Breaking News

গল্পঃ ভিলেন । পর্ব-০৭



করতে ও পারেন,ভরসা নেই আপনাকে…।” মিমের কথা শুনে ইমান টাই খুলে ফেললো,ব্লেজার টা খুলে রাখলো পাশের সিটে,তারপর শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো,মিটিমিটি হেসে মিম কে বললো,
– “আসুন তাহলে দু’জনে উপভোগ করি আজ এই রোমান্টিক রাত টা কে…?” কথা গুলো শোনা মাএই মিম ছিটকে ইমানের কাছ থেকে দূরে সরে গেলো,ইমান বলল,
– “কি হলো মিসস…?
পছন্দ হচ্ছে না আমাকে…? আমার ও প্রথম বার আপনার ও প্রথম বার আসুন না বেশ ভালোই হবে…।” মিম রেগে গিয়ে ইমান কে ছোট্ট একটা চাকু দেখিয়ে বললো,
– “দূর দূর দূরে জান আমার কাছ থেকে…।” ইমান হাসতে হাসতে বলল,
– “বাহ! আমার গাড়ি তে বসে আমার সাথেই চোটপাট খুকি…? দাঁড়াও এখুনি মজা দেখাচ্ছি তোমাকে…।” মিম কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইমান ছোট্ট চাকু টি ছিনিয়ে নিলো তার হাত থেকে তারপর ওর গলায় চেপে ধরে বললো,
– “বড্ড সাহস বেড়েছে না আপনার! আজ আমি দেখতে চাই আপনার কত সাহস আছে…?” মিম হঠাৎ ইমানের হাতে কামড়ে দিলো,ইমান দূরে সরে গিয়ে চাকু টা ওর হাতে দিয়ে বলল,
– “নিন ধরুন! আমার পরীক্ষা নেওয়া হয়ে গেছে।” মিম বেখেয়ালে নিজের শাড়ির আঁচল ইমানের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
.
– “নিন এটা গায়ে জড়িয়ে নিন! আমার আপনা কে দেখে খুব অস্বস্তি হচ্ছে…।” ইমান হাসতে হাসতে গায়ে মিমের শাড়ির আঁচল জড়াতে জড়াতে নিজের কামড় খাওয়া হাত দেখে বলল,
– “আসলে আমি একটু দুষ্টুমি করছিলাম আপনার সাথে…। আমার উদ্দেশ্য আপনার ক্ষতি করা ছিল না,শুধু এমনি এমনি মজা করলাম আপনার সাথে…।” মিম হঠাৎ মিটিমিটি হেসে ইমান কে বললো,
– “বুঝতে পেরেছি আপনি আবার ও প্রেমে পরেছেন নতুন ভাবে…।” ইমান থতমত খেয়ে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো,মিম বললো,
– “কিন্তু আপনি কমিটেড অন্য আরেক একজনের সাথে…। শুনেছি আপনি আবার এক বাড়িতে ও থাকছেন তার (অবন্তী) সাথে…!” ইমান মুচকি হেসে মিম কে বলল,
– “এক বাড়ি তে থাকলেই যে এক ঘরে থাকি সে কথা কে বলেছে আপনাকে…?” মিম শাম্ত চোখে ইমানের দিকে তাকিয়ে বললো,
.
– “সেটা আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার,আমার এ ব্যাপারে যেনে কোনো কাজ নেই ঠিক আছে…?” তখন মিম শাড়ির আঁচলে টান অনুভব করলো,খেয়াল করে দেখলো ইমান ওর শাড়ির আঁচল মাথায় দিয়ে বসে আছে,ওর তা দেখে খুব হাসি পেলো,দু’জনই উচ্চ শব্দে হাসতে শুরু করলো সাথে সাথে…।
ইমান হট ওয়াটার বটল টা মিমের দিকে এগিয়ে দিলো,মিম একটু পানি খেয়ে নিলো বতল থেকে…। এরপর দু’জনেই ঘুমনোর চেষ্টা করলো,সকালে ইমান চোখ খুলে দেখতে পেলো মিম শুয়ে নেই তার পাশে।বুক পকেটে সে হঠাৎ হাত রেখে দেখলো,একটা সাদা রঙের চিরকুট রাখা আছে পকেটে,তাই সে খুব দ্রুতই সেটা খুলে দেখলো,
মিম ছোটো করে একটা ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছে তাকে…। ইমানের ঠোঁটের কোনে সেটা পরে মৃদু হেসে ফুটে উঠলো সে কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পৌঁছে গেলো লাইফ ফাউন্ডেশনের পুরোনো অফিসে…। মিম অফিসে পৌঁছানো মাএই ফন্দি আঁটলো সে কি করে প্রবেশ করবে অফিসের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এড়িয়াতে আর সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিলো।
কোনো ভাবে সে বাজিয়ে দিলে অফিসের বাহিরে লাগিয়ে দেওয়া ফায়ার এলার্ম টা কে…।
মুহূর্তে অফিসে উপস্থিত সবাই ফারায় এলার্মের শব্দে বাহিরে বেড়িয়ে এলো আর মিম ভিড়ের মধ্যে মিশে গেলো সবার সাথে।
কোনো বাঁধা-বিপত্তি ছাড়াই মিম অফিসে ঢুকে পরলো কিন্তু এবার তাকে অফিসের সিক্রেট ফ্যাসিলিটির মধ্যে প্রবেশ করত হবে আর যেটা মোটেও সহজ কাজ ছিল না কারণ ইমানের ফিঙ্গার প্রিন্টের তার খুব প্রয়োজন হবে।
আর সে খুব বুদ্ধি করেই নিজের বেশভূষা পাল্টে অফিসে প্রবেশ করেছিল যা তে কেউ যেন সন্দেহ না করে তাকে…।
তবে হঠাৎ কানে ইমানের কণ্ঠ ভেষে এলো সে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে শুকনো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে শুরু করলো লাইব্রেরির বই গুলো কে…। ইমান ম্যানেজার ওয়াসিমের সাথে কথা বলতে বলতে বারবার কৌতূহল বশত তাকাচ্ছিল মেয়েটির দিকে…।
.
ওয়াসিম ইমান কে বারবার মেয়েটির দিকে তাকাতে দেখে মৃদু হেসে বলল,
– “স্যার! ও হচ্ছে মালতী,ছ’মাস হলো নতুন এসেছে আমাদের অফিসে…।” ইমান বার কয়েক পা থেকে মাথা অব্দি মেয়েটি কে দেখে জিজ্ঞেস করলো,
– “আপনাকে কি শুধুমাএ ধোয়া-মোছা করার জন্য রাখা হয়েছে অফিসে…?” মিম ইমানের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রেখে বলল,
– “জ্বি,না স্যার! বলুন,কফি না চা? কি দেবো আপনাকে…?” ইমান বললো,
– “চা দিলে ভালো হয়,আসলে সকাল থেকে মাথাটা ভার হয়ে আছে।” মিম তা শুনে ঝটপট ইমানের জন্য আদা দিয়ে চা করে আনলো,ইমান চা খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলো,
– “বলুন তো মালতী এর আগে কোথায় দেখেছি আপনাকে…?” মিম বলল,
– “ক্ষমা করবেন স্যার! তবে এর আগে আমাদের কখনো দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি একে অপরের সাথে…।” ইমানের মিমের কথা গুলো ঠিক পছন্দ হলো না,সে বেশ জোর দিয়েই বললো,
– “আমি হলফ করে বলতে পারি এর আগেও বহুবার আমার দেখা হয়েছে আপনার সাথে…।” মিম এবার নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
.
– “আপনার কোথাও একটা ভুল হচ্ছে স্যার! আমি কখনো প্রয়োজন ছাড়া কোনো মিথ্যে কথা বলিনি কারো সাথে…।”
মিমের কথা শুনে ইমানের মুড খারাপ হয়ে গেলো,ও বারবার মনে করতে লাগলো মিম কে…। অতঃপর সে কিছু জরুরী কাজের জন্য নিজের কেবিন ত্যাগ করলো আর মিম এই সুযোগে ইমানের পাঁচ আঙুলের ফিঙ্গার প্রিন্ট তুলে নিলো সেই চায়ের কাপ থেকে…।
ইমান ইমার্জেন্সি মিটিং এর জন্য সকল অফিসার কে মিটিং এ ডেকে পাঠালো আর এদিকে মিম অফিসের সিক্রেট ফ্যাসিলিটর মধ্যে অলরেডি ঢুকে পরেছে,
সে বেশ সাবধানেই কাজ করছিল আর তখন একটা ফাইল তার চোখে পরে যেখানে মৃত সায়েন্টিস্টদের নাম লেখা আছে।
সে পর্যন্ত সব ঠিক ছিল কিন্তু হঠাৎ করেই অদ্ভুত একটা জিনিস এসে পরলো মিমের চোখ…। ও বেশ খেয়াল করেই কয়েক পা এগিয়ে এসে দেখলো,একটা বড় কাঁচের পাত্রের মধ্যে নীল রঙের কি যেন একটা পদার্থ আছে?
দেখতে সেটা সমুদ্রের জল মনে হলেও আসলে তা নয় কারণ পাএের গায়ে মডিফাইড বেনিফিয়াল ভাইরাস লেখা আছে।
.
মিম আর বেশি সময় নিলো না,সেই নীল পদার্থের কিছু ফটো সে তুলে ফেললো সাথে সাথে…।” তারপর সে আরেকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলো যে লাইফ ফাউন্ডেশনের পুরোনো অফিসে কোনো একটা দূর্ঘটনার জন্য রেস্ট্রিকটেড ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে…।
যদিও সে বিধিনিষেধ এখন আর নেই তবুও একটা কিন্তু থেকে যায় মিমের মনে মাঝে,সে বেশ সতর্ক হয়েই সিক্রেট ফ্যাসিলিটির মধ্যে হাঁটা-চলা করছিল কিন্তু হঠাৎ করেই সে বেখেয়ালে ধাক্কা খায় পিলারের সাথে…।
আর সাথে সাথেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ইমার্জেন্সি এলার্ম বেজে ওঠে সবাই মুহূর্তে ছুটে আসে সিক্রেট ফ্যাসিলিটির কাছে।
অবশ্য তাতে লাভ বিশেষ হয়নি কারণ লাস্ট গেইট টা অটো-লক হওয়ার আগে মিম অফিস থেকে বেড়িয়ে আসে…।
ইমান দ্রুত কন্ট্রোল রুমে ঢুকে ক্যামেরা চেক করতে বসে আর তখন দেখতে পায় প্রায় পনেরো থেকে বিশ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ রিমুভ করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম থেকে…।
যদিও রিমুভ বললে ভুল হবে কারণ কেউ একজন মিম কে ধরা পরার হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় বিশ মিনিটের জন্য সিসিটিভি ফুটেজ অফ করে রেখেছে,তবুও তাতে লাভ বিশেষ হলো না কারণ হঠাৎ আসল মালতী এসে সবাইকে চমকে দিয়ে বলল,
.
– “এই বুঝি মোগো মালিক…? উনি মোদের দু’বেলা দু’মুঠো খাইয়া-পইরা বাঁইচা থাকার ব্যবস্থা কইরা দিছে…?” মালতীর কথা শুনে ইমান যেন আকাশ থেকে পরলো,ওয়াসিম কে জিজ্ঞেস করলো,
– “ইনি আসল মালতী হলে আমাকে যে আদা চা বানিয়ে দিল সে কে…?” ওয়াসিম বা অন্য কেউ কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে পারলো না আর তাতে ইমান বেশ রেগে গিয়েছে।
যদিও সে হন্যে হয়ে নকল মালতী কে খুঁজে বেড়াতে লাগলো,তবে এতো খুঁজেও মালতীর টিকি টি ছুঁতে পারেনি সে…।
এক হ্রাস ক্ষোভ নিয়ে ইমান মিমের প্রেস ব্রিফিংয়ের জায়গায় চলে এলো,কারণ খবর নিয়ে জানতে পেরেছিল মিম এখনো বি-বাড়িয়ার আছে।মিম দূরে দাঁড়িয়ে ইমানকে দেখ ও না দেখার ভান করে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেললো,মিটিমিটি হাসতে লাগলো সে তার চেহারা দেখে,
ইমান একশো ভাগ নিশ্চিত কাজ টা মিম করিয়েছে অথচ কোনো প্রমাণ নেই তার হাতে আর এর মধ্যেই বিশ্বস্ত সুএ থোকে ইমানের কাছে খবর এলো,
.
– “মিম সারাক্ষণ এখানেই ছিল,একটি বারের জন্য চোখের আড়াল হয়নি সে…।”
তবে ইমান জানে এই কাজটি মিমের,নিজে না করলে ও হয়তো অন্য কাওকে দিয়ে করয়েছে…। এদিকে মিমের খালাতো ঐন্দ্রিলা মিম কে ভয়েস ম্যাসেজ পাঠিয়ে বললো,
– “ধন্যবাদ রে বোনু! আজ সাংবাদিকের নাটক করে খুব ভালো লেগেছে…।” মিম হাসতে হাসতে বলল,
– “হুমম কলিজা! ভাগ্যিস কেউ ধরতে পারেনি,ভালো করেই টুপি পরাতে পেরেছি এক এক টা কে…।” মিমের কথা শেষ হওয়ার মুহূর্তে ইমান এসে দাঁড়িয়ে যায় তার পাশে,অতঃপর সে মিম কে উদ্দেশ্য করে বলে,
– “কাজ টা আপনি ঠিক করলেন না ‘মালতী’ আপনাকে ভবিষ্যতে এর জন্য পস্তাতে হবে…।” মিম নিজেকে স্বাভাবিক রেখে দু’হাত দিয়ে ইমানের গাল চেপে ধরে কানে ফিসফিস করে বললো,
– “ট্রাই করে দেখতে পারেন! আমি মাইন্ড করবো না তাতে…।” ইমান অবাক হয়ে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো,মিম বলল,
– “কিপ ট্রাই বেবি! ওকে বায় আমার যাওয়ার সময় হয়ে গেছে।” ইমান বড়সড় চোখ করে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো,সে ইমান কে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে গিয়ে গাড়িতে বসে পরলো স্বাধীনের পাশে।ইমান ‘হা’ করে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো মিম গ্লাস নামিয়ে আরও কয়েক বার ফ্লাইং কিস ছুঁড়লো তাকে,ইমান চোখ গরম করে বললো,
– “আসলেই এই মেয়েটির মাথায় সমস্যা না হলে কে এমন করে তার প্রতিপক্ষের সাথে…?
.
চলবে,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com