কাজের মেয়ে যখন বউ । পর্ব -০১

আমি নীল, আজ অনেক দিন পর বাড়িতে আসলাম।

বাসায় এসে কলিংবেল বাজানোর পর…….
-আসসালামু আলাইকুম(অপরিচিত মেয়ে)
-ওয়া আলাইকুম আসসালাম(আমি)
-ব্যাগ টা দেন
-কে তুমি?
-ওর নাম মুন্নি(মা)
-ওহ
-হুমম এখন ফ্রেস হয়ে বস পরে সব বলব
-আগে বলো তুমি আর বাবা কেমন আছো?
-হুমমম পাগল সবাই ভালো আছে, মুন্নি এক গ্লাস সরবত বানিয়ে নিয়ে আয়।
-আচ্ছা খালাম্মা(ওর নাম মুন্নি)
-মা এই মেয়েটা কে?

 

তোর নানির বাড়ির, ওর আপন বলতে ওর বাবা ছিলো কয়েকদিন আগে উনি মারা গেছে তারপর ওরে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলাম।
-মা তুমি কি যে করো।
এইভাবে অপরিচিত মেয়ে আনা ঠিক নাহ
-আরে পাগল এটা তোর নানার বাড়ির।
-হুমম বুঝলাম
-হুমম মেয়েটা ও অনেক লক্ষী
-হয়ছে বাদ দেও এবার।
খাবার খেয়ে রুমে এসে ঘুম দিলাম।
বিকালে দরজা বার বার নক করতাছে তখন দরজা খুলে….
-ঐ মাইয়া কি হয়ছে?(আমি)
-ভাইয়া রুম মুছবো(মুন্নি)

 

-দেখতাছো রুম খুলি নাই তা ও বার বার কেনো নক করতাছো?
-চুপ
-যাও এখান থেকে
ও মন খারাপ করে চলে গেছে, আমি আবার ঘুমের দেশে ভ্রমন করলাম।সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে মারে খুজতে খুজতে ওর রুমে গিয়ে দেখি ও কান্না করতাছে আর চোখগুলে লাল হয়ে আছে।
মনে হয় খুব কান্না করছে।
-কান্না করো কেনো?(আমি)
-না তো ভাইয়া(মুন্নি)
-তাহলে চোখ লাল হয়ে আছে কেনো?
-চোখে পোকা পড়ছিলো তুই লাল হয়ে আছে।
-তুমি কি আমারে অবুঝ পাইছো যে যা বলবা তা-ই বিশ্বাস করবো।
-চুপ হয়ে আছে
-স্যরি
-না না ভাইয়া, আমি তো এমনিতে মন খারাপ করে রাখছি কারন মা বাবার কথা মনে পরছে তাই
-আমি মিথ্যা কথা শুনতে পছন্দ করি না
-আসলে
-হয়ছে এখন ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসো।
-ওকে
আপনাদের বলতে ভুলে গেছি,
মুন্নি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ালখে করে।
অনেকদিন পর বন্ধুদের পেয়ে আড্ডা দিয়ে ১০ টার দিকে বাড়িতে ফিরলাম ।
-এতো রাত করে আসলি কেনো?(মা)
-মা অনেকদিন পর বাড়িতে আসা তাই বন্ধুরা ছাড়ে নাই।
-হুম ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়
-ওকে
খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর……
-বাবা মুন্নি অনেক্ষন হয় একটা অংক মিলাতে পারতাছেনা, তুই যদি একটু হেল্প করতি
-ওকে, কোথায়?
-ওর রুমে
-ওকে

 

ওর রুমে গিয়ে দেখি রুমটা অনেক গুছালো,ঠিক ওর মতোই।
ওর মতো কেনো বলছি??
ও দেখতে অনেক সুন্দর, যে কেউ দেখে ওর প্রেমে পড়তে পারে।ও যখন সন্ধ্যায় কান্না করছিলো তখন ওর চোখের কাজলগুলো লেপ্টে গিয়ে কেমন যেনো এক অদ্ভুত সুন্দর লাগতে ছিলো।
আমি আসতে দেখে ও বসা থেকে দাড়িয়ে…..
-ভাইয়া বসেন(মুন্নি)
-আরে বসো বসো
-না আপনি বসেন
-হুমম বলো কোন অংকে সমস্যা?
-ভাইয়া এই অংক টা
-ওকে দাও
অংকটা বুঝিয়ে দেওয়ার পর…
-ভাইয়া ধন্যবাদ
-হুমম ধন্যবাদের কিছু নাই,এখন খেতে আসো।
-ওকে ভাইয়া আসছি।
ও অন্য দশটা কাজের মেয়ের মতো নাহ।আগেই বলছি ওর কেউ নাই তাই আমাদের বাসায় নিয়ে আসছে।বাসার কাজ ও আর মা মিলে করে, আর পড়ার সময় পড়তে বসে।
রুমে বসে বসে ল্যাপটওে আশিক বানাইয়া আপনে গানটা শুনতাছি,মুন্নি হঠাৎ করে রুমে ডুকে আমার দিকে একবার আর ল্যাপটপের দিকে একবার তাকাচ্ছে।
আর বস ইমরান হাশমি ও এখন সেই মুহূর্তে আছে।
-স্যরি(মুন্নি)
-কেনো?

 

-না কিছুনা এমনিতে বলে দৌড় দিয়ে রুম থেকে চলে গেছে , ওর মুখে স্পষ্ট লজ্জার ছাপ বুঝা যাচ্ছে। ওর অবস্থা দেখে আমার হাসি উঠে গেছে।
আসলে আমার রুমে কেউ প্রবেশ না।
প্রবেশ করলেও নক করে প্রবেশ করে,কিন্তু গ্রামের মেয়ে তো তাই হয়তো এমন ভুলগুলো করতাছে।
সকালে উঠে ব্রাশ করে দেখি ও মাকে নাস্তা বানাতে হেল্প করতাছে।
ওর সাথে চোখাচোখি হওয়ার হাসি দিয়ে আবার নিচের দিকে চেয়ে রয়ছে।
নাস্তা শেষে
-বাবা ওরে একটু কলেজে দিয়া আয়।
-ও কি এতোদিন কলেজে যায়নি?
-যায় কিন্তু বখাটে ছেলেরা নাকি ওর পিছনে নেয়।
-ওহহ
-হুমম তাই বলছিলাম কি ওরে যদি কলেজে নিয়ে যেতি তাহলে ভালো হত।
-আচ্ছা,মা বাইকটা বের করি?
-না না বাইক ছাড়া যাবি।
-কেনো?

-৭-৮ মাস আগে হাত ভাঙ্গছিলো, সেটা কি ভুলে গেছোছ?
-ঐ সময় তো আমি আমার জায়গা দিয়েই যাচ্ছিলাম তখন ট্রাক চালক এসে আমার বাইকে ধাক্কা লাগিয়ে দিছে।
-হয়ছে এখন চাপা মারা লাগবোনা।রিক্সা দিয়ে যা
-তাহলে আমি পারবোনা
-আচ্ছা বাইক নিয়ে যা তবে খুব সাবধানে চালাবি বাবা।
-ওকে মা, তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ট মা
-হয়ছে এখন আর পাম্প দেওয়া লাগবে না।
-পাম্প না তো

 

-ওকে এখন ওরে নিয়ে কলেজে দিয়ে আয়।
-ওকে,আসো(মুন্নির উদ্দেশ্যে)
-বাইকটা বের করে দেখি সবই ঠিকঠাক আছে,তেল ও আছে
-উঠে পিছনে বস
-কিভাবে উঠবো?
-বাংলা মুভি দেখোনা?
-হুমম একটু একটু
-নায়কারা যেভাবে উঠে যায় তারাতারি উঠে বসে যাও
-আমি কি নায়কা নাকি?(মাথা নিচের দিকে দিয়ে, এখন ও কালকের লজ্জা মাখা হাসিটা দিতাছে)
-নায়কার চেয়ে কম কিসে।
-নীল ভাইয়া এখন কিন্তু ভালো হবে না
-আচ্ছা আচ্ছা উঠে বসো
-হুম আপনি স্টার্ট দেন
ওরে পিছনে নিয়ে প্রথমই একটু জুড়ে টান দেওয়াতে ওর দুই হাত দিয়ে আমার কোমরে জড়িয়ে ধরছে আর বলছে ভাইয়া ভাইয়া আস্তে চালাও আমার ভয় করছে।
-আরে আস্তেই তো চালাচ্ছি।
-আরো আস্তে চালান
-ভয় পাও?
-হুমমম

-আমি থাকতে এতো ভয় কিসের?
-আপনি আছেন তার জন্যইতো ভয় করতাছে -কিহহহহহ
-হুমম, আস্তে চালান আর না হলে খালাম্মার কাছে বিচার দিমু -কি বিচার দিবা?
-বলমু আপনি আমারে নিয়ে এতো জুড়ে জুড়ে বাইক চালাইছেন।
-হি হি হি তাহলে মা কিছু বলবে না
-কিছু না বললে বলবো যে আপনি ঐসব খারাপ খারাপ ভিডিও দেখেন।
-এই এই কি ভিডিও দেখছি?
-ঐ যে এক জন আরেক জনের সাথে….

.
চলবে…

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url