ক্ষমা এবং মা || তিতিশ্মা মুসাররাত কুহু

লামহা কাঁদতে কাঁদতে এসে আমাকে বল্লো,আপু একবার ফিজিক্যাল রিলেশন করলেই কি বাচ্চা হয়ে যায়?
কথা টা শুনেই চমকে উঠলাম।
ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে লামহা।
-এসব কথা কেন বলছিস?কি হয়েছে?
-আপু আদিল না আমাকে জোড় করে...
কথাটা বলেই লামহা কেঁদে ফেল্লো।
-আদিল কি তোকে জোড় করে ওর সাথে নিয়ে গিয়েছিলো?
-না,
-তুই নিজে থেকে গিয়েছিলি?
-হুম।
-তাহলে দোষ তো ওর একার না,তোরও আছে।
-আপু আমি ওকে ভালবাসি।ওকে বিশ্বাস করি।
ও বলেছিলো ও আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে।কিন্তু হঠাৎ করেই রাস্তায় গিয়ে বলে ওর এক বন্ধু ওদের বাসায় দাওয়াত দিয়েছে।
না গেলে রাগ করবে।
তাই আমি গিয়েছি।কিন্তু ও আমার ভালবাসার সুযোগ নিয়ে আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে।
-দুই দিনের পরিচয়ে ছেলেটাকে বিশ্বাস করতে পারলি।আর যারা তোকে জন্ম দিলো,এত বড় করলো,১৭ বছর লালন পালন করলো তাদের এখনো বিশ্বাস করতে পারিস নি যে তারা সময় হলে তোর জন্য ঠিকই একজন ভালো এবং সঠিক পাত্র নির্ধারণ করবেন এবং তোকে তার হাতে তুলে দিবেন।
কি দরকার ছিলো এই টুকু বয়সে প্রেম ভালবাসার?
এই ঘটনার কথা তোর বাবা মা জানলে কতটা কষ্ট পাবেন ভেবে দেখেছিস?
-আপু আমার ভুল হয়ে গেছে।এখন আমি কি করবো আমাকে বলে দাও।আমি তো কোন দিনও নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা।
-তুই বাসায় গিয়ে সোজা তোর আম্মুর কাছে যাবি।আর গিয়ে সব কিছু খুলে তাকে বলবি,তার কাছে ক্ষমা চাইবি।
-আম্মু আমাকে মেরেই ফেলবে।
-কিচ্ছু করবেনা।হয়তো রেগে গিয়ে দুই চার কথা শোনাতে পারে।
তবে সে যা বলবে এবং করবে তোর ভালোর জন্য করবে।
মায়ের চেয়ে আপন দুনিয়ায় কেউ নেই।
মায়ের মত বেস্ট ফ্রেন্ড পৃথিবীতে কেউ নেই।
এর পর থেকে যেকোন কথা মায়ের সাথে শেয়ার করবি।
যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে হলে মায়ের সাথে পরামর্শ করবি।
আর যে ছেলে বিয়ের আগে তোর সাথে এমন খারাপ আচরণ করেছে,সে তোর মন কে ভালবাসেনা।তোর শরীর টাকে ভালবাসে।
দেহের ভালবাসা খানিক সময়ের।আর মনের ভালবাসা সারাজীবনের।
দেহের ভালবাসাই যদি ভালবাসা হতো।
তাহলে ৭০ বছরের বুড়ো বুড়ি এক সাথে এক ছাদের নিচে আমৃত্যু বসবাস করতোনা।
লামহা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে ওর মায়ের কাছে চলে গেলো।
আমার বিশ্বাস,মা তার মেয়েকে ক্ষমা করে দিবেন।
কারণ পৃথিবীর কোন মা ই তার সন্তানের বিমুখ হতে পারেননা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url