Breaking News

Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ০৯



সাতটা দিন সময় দাও নিজেকে।”
“ইতি তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী”
মিম বললো,
– “আচ্ছা আমার এই শুভাকাঙ্ক্ষী টা আবার এলো কোথা থেকে? পরক্ষণেই,ও হাতের লেখা টা খেয়াল করে দেখলো আর বুঝতে পারলো,ইমান কাজ টা করেছে।ওদিকে এসব দেখে নীলাসা,স্বর্ণা ওরা বললো,
– ” ব্যাপার কি? আমাদের দুলা ব্রো? এগুলো তোকে পাঠিয়েছে?” মিম চমকালো,বিষয়টি এড়িয়ে যেতে বললো,
– “লোকটা কে পাগলো ধরেছে।” সারা বললো,
– “তাহলেই ভেবে দেখ? লোকটা কত ভালোবাসে? ভালো মানুষ? সম্মান করে এবং খেয়াল রাখে তোর দিকে?” মিম মনেমনে বললো,
– “কচু! আমি কি করে মুখ দেখাবো এখন ওই লোকটা কে? আমার নাক নেই আর যেটাও ছিলে,সেটাও কেটে গেছে কিছুক্ষণ আগে।” লেইলা বললো,
.
– “কি ব্যাপার মিম? এতো চিন্তিত লাগছে কেন তোমাকে?” মিম বললো,
– “কিছুনা! কিছু ভালো লাগছে না জাস্ট সকাল থেকে।” মিম চোরের মতো বিকেলে ডাইনিং এরিয়ায় চা খেতে এলো,চা খেয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো ইমান দু’হাত দূরেই দাঁড়িয়ে আছে।
ও ঝটপট চায়ের কাপ টা বুয়াকে দিয়ে,উঠে দাঁড়ালো,হঠাৎ ইমান এসে জিজ্ঞেস করলো,
– “ফ্রী আছো? কিছু কথা ছিল তোমার সাথে।” মিম আমতা আমতা করে বললো,
– “জ্বি স্যার! বলুন,তাড়াতাড়ি বলুন আমার কিছু কাজ আছে।” মিমের ব্যস্ততা দেখে ইমান বললো,
– “কি হয়েছে তোমার? তোমার শরীর ঠিক আছে?” মিম বললো,
– “জ্বি স্যার! আলহামদুলিল্লাহ,যেটা বলেছিলাম,সেটা কি মনে আছে?” ইমান একটা কাগজ মিমের হাতে দিয়ে বললো,
– “এখানে ট্যাটু কারি এবং তাদের পরিচয় সব উল্লেখ করা আছে।” মিম একবার কাগজে চোখ বুলিয়ে ইমান’কে বললো,
– “একজনের নাম এখানে উল্লেখ করা নেই স্যার! তাকে খুঁজে বের করুণ আগে।” ইমান হঠাৎ মিমের হাত চেপে ধরে বললো,
– “তুমি যখন জানোই,তখন কেন নাম টা খুলে বলছ না আমার কাছে?” মিম বললো,
– “আমি এখনো তার বিরুদ্ধে কোনো স্ট্রং প্রমাণ খুঁজে পাইনি স্যার,তাই তার নাম টা ও খুলে বলতে পারছিনা আপনার কাছে আর নাম শুনলেই যে আপনি আমাকে দু’চোখ বুঝে অন্ধবিশ্বাস করবেন তার কি প্রমাণ আছে? যেখানে আমার নাম টাই আপনার সন্দেহের তালিকায় সবচেয়ে উপরে আছে?” ইমান হঠাৎ কি ভেবে জিজ্ঞেস করলো,
– “তোমার বয়স কতো হবে?” মিম বললো,
– “বাইশ বছর রানিং,কেন?” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “এতো বড়বড় কথা মানায় না তোমার মুখে।” মিম চমকে ইমানে দিকে তাকিয়ে রইলো,ইমান মিটিমিটি হাসতে হাসতে বেড়িয়ে গেলো মিলিটারি একাডেমি থেকে।রাতে মিম জেনারেল ইমাদ সাহেবের কাছে এসে অনুরোধ করে বলে,
.
– “স্যার আমি অংশগ্রহণ করতে চাই বার্ষিকক্রীয়া প্রতিযোগিতায়।”
– “ঠিক আছে।” তবে ইমান বাঁধ সেধে বললো,
– “মিম আমি তোমাকে সে অনুমতি দিচ্ছি না।কারণ ডক্টর তোমাকে প্রপার বেড রেস্ট দিয়েছে।” মিম বলল,
– “আরে ভাই তাতে কি? আমি কি পারি না ব্যাডমিন্টান খেলায় নাম লেখাতে?” ইমান বললো,
– “না তুমি পারো না,প্লিজ নিজের ঠিক মতো যত্ন নাও,খেয়াল রাখো নিজের দিকে।” মিম মনেমনে বলল,
– “সং কোথাকার যেন একটা ফালতু আমার পেছনে লেগে থাকে।” ইমান মৃদু হেসে বললো,
– “গাল ফুলিয়ে,রাগ দেখিয়ে লাভ নেই যাও এখান থেকে।” মিম বিড়বিড় করে বললো,
– “শালা ফোর টুয়েন্টি দেখে নেবো তোকে।” ইমাদ সাহেব হাসতে হাসতে ইমান’কে বললো,
– “ও নয় ব্যাডমিন্টান খেলতো,তুমি বাঁধ সাধলে কেন ওকে?” ইমান বললো,
– “জানিনা স্যার! এবার যে আমার ও ওকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে।”
তারপর ইমান ইমাদ সাহেবের ঘর থেকে বেরিয়ে দেখে মিম উপ-পরিচালক তেভভিদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে আর জনাব তেবভিদ ও কেমন যেন মিমের গায়ে পরে পরে কথা বলছে।অতঃপর মিম চলে গেলো,
ইমান খেয়াল করে দেখলো জনাব তেভভিদ কেমন করে মিমের দিকে তাকিয়ে আছে।ইমান হঠাৎ এগিয়ে এসে কি ভেবে বললো,
– “মেয়ে টা কে আমার অনেক ভালোলাগে।” জেনারেল তেভভিদ মৃদু হেসে বললেন,
– “হ্যাঁ,ওর ফিগার টা অনেক সুন্দর।” কথা টা শুনে ইমান অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো তার দিকে,পরক্ষণেই ইমান তেভভিদ’কে বললো,
– “স্যার! আপনার পরিবার কেমন আছে?” তেভভিদ বললেন,
– “ভালো,তুমি যে কেসের ব্যাপারে কিছু ডিসকাশ করলে না আমার সাথে?” ইমান বলল,
– “স্যার! আপনি বেশ ক’দিন ধরে ছিলেন না।তার ওপরে জেনারেল ইমাদ স্যার এই বিষয় টা কনফিডেনসিয়াল রাখতে বলেছে সবার কাছ থেকে।”
.
– “মানে এটা টপ সিক্রেট? আমাকেও জানানো যাবে না?”
– “হুমম,বিষয়টি গোপন আছে।”
– “আচ্ছা,ইমান! ভালো থাকো আর হ্যাঁ একটু দেখে শুনে চলাফেরা করো রাস্তাঘাটে।” কথাটা শুনে ইমানের বেশ খটকা লাগলো,তবুও মুখের হাসি ধরে রেখে এগিয়ে গেলো সামনে দিকে।
রাতে ইমান ছাঁদে পায়চারী করছিল,একটু আগেই খবর পেলো সিলভানার বিয়ে হয়েছে তার কোটিপতি বিজনেস ম্যান চাচাতো ভাইয়ের সাথে।কেন যেন তার কোনো কষ্ট হচ্ছে না,মন টাই মরে গেছে,কোনো অনুভূতি কাজ করছে না,তার মনে হচ্ছে যেন বেঁচে থেকেও মরে আছে?
কাল ও কথা হলো মেয়েটির সাথে,বলল সব ঠিক আছে অথচ আজ তার বিয়ে হয়ে গেছে? এটা ঠিক হজম হচ্ছে না ইমানের,খটকা লাগছে তার পুরোনো সব কথা ভেবে।এরি মাঝে স্পর্শীয়া’র কথা মনে পরলো কিন্তু কেন যেন ইমানের জ্বালাতন করতে ইচ্ছে করলো না মেয়ে টা কে।হঠাৎ একটা কাগজের প্লেন উড়ে এসে ইমানের গায়ে পরলো।ইমান চমকে গেলো হঠাৎ এমন আকস্মিক ঘটনাতে,পেছনে ফিরে দেখে মিম পালিয়ে যাচ্ছে,কেন যেন ওর হাসি পেলো মিমের অদ্ভুত কাণ্ড দেখে? ও মনেমনে ভাবলো,
– “হয়তো মেয়ে টা আবারো ট্রুথ আর ডেয়ার খেলছে আমার সাথে? আচ্ছা এই মেয়ে টা কি ভাবে কি আমাকে?” ও হঠাৎ রেগে গিয়ে কাগজের প্লেন টা ছুড়ে ফলতে গেলো,তখন খেয়াল করে দেখলো,ম্যাসেজ আকারে কিছু লেখা আছে তাতে।ইমান ঝটপট প্লেন টা খুলে দেখলো,তাতাে লেখা,
– “বিশ্বস্ত লোক সব বদলে ফেলুন! খবর পাচার হয়ে যাচ্ছে,বাহিরের লোকের কাছে।” ইমান অবাক হলো,পরক্ষণেই ভেবে দেখলো,
.
– “মিম ওর জায়গায় একদম ঠিক আছে,নাহলে আমি গত একসপ্তাহ ধরে কি করে এক জায়গায় আটকে আছি? এটা তো হওয়ার কথা না? নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা আছে?
কিন্তু সমস্যা টা কোথায়? কি করে আইডেন্টি ফাই করবো সেটা’কে?” সকালে মিম ইমান’কে অনুরোধ করে বললো,
– “স্যার! দয়া করে সব প্রমাণ গুলো দ্বিতীয় বারের মতো ল্যাব টেস্ট করাতে পারবেন অন্য কোথাও থেকে?”
– “কেন?”
– “সেটা এখানে বসে বলা যাবে না,কোনো না কোনো ভাবে লোকটা’র কানে চলে যাবে।” ইমান মিটিমিটি হেসে হঠাৎ বললো,
– “সমস্যা নেই,তিন দিন পর ধীমান একটা রেগুলার চেক-আপের জন্য নিয়ে যেতে বলেছিলো তোমাকে।” মিম চমকালো,চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো,জেনারেল তেভভিদ কাছেই দাঁড়িয়ে আছে।ইমাদ সাহেব এসে বললো,
– “আচ্ছা ইমান,তুমি ওকে নিয়ে যাও এবং সাবধানে থেকো রাস্তা ঘাটে আর যত সম্ভব তাড়াতাড়ি ফিরে আসার চেষ্টা করো নিউজে দেখলাম আজ সারাদিন এবং রাতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।” ইমান হাসলো,বললো,
– “আচ্ছা ঠিক আছে।” তবে তেভভিদের হাবভাব কেন যেন ইমানের একটু ও ভালো লাগলো না,সুবিধাজনক মনে হলো না তাকে।” ইমান কার ড্রাইভ করতে করতে মিম’কে বলল,
– “বলো কোন রেস্টুরেন্টে যাবে?” মিম মিটিমিটি হেসে বললো,
– “রেস্টুরেন্টে কেন স্যার? নিউরোসার্জনের কাছে যাচ্ছি যখন,তখন আমাকে নিয়ে চলুন তার কাছে?” ইমান চমকালো,তারপর খেয়াল করে দেখলো একটা ব্লাক পাজেরো ফলো করছে ওদের গাড়ি টা কে।ইমান হাসলো,বললো,
– “আই এম কোয়াইট ইম্প্রেশড! তুমি কিভাবে খাটাও তোমার এই জিরো সাইজের মাথা টা কে?” মিম মুখ ভেংচে বললো,
.
– “আপনার কি মনে হয় স্যার? আমার মগজে ঘিলুর বদলে গোবর ভরা আছে?”
– “না না,ইসস! এতো টাও বুদ্ধি কম নেই ম্যাম আমার মগজে,বাই দ্যা ওয়ে! আমরা যতক্ষণে পোঁছাবো,তুমি ততক্ষণ প্রেম করতে পারো বয়ফ্রেন্ডের সাথে।” মিম রেগে গিয়ে বললো,
– “শুনুন,আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড কিংবা টয়ফ্রেন্ড নেই।”
– “ঠিক আছে,তবে!”
– “সে আমার জাস্ট ফ্রেন্ড।”
– “ও ও কি? জাস্ট ফ্রেন্ড? তাহলে ঠিক আছে।” পরক্ষণেই ইমান আনমনে হাসতে লাগলো স্পর্শীয়ার কথা ভেবে,মনেমনে বললো,
– “সে শুধুই আমার বন্ধু নয়,আমি হয়তো ভালোবাসি তাকে?” তখন হঠাৎ মিম ইমান’কে খোঁচা মে’রে বললো,
– “কি অবস্থা আপনার? দেখে চালান,এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে।”
– “তো?”
– “নিজে ও মরবেন সাথে মারতে চান আমাকে?” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “না না,তুমি যেটা করছিলে,সেটা করো না।প্রেম করছিলেনা জাস্ট ফ্রেন্ডের সাথে?” মিম গাল ফুলিয়ে বসে রইলো,ইমান মিটিমিটি হাসতে লাগলো ওর রাগী চেহারা দেখে,মিম মনেমনে বললো,
– “অসহ্য কর লোক একটা! ইচ্ছে করছে আলতো হাতে গলাটা টিপে দিতে।”
.
চলবে,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com