সত্য ঘটনা অবলম্বনে গল্পঃ খেলাঘর । ৩য় পর্ব


আজ প্রায় বছর পার হতে চললো…স্কুল,টিউশনি,কোচিং সব মিলিয়ে
আলহামদুলিল্লাহ ভালোই দিন চলছে…
এর মধ্যে কাকলি কনসিভ করেছে…
আট মাস চলছে প্রেগন্যন্সির…
দেখা হয় মাঝে মধ্যে…তবে আমি
একটু দূরত্ব বজায় রাখি ওর থেকে…
কখন কি বলে ফেলবে মানুষ তাতো
বলা যায়না…
তবে স্কুলে আমার সময় গুলো বেশ
ভালো কাটে..
বাবা মা বিয়ের কথা কয়েক বার বলার
চেষ্টা করেছিল…আমি সাফ সাফ না
বলে দিয়েছি…
আর কোনো বন্ধনে জড়াতে চাই না..
দুনিয়ার নিষ্ঠুরতা আমাকে ভেতর থেকে
শেষ করে দিয়েছে..
স্কুলে ক্লাস করাচ্ছিলাম এর মধ্যে ফোন
বেজে উঠলো.. আননোন নম্বর দেখে ধরলাম না…
সাইলেন্ট করে রেখে দিলাম…
ক্লাস শেষ করে অফিসে গিয়ে গিয়ে
দেখলাম পাখি বসে আছে..
এই মেয়েটাকে দেখলে নিজের কষ্টকে
খুব একটা ফিল হয় না…সিঙ্গেল মাদার হয়ে
একা হাতে ছেলে কে বোরো করছে…
পাখির হাসবেন্ড পাখির সাথে থাকে না…
ছেলে হওয়ার পর থেকেই তারা আলাদা থাকা
শুরু করেছে…স্বামীর বেপরোয়া চলাফেরা আর এক্সট্রা এফেয়ার মেনে নিতে পারে নি…তাই সেও তার সংসার ছেড়েছে…
তবে ডিভোর্স হয়নি তাদের…কেউই ডিভোর্সের
কথা ভাবে নি..ও হয়তো আশায় আছে
কখনো সে একজন ভালো মানুষ হয়ে ফিরবে…
তবে শিশির ভাই পাখিকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসে…হয়তো তার এমন
ভালোবাসা উচিত না..কিন্তু ভালোবাসা
তো আর বলে কয়ে আসে না..আর
পাখিও সে দিকে কোনো
পাত্তা দেয় না…পাখি যখন স্কুলে
থাকে শিশির ভাইয়া তখন অন্তুর সাথে
সময় কাটাতে চলে যায়…
মুখভার দেখেই বুঝে ফেললাম আজও কিছু
একটা হয়েছে…
– এতো কিছু না ভেবে একটা ডিসিশন
নিলেই তো হয়ে যায়…
নিশাত মেডামের কথায় খুব একটা পরিবর্তন আসলো না পাখির মধ্যে..
তবে আমার খুব রাগ হলো…তার
জীবনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য
তাকেই কেন ফোর্স করা হবে…যখন সে
চাইবে সে নিজেই ভেবে নিবে কি করবে
নিজের জীবনের সাথে…আজব জনগণ…
আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই জিজ্ঞাস করলাম,
নিশাত,,,,,কখনো কাউকে ভালোবেসেছো…
– ম্যাডাম জানেন ই তোহ সাদ এর কথা…
আমাদের এনগেজমেন্ট হয়ে আছে…
কয়েক মাস পর বিয়ে…(লাজুক হেসে)
– তাকে যদি এখন অন্য কোনো মেয়ের সাথে
বেড শেয়ার করতে দেখো,,সহ্য করতে পারবে তো…
-সাদ মোটেও ওরকম ছেলে না…(রাগী ভাবে)
-কেউই এটা বিশ্বাস করতে চাই না তার
ভালোবাসার মানুষ তাকে ধোকা দিবে..
প্রতারণা করবে…কিন্তু ফলাফল তোমার
চোখের সামনে…এই মেয়েটাকে দেখো
(পাখির দিকে ইশারা করে) পুরো পৃথিবীর
সাথে লরে গিয়েছিলো ভালোবাসার মানুষটার
জন্য…আর আজ তার জন্যই সে এইখানে বসে তোমাদের মতামত শুনছে তারই জীবন নিয়ে…
বেপারটা হাস্যকর না….তাই কাউকে কিছু বলার আগে চিন্তা করবে তোমার কথা কারো মনে ক্ষত সৃষ্টি করবে কিনা..
-ম্যাডাম আমি এতো কিছু চিন্তা করে কিছু বলি নি..
-আমি জানি,,,সে জন্যই পরের বার চিন্তা
ভাবনা করে বলতে বললাম…
পাখির মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম
না..মেয়েটা যেন অনুভূতি শুন্য হয়ে গেছে..
দীর্ঘশাস ফেলে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন…
ফোন বের করে দেখি অনেকগুলো কল এসেছে..দরকারি মনে করে ব্যাক করলাম..
ওপাশ থেকে হ্যালো বলতেই হাত
পায়ে কাঁপুনি ধরে গেলো…
অস্পষ্টভাবে রাফিন বের হতেই সবাই
চমকে তাকালো…
রাফিনের বিষয়টা সবাই জানে….তাই সবার
মধ্যেই কৌতহল দেখা যাচ্ছে…
– কি বেপার…হটাৎ কি মনে করে কল
দিয়েছেন..আপনার সাথে কোনো কথা
আছে বলে তো মনে হচ্ছে না…
নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রেখে কথা গুলো
বললাম..কিন্তু রাফিনের কোথায় আর নিজেকে
শান্ত রাখতে পারলাম না…
চলবে…
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url