অবন্তীর সংসার || লেখক:অবন্তী
আবিরের কথায় অবন্তী বেশ চমকে ওঠে বলে
- তুমি? কখন এলে?
-এইতো মাত্র। যেইটা জিজ্ঞেস করলাম উত্তর দিচ্ছোনা যে?
অবন্তী আবিরকে দেখে ভালোই বুঝতে পারছে সে বেশ চিন্তিত। তাই অবন্তী কথা না বাড়িয়ে বললো
-হ্যাঁ, ঠিক চলে যাবে।
আবির যেনো এইবার হাফ ছেড়ে ওয়াসরুমের দিকে পা বাড়ালো...
আর অবন্তী ডুব দিলো অতীতে...
২ বছর হলো আবির আর অবন্তীর বিয়ে হয়েছে। বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবার তাদের।হঠাৎ যেনো সব এলোমেলো হয়ে গেলো,অবন্তীর শশুর মোঃ আফজাল চৌধুরি যখন হঠাৎ স্টোক করে প্যারালাইজড হয়ে পরলেন.. আবিরেরও তখন নতুন চাকরি.. এককালিন অনেক দিন ছুটি কাটানোতে চাকরীটা আবিরকে হারাতে হলো আর শেষ পর্যন্ত বাবাকেও...
দীর্ঘসময় পেরোনোর পরও আবির কোনো চাকরী জোগার করতে পারলো না যার ফলশ্রুতিতে পরিবারে অভাবের কড়াল ছায়া ভর করলো। এমতাবস্থায় অবন্তী তার বাবার কাছ থেকে সাহায্য নিতে চাইলে আবিরের উত্তর
.
.
-অবন্তী,একটু কষ্ট করতে পারবে না আমার জন্য? এভাবে ছোট করে দিবে তোমার পরিবারের কাছে?
-এতে ছোট করার কি আছে আবির?
-আছে অবন্তী.. অনেক কিছু আছে। তুমি শুধু একটু কষ্ট করো আমার জন্য, বেশিদিন এই দুঃখটা থাকবে না... দেখে নিও!!!
অবন্তী আর এক মুহূর্ত দেরি না করে আবিরের বুকে ঝাপিয়ে পরে আর বলে..
- সব পারবো আবির,,, সব!!! শুধু তুমি পাশে থাকলেই হবে।
.
.
কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই আবির এসে অবন্তীকে ডাকে
-অবন্তী? কি হলো কখন থেকে ডাকছি সাড়া দিচ্ছো না যে?
-এএ....হহহ্যাঁ বলো
- কি ভাবছো?
- তোমার ইন্টার্ভিউ কেমন হলো?
-হুম ভালো,তবে এইবারও মনে হয় ঘুষের প্রসঙ্গটা আসবে। বুঝতে পারছি না কি হবে।
-আচ্ছা শোনো,আজ তোমার প্রিয় পাবদা মাছ রান্না করেছি।চলো,খাবে চলো।
.
রাতের খাবার শেষ করে অবন্তীর শাশুরি রেহনুমা বেগম বললেন
-বাবা আবির,পিঠের ব্যাথাটা বেড়েছে যদি একটু মালিশ এনে দিতি
-না মা তোমার ঔষুধের প্রয়োজন, মালিশ দিয়ে কিছু হবে না।
-কিন্তু বাবা!!!
-তুমি চিন্তা করোনা মা!!একটা ব্যবস্থা হবেই।
.
.
পরদিন সকালে আবির তার নিত্যদিনের কাজে অর্থাৎ ইন্টার্ভিউ দিতে চলে যায়..কিন্তু সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি...
"ঘুষ চাই"
পথে হেটে বাসায় ফেরার পথে আবির দেখলো একজন ভদ্রলোক তার জিনিসপত্র গুলো ৪ তলায় তোলা নিয়ে রিকশাওয়ালার সাথে কথা কাটাকাটি করছে..
আবির এগিয়ে গিয়ে বললো
-চাচা!! কিছু মনে না করলে আমি আপনার সাহায্য..
চলবে....