাম ৷
এবার হারামি বন্ধু গুলো সবাই চুপ করে আছে বুঝতে পারলাম আমার মত ওদের মন খারাপ এই হারামি গুলো হয়েছে এক একটা এক এক রকম ৷ যেমন খুশির সময় খুশি গুলো ভাগ না চাইলেও দুঃখ গুলো ঠিকিই ভাগ করে নেবে ৷ i love u harami friend.

তারপর বন্ধুরা বলল তাহলে ভাবিকে সবসময় চোখে চোখে রাখবি আর দেখবি যাতে বেশি আঘাত না পায় ৷ হারামি বন্ধু গুলো সব এ রকমিই ৷ তারপর বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম ৷
এসে দুপুরে গোছল করে খাবার খাওয়ার সময় মা বলল আজ মিমের বাড়ি থেকে লোক আসবে মানে তোর ফুফুরা  কোথাও যাবিনা আর রেডি হয়ে থাকিস ৷
তারপর ফুফুর বাড়ি থেকে সবাই চলে আসল ৷
কিছুক্ষন কথা বলে চলে আসলাম ফুফুর মানে শশুর বাড়ি  আমি আর মিম ঘরে রেস্ট নিতেছি  তখন বেশ কয়েকটা সুন্দরি মেয়ে প্রবেশ করল  কিন্তু ভাল করে খেয়াল করে দেখলাম সবাই মুখোস পড়ে এসেছে  বুঝলেন না তাই না আসুন বুঝিয়ে বলি
 সবাই মুখে মেকাপ করছে??? ৷ কেউ আটা মাখছে, কেউ ময়দা, কেউ সুজি মাখছে, আবার কেউ বেশম মাখছে ৷

তারপর সাবার সাথে মজা করছি কেউ কেউ আবার ফাজলামি করছে ৷ 
তা দেখে মিম একেবারে রেগে বেগুন ভাজা অবস্থা ৷
তারপর মিম সবাই কে রুম থেকে তাড়িয়ে দিল ৷
আর বলল তুমি ওদের সাথে ওভাবে কথা বলছো কেন ৷
 আরে আমি কখন বলছি ওরাই তো আগে এসে বলল ৷
 তাই তুমিও ওদের সাথে সারা দেবে ৷
ওই তুমি আমার ওপর আবার বউয়ের অধিকার ফলাতে আস না ৷
কোন টা ভাল কোনটা মন্দ আমি সব ভালভাবে বুঝি ৷
তখন মিমের মুখটা মলিন হয়ে গেল আর রুম থেকে বেড়িয়ে গেল ৷ 
আর সারাদিন আমার সামনে আসলনা ৷

কিন্তু আমি মিম কে এক মূহুর্ত না দেখে থাকতে পারছিনা ৷
মিম কি বোঝোনা আমিও ওকে ভালবাসি ৷ মিম যদি আমার চোখের দিকে ভাল ভাবে তাকিয়ে দেখত তাহলে দেখতে পারত ৷ মিম কে আমি কত ভালবাসি ৷ তারপর রাতে ছাদে উঠে দেখি মিম একা দাড়িয়ে কান্না করছে ৷ আমি সেখানে গেলাম ৷ তার চোখে পানি দেখে আমার বুকের মাঝে অদ্ভুদ এক ব্যাথা টের পেলাম ৷

চলবে…
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url