Breaking News

সবাইকে পুরোটা পড়ার বিনীত অনুরোধ করছি

এই করোনা ভাইরাস দূর্যোগের মধ্যে সবাই ঘরে বসে বসে চলুন মজার একটা গেম খেলি।
গেমটার অংশ হিসাবে সামান্য বাইরে বের হওয়ার দরকারও পড়তে পারে। যাই হোক, গেমটা কি বলি৷
প্রথমে মনে মনে ভাবুন, ‘আমি কবে মারা যাবো সেটা আগে থেকে আল্লাহ ঠিক করে রেখেছেন৷ আমি যা ই করি না কেন ঐদিনই মারা যাবো। তার আগে পরে আমি কখনোই মারা যাবো না। আল্লাহ যদি চান তবেই মারা যাবো। অন্যথায় না।’
.
এটা ভালোভাবে ভাবুন। ভাবতে থাকুন। ভাবতে থাকুন। ভাবতে থাকুন…!
.
ভেবেছেন? গুড।
.
এবার আপনি বাসার ছাদে উঠে নীচে লাফ দিন, অথবা কাছাকাছি রেললাইনে গিয়ে ট্রেনের সামনে দাড়িয়ে যান, অথবা ব্লেড দিয়ে হাতের রগ কেটে ফেলুন, অথবা চুপচাপ দড়ি নিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে পড়ুন।
.
কি হলো? করুন করুন। সময় বেশি নেই। এটাই গেমের অংশ। দ্রুত যান।
রেললাইন আছে তো পাশে? না থাকলে ছাদে যান। টিনের ঘর? রগ কাটুন।
ব্লেড খুজে পাচ্ছেন না? আরে ভাই গামছা নিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলেন তো। কুইক।
ইটস গেমিং টাইম ব্রো…!
.
রগ কেটেছেন? লাফ দিয়েছেন? ফ্যানে ঝুলেছেন? ভেরি গুড।
এবার মরে যাওয়ার ঠিক আগে আগে ভাবুন এটা কি সুইসাইড হলো কিনা।
নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করুন। এটা কি সুইসাইড হচ্ছে? ভাবুন। ভেবে বের করুন।
.
এইতো ঠিক ধরেছেন। এটাকে সুইসাইড ই বলে। আপনার মৃত্যু এভাবে আছে,
আল্লাহ এভাবে রেখেছে, তারপরও আপনার এটা সুইসাইড, কেন?
.
কারনটা হলো, আল্লাহ আপনাকে একটা বিচার বুদ্ধি দিয়েছেন। ব্রেন দিয়েছেন।
বোঝার ক্ষমতা দিয়েছেন৷ পাগল বানাননি। যাতে আপনি নিজের ভালো বুঝতে পারেন।
যাতে আপনি আল্লাহর দোহাই দিয়ে সুইসাইড না করে ফেলেন।
যাতে আপনি আপনার জীবনে বেঁচে থাকার জন্য সঠিক যা করা দরকার সেটা করতে পারেন।
.
কথা কি ক্লিয়ার?
.
সুতরাং আল্লাহর দোহাই দিয়ে, মৃত্যু থাকলে মরব এই দোহাই দিয়ে যদি আপনি
করোনা ভাইরাসের কাছে গিয়ে তার সাথে কোলাকুলি করে নিজের দেহে টেনে আনেন,
সেটা হবে সুইসাইডের শামিল। সেজন্য আপনাকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
আপনার অসচেতনতা ও আল্লাহর দোহাই দিয়ে বেশি বোঝার জন্য যদি আপনার
পরিচিত বা অপরিচিত কোনো বয়স্ক অথবা অসুস্থ মানুষ মারা যায়, সেটার জন্যও আপনাকেই দায়ী করা হবে।
.
ভেবে দেখুন, আপনি জানেন আপনার হাতে বিষ আছে, জেনেশুনেও আপনি সেই বিষাক্ত হাত
দিয়ে আপনার বন্ধুকে ভাত খাইয়ে দিলেন। আপনি কি খুনি হচ্ছেন না? খুনের গুনাহ কি আপনি পাবেন না?
.
করোনা ভাইরাসও একটা বিষ ভাই। আপনি জেনেশুনে সেটা অন্যদের মধ্যে ছড়ালে আপনিও খুনি হবেন।
.
আরো ভালোভাবে বুঝাই। ধরেন আপনার বড় কোনো রোগ হলো। ঔষধ না খেলেই মৃত্যু।
আপনি কি তখন বলবেন, যে জীবন মৃত্যুর মালিক আল্লাহ। আমি ঔষধ খাবো না।
মৃত্যু থাকলে মরব। বলবেন না, তাইনা? আল্লাহও বা আল্লাহর রাসূল এরকম শিক্ষা আমাদের দেননি।
ঔষধ খেতে বলেছেন।
.
আর এই করোনা ভাইরাসের আপাতত ঔষধ হলো ঘরে থাকা, মাস্ক পরা, হাত সাবান দিয়ে ধোয়া, জনসমাগম না করা, মুখে হাত না দেয়া।
এই ঔষধ আপনি না মেনে কেন আল্লাহর দোহাই দিচ্ছেন? নেক্সট টাইম একশো চার জ্বর হলে প্যারাসিটামল না খেয়ে বইলেন, আল্লাহ বাঁচাবে। দেইখেন মরার পর আল্লাহ কি বলে!
বাজারে না গিয়ে বলেন আল্লাহ খাওয়াবে রিজিক থাকলে, পড়ালেখা না করে বলেন আল্লাহ পাশ করাবে। দেখেন কাজ হয় কিনা।
.
আল্লাহ চেষ্টা করতে বলেছেন ভাই। আর সেই চেষ্টাটাই হলো এখন সচেতন থাকা। এই মুহুর্তে হুজুর নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথাগুলো মেনে চলাই সুন্নত। বোঝা গেছে?
.
ভাইরাস আল্লাহ দিছেন ঠিক আছে, তো এটা থেকে বেঁচে থাকার উপায়টা কি আল্লাহ দেননি? এটাও তিনিই দিয়েছেন। সুতরাং প্লিজ আল্লাহকে স্মরণ করার সাথে সাথে এগুলোও মেনে চলুন।
.
বইলেন না যে, এসব সচেতন হয়েটয়ে লাভ নাই, আল্লাহ মৃত্যু রাখলে মরবই।
.
পরিশিষ্টঃ
হাদীস: ১- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা কুষ্ঠরোগ হতে দূরে থেকো, যেমন বাঘ হতে দূরে পলায়ন কর।” (বুখারী ৫৭০৭নং)
(ধরেন বলা হলো মসজিদে একটা বাঘ বসে আছে, তো আপনার কি মসজিদে যাওয়া উচিত হবে? নাকি অন্য পন্থায় বাসায় দুয়েকজন মিলে জামাত করা বা একা নামাজ পড়া উচিত হবে? আমি কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছি না৷ জাস্ট প্রশ্ন করছি)
.
হাদীস: ২- নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “চর্মরোগাক্রান্ত উটের মালিক যেন সুস্থ উট দলে তার উট না নিয়ে যায়।” (বুখারী ৫৭৭১, মুসলিম ৫৯২২নং)
(আপনার শরীরের রোগ থাকলে আপনি সুস্থদের মধ্যে আইসেন না। কোয়ারেন্টাইনে থাকুন)
.
হাদীস: ৩- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো মানুষ মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শুনে (সত্যাসত্য যাচাই না করে) তাই বলতে বা প্রচার করতে থাকে’ (বুখারি)। কোনো মিথ্যাবাদী কখনো প্রকৃত মুমিন হতে পারে না।
(এই হাদিস মতে মামুন মারুফের স্বপ্ন যাচাই বাছাই না করে প্রচার করার জন্য মুফতি ইব্রাহিম কি মিথ্যাবাদী হবে না?)
.
হাদীস: ৪- একদিন হযরত মুহম্মদ (সাঃ) দেখলেন এক বেদুইন উট না বেধেই তড়িঘড়ি করে নামাজ পড়তে আসছে।
নবীজি (সাঃ) বেদুইন কে জিজ্ঞাসা করলেন, ” উট বেধে নামাজ পড়তে আসছ না কেনো?”
বেদুইন উত্তর দিলো, “আল্লাহর উপর আমার অগাধ বিশ্বাস আছে, আল্লাহই আমার উট দেখে রাখবেন।”
শুনে নবীজি (সাঃ) বললেন, “উট বাঁধো আর আল্লাহর উপরে ভরসা করো।” (তিরমিযি)
(সুতরাং আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করে বাইরে ঘুরতে, রেস্টুরেন্টে খেয়ে, দলবেধে আড্ডা দিতে চলে যাব না। আমরা ঘরেও থাকব, হাতও ধোঁবো, আবার আল্লাহর ওপর ভরসাও করব।)
.
সবশেষে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, “নিজেরা পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাদের অবস্থার পরিবর্তন করেন না।” (কোরআন ১৩ঃ১১)
(এটারও ব্যাখ্যা লাগবে?)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com