Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ১৫



আমি জানি স্যার,বুঝতে পারি আপনি অনেক ভালোবাসেন ওই মেয়ে টা কে আর তাছাড়া আপনি সিলভানা ম্যাম’কে হারিয়েছেন আমি চাই না এবার আপনি হারিয়ে ফেলেন আপনার এই বন্ধু টা কে।” ইমান অবাক হয়ে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো,মিম খাবারের পার্সেল নিয়ে বেড়িয়ে গেলো রেস্টুরেন্ট থেকে।
এরপর মিম আনমনে ধীর পায়ে হাঁটতে হাঁটতে একাডেমিতে পৌঁছে গেলো,লেইলা ছুটে এসে মিম’কে জিজ্ঞেস করলো,
.
– “কি হয়েছে?” মিম হাসিমুখে বললো,
– “তেমন কিছু না রে জিনিস গুলো ধর কাজ আছে।”
দুপুরে মিমের তরফ থেকে ইমানের কাছে একটা হলুদ রঙের খাম এলো,ইমান খামনটা খুলে দেখলো ছোট্ট একটা চিরকুট এবং ওর ক্রেডিট কার্ড রাখা আছে তার সাথে।ও চিরকুট টা খুললো,পড়ে দেখলো তাতে লেখা,
– “স্যার! আমি কোনো নম্বর চুরি করিনি আপনার আইফোন থেকে ইনফ্যাক্ট আপনি এতোটাই বোকা আপনি একটু ও ভাবলেন না আমি কি করে খুলবো আপনার পাসওয়ার্ড লক আইফোন টা কে? আমি জাস্ট আপনাকে বোকা বানাতে আপনার ভিজিটিং কার্ড টা চুরি করেছিলাম আর কিছুই না ঘন্টু বোঝা গেছে?” শেষের লাইন টা পড়ে ইমান চোখ তুলে তাকালো সামনের দিকে আর মিম ভেংচি কেটে হাসতে হাসতে চলে গেলো ডাইনিং রুম থেকে।কিছুক্ষণ পর,
ইমান ব্যাংকে ফোন করে ম্যানেজার আমিন সাহেব’কে বললো,
– “আমিন! আপনি কি পারবেন এই মুহূর্তে আমার কারেন্ট ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেক করে দিতে?” আমিন সাহেব একটু থেমে বললো,
– “অবশ্যই স্যার! আপনি কাইন্ডলী,একাউন্ট নাম্বার টা বলুন আমাকে।” ইমান নম্বর টা বললো,আমিন সাহেব চেক বললো,
– “স্যার! আগে যা ছিল তাই আছে।” ইমান একটু অবাক হয়ে বললো,
– “তবে যে আজ আমি এিশ হাজার টাকার কেনাকাটা করলাম?”
– “আমি সেটা বলতে পারবো না স্যার এভাবে! কারণ আপনার ক্রেডিট কার্ড কিংবা ডেভিড কার্ড কোনো টাই ইউজ করা হয়নি স্যার পেমেন্ট করা হয়েছে নিশ্চয়ই অন্য কোনো কার্ড থেকে।” ইমান আবারো চমকালো,মনেমনে ভাবলো,
– “তবে মিম পেমেন্ট করলো কি থেকে? ক্যাশ টাকা? না টাকা বের করতে দেখিনি আমি ওকে,ওকে আমি শপিং করার জন্য আমার ক্রেডিট কার্ড টা দিয়েছিলাম,তবে কি হয়ে গেলো? কি থেকে?” এদিকে,
সারা মিম’কে ডেকে বললো,
.
– “কালকে থেকে জমজমাট অনুষ্ঠানের শুরু,তোকে তোর বেস্ট টাই দিতে হবে।” মিম বললো,
– “তোরা ও প্যারেড ভালো করে করিস।মনে থাকে যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি দু’জনেই উপস্থিত থাকবে আর অন্যান্য বাহিনীর প্রধান উপপ্রধানের কথা বাদ দিলাম।”
– “ঠিক আছে।” লেইলা এসে মিম’কে বললো,
– “আজ বাদে কাল অনুষ্ঠান আর আমার ভয়তে এখুনি গায়ে কাটা দিচ্ছে।” মিম বলল,
– “ভয় পাওয়ার মতো কিছুই হয়নি লেইলা,স্বাভাবিক থাকো।”
– “আচ্ছা,ঠিক আছে।তবে তুমি? তোমার কথা ভেবে আমার খুব খারাপ লাগছে।” মিম বললো,
– “হতেই পারে,আল্লাহ তাআ’লা উওম পরিকল্পনাকারি সেটা বুঝতে হবে।”
– “তোমার মন খারাপ হচ্ছে না?”
– “না আসলে,আমি এখনো সুস্থ হইনি পুরোপুরি ভাবে আর তাছাড়া ইমান স্যার একদম ঠিক কারণ উনি আমার কথা ভেবেই বারণ করেছ আমাকে।” অতঃপর মিম কিছুক্ষণ গান গেয়ে প্রাকটিস করলো কারণ জাতীয় সংগীত জেনারেল ইমাদ সাহেব স্পেশালি ওকে গাইতে বলেছে।মিনিট দুয়ের পর,
রাবা ছুটে এসে মিম’কে বললো,
– “জানো মিম? পুরো অনুষ্ঠান টি পরিচালনার ভার তোমার ওপরে পরেছে? মিম বিষম খেলো,নীলাসা এসে ওকে বললো,
.
– “নিচে চল! ইমান স্যার আর লাবণী ম্যাম তোকে এই মুহুর্তে ডেকে পাঠিয়েছে।” মিম হেলতে দুলতে দুলতে নিচে চলে এলো,ইমান ওর দিকে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললো,
– “পরে মুখস্থ করে ফেলো রাতের মধ্যে!” মিম মিটিমিটি হেসে ইমান’কে বললো,
– “স্যার! আমার কাগজ-পএ লাগবে না কারণ আমি জানি স্টেজে উঠে কি বলতে হবে?” লাবণী হাসতে হাসতে বললো,
– “ইউ আর অন ফায়ার? মাই গার্ল! কনফিডেন্স দেখছি লেভেল আপ হয়ে গেছে?” মিম বললো,
– “একটু ভয় করছে ম্যাম! তবে সমস্যা নেই,সামলে নিবো পুরো বিষয় টা কে আর তাছাড়া আপনারা সবাই আছেন, ভুল হলে স্বাভাবিক ভাবেই বুঝিয়ে বলবেন এবং এই দায়িত্ব পালনে সহোযোগিতা করবেন আমাকে।” ইমান হাসলো,কিছু একটা বলার জন্য এগিয়ে গেলো মিমের কাছে।মিম দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে দৌড়ে দোতালায় উঠে গেলো,ইমান বুঝতে পারলো,মিম এড়িয়ে চলতে চাইছে ওকে,মনেমনে বললো,
– “কিন্তু কেন? তবে কি মেয়ে টা আমার এমন অভদ্র আচরণে কষ্ট পেয়েছে? ও আমার ক্রেডিট কার্ড থেকেও শপিং করলো না,তবে কে ওর শপিং বিল পে করেছে?” এসব ভাবতে ভাবতে ইমান খেয়াল করে দেখে শহিদ স্টাফ এসে ওর ঘরের দরজায় দাঁড়িয়েছে।ইমান মুখ ফুটে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই শহীদ ওকে বললো,
– “স্যার! আপনার জন্য ঢাকা থেকে একটা পার্সেল এসেছে।” ইমান কৌতূহল বশত এগিয়ে এসে শহীদের হাত থেকে পার্সেল টা নিলো,তারপর খুলে দেখলো সিলভানা ওর দেওয়া সমস্ত গিফট ফেরত পাঠিয়েছে ওকে।ইমান তা দেখে হাসলো,মিটিমিটি হেসে বললো,
– “তুমি আদৌও এতো ভালোবাসার যোগ্য ছিলে কবে?” শহীদ স্টাফ জিজ্ঞেস করলো,
– “স্যার! কিছু বললেন?”
.
– “না শহীদ! তুমি প্লিজ যাও এখান থেকে।” সকাল আটটায়,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি এসে পৌঁছালেন চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে খবর পাওয়া মাএই জেনারেল ইমাদ সাহেব এবং ইমান নিজে পঞ্চাশ জন বডিগার্ড,বারোজন স্নাইপার এবং তিনটে বুলেট প্রুফ গাড়ি নিয়ে রিসিভ করতে এলো মননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে।
এদিকে মিম ইমানের কথা মতো তাদের ফুল দিয়ে বরণ করার জন্য টিম নিয়ে তৈরি হয়ে আছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি এসে মিলিটারি একাডেমিতে পৌঁছতেই মিম স্টেজে ওঠার সময় ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় তাদের দু’জন কে…অতঃপর,জেনারেল ইমাদ সাহেব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার পর জাতীয় সংগীত শেষে প্যারেড শুরু হয়েছে,প্যারেড শেষ হওয়ার পরেই সবাই যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছে।সারা এসে মিম’কে বললো,
– “যে ভয় পেয়ে ছিলাম? শেষমেষ তোর ওই টেকনিক টা কাজে দিয়েছে।” এরি মধ্যে ইমান এসে মিম’কে তাড়া দিয়ে বললো,
– “তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আসো! কি অবস্থা তোমার? এখনো রেডি হতে পারোনি? মিনিট দশেক বাদে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।” মিম তৈরি হয়ে এলো,স্টেজে ওঠার পরে ইমান মিম’কে বললো,
– “শাড়ি পরে দৌড়াদৌড়ি করছ? সাবধানে হাঁটাচলা করো,লেগে যাবে,নয়তো আবার আজকাল মেয়ে দেখতে আসলে পাত্রপক্ষ কত কি দেখে?
.
চলবে,,,
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url