Breaking News

কালো বউ । পর্ব -১৩



(নিজের কেবিনে গিয়ে কপাল কুঁচকে গেলো রুপকের,,,,)
রুপকঃ (রহমান চাচা(পিয়ন) আবার এতো সুন্দর করে সাজানো শিখলো কবে,,,,, যাক ভালো,,,, অন্যপাশে তাকিয়ে থেমে গেলাম,,,,) Hey,,,, who are you,,,and what are you doing here,,,,??
তমসাঃ(সোফার সামনে টি-টেবিলে রাখা কাগজের ফুলগুলো পাশে রেখে দিয়ে সেখানে পিয়ন চাচার আনা গোলাপ ফুল সাজিয়ে রাখছিলাম,,,, এটা রাখা হলেই সব শেষ,,,, এরমধ্যে চেনা গলা শুনে পেছনে তাকালাম,,,,, আরে এটা তো সেই লোকটা যে গাড়ির সামনে থেকে সরিয়েছিলো আর গতকালও দেখা হলো,,, কিন্তু উনি এখানে কী করছেন,,,,??) আপনি,,,,,??
রুপকঃ আমার অফিস,,,, আমার কেবিন আমি থাকবো না তো কে থাকবে,,,??(ভ্রু কুঁচকে,,,) কিন্তু আপনি এখানে কী করছেন,,,,??
তমসাঃ তার মানে আপনি আমার বস,,,,,??
রুপকঃ হুম,,,, আপনি আমার পি.এ,,,,,, কিন্তু আপনি এখানে কী করছিলেন,,,??
তমসাঃ ঐ কিছু না,,,, কেবিনটা গুছিয়ে রাখছিলাম,,,
রুপকঃ গুড,,,, কিছু বলার নিজের কাজ ভালোই বুঝে নিয়েছেন,,,,, বাট আপনার হাতে কী,,,,??
তমসাঃ স্যার ম,,মানে ঐ কাগজের ফুলগুলো মানাচ্ছিলো না তাই তাজা ফুল রাখছিলাম,,,,
রুপকঃ তাজা ফুল রাখছিলেন,,,,, নো প্রবলেম,,,, তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন আমি কেবিনে পা রাখার পূর্বেই যেনো বাসি ফুল সরিয়ে নতুন ফুল রাখা হয় প্রতিদিন,,,,,(নিজের চেয়ারে বসতে বসতে,,,)
তমসাঃ ওকে স্যার,,,,,আর এই কাগজের ফুলগুলো,,,,??
রুপকঃ সহজে কেউ বুঝতে পারে না এগুলো রিয়াল ফুল নয়,,,, আপনি এতো সহজে কীভাবে চিনলেন,,,,??
তমসাঃ মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে দিনদিন,,,, তাই আসল আর নকলের ফারাক বুঝতে পারে না,,,,, তবে আমার প্রকৃতির সাথে গভীর সম্পর্ক,,,, তাই সহজেই চিনতে পেরেছি,,, ফুলগুলো কী করবো স্যার,,,??
রুপকঃ অপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো দাম নেই রুপক মির্জার কাছে,,,, বিনে ফেলে দিন,,,
তমসাঃ (ফুলগুলো বিনে ফেলে দিয়ে স্যারের বিপরীতে টেবিলের সামনে দাড়ালাম,,,,,)
রুপকঃ সিট,,,,,আপনার কাজগুলো বলে দিচ্ছি,,,, এটাই প্রথম আর শেষবার বলা,,,,,,, তিনবার ভুল মাফ করবো আর চতুর্থবারের ভুল হবে হয়তো অফিসের শেষ দিন,,,
তমসাঃ (এতো স্টেক কাট কথা শুনে একটা ঢোক গিললাম ভয়ে,,,)
রুপকঃ এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন করার আগে পড়ে নিয়েছিলেন,,,,??
তমসাঃ নো স্যার,,,,(মাথা নিচু করে,,,)
রুপকঃ পুরোটা পরে নিন,,,(এগ্রিমেন্ট পেপার এগিয়ে দিয়ে,,,)
তমসাঃ (পেপারটা হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলাম,,,, অনেক অনেক রুলস,,,, সব দেখে মাথা ভন ভন করছে,,,কিছু রুলস এমন,,,, এক মিনিট পরে আসলে দশ মিনিট পর যেতে হবে অফিস থেকে,,,, আর আধ ঘন্টা লেট হলে ঐ দিন অনুপস্থিত দেওয়া হবে,,,, আর তার পরবর্তী দিন এক ঘন্টা আগে আসতে হবে,,,, এমন অনেক অনেক রুলস,,,, লাস্ট রুলস দেখে চোখ কপালে,,,, আমি নিজের ইচ্ছেতে জব ছাড়তে পারবো না,,,, কিন্তু কোম্পানি চাইলে যে কোনো সময় আমাকে বের করে দিতে পারবে,,,, নিজের ইচ্ছেতে যেতে চাইলে কোম্পানিকে জরিমানা দিতে হবে পাঁচ লাখ টাকা নাহলে অন্য কোথাও জব নিতে পারবো না,,,, না দেখে সাইন করে অনেক বড় ভুল করেছি,,,)
রুপকঃ কমপ্লিট,,,,??
তমসাঃ জী,,, স্যার,,,,,কিন্তু,,,
রুপকঃ প্রথম তিনটা ভুল মাফ করা হবে,,,, তারপর শাস্তি পেতে হবে,,,, আর শাস্তি হিসেবে ডিসমিসড পর্যন্ত হতে পারেন,,,, বুঝতে পেরেছেন মিস তাসমিয়া ইসলাম তমসা,,,,??
তমসাঃ জী স্যার,,,,
রুপকঃ এই ফাইলগুলো চেক করুন,,,, না বুঝলে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন,,,,আর দুপুর বারোটায় একটা মিটিং আছে,,,, আপনি আমার সাথে যাচ্ছেন,,,, তার আগে ফাইলগুলো চেক করে শেষ করুন,,, আর আজকের পর সব মিটিংয়ের বিষয়ে আপনাকে জানানো হবে আর আপনি ঠিক সময়ে আমাকে মনে করিয়ে দিবেন,,,,
তমসাঃ ঠিক আছে স্যার,,,,
রুপকঃ এখন নিজের ডেস্কে জান আর ফাইলগুলো দেখুন,,,, এগুলো আজকে মিটিংয়ের ফাইল,,, সো বি কেয়ার ফুল,,,৷
তমসাঃ ওকে স্যার,,(ফাইলগুলো নিয়ে নিজের ডেস্কে চলে এলাম,,,, মনে হচ্ছে জবটা অনেক কঠিন,,,, ভয় করছে শেষ পর্যন্ত মানিয়ে নিতে পারবো তো,,,, এখন এই জব চলে গেলে সাথে মানসম্মানও যাবে,,, আর জবও পাবো না,,,, না না আমাকে পারতে হবে,,,, ফাইলগুলো খোলে দেখে বুঝার চেষ্টা করলাম,,,, কিন্তু ফাইল দেখে মাথা ভনভন করছে,,, মাথায় ঢুকছে না কিছুই,,,, স্যারের কাছে জিজ্ঞেস করবো,,,,?? যদি কিছু বলে,,,, না না কী বলবে,,, উনি তো বলেছেন বুঝতে না পারলে জিজ্ঞেস করতে,,,,, কেবিনে সামনে চলে গেলাম) May i come in,,,sir??
রুপকঃ come in,,,,any problem,,,??
তমসাঃ স্যার,,,, আ,,আসলে,,,, ম,,মানে,,
রুপকঃ ক্লিয়ারলি বলুন,,, কী প্রবলেম,,,?? মানে মানে করা আমার পছন্দ নয়,,,(বিরক্তি গলায়)
তমসাঃ স্যার আমি এই ফাইলের কিছুই বুঝতে পারছি না,,,,(একদমে)
(রুপকের ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফোটে উঠলো,,, যার মানে তমসা বুঝতে পারলো না,,,)
রোদঃ( সকাল থেকে ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম,,,,, গতরাতে সিনহাকে নিয়ে অনেক সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম,,,, এখন প্রায় কানাডা ফেরত যাওয়ার কথা ভুলেই গিয়েছি,,,, কিন্তু সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে গিয়ে মুডটাই নষ্ট হয়ে গেছে,,,, বাবা এক সপ্তাহের জন্য কক্সবাজার যেতে বলছে বিজনেসের কাজে আর সেখানে থেকে ফেরার এক সপ্তাহ পরই আমার কানাডা যাওয়ার ফ্লাইট,,,, হাতে আর পনেরো দিন সময় আছে,,, তার মধ্যে এক সপ্তাহ অন্য শহরে থাকতে হবে,,,বাবাকে অনেক রিকোয়েস্ট করার পরও শুনলেন না,,,, আমাকেই নাকি যেতে হবে,,,, মাও বলেছে কিন্তু শুনেনি,,,,,,, বৃষ্টিকে ভার্সিটি নামিয়ে দিতে এসেছি,,,, বৃষ্টি পাশে বসে আছে আর আমি গম্ভীর হয়ে ড্রাইভ করছি,,,)
বৃষ্টিঃ ভাইয়া,,,,
রোদঃ হ্যাঁ বল,,,,
বৃষ্টিঃ মন খাওয়া তোর,,,??
রোদঃ না,,, কেনো,,,??
বৃষ্টিঃ আজ একদম চুপ করে আছিস তাই বললাম,,,,
রোদঃ এমনই,,,,,
বৃষ্টিঃ সিনহাকে ভালোবেসে ফেলেছিস,,,,??
রোদঃ(হঠাৎ বৃষ্টির মুখে এমন কথা শুনে গাড়ি ব্রেক করে নিলার তারপর ওর দিকে তাকালাম,,,) ক,,কী বলছিস,,,??
বৃষ্টিঃ আমি তোকে অনেক ভালো করে চিনি ভাইয়া,,,, আমি জানি আমি যেটা বলেছি সেটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট সত্যি,,,, ঠিক কিনা,,,??
রোদঃ (আবার গাড়ি স্টার্ট দিলাম,,,, কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলাম তারপর উত্তর দিলাম) হুম,,,,,
বৃষ্টিঃ আমি জানতাম,,,,, আমি শুধু একটা হেল্প করতে পারি,,,,
রোদঃ কী,,,,??(উৎসাহ নিয়ে সিনহার দিকে তাকিয়ে)
বৃষ্টিঃ ওর ফোন নাম্বার আর ফেসবুক আইডি তোকে দিতে পারি,,,,
রোদঃ আমার লক্ষী বোন,,,, বল তোর কী চাই,,,??
বৃষ্টিঃ সময় হলে চেয়ে নিবো,,,,(রহস্যময় হাঁসি দিয়ে)
রোদঃ ঠিক আছে,,,এখন নাম্বার আর আইডি দে,,,
বৃষ্টিঃ(ফোন বের করে সিনহার নাম্বার আর আইডি ভাইয়াকে দিলাম,,,, এর মধ্যে ভার্সিটিও পৌঁছে গেলাম,,,,) আজকে সিনহাকে সম্পূর্ণ ইগনোর করবি,,,
রোদঃ কেনো,,,??
বৃষ্টিঃ যা বললাম তাই করবি,,,, আর এখন গাড়ি থেকেই নামবি না,,,
রোদঃ ওকে,,,,,
বৃষ্টিঃ(সিনহাকে ফোন দিলাম,,,,) কোথায় তুই,,,??
সিনহাঃ এইতো রিকশায়,,, প্রায় পৌঁছে গেছি,,,, এই দিকে তাকা,,,, তোকে আমি দেখতে পেয়েছি,,,,
বৃষ্টিঃ (সামনে তাকিয়ে দেখি সিনহা রিকশায় বসে হাত নাড়ছে,,,, ও এসে আমার সামনে নামলো,,,)
সিনহাঃ চল,,,,
বৃষ্টিঃ হ্যাঁ চল,,, ভাইয়া আসছি,,, ভালো থাকিস আর নিজের খেয়াল রাখিস,,,,
রোদঃ তুইও নিজের খেয়াল রাখিস,,,, আল্লাহ হাফেজ,,,
সিনহাঃ(কী হলো এটা,,,, আজ মনে হচ্ছে উনি আমাকে দেখেইনি,,,, বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো,,,) এমনভাবে কথা বলছিলি যেনো আবার বহু বছর পরে দেখা হবে,,,,,,,
বৃষ্টিঃ বছর না হলেও এক সপ্তাহের মধ্যে আর দেখা হচ্ছে না,,
সিনহাঃ কেনো,,,,,??
বৃষ্টিঃ বিজনেসের কাজে কক্সবাজার যাচ্ছে আর সেখানে থেকে এসেই কানাডা চলে যাবে,,,,
সিনহাঃ(উনার চলে যাওয়ার কথা শুনে কেনো যেনো বুকের ভিতর চিনচিন করছে,,, আর দেখতে পাবো না,,,, ভাবতেই বুকের ভিতর ফাঁকা ফাঁকা লাগছে,,,, এমন কেনো লাগছে,,,,)
বৃষ্টিঃ তোর আবার কী হলো,,,, তুই তো খুশি ভাইয়া আর তোর সাথে লাগতে আসবে না,,,,
সিনহাঃ হ্যাঁ খুশি যা,,,, এখন ভেতরে চল,,,,(বৃষ্টি আর আমি ক্লাসে গিয়ে বসলাম,,,,, কিন্তু ক্লাসে মন দিতে পারছি না,,,,, বারবার রোদ ভাইয়ার সাথে দেখা হওয়া,,,, ঝগড়া,,,, কথা বলা,,,, উনাদের বাড়িতে কাটানো সেসব মুহূর্ত চোখের সামনে ভেসে উঠছে,,,, আজ বৃষ্টির কী হয়েছে বুঝতে পারছি না,,, যে ছেলের সাথে কথা পর্যন্ত বলতো না আজ তার সাথে হাসাহাসি করছে,,, ভাইয়া মানে স্যার ক্লাসে আসার পর থেকে চোখের ইশারায় কথা বলছে সেই ছেলের সাথে,,,)
তানভীরঃ (এই মেয়ের আজ কী হলো,,,?? একবারও আমার দিকে তাকালোও না,,,, বরং ঐ লাফাঙ্গা খারাপ ছেলের সাথে চোখাচোখি করছে,,,, এতে আমার কেনো খারাপ লাগছে,,,, ও আমার দিকে না তাকাক সেটাই তো চাইতাম,,,, তাহলে এখন খারাপ কেনো লাগছে,,,,??) বৃষ্টি,,,,,
বৃষ্টিঃ (শুনেও না শোনার ভান করে রকির সাথে ইশারায় কথা বলতে লাগলাম,,,,, দেখবে আর জ্বলবে লুচির মতো ফুলবে,,,)
তানভীরঃ মিস বৃষ্টি,,,,, (রেগে অনেকটা জোরে)
চলবে,,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com