কালো মেয়ে যখন বউ । পর্ব -০৪
আমিঃ ডিস্টার্ব করতে নিষেধ করছি কিন্তু।
মিমঃ খাবার নিয়ে সবাই ওয়েট করছে।চলো।খেয়ে তারপর ঘুমাবে।
আমিঃ তোকে ডিস্টার্ব করতে নিষেধ করছি না?
মিমঃ তুমি আমাকে তুই করে বলছো?
আমিঃ কেনো শুনতে পেলি না?তুমির যে সম্পর্ক সেটা নষ্ট হয়ে গেছে।সো,এখন আমার যা ইচ্ছা বলবো।ইচ্ছা হলে থাকিস। নয়তো যা ইচ্ছা করিস।
মিমঃ মানে কি?আমার একটা সামান্য কথার জন্য তুমি এরকম কেনো করছো?
আমিঃ ভালো করে বলছি ডিস্টার্ব করিস না।তা নাহলে কিন্তু পরিণাম ভালো হবে না।
<কিছুক্ষণ পর>:
.
মিমঃ এই উঠো।খাবার নিয়ে আসছি।একটু খেয়ে নাও।প্লিজ।
আমিঃ …………..
মিমঃ প্লিজ আর রাগ করে থেকো না।
আমিঃ …………..
মিমঃ আর কোনো দিনও ওরকম।কথা মুখে তুলবো না।প্লিজ খেয়ে নাও।আর রাগ করে থাইকো না।প্লিজ।
আমিঃ ……………
মিমঃ বিয়ের পর থেকে তুমি আমার সাথে এরকম করতেছো।সব ধরনের অবহেলা একটা মেয়ে সহ্য করতে পারে।কিন্তু তার স্বামীর কাছ থেকে, পাওয়া অবহেলা গুলো সহ্য করতে পারে না।
আমিঃ আমি কি কাউকে ইচ্ছা করে অবহেলা করি নাকি?কেউ যদি নিজের ইচ্ছাতে অবহেলা গুলো ডেকে আনে।তাহলে তো আমার আর কিছু করার নেই।বিচ্ছেদের কথা কি আমি তুলছি নাকি?
মিমঃ আরে ওটা তো ভুল করে তুলছি।
আমিঃ কিছু কথা আছে যে গুলো ভুল করে তুললেও, কষ্টের কমতি থাকে না।
মিমঃ সরি,আসলেই আমি ইচ্ছা করে তোমাকে কষ্ট দিইনি। এখন খেয়ে নাও।
আমিঃ হুম।খাইয়ে দাও।
মিমঃ খাইয়ে দিবো?
আমিঃ হুম।কেনো?শুনতে পেলে না।এটা ওই যে কষ্ট দিছো, তার শাস্তি।
মিমঃ হুম।
(তারপর মিম নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো।)
<কিছুক্ষন পর>
.
আমিঃ এ কি!বালিশ নিয়ে কই যাচ্ছো?তুমি কোথায় শোবা?
মিমঃ ………………
আমিঃ কি হলো?বালিশ টা ওখানে রেখে আসলে কেনো?একটা বালিশে দুজন কি করে শুবে?
মিমঃ আমার বালিশ লাগবে না।তুমি শুয়ে পড়ো।
আমিঃ তুমি?
মিমঃ আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসছি।
আমিঃ হুম।
(তারপর শুয়ে শুয়ে গেমস খেলছিলাম।হঠাত ই মিমের আগমন।এসেই আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।)
আমিঃ ও বুঝছি,এটাই তাহলে বালিশ সরিয়ে ফেলার কারণ।
মিমঃ হুম,কেনো কালো বউ বুকে মাথা রেখে ঘুমালে কি অসুবিধা?
আমিঃ সালার,সারা দিন শুধু কালো কালো করো।এরপর আমি একটু রাগ করলেই তো দোষ।আমি কি একবারও বলছি যে তুমি বুকে মাথা রেখে ঘুমালে আমার অসুবিধা?
মিমঃ আরে পাগল ওটা তো এমনি বলছি।
আমিঃ হুম।
মিমঃ কি? ওভাবে কি দেখছো?
আমিঃ তোমাকে.
মিমঃ তোমার চোখের নজর টাতো কেমন জানি লাগছে।
আমিঃ এই নির্জন রাতে পাশে বউ থাকলে তো চোখের নজর এরকম হবেই।
মিমঃ মানে?
আমিঃ মানে আমাদের বাসর রাত ট্রান্সফার করে আজকের রাত টাকে বাসর রাত করা হয়েছে।
মিমঃ মানে?
আমিঃ তুমি মেয়ে হয়ে এতো মানে খুঁজো কেনো।
মিমঃ মতলব কি?হুম।
.
(উম্মম্মম্মম্মম্মাহহহহ)
আমিঃ এটাই মতলব।
(টুট টুট টুট…………. Network ERROR…….)
<পরেরদিন সকাল>
মিমঃ কি এখনো ফ্রেশ হওয়া হয় নাই নাকি?
আমিঃ হুম এই তো।একটু এদিকে আসো তো।দেখো তো চোখে কি পড়লো?
মিমঃ হুম।কোথায় দেখি তো।
আমিঃ হুম।
মিমঃ কোথাও তো কিছু নেই।
আমিঃ আছেতো।
মিমঃ কই দেখছি নাতো।
আমিঃ এইতো(বলেই মিম কে একটানে বুকে টেনে নিলাম।)
মিমঃ আবার কি হলো?
আমিঃ আবার একটা কিছু চাই।
মিমঃ এখন আবার।
আমিঃ হুম।
মিমঃ শয়তান,কাছে আসবা না
আমিঃ শয়তানের কাজ তো শয়তানি করাই।শয়তান তো কাছে আসবেই।
(বলেই একটা ভালোবাসার স্বপ্ন একে দিলাম মিমের ঠোটে।)
(আউউউউউউউ)
আমিঃ ও মা গো।
মিমঃ কি বেশি ব্যাথা পাইছো বাবু?
আমিঃ না গো বাবু।
মিমঃ আহারে বাবু টা ব্যাথা পাইছে।
আমিঃ না,পিঁপড়ার মতো ঠোটে কামড় দিলে কি ব্যাথা পায়?
মিমঃ আহারে বাবু টা।আর আসবা আদর করতে?
আমিঃ আসবো না।কিন্তু তোমাকে আসতে হবে।
মিমঃ ইসসসস,এতো সোজা।
আমিঃ সোজা ই।আচ্ছা জানো আমাদের বাসা থেকে ২মিনিট সামনের রাস্তটায় যে মোড় আছে না?
মিমঃ হুম।
.
আমিঃ ওই মোড়ের পাশে একটা বাসায় একটা মেয়ে আছে।কি সুন্দর করে যে আদর করতে পারে।
মিমঃ তুমি জানলা কিভাবে?(চোখ বড় বড় করে)
আমিঃ না,আন্দাজ করলাম আর কি?ঠিক করছি একদিন যামু ওই মাইয়ার কাছে।আদরের ঘাটতি পরতেছে ইদানীং।(মিম ফুলতেছে তো ফুলতেছেই)
মিমঃ সালার লুইচ্চার ঘরের লুইচ্চা বউ বাসায় রাইখা, যাবি অন্য মেয়ের কাছে।আজ দেখমু তোর কতো আদর নিতে পারিস।আজ সারাদিন দেখবো কতো আদর হলে তোর মন ভরবে?
<কিছুক্ষণ পর>
.
মিমঃ ১১২,১১৩,১১৪,১১৫…….
আমিঃ থামো থামো আর পারছি না।একটা বাচ্চা পোলারে কেউ এতোগুলা কিস করে।
মিমঃ কোনো থামা যাবে না।১১৬,১১৭,১১৮…
আমিঃ বউ মাফ চাই।আল্লাহ্ বাচাও।আল্লাহু একটা দড়ি ফালাও বাইয়া উইঠা যাই।
(এভাবে দুষ্টুমিষ্টি ভালোবাসার মধ্যেই কেটে গেলো ২বছর।খুব ভালোই যাচ্ছিলো দিনগুলি।কিন্তু কথায় আছে না সুখ কখনো চিরস্থায়ী নয়।)
(একদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম।হঠাত চোখ পড়লো রাস্তার পাশের পার্ক-এর উপর।যা দেখলাম, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কিছু।দেখলাম মিম অন্য কারো হাতে হাত রেখে কথা বলছে।পিছন থেকে বন্ধু আমানের স্পর্শ-এ ঘোর কাটলো।)
আমানঃ বন্ধু ওটা মিম না?
আমিঃ সত্যিই সব মেয়েরাই কি একইরকম?
আমানঃ আরে মামা।হতে পারে না ওর কোনো ফ্রেন্ড।
আমিঃ ও আচ্ছা। ফ্রেন্ডের সাথে বুঝি পার্ক -এ বসে হাতে হাত রেখে কথা বলতে হয় বুঝি।
আমানঃ মাথা গরম করিস না।তোর তো আবার অল্প কিছু তেই মাথা গরম হয়ে যায়।বিষয়টা আগে ভালো করে জান।
আমিঃ আসি রে, তোর সাথে পরে কথা হবে।
আমানঃ শোন।দাড়া।
আমিঃ পরে কথা হবে।
.
(বাসায় একটু দেরী করেই ফিরলাম আজ)
মিমঃ নাও,পানি টা খেয়ে নাও।
আমিঃ পানি,চেয়েছি আমি?বিকেলে ৫টার সময় তুমি কই ছিলা?
মিমঃ হঠাত এ প্রশ্ন করছো যে?
আমিঃ যেটা বলছি তার উত্তর দাও।
মিমঃ মার্কেট-এ গেছিলাম।
আমিঃ মার্কেট -এ নাকি।পার্ক -এ অন্য একটা ছেলের হাত ধরে নষ্টামি করছিলে।
মিমঃ কি বলছো এসব?
আমিঃ যা বলছি ঠিকই বলছি।এসব নষ্টামি কতোদিন থেকে চলছে?
মিমঃ হুম,আমি পার্ক -এ গেছিলাম। কাজ ছিলো।কিন্তু নষ্টামি কথাটার মানে কি?
আমিঃ মানে কি?কিছু বুঝো না।আচ্ছা তোমার গর্ভের সন্তানটাও কি আমার।নাকি অন্য কারো?
মিমঃ ছিঃ কি বলছো এসব?এসব কথা বলতে কি তোমার মুখে বাধে না।
আমিঃ তোর মতো নষ্টা মেয়েদের সম্পর্ক-এ আর কি বলবো?
মিমঃ বিশ্বাস করো। তুমি যা ভাবছো তা ভুল।
আমিঃ কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক তা এতোদিন বুঝতাম না।কিন্তু এখন বুঝি।
মিমঃ বিশ্বাস করো আমাকে।
আমিঃ ডিভোর্স পেপার টেবিলের উপর রাখা আছে।
মিমঃ মানে,তুমি কি বলছো?পাগল হইয়া গেছো নাকি?প্লিজ একবার আমার কথা গুলো বোঝার চেষ্টা করো।
আমিঃ শুনতে পেলি না?ডিভোর্স পেপার টেবিলের উপর রাখা আছে।আর কোনো কথা শুনতে চাই না।
.
চলবে…
No comments