Breaking News

পিচ্চি চাচাতো বোন । পর্ব -২৪



জান্নাতের সাথে শুধুমাত্র সেদিনই ঘুমাতে পেড়েছিলাম।
সেটাও আজ থেকে দুবছর আগে,আর কিভাবে ঘুমাইছিলাম সেটা তো সবারই জানা।
মাঝে মাঝে ছুটিতে বাসায় চলে আসতাম,জান্নাত গ্রামে চলে যেতো আর আমি বাসায় থাকতাম।
আবার যখন ছুটি শেষ হতো তখন বলা নেই কওয়া নেই হুট করে বাসায় এসে নিয়ে আসতো।
তবে এবার অনেকটা দিনের ছুটি পেয়েছে।এখন বাসায় যাচ্ছি,
আমি ড্রাইভ করছি আর জান্নাত বসে বসে কোন এক ফ্রেন্ডের সাথে SMS এ কথা বলছে। 
আমিঃকি করো? জান্নাতঃদেখতেই তো পাড়ছিস? 
আমিঃতুমি দিন দিন এতো কিউট কিভাবে হচ্ছো?কোনো ক্রিম নাও নাকি?
জান্নাতঃকুত্তা তুই জানোস না?
আমিঃজানবো কি করে?রাতে তো অন্য রুমে থাকো।
জান্নাতঃশুয়োর আমি অনেক ক্রিম নেয় মুখে এবার খুশি?
আমিঃবা* তুই শুয়োর ডাকা বন্ধ করবি?
জান্নাতঃকরবো না,দরকার পরলে আরো অনেক কিছু বলবো।
আমিঃলাথি মেরে গাড়ি থেকে ফেলে দেবো।
জান্নাতঃতোর সাহস নাই।
আমিঃভালোবাসি তাই কিছু বলিনা।না হলে…
জান্নাতঃনা হলে কি?
আমিঃনদীতে ফেলে দিতাম,আর তুই
সাতার জানিস না।শীতের জলে চিল্লিয়ে
মারা যাবি।
জান্নাতঃমারা তো এমনিই যাবো।
আমিঃবাজে কথা বাদ দে।
জান্নাতঃসবার গল্প যে সুখের হয়না।
আমিঃবাট আমাদের সুখের না।
জান্নাতঃআমাদের না,তোর হবে।
কারণ আমাদের মাঝে আর….
আমিঃজানি আমি,আর কোনো
সম্পর্ক নেই।মনে করাতে হবে না।
জান্নাতঃহ্যা।
অনেকটা সময় চুপ করে রইলাম,
সম্ভবত আমাকে চুপ থাকতে দেখে
জান্নাত আমার কাদে মাথা রেখে বলল;
জান্নাতঃরাগ করছেন?
আমিঃনা

জান্নাতঃশোন,সবাই যদি সুখে থাকে কষ্টে কারা থাকবে।
আমার জীবনে জন্মের পর কি ঘটছে জানিনা।
কিন্তু যখন আম্মু আব্বুর সাথে থাকতাম অনেক বেশিই হ্যাপিই থাকতাম।
তারা তো কখনো মারা তো দূরে থাক খুব বেশি করে বকাই দেয় নাই।
তবে কুত্তা আপনি আমাকে মাড়তেন। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের জীবনটাই এমন।
সব সুখ ছেড়ে আকাশের তারা হয়ে যেতে হয়। আমিঃতুই এসব কথা বলা বন্ধ দিবি?
জান্নাতঃএটাই তো সত্যি? আমিঃশুনতে চাই না এমন সত্যি। 
জান্নাতঃওকে বলবো না,তবে তোর জন্য বাসা একটা সারপ্রাইজ আছে।
আমিঃএখন বল জান্নাতঃবললে কি আর সারপ্রাইজ থাকবে?
আমিঃযা বলা লাগবে না। জান্নাতঃওলে আমার ভাইটা রে,আর সারপ্রাইজ তো এখনি দেবো না।
আগে কিছুদিন যাক তারপর। আমিঃভালো জান্নাতঃহুম,কিন্তু তোকে রাগ….
আমিঃকে জানি কল দিছে তোকে
জান্নাতঃদেখেছি আমি,বলতে হবে না।
আমিঃঢং
আমাকে কিছু না বলে কলটা রিসিভ করলো।
জান্নাতঃহ্যা বল
জান্নাতঃতুই আমাকে বিশ্বাস পাস না?
জান্নাতঃতাহলে এমন বলছিস কেন?
জান্নাতঃকিচ্ছু হবে না।
আমিঃকে?
জান্নাতঃঈশান

জান্নাতঃহ্যা নিলয় সাথে আছে।
জান্নাতঃঠিক আছে,রাখছি।
কল কেটে দিতেই বললাম,,,,,
আমিঃকি বলে?
জান্নাতঃওকে একটা কাজ দিয়েছিলাম
সেটার কথা বললো।
আমিঃকি কাজ?
জান্নাতঃপারসোনাল
আমিঃবলা যাবে না?
জান্নাতঃবললাম তো পারসোনাল।
আমিঃওকে
দুজনের মাঝে আর কোনো কথা হয়নি।
অনেকবার জিজ্ঞাস করলেও কিছু বলিনি।
বাসায় এসে গাড়ি পার্ক করাতেই জান্নাত বলল; 
জান্নাতঃআমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আয়
আমিঃবাসে করে চলে যা।
আর কোনো কথা না বলে ভিতরে
চলে আসলাম।রাগ হচ্ছে অনেক
বেশি,চেয়েছিলাম মেডিকেল পড়া
শেষ হওয়ার পর জান্নাতকে সব
বলে দেবো কিন্তু যেভাবে চেঞ্জ হয়ে
যাচ্ছে মনে হয়না এতো দেরি করা
আমার জন্য ঠিক হবে।বাসার ভিতরে
আসতেই আম্মু আর ভাবি আর আভাকে
দেখলাম নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
আমাকে দেখে আভা দৌড়ে এসে কোলে উঠলো।
আম্মুঃআসতে কোনো সমস্যা হয়নি?
আমিঃনা আম্মু
আম্মুঃজান্নাত কি বাসায় গেছে?
আমিঃবাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
ভাবিঃকেনো?

আমিঃসে নাকি এই বাসার মেয়ে না।
জান্নাতঃআপনাকে এসব কখন বলছি?
আমিঃআইছে ঢঙ্গী টা।
আভাঃছোট মাম্মাম হাই
জান্নাতঃহাই কিউটি(নিজের কোলে নিলো)
আম্মুঃআগে ফ্রেস হয়ে নে।
জান্নাতঃনা বড় মা,বাসায় যাবো।
আম্মুঃবড় মা..!
জান্নাতঃ…..(কিছু একটা ইশারা করলো)
আম্মুঃকিন্তু বাসায় কেনো?
জান্নাতঃঅনেক বড় কাজ আছে।
ভাবিঃসেই কাজটা?
জান্নাতঃহ্যা গো ভাবিজান।
আমিঃসেটা নাকি পারসোনাল ছিলো..!
জান্নাতঃবড় মা এই ছেলে কে?হুট
করেই আমাদের মাঝে কথা বলে।
আমিঃফ্রেস হওয়ার পর জেনো তোকে
আর এই বাসায় না দেখি।
মাথায় মারাএ জন্য চুলগুলো সামনে
এসে চেহারা ঢেকে গেলো।
জান্নাতঃবাদর,তুই জীবনেও সুখী
হতে পাড়বি না।
আমিঃধন্যবাদ,তবে তোর স্বামীর জন্য
অনেক কষ্ট হয়।এমন একটা তার ছেড়া
মেয়েকে সারাজীবন বহন করতে হবে।
জান্নাতঃআম্মা তোমার ছেলেকে….
আর কিছু না শুনে রুমে চলে আসলাম।

জান্নাতের কথা*
আম্মুঃতুই আমাকে বড় মা বলছিস কেন?
জান্নাতঃতোমার ছেলে যেমন আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চায় আমিও তাকে এমন সারপ্রাইজ দিবো।
ভাবিঃযেমনটা বলছিলাম 
জান্নাতঃএকদম জানু
ভাবিঃতবে ও জানলে একদম শেষ 
জান্নাতঃআম্মু না বললে কিছুই হবে না।
আম্মুঃআমি কেনো বলবো
জান্নাতঃতুমি না,আমার কিউট আম্মুটা
(আভাকে দেখিয়ে)
ভাবিঃসেটা নিয়ে তোর টেনশন করতে
হবে না।আভা মা চাচ্চুকে কিচ্ছু বলবা না।
আভাঃওকে মাম্মাম
আম্মুঃকাহিনী কি বলতো
ভাবিঃমা আমি আপনাকে সব বলবো।
কিন্তু এখন কি সেটা বল।
জান্নাতঃএখন আগে বাসায় গিয়ে ঈশানকে
রাজি করাতে হবে।
ভাবিঃকেনো রাজি হয়নি?
জান্নাতঃনা
ভাবিঃকি বলে?
জান্নাতঃনিলয়কে দেখে অনেক ভয় পায়।
ভাবিঃওকে ভয় পাওয়ার কি আছে।
জান্নাতঃবাসা চুপচাপ থাকলেও
নিলয় মোটেও এমন না।ওর বন্ধুদের
থেকে শুনো আস্ত গুণ্ডা একটা।একদিন
ঈশানকে মেরেছিলো।
ভাবিঃতুই আম্মার কথা বলবি
জান্নাতঃসেটা করতে হবে।আচ্ছা এখন
আমি যায় বাসায় যেতে হবে।
আম্মুঃযাবি কিসে?
জান্নাতঃবাসে করে,তোমার ছেলে বলছে।
আম্মুঃছেলে বলছে আর যেতে হবে?
অরিতা মা তুই গিয়ে তোর ড্রাইভার
চাচাকে বল ওকে নামিয়ে দিয়ে আসতে।
ভাবিঃহ্যা,চলেন ডাক্তার ম্যাডাম।
জান্নাতঃহিহিহিহি
দুজন কথা বলতে বলতে বাসার বাইরে
এসে ড্রাইভার চাচাকে বলা হলো,
জান্নাতকে বাসায় রেখে আসতে।
আভার গালে একটা পাপ্পি দিয়ে
ভাবির সাথে কুশল বিনিময় করে
গাড়িতে উঠে বসলো।
*******নিলয়ের কথা*******
ফ্রেস হয়ে ভাবিকে নাস্তা দেয়ার জন্য
বললাম।লক্ষ্য করলাম জান্নাত নেই,
মনে হয় চলে গেছে।
আমিঃও চলে গেছে?
ভাবিঃহ্যা
আমিঃভালোই হয়েছে
ভাবিঃতুই খেয়ে নে,আম্মুর সাথে
একটু কথা আছে।
আমিঃওকে
ভাবি চলে যাওয়ার পর নাস্তা করে নিলাম।
পরেরদিন আর অফিসে গেলাম না।
বাসায় শুয়ে বসে কাটিয়ে দেয়ার পর
পরশু দিন অফিসে গেলাম।খুব একটা
কাজ নেই,টুকটাক কাজ করে অফিস
শেষ করে বাসায় চলে আসলাম।
পরেরদিন,,,,,,,,
শীতের দিন অনেকক্ষণ ধরে শুয়ে আছি।
ভাবি একবার ডেকে গেছে কিন্তু তবুও
শুয়েই আছি।হঠাৎ ভাইয়ার কল পেয়ে
রিসিভ করলাম।
আমিঃহ্যা ভাইয়া
ভাইয়াঃকই তুই?
আমিঃশুয়েই আছি
ভাইয়াঃকয়টা বাজে খেয়াল আছে?
আমিঃ১১টা বাজে(ঘড়ি দেখে)
ভাইয়াঃতুই শুয়ে আছিস,ওদিকে
চাচ্চুর বাসার খবর জানিস?
আমিঃকেনো কি হয়েছে?
চাচ্চুঃজান্নাত বিয়ে করছে
আমিঃকিহ?কিসব যাতা বলছিস?
ভাইয়াঃযাতা না,আমাকে একটু
আগে চাচ্চু কল করছিলো।
আমিঃবাসায় বলেনি?
ভাইয়াঃবলছিলো,কিন্তু আব্বু নাকি
বিয়েতে যাবে না।তাই আলাদা করে
কাউকে বলেনি।আর আজ হুট করেই
বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।
আমিঃআমি এখনি যাচ্ছি
ভাইয়াঃতারাতারি যা,বর এসে গেলে
কিন্তু সমস্যা হয়ে যাবে।
কোনো উত্তর না দিয়ে কল কেটে
দিয়ে ড্রেস পরে নিয়ে চোখেমুখে
কোনোভাবে জল ছিটিয়ে নিয়ে
টেবিল থেকে হেলমেট নিয়ে
দৌড়ে নিচে আসতেই আম্মু বলল;
আম্মুঃকই যাচ্ছিস?
আমিঃচাচ্চুর বাসায়
আম্মুঃকেনো?
আমিঃজান্নাতকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে
আম্মুঃতো?
আমিঃতো মানে?জান্নাত আমার বউ
আম্মুঃতোদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
আমি;ধুর আমি গেলাম।
আর কোনো কথা না শুনেই বাইরে
এসে বাইক নিয়ে দ্রুত রওনা দিলাম।
তোর বিয়ে করা বের করছি আমি।
কতোড়া জোরে চালাচ্ছি নিজেরই
কোনো হুশ নেই।অনেক রাগ হচ্ছিলো
তবে সেটা জান্নাতেএ প্রতি না।আব্বুর
প্রতি,আব্বু যদি একবার আমাকে
বলতো জান্নাতকে বিয়ে দিয়ে দিবে
তাহলে সব সত্যিটা সবাইকে জানিয়ে
দিতাম।কিন্তু সেটা না করে আমার
ভুলটা নিয়েই পড়ে আছে।আর কুত্তীটার
অনেক বিয়ে করার শখ হয়েছে,আগে
বাসায় পৌছাই তারপর ওকে দেখাবো
বিয়ে করার কি ফল।
অনেকটা সময় বাইক চালানোর পর
চাচ্চুর বাসায় এসে পৌছালাম।বাইক
ওমনি ফেলে রেখে দৌড়ে বাসার
মধ্যে চলে গেলাম।এসে দেখলাম
ঈশান বর সেজে বসে আছে।সালার
প্রতি মেজাজটা একদম খারাপ হয়ে
গেলো।হেলমেট মাথা থেকে খুলে দিলাম
ঢিল।আচমকা এমন ঢিল খেয়ে
দাঁড়িয়ে গেলো।ঈশান জান্নাতের
বড় মামার ছেলে।কিন্তু সালা এমন
ছ্যাঁচড়ামো করবে কখনো ভাবিনি।
ঈশানের উপর হেলমেট মারতেই
চাচ্চু বলল;
চাচ্চুঃনিলয় এসব কি?
আমিঃতুমি এই বিয়ে কাকে বলে দিচ্ছো?
চাচ্চুঃকাকে বলতে হবে?
আমিঃজান্নাত রাজি এই বিয়েতে?
ঈশানঃহ্যা রাজি
আমিঃসালা তোকে বলতে বলছি…?
এগিয়ে গিয়ে একটা থাপ্পড় মারতেই
চাচ্চু এসে আমাকে ধরলো।কয়েকবার
জান্নাত জান্নাত বলে ডাক দিতেই রুম
থেকে বের হয়ে নিচে আসলো।
আমিঃতুই এই বিয়েতে রাজি?
জান্নাতঃকেনো হবো না?
আমিঃতুই আমার স্ত্রী
জান্নাতঃআমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
আমি;না হয়নি।
ছোট মাঃবাবা তুই মনে হয় ড্রিংক
করছিস।তাই এসব উল্টাপাল্টা বলছিস।
আমি;কিহ..!আমি ড্রিংক করেছি?এই
বিয়ে হবে না।আর তুই এখনো আছিস
যা রুমে গিয়ে সব খুলে ফেল।
জান্নাতঃআমি বিয়ে করবো
আমিঃবললাম না হবে না
জান্নাতঃতুই কে আমাকে বলার?
আমিঃতোর কেউ না?(গাল চেপে ধরে)
জান্নাতঃনা কেউ না
আমিঃতুই আমার স্ত্রী জান্নাত,তোর
সাথে আমার ডিভোর্স হয়নি।
জান্নাতঃএকদম আজেবাজে কথা
বলতে আসবি না।
ঈশানঃআঙ্কেল এসব কি..?
আমিঃতোকে চুপ করতে বললাম না?
জান্নাতঃকেনো চুপ করবে?
আমিঃও আমাদের ফ্যামিলির মধ্যে
কথা কেনো বলতে আসবে?
জান্নাতঃআমার আমার হবু স্বামী
আমিঃবাল তোকে বললাম না
আমাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়নি।
আমি তোর লিগাল হাসবেন্ড।
জান্নাতঃআর ডিভোর্স মিথ্যা ছিলো?
আমি;না সত্যি,কিন্তু আমি ওখানে
জান্নাতঃব্যস আর মিথ্যা বলতে
হবে না।এই বিয়ে তো হবেই।
আমিঃতুই শুনবি না আমার কথা?
জান্নাতঃনা
আমিঃযা তুই বিয়ে কর
জান্নাতঃকরবোই তো
আমিঃঠাসস যা কর বিয়ে,আমিও
এখানেই বসলাম।
থাপ্পড় খেয়ে কিছুটা সময় চুপ
করে রইলো।হঠাৎ দেখলাম
বাসা থেকে সবাই এখানে আসছে।
উনাদের দেখে জান্নাত এগিয়ে
আসবে তখনি উঠে গিয়ে ধাক্কা
দিয়ে ফেলে দিয়ে বললাম;
আমিঃএদিকে কোথায় যাচ্ছিস?এই
বিয়ে না করে তোকে কারো সাথে
কথা বলতে দেবো না,বিয়ে কর।
ঈশান এসে জান্নাতকে তুলতে যাবে
তখনি ওর দিকে যেতেই পেছনে
চলে গেলো।
আমি;ওকে তুই স্পর্শ করবি না।
জান্নাতঃও আমার হবু স্বামী,আমাকে
টাচ করবে না তো কাকে করবে?
আমিঃতুই আগে বিয়ে কর।
জান্নাতঃকরবোই তো,কাজী সাহেব
আমাদের বিয়ে পড়ান।
আম্মুঃজান্নাত মা একবার ভেবে দেখ,
এখনো কিন্তু সময় আছে।
জান্নাতঃবড় আম্মু আমি ভেবেই করছি।
ভাবিঃকিন্তু জান্নাত…
জান্নাতঃআমাকে আটকিও না ভাবি
ভাবিঃজান্নাত…..!
জান্নাত ভাবিকে কিছু না বলে কাজীকে
বিয়ে করানোর জন্য বলল।মাথাটা
একদম খারাপ হয়ে গেলো,ভাইয়াকে
বললাম পেপার আনছে কিনা।আমাকে
কিছু না বলে পেপারগুলো দিলো।
হাত থেকে নিয়ে কাজীর দিকে ছুড়ে
দিয়ে পড়তে বললাম।কাজী কিছু
সময় পেপারগুলো পড়ে দাঁড়িয়ে গেলো।
—এই বিয়ে করানো সম্ভব না।
জান্নাতঃকেনো?
কাজীঃএখানে জামাইয়ের সাক্ষর নেই।
জান্নাতঃতুই আমাকে আগে কেন বলিস নি?
আমিঃতোর মেডিকেল পড়া শেষ হওয়ার
আশাতে ছিলাম আমি।
জান্নাতঃকিন্তু একটা বারের জন্য বলতি
আমিঃভাইয়া জানতো সব,আমি মনে
করছিলাম ভাইয়া সবাইকে বলে দিছে
শুধুমাত্র তোকে ছাড়া।
জান্নাতঃএখন কিছু করার নেই,বিয়ে
ভেঙে দিলে আব্বুর সম্মান একদম
ধুলোয় মিশে যাবে।
আমিঃকিন্তু আমাদের মাঝে ডিভোর্স হয়নি।
জান্নাতঃকুত্তা তুই ডিভোর্স দিবি?
আমিঃদিলে খুশি হবি?
জান্নাতঃহ্যা অনেক বেশিই
আমিঃএকটা পেন দে
ঈশান এগিয়ে দিতেই ওর থেকে নিয়ে
সালাকে আরেকটা থাপ্পড় মারলাম।
জান্নাতঃও আমার…
আমিঃFuc*** হাসবেন্ড,জানি আমি।
জান্নাতঃতুই সাইন কর
আমিঃজান্নাত আমি তোকে সত্যি
অনেক বেশিই ভালোবাসি।
জান্নাতঃআমার দোহাই লাগে তুই
প্লিজ সাইন কর।
আমিঃভাইয়া তুই সবাইকে বলিসনি?
ভাইয়া;তুই তো গোপন রাখতে বলছিলি
আমিঃআমি তোকে ছাড়া বাঁচবো না।
ভাইয়াঃযা হবার হবে,তুই সাইন কর।
পরিবারের সবার চাপে সাইন করতে
যাবো তখনি জান্নাত পেপারগুলো
নিয়ে ছিড়ে ফেললো।অনেক বেশিই
অবাক না হয়ে পাড়লাম না।জান্নাতের
দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই
পেপারগুলো ছেড়ার পর হাসি দিয়ে
উঠলো।পাশে থাকা সবাই ওর সাথে
হাসিতে মেতে উঠলো।
জান্নাতঃবাদর বলেছিলাম না তোকে
একটা সারপ্রাইজ দিবো।
আমিঃমানে?
জান্নাতঃমানে এটা শুধুমাত্র তোর
থেকে জানার জন্য এসব করছি।
অনেক আগেই ভাইয়া আমাদের
সবাইকে সব সত্যি জানিয়ে দিছে।
আমিঃকিন্তু তোর বিয়ে…?
জান্নাতঃনাটক ছিলো,তোকে রাগানোর
জন্য।তাই এসব করছি।
জান্নাতঃএটাকে সারপ্রাইজ বলে.?
জান্নাতঃসারপ্রাইজ এটা নয়,আজ
তোর বার্থডে আর সেই জন্য আজ
থেকে তুই আর আমি একসাথে থাকবো।
আমি শুধুমাত্র তোর,আর এটাই সারপ্রাইজ।
সবার দিকে রাগি চেহারা নিয়ে তাকাতেই
জান্নাত আমার হাতটা শক্ত করে ধরে
রুমে নিয়ে আসলো।
জান্নাতঃরাগ করছো?
আমিঃএটা কোন ধরনের ফাজলামি?
জান্নাতঃতোমাকে সারপ্রাইজ দিলাম।
আমিঃএমন সারপ্রাইজ আমি এক্সপেক্ট
করিনি।যদি সত্যি কিছু খারাপ করতাম?
জান্নাতঃতোমার প্রতি আমার বিশ্বাস
ছিলো।তবে ঈশানকে মারার জন্য ওকে
সরি বলতে হবে।বেচারা এমনিতেই রাজি
হচ্ছিলো না।তোমাকে অনেক বেশিই ভয় পায়।
আমিঃসালার তো খবর আছেই,একবার
মারছিলাম এখন আবার মারবো।
জান্নাতঃপ্লিজ,আমার জন্য না।
আমিঃতোকে তো মারা উচিৎ
জান্নাতঃতাহলে মারো(এগিয়ে এসে)
আমিঃঠাসসস
জান্নাতঃতুই সত্যি সত্যি মারলি?
আমিঃতুমি নিজেই তো মারতে বললা।
জান্নাতঃকুত্তা যা তোরে ডিভোর্স
আমিঃএ্যাঁ আইছে,এখন কি?
জান্নাতঃকি আর,আমাকে বাসায়
নিয়ে যাবি।
আমিঃকিন্তু তোমার মেডিকেলে পড়া?
জান্নাতঃসেটাও পড়বো।
আমিঃঠিক আছে।
জান্নাত আমার ডান হাতটা শক্ত করে জড়িয়ে
ধরে আছে।দুজন রুম থেকে বের হতেই
সবাইকে বললাম;
আমিঃএখন তাহলে বাসায় গেলাম।
চাচ্চুঃআর এসবের?
আমিঃচাচ্চু বাদ দাও তো এসব।
চাচ্চুঃআরে এসব মানে,তোর বার্থডে।
আমিঃআমার এসব লাগবে না।
জান্নাতঃঅবশ্যই লাগবে
আম্মুঃঠিক আছে
ভাইয়াঃআম্মু এখন না করে রাত্র করা
আমার মনে হয় ভালো হবে।
আব্বুঃহ্যা সেটাই ভালো।
ঈশানঃভাই আমি সরি,আমি আসলে
আপনাকে আর জান্নাতকে এক করার
জন্য এসব করছি।
আমি;তোর তো খবর আছে চান্দু
জান্নাতঃবলছি না,আমার ভাইটাকে
কিছু বলবা না।
জান্নাতকে ছাড়িয়ে নিয়ে ঈশানকে
জড়িয়ে নিয়ে বললাম;
আমিঃরাগের মাথায় অনেক কিছু
করেছি,কিছু মনে করিস না ভাই।
ঈশানঃভাবছিলাম এখন আবার মারবে।
আমিঃহাহাহা
ঈশানকে ছাড়িয়ে নিয়ে দাঁড়ালাম।
আব্বুঃঠিক আছে,তাহলে সব রাতে
হবে।আর বাসাটাও সুন্দর করে সাজানো
দরকার।জান্নাত আমাদের সাথে যাবে বলে কথা।
চাচ্চুঃআচ্ছা ভাইজান
জান্নাতঃকিন্তু বাবা,আজ কিন্তু আমি যাবো না।
আব্বুঃকেনো?
জান্নাতঃকাল যাবো,সবাই।
আব্বুঃওকে তাই হবে।কিন্তু নেহা মা
তুই কথা বলছিস না কেনো?
নেহাঃআপনারা অনেক ভালো।এমন
একটা পরিবার পাবো কখনো ভাবতে পারিনি।
ছোট মাঃনেহা মা আমার,তুই আমার
সাথে চল।
নেহাঃহ্যা আম্মু
ছোট মা নেহাকে সাথে নিয়ে একটা রুমে
চলে গেলো।কেউ কিছু বলবে তার আগেই
চাচ্চু বলল;
চাচ্চুঃএসব ভেবে লাভ নেই,নেহার যখন
মন খারাপ হয় তখন ওর আম্মু বোঝায়।
আব্বুঃওহহ
আমিঃজান্নাত অনেক ক্ষুধা পেয়েছে।
জান্নাতঃআমার রুমে যাও আমি আনছি
আমিঃতারাতারি
জান্নাতঃহুম
জান্নাতের রুমে এসে ভালো করে ফ্রেস হলাম।
.
চলবে…..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com