Breaking News

সংসার । পর্ব-০৩

অনেকটা অবাক হলো আজকের যুগের একজন আধুনিকা মেয়ে তিনি বটে। অবশ্য তার পোষকে বুঝা যাচ্ছা এতো ছোট জামা পড়ছে মনে হয় কোনো ছেলেকে যৌন শুরশুরি দেওয়ার জন্য পড়েছে।

মেয়েটা বয়সে ২৪ ২৫ হবে আর ভাবখানা নিয়ে আছে ১২ ১৩ বছরের মেয়ের মতো। আয়মন ওই মেয়েটার দিকে এগিয়ে গেলো মুনতাহা ও আয়মনের পিছুই পিছুই গেলো। আয়মন কে হাসিমুখে মেয়েটি বললো-আমি তোমার উপর রাগ করেছি বেবি। তুমি আমার একটা ফোন ও রিসিভ করোনি।

সরি আসলে আমি তোমায় কিছুই বলতে চাই। না আমি কিছুই শুনতে চাই না না। আয়মন আর মেয়েটির মাঝে কথা হচ্ছে। মেয়েটার কথা শুনে মুনতাহার বড্ড বিরক্ত লাগছে। এতো ন্যাকামো করতে পারে মেয়েটা বলার বাহিরে। একে মিস্টার হাজবেন্ড কিভাবে সহ্য করে এ তো পুড়া ঝান্ডু বাম।

মেয়েটার সাথে আয়মন কথার এক পর্যায় বললো আয়িশা ও মুনতাহা। মুনতাহা ও আয়িশা।আয়িশা নাম শুনে মুনতাহার বুঝতে বাকি নেই যে মেয়েটি কে। আসলে আগে সন্দেহ হয়েছিলো মেয়েটি যে পরিমান থাকে বেবি বলেছে যে কোনো সাধারণ মানুষ ও বুঝে যাবে এদের মধ্য রিলেশন কি?কফির কাপে চুমুক দিয়ে মেয়েটি অনেকবার মুনতাহার দিকে তাকলো মনে হয় কিছুই বলবে কিন্তু বলছে না।

মুনতাহার বিরক্ত লাগছে তার স্বামী তার কোনো অধিকার নেই অথচ আর একটা মেয়ে তার সামনে তার স্বামীর সাথে গা ঘেসাঘেসি করে বসে আছে। মেয়েটা পারলে ওনার কোলে এসে বসবে মনে হয়।

দেখো মিস মুনতাহা আমি আয়মন কে ৭ মাস থেকে ভালোবাসি আর আমারা বিয়ে করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভাগ্যক্রমে তোমার সাথে বিয়ে টা হয়ে গেছে কিন্তু আমার আয়মন আমারি ছিলো থাকবে।মেয়েটার কথা শুনে মুনতাহা মিষ্টি হেসে বলো। আপু কারো ভালোবাসা কখনো জোর করে পাওয়া যায় না। আর যার মনে অন্য কারো জন্য ভালোবাসা থাকে তার মনে তো আরো না।

মুনতাহার কথায় আয়িশা একটু অখুশি হলো তার মনে হলো মুনতাহার অনেক অহংকার। সে অনেক ভাব নিয়ে কথা গুলো তাকে বলছে না শুনাচ্ছে। আয়মন চুপচাপ তাদের কথা শুনছে। আয়মনের সবথেকে মুনতাহার কথা গুলো ভালো লাগছে তার কথা শুধু তার শুনতে ইচ্ছে করছে।মুনতাহা আবার বললোদেখুন আমার মেয়ে মিষ্টি ওর জন্য এই বিয়ে টা করা এই বিয়ে করে হয়তো স্বামী ভালোবাসা পাইনি আর পাবো না কিন্তু আমি গর্ব করে বলতে পারি মিষ্টি আমার মেয়ে ওকে পেয়ে দুনিয়ার আর কোনো সুখ আমার বোধয় লাগবে না।

মিষ্টির ভালো জন্য আমি ওনাকে ডিভোর্স দিতে পারবো না। আপনি ভাববেন না আমি কোনো নাটক সাজাচ্ছি আমি আপনাদের বিয়ে করার পারমিশন দিবো।আয়িশা মুনতাহার কথা শুনে অনেকটা ক্ষেপে যায়। এখন তার পারমিশন এ সব করতে হবে নাকি তাকে।মুনতাহার কথায় আয়মনের একটু খারাপ লাগলো তার আর কোনো সুখ কাম্য না। হুট করে একটা খারাপ লাগা কাজ করছে তার মধ্য কিন্তু তা কেনো কিছুই সে ভালো করে বুঝে উঠতে পারছে না।

আয়িশা তার ন্যাকামো শেষ করে চলে যাচ্ছে তাই মুনতাহা আর আয়মন কে উঠতে হলো।আয়িশা চলে যাওয়াতে আয়মন হাফ ছেড়ে বাঁচলো মুনতাহা কেমন জানি সন্দেহ হলো কিন্তু তেমন কোনো কিছুই জিজ্ঞেস করলো না আয়মন কে উল্টে এমন ভাব নিলো তার কোনো যায় আসে না। —-

মুনতাহা আমাদের তো এখানে অনেক লেট হলো আর এক ঘন্টা পর মিষ্টি এর স্কুল ছুটি দিবে চলো তার আগে তোমায় একটু ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।আয়মন ভেবেছিলো এক কথায় মুনতাহা খুশি হয়ে যাবে। কিন্তু সে আশা করেনি মুনতাহা তাকে বলবে না আমরা এখন স্কুলের সামনে গিয়ে ওয়েট করবো মিষ্টির স্কুল শেষে মিষ্টি কে নিয়ে ঘুরবো। আমার দুনিয়া ওআয়মন কিছুই না বলে মুনতাহাকে নিয়ে মিষ্টির স্কুলের দিকে গেলো। মিষ্টির জন্য ওরা অপেক্ষা করছে। ১ ঘন্টা ধরে আয়মন রাগ করে আছে মুনতাহার উপর।

সে চাচ্ছিলো মুনতাহা তার রাগ ভাঙ্গিয়ে দিক কিন্তু সে তা কেনো চাচ্ছিলো তা তাকে বড্ড ভাবাছিলো।প্রায় ১ ঘন্টা প্রহর শেষে মিষ্টি স্কুল থেকে বাহিরে আসলো। আর আসতে মুনতাহা জড়িয়ে ধরলোআমার পাখি এক মিনিট না থাকলে আমার ভালো লাগে না। আমার কলিজা টা।—আমার সোনা মাম্মা আমারো না।আয়মন গাড়ি চালাচ্ছে আর মুনতাহা মিষ্টির সাথে দুষ্টামি তে মেতে আছে।

খুব সহজে একটা বাচ্চার সাথে সে মিশে গেছে এতো আপন করে নিয়েছে মিষ্টিকে। তাদের ভালোবাসা ভাগ বসাতে ইচ্ছা হচ্ছে আয়মনের। হুট করে রাস্তা মাঝে গাড়ি থামাতে বললো মুনতাহা আয়মন অনেক অবাক হলো কিন্তু গাড়ি থামিয়ে বললো। কি হলো?? কুলফি আমি আজ মিষ্টিকে কুলফি খাওয়াবো।মিষ্টি আর মুনতাহা মজা করে কুলফি খাচ্ছে কিন্তু একবারো আয়মন কে বললো না মুনতাহা।

মিষ্টি তো বাচ্চা সে তো আর বাচ্চা না।আয়িশা এর সাথে দেখা করার পর থেকে কেন জানি অন্য অনুভূতি কাজ করছে মুনতাহার উপর।যেখানে জেলাস ফিল করার কথা মুনতাহার সেখানে জেলাস ফিল করছে আয়মন। কিছুই বুঝতে পারছে না সে।মুনতাহা বাসায় এসে মিষ্টিকে নিয়ে চলে গেলো আর আয়মন গাড়িতে থেকো গেলো।

মুনতাহার এই আচারণ আয়মনের একদম ভালো লাগছে না।গাড়ি পার্ক করে সে ও বাসার ভিতরে গেলো।ফ্রেশ হয়ে সবাই দুপুরের খাবারের জন্য ডাইনিং টেবিলে উপস্থিত হলো। টুলি বাসার কাজের মেয়ে সবার জন্য রান্না করে খাবার টেবিলে লাগিয়ে দিয়েছে। মিস সালেহা বেগম খুশিতে গদ গদ হয়ে বললো আজ আমার সংসার টা পরিপূর্ণ হয়েছে ছেলে বউ নাতিন এর সাথে মজা করে খাবো। এখন আমি মরে গেলেও আফসোস থাকবে না।—

মা আপনাকে তো এখনো ৫০ বছর বাঁচতে হবে কারন এখনো তো আপনি কিছুই দেখেননি।—হ্যা দাদীমা খাবার খাওয়ার পর আমরা গেম খেলবো তাই না পাপ্পা।—হুম পরি তাই তো।সালেহা বেগম বড় তৃপ্তি এর সাথে খাচ্ছেন এই তৃপ্তি শুধু খাবার ভালো হয়েছে তার জন্য না এই তৃপ্তি তার চোখের সামনে এতো সুন্দর হাসি উজ্জ্বল এ ভরে উঠা তার সংসার দেখে।সবাই ড্রাইনিং রুমে বসে আছে।

কারন মুনতাহা আর মিষ্টি বলেছে সবাই বসে লুডু খেলবে।মিস সালেহা বেগম ও ওদের সাথে মেতে উঠেছে আন্দনে।সবাই গোল হয়ে বসে পড়েছে খেলার জন্য। মুনতাহা ভাবছে তার এই সংসার জানি এভাবে সাজানো গুচ্ছানো থাকো। প্রত্যক টা মানুষের মুখে এমন হাসি রেখা ফূটে থাকে। এমন সময় কোলিংবেল বেজে উঠলো। আচমকা এক ভয়ে মুনতাহার মন কেপে উঠলো।

চলবে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com