Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -১১



রাতে ঈশা বাসায় এলো।মানে সন্ধ্যার পরপর ঈশা বাসায় ঢুকলো।আহির চায়ের দোকানেই বসে ছিলো।আহির ওখান থেকে উঠে এসে বললো!
আহিরঃ কোথায় ছিলি এতক্ষন?
ঈশাঃ একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজ ছিলো আমার।
আহিরঃ কি কাজ?
ঈশাঃ তুমি আবার কবে থেকে আমার কাছে “জেরা” করতে শুরু করলে ভাইয়া?
আহিরঃ ত্যাড়া-ত্যাড়া উত্তর দিচ্ছিস ক্যান তুই?
ঈশাঃ কলেজের কিছু কাজ ছিলো।
আহিরঃ এক্সাম কেমন হয়েছে।
ঈশাঃ বেটার।
আহিরঃ রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নে।
ঈশা আর কোনো কথার উত্তর দিলো না।সোজা নিজের ঘরে চলে গেলো।ভিন্টু,মোটু আর বাম্ব বুঝেছে যে কিছু একটা হয়েছে ঈশার।
ঈশা রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে শুয়ে রইলো।ঈশা শুধু একটু আগের ঘটে যাওয়া কাহিনী কল্পনা করছে।আকাশের প্রতিটা কথা ঈশার শরীরে গিয়ে গেঁথে গেছে।ঈশা চুপ করে শুয়ে ভাবতে লাগলো।ঈশার মা ঈশার রুমে খাবার নিয়ে এলো প্লেটে করে।
.
ঈশার মাঃ কিরে অ’বেলায় শুয়ে আছিস কেনো তুই?
ঈশাঃ কিছু না আম্মা।
ঈশার মাঃ খুশির খবর আছে আমাদের জন্য।
ঈশাঃ কি খবর আম্মা?
ঈশার মাঃ আহির ইন্টারভিউ তে সিলেক্ট হয়েছে।কাল থেকে অফিসে জয়েন করতে বলেছে।ফোনে ম্যাসেজ এসেছে আহিরের বিকেলে।
ঈশাঃ কিহ্! তাই নাকি।এটা তো খুব ভালো খবর।
ঈশার মাঃ তোর পরীক্ষা কেমন হয়েছে?
ঈশাঃ আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো হয়েছে।
ঈশার মাঃ খেয়ে নে।আমি খাইয়ে দিচ্ছি আয়।
ঈশাঃ আম্মা আমি এখন খাবো না।তুমি খাবার নিয়ে যাও।আমি রাতে খাবো।
ঈশার মাঃ সারাদিন কিছু খেয়েছিস তুই?
ঈশাঃ উঁহু!
ঈশার মাঃ তাহলে?
ঈশাঃ আম্মা আমার রাক্ষসের পেট না।আমি পরে ক্ষুদা লাগলে খেয়ে নিবো।
ঈশার মাঃ জোর করবো না তোকে।যা ভালো মনে হয় কর।কিন্তু খাবার সময় মতো খেয়ে নিস।
ঈশাঃ হুমম।
ঈশার মা চলে গেলো ঈশার রুম থেকে।ঈশা আবারো নিজের কল্পনায় ডুব দিলো।ঈশা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।আকাশের করা ব্যবহার গুলো।ঈশার গলা দিয়ে পানি পর্যন্ত নামছে না।আকাশের কথাগুলো শুধু কানে বাজছে।
ওদিকে ভিন্টু,মোটু আর বাম্ব বসে আছে আহিরের সাথে চায়ের দোকানে।আহির চুপ করে বসে সিগারেটের ধোঁয়া উড়াচ্ছে।অবশ্য অফিসে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কি-কি হয়েছে সবকিছু আহির এসে ওদের ৩ জন’কে বলেছে।সবকিছু শোনার পর নিরবতা পালন করছে সবাই।মাঝখানে শুধু মোটু বসে চিপস্ খাচ্ছে।
ভিন্টুঃ তার মানে ওই অফিস আয়রা নামে মেয়েটির?
আহিরঃ হয়তো ওদের ফ্যামিলি কোম্পানি ওটা।
মোটুঃ তাহলে এখন কি হবে?
আহিরঃ জানি না।
.
বাম্বঃ ম্যাসেজ তো এসে গেছে তোর ফোনে।কাল থেকে জয়েন করতে হবে অফিসে তোর।
আহিরঃ আমি ওই অফিসে জব করবো না।
ভিন্টুঃ দোস্ত কিছু মনে করিস না।বাট চাকুরি কিন্তু সহজে পাওয়া যায় না।
আহিরঃ আমি না খেয়ে মরে গেলেও! ওদের অফিসে চাকুরি করবো না।
মোটুঃ ওরা ভাব্বে তুমি ভয় পেয়ে চলে গেছো।
আহিরঃ যা ভাবার ভাবুক ওরা।
বাম্বঃ ওদের সাথে কথা বলবি না তুই সিম্পল।নিজের মতো জব করবি।
আহিরঃ ওরা আমাকে প্ল্যান করে জব-এ সিলেক্ট করেছে।যাতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারতে পারে।মন ভরে অপমান করতে পারে।
মোটুঃ এমন তো নাও হতে পারে।
আহিরঃ ওই অসভ্য মেয়ে এমন কিছু নেই যা পারে না।বাজে মেয়ে একটা। [আয়রা’কে উদ্দেশ্য করে]
বাম্বঃ তুই কি ভয় পাস নাকি মেয়েটাকে?
আহিরঃ ওই মেয়েকে দেখলেই আমার শরীর জ্বলে যায়।আর আমি পাবো ভয়?
ভিন্টুঃ তাহলে এতকিছু ভাবিস না।সিলেক্ট যেহেতু হয়ে গিয়েছিস।তখন জব কন্টিনিউ কর।
আহিরঃ আমি করবো না ওখানে জব দ্যাট’স ফাইনাল।
ঈশাঃ তুমি ওই অফিসে জব করবে আহির ভাইয়া।
সবাই ঈশার গলা শুনে সামনে তাকিয়ে দেখলো! ঈশা বুকে দু হাত বটে দাঁড়িয়ে আছে।ঈশা এগিয়ে এলো আহিরের দিকে।আহির’কে ইশারায় বসা থেকে উঠে দাঁড়াতে বললো।আহির উঠে দাঁড়ালো।ঈশা গিয়ে জড়িয়ে ধরলো ওর আহির ভাইয়া’কে।তারপর ছেড়ে দিয়ে আহিরের দু হাত নিজের দু হাতের ভাজে নিয়ে বললো!
ঈশাঃ অল দ্যা বেস্ট ভাইয়া। [মিষ্টি হেসে]
আহিরঃ আমি…!
.
ঈশাঃ কোনো কথা না।বাবা-মা তোর উপর ভরসা করে বসে আছে।তাছাড়া পরিবারের কথা ভাব।আমার কথা ভাব।
আহিরঃ কিন্তু…!
ঈশাঃ তোর কাছে বাবা-মায়ের দাম বেশি।নাকি ওই মেয়েটার? তাছাড়া মেয়েটা কোনো প্ল্যান করলেও কি আসে যায় তাতে।তুই ভয় পাবি কেনো?
ভিন্টুঃ একদম ঠিক বলেছে ঈশা।
আহিরঃ ঠিক আছে।আমি তোদের সাথে কখনোই কথা ‘বা’ ঝগড়ায় পেরে উঠবো না জানা কথা।প্রতি বারের মতো তোরা জিতেছিস আর আমি হেরে গিয়েছি খুশি?
মোটুঃ সেই খুশিতে একটা পার্টি হয়ে যাক।ভালো-ভালো খাবার হবে অবশ্যই।
বাম্বঃ তুই খালি খাবি আর খাবি।
ভিন্টু,মোটু,বাম্ব,আহির আর ঈশা একত্রে গোল হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো।
দেখতে-দেখতে রাত পার হয়ে গেলো।সকাল বেলা টিংকু ভাই নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।আয়রা ৩ মগ কফি বানালো নিজে।আজ অনেক দিন পর নিজের হাতে কফি বানালো আয়রা।এক মগ কফি টিংকু ভাইয়ের রুমের বেড সাইড টেবিলে রাখলো।তারপর ডাকলো টিংকু ভাই কে আয়রা।
আয়রাঃ টিংকু ভাই!
টিংকু ভাইঃ হুমম মর্নিং।
আয়রাঃ তোমার কফি।
টিংকু ভাইঃ ওকে।
আয়রা হাল্কা হেসে কফির মগ রেখে টিংকু ভাইয়ের রুম থেকে বের হয়ে গেলো।টিংকু ভাই আয়রার বাবার পার্সোনাল এ্যাসিস্ট্যান্ট।আয়রার যখন ১০ বছর বয়স আর আকাশের যখন ৫ বছর বয়স তখন থেকে এখানে এই বাড়িতে থাকে।আয়রার বাবার ছোটো ভাইয়ের মতো আর এই বাড়ির একজন মেম্বার টিংকু ভাই।কিন্তু সব’সময় মজার মধ্যে থাকে সে।আয়রা আর আকাশের বাবা না হলেও চলবে।কিন্তু টিংকু ভাই ছাড়া চলবে না।
আয়রা কফির মগ নিয়ে আকাশের রুমে গেলো।আকাশ এখনো ঘুমাচ্ছে।আয়রা আকাশের পাশে বসে আকাশের মাথার চুলে হাত বুলাতে লাগলো।তাতে আকাশ নড়ে-চড়ে আল্তো ভাবে চোখ মেলে তাকালো আয়রার দিকে।তারপর ভাঙা গলায় বললো!
.
আকাশঃ গুড মর্নিং!
আয়রাঃ সেম টু ইউ।
আকাশঃ আমার কফি?
আয়রাঃ না উঠলে কি তোর মুখের উপর গরম কফি ঢালবো?
আকাশঃ আপু প্লিজ!
আকাশ বেডে আধশোয়া হয়ে বসলো।আবার ঘুমে ঢলে পরলো আয়রার ঘাড়ে।আকাশের হাতে গরম কফির মগ ধরিয়ে দিলো আয়রা।আকাশ এখনো বাচ্চাদের মতো হাতে কফির মগ নিয়ে! আয়রার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।
আয়রাঃ কি হলো তোর?
আকাশঃ কিছু না।
আয়রাঃ আহির নামে ছেলেটি আজকে থেকে আমাদের অফিসে জয়েন করবে।
আকাশঃ কোন সেকশনে? [কফি তে এক চুমুক দিয়ে]
আয়রাঃ কম্পিউটার সেকশনে।
আকাশঃ ভালো।
আয়রাঃ দেখ! কি করি আমি ওর সাথে। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
আকাশঃ আমিও কাল অফিসে যাবো।
আয়রাঃ বাহ্! অফিসে যাওয়ার সুবুদ্ধি হলো তোর?
আকাশ কিছু বলতে যাবে তখনি আকাশের ফোন বেজে উঠলো।আয়রা তাকিয়ে দেখলো! আকাশের ফোনের স্ক্রিনে স্পষ্ট “সুমু” নাম ভেসে উঠেছে।আয়রা বেড থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো!
আয়রাঃ তুই কি ভালো হবি না? কত নাম্বার গার্লফ্রেন্ড এটা?
আকাশঃ কাউন্ট করার মতো সময় নেই আমার।
আয়রাঃ তুই শূধ্রাবি না ফাজিল কোথাকার।
আয়রা চলে গেলো নিজের রুমে।আকাশ ফোন‌ রিসিভ করলো “সুমু” নামে মেয়েটির।
.
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com