Breaking News

ফৌজদারী কার্যবিধি



★প্রশ্ন নং-০৭ঃনারাজি পিটিশন বলতে আপনি কি বুঝেন?একটি নারাজির দরখাস্ত নিষ্পত্তি করতে ক্ষমতাবান একজন ম্যাজিস্ট্রেট যে সব ব্যবস্হা গ্রহণ করতে পারেন,আলোচনা করুন। ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত ব্যবস্হার বিরুদ্ধে কোন প্রতিকার আছে কি?

★নারাজী পিটিশনঃসংবাদদাতা[Informant] আমলযোগ্য অপরাধ সম্পর্কে থানায় FIR[First Information Report] করে।তারপর তদন্তকারী কর্মকর্তা[Investigating officer] থানায় দায়েরকৃত মামলাটির তদন্ত সম্পন্ন করে।তদন্ত শেষে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩ ধারার বিধান অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র[Charge Sheet] ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দাখিল করেন।আবার যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর চূড়ান্ত রিপোর্ট [Final Report] দাখিল করেন।প্রসিকিউশন/এজাহারকারী চূড়ান্ত রিপোর্ট দ্বারা অসন্তুষ্ট হলে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আপত্তি দাখিল করতে পারেন।এরূপ আপত্তি দাখিলকে নারাজী পিটিশন বলা হয়।প্রসিকিউশন/এজাহারকারী অভিযোগপত্র[Charge Sheet] দ্বারা অসন্তুষ্ট হলেও ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আপত্তি দাখিল করতে পারবেন।

★নারাজী পিটিশন নিষ্পত্তি করার পদ্ধতিঃ
নারাজী পিটিশন পাওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেট নথিপত্র, কেস ডায়েরী ইত্যাদি বিশ্লেষণ নিম্নলিখিত ব্যবস্হা গ্রহণ করতে পারে।যথা-

(১)ফৌজদারী কার্যবিধির ২০০ ধারায় পরীক্ষা করে মামলাটি আমলে নিতে পারে।এক্ষেত্রে নারাজী দরখাস্ত Petition of Complaint হিসেবে বিবেচিত হবে।
(২)ফৌজদারী কার্যবিধির ২০০ ধারায় অভিযোগকারীকে শপথপূর্বক পরীক্ষা করে ১৯০(১)(ক) ধারা মোতাবেক অভিযোগ আমলে নিতে পারবেন। তারপর ম্যাজিস্ট্রেট ফৌজদারী কার্যবিধির ২০৪ ধারা মোতাবেক আসামীর বিরুদ্ধে প্রসেস ইস্যু করতে পারবেন।

(৩)ফৌজদারী কার্যবিধির ২০২ ধারা মোতাবেক নারাজী পিটিশন গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই মামলাটির অনুসন্ধান[Inquiry] করতে পারেন বা মামলাটি অধস্তন কোন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অনুসন্ধানের জন্য প্রেরণ করতে পারেন।অনুসন্ধানে যদি ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি আমলে নিয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ২০৪ ধারা অনুসারে আসামীর বিরুদ্ধে প্রসেস ইস্যু করতে পারেন।

(৪)ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩(৩খ) ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট নির্দিষ্ট বিষয়গুলো উল্লেখ করে মামলাটি Further Investigation এর জন্য থানায় পাঠিয়ে দিতে পারেন।

(৫)ম্যাজিস্ট্রেট নারাজী পিটিশন খারিজ করে দিতে পারবেন।
নোটঃএকটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন।আসামী[Accused Person] কখনো নারাজী পিটিশন দায়ের করতে পারে না।নারাজী পিটিশন সবসময় প্রসিকিউশন/এজাহারকারী দায়ের করেন।ম্যাজিস্ট্রেট মামলা আমলে নিয়ে প্রসেস ইস্যু করলে আসামী[Accused Person] তখন বিচারিক আদালতে Discharge Petition দায়ের করতে পারে।

★নারাজী পিটিশন অগ্রাহ্য হলে তার প্রতিকারঃ
(১)নারাজী পিটিশন অগ্রাহ্য হলে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি[Aggrieved Person] রিভিশন দায়ের করতে পারবে।আব্দুর রাজ্জাক বনাম রাষ্ট্র[35 DLR(1983)103] মামলার রায়ে বলা হয়েছে,যখন উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতকে একটি ক্ষমতা দেয়া হয়,তখন নীতিগতভাবে অধস্তন আদালতে আগে যাওয়া উচিত।তাই নারাজী পিটিশন অগ্রাহ্য হলে প্রথমে দায়রা আদালতে প্রতিকার চাওয়া উচিত।

(২)নারাজী পিটিশন অগ্রাহ্য করে ম্যাজিস্ট্রেট চূড়ান্ত রিপোর্ট[Final Report] গ্রহণ করে আসামীকে অব্যাহতি দিলে দরখাস্তকারী আবার অভিযোগ বা এজাহার দায়ের করতে পারবে।কারণ এখানে আসামীকে খালাশ দেয়া হয়নি।আসামীকে এখানে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com