সাইবার ক্রাইম | পর্ব-০২

মাহফুজ, হ্যা স্যার যেভাবে রাগ করেছিলেন তাতে তো মাথায় মনে হয় আগুন জ্বলছে,কোল্ড মিল্কসেক খেলে মাথাটা ঠান্ডা হবে,
মাহফুজের কথা শুনে সবাই হেসে দেয়,আর হাসান সাহেবও হাসতে হাসতে মিল্কসেকটা হাতে নেয়……
মাহফুজ, তো স্যার আমার কাজ তো শেষ হয়ে গিয়েছে,আমি এবার বাসায় চলে যাবো,আজলে মনে করলাম একটু বেশি করে ঘুমিয়ে নিবো,কিন্তু এই ঘটনা শুনে আর শুয়ে থাকতে পারলাম না,তাছাড়া দেশের বাইরে থেকে এসে বাবা মায়ের সাথে সময় কাটাতে পারি নাই,
হাসান সাহেব, ওহহহ সেটা এমনি বললেই পারতে,এতো কিছু বলার দরকার ছিলো না,তুমি সব দিক থেকেই স্বাধীন,যেটাই করবে না কেন,আমরা সবসময় সাপোর্ট দিবো। যাও বাসায় চলে যাও।
মাহফুজ, ওকে স্যার প্রয়োজন হলে আবার তাক দিবেন,নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো,
তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম,অফিসে আসার আগে আম্মু বলেছিলো যে বিরিয়ানি রান্না করছে,তাই পেটের ভিতরে ইদুর লাফালাফি করছে,
কিছুক্ষন পরে মাহফুজ বাসায় এসে যায়,দরজায় কলিংবেল দিতেই দরজা খুলে যায়,মাহফুজ তাকিয়ে দেখে সামনে নিশি দাড়িয়ে আছে,
নিশি মাহফুজের ছোট বোন,
নিশি, কিরে বাদর…?
তোর কি কাজ শেষ হলো..?
মাহফুজ, হা কাজ তো শেষ হয়েছে,বাট আমাকে এই বাদর বলা বন্ধ করবি কবে..? বলতে পারবি আমাকে..?
নিশি, কিছুক্ষন কি যেন ভাবলো,হ্যা ভাইয়া বন্ধ করতে পারবো,অনেক ভেবে দেখলাম,তুই মরে যাওয়ার পরে বন্ধ করবো?
মাহফুজ, ওরে পেতনি মায়া তোরে আজকে খাইছি,
মাহফুজ নিশিকে তাড়া করলো,নিশি অনেক দৌড়ে হাপিয়ে গেছে,শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না পেয়ে মায়ের পিছনে গিয়ে লুকালো,
নিশি, আম্মু এই তোমার বান্দর পোলাডারে থামাও,আমারে মারতে আসছে,আমি কিছুই করি নাই,
আম্মু, হ্যা,,,হইছে…! তুই যদি কিছু না করিস,তাহলে মাহফুজ তোকে তাড়া করার কোনো প্রশ্নই আসে না,তুই নিশ্চয় ওকে কিছু বলেছিস..?
নিশি, না আম্মু তওবা তওবা,ওই বান্দর টাকে আমি কিছুই বলি নাই,শুধু শুধু আমাকে তাড়া করছে,
মাহফুজ, আম্মু এই যে কেবল বান্দর পোলা বললো আমাকে,আমি কোন দিক থেকে বান্দরের মতো দেখতে তুমিই বলো..?
আম্মু, এই তোদের যা ইচ্ছা হয় তাই কর,আমি আজকে নিশিকে রক্ষা করছি না,মাহফুজ তুই ওকে নিয়ে যা তো..?
মাহফুজ, এই তো সুযোগ আজকে পাইছি,শয়তানি একটা হাসি দিয়ে নিশিকে নিয়ে সোফা রুমে চলে আসলাম,ওই পেতনি এবার আমার থেকে তোকে কে বাচাবে..?
নিশি, দেখো ভাইয়া এখন আর মারামারি করবো না,তুমি না আমার ভালো ভাইয়া,এখন এসব আর ভালো লাগছে না,তুমি কতোদিন পরে আসলে,মিষ্টি কোনো কথা না বলে মারছো আমাকে,
মাহফুজ, ওহহ সরি,ইয়ে মানে একটু বেশিও করে ফেলছি,তো বল তোর দিনকাল কেমন কাটছে,
নিশি, এতোদিন ভালো কাটছিলো না,বাট এখন থেকে ভালো কাটবে,তুমি না থাকলে কেমন একা একা লাগে,মন একটুও টিকতে চাই না,
মাহফুজ, আচ্ছা এখন থেকে তোর মনকে টিকিয়ে রাখবো,তোর সেই চকলেট আইসক্রিম গুলো এখন থেকে দেখতে পারবি,তো এখন খুশি তো..?
নিশি, হুমমম আমি খুব খুশি,ভাইয়া তোমার কাছে এখন একটা ছোট আবদার করবো,আমার আবদার টা পূরন করবে ভাইয়া..?
মাহফুজ, হ্যা বল তোর কি আবদার..?আমি পূরন করে দিবো।
নিশি, ভাইয়া আজকে আমাকে কলেজে নিয়ে চল,অনেকদিন হলো তোমার সাথে যায় না,
মাহফুজ, আচ্ছা তুই খেয়ে রেডি হয়ে নে,আমি তোকে নিয়ে যাচ্ছি,একটু পরে নিশি রেডি হয়ে আসে,ওকে নিাে কলপজের দিকে রওনা দিলাম,কলেজটা বেশি দূরে না,তাই যেতে আর দেরি হলো না,
কলেজে ঢুকেই দেখি একটা বড় বিল্ডিংয়ের পাশে লোকজন জড়ো হয়ে আছে,আর সবাই উপরে তাকিয়ে হায়হুতাশ করছে,আনি তাড়াতাড়ি নিশিকে নিয়ে সেখানে গেলাম,
উপরের দিকে তাকাতেই কলিজার পানি শুকিয়ে গেলো,একটা মেয়ে বিল্ডিংয়ের শেষ মাতায় দাড়িয়ে আছে,সবাই বলছে সুইসাইড করার জন্য গিয়েছে,
নিশি মেয়েটাকে দেখে কেদে ফেলে,
–ভাইয়া তুমি সীমাকে বাচিয়ে দাও,,সীমা আমার একমাত্র বেষ্টফ্রেন্ড,সীমা আত্মহত্যা করলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না,ভাইয়া সীমা কোনো কারন ছাড়া এরকম করতে পারে না,প্লিজ তুমি ওকে বাচিয়ে নাও,
মাহফুজ, নিশির কথা শুনে আমার আর মন টিকলো না,নিশিকে দাড় করিয়ে রেখে দৌড়ে বিল্তিংয়ে উঠতে লাগলাম,
নিচের লোকেরা বারবার সীমাকে নেমে আসতে বলছে,আর পিছিয়ে যেতে বলছে,কিন্তু সীমা কোনো কথায় শুনছে না,এদিকে মাহফুজ লিফট দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ছাদে পৌছে যায়,মাহফুজের পায়ের শব্দ পেয়ে সীমা পিছন ফিরে তাকায়,
সীমা, এই কে আপনি..? এখানে কি জন্য এসেছেন..? চলে যান এখান থেকে,আমি আর নিজেকে বাচিয়ে রাখতে চায় না,এখান থেকে এক্ষুনি চলে না গেলে আমি ঝাপ দিয়ে দিবো,
মাহফুজ, এই পাগলি মেয়ে দেখো এরকম করো না,তুমি আমাকে বলো কি হয়েছে,আমি তোমার সমস্যা ঠিক করে দিবো,দেখো তুমি ভুল পথে আগাচ্ছো,এটা তোমার আসল পথ নয়,তোমার সামনে আরো কতো উজ্জল ভবিষ্যত রয়েছে,তাছাড়া তোমার বেষ্টফ্রেন্ড নিশি তোমার জন্য নিচে কান্না করছে,দেখো তুমি এই কাজটা করলে নিশি খুব কষ্ট পাবে,
কথা বলতে বলতে সীমার দিকে এগোতে থাকলাম,
সীমা, আমার সামনে উজ্জল ভবিষ্যত আছে,এ কথা বপনাকে কে বললো..? আমার সামনের উজ্জল ভবিষ্যত কিছুক্ষনের মধ্যে নেটে ছড়িয়ে পরবে,যা আমার জীবনে কলংক বয়ে আনবে,তাছাড়া কিছুই না,আর আমার শরীরের ভিডিও নেটে ছড়ানোর আগেই নিজেকে শেষ করে ফেলবো,যাতে আমার বাকিটা জীবনে কালো ছায়া না নেমে আসে,
কথা গুলো বলেই মেয়েটা ছাদ থেকে ঝাপ দেয়,আর নিচে থাকা লোকজনের হুস উড়ে যায়…..!
চলবে…….
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url