Breaking News

গল্পঃ ভুলের মাশুল । পর্ব -০৩



রায়হান মনে মনে খুব খুশী ওর কার্য সাধন হয়েছে তাই।এত দিনে ওর মনোবাসনা পূরণ হতে যাচ্ছে।
কারন রোহান আর রুহির সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তটা সে ভিডিও করেছে।এতে রোহানের কোন দোষ নেই।
সেই তৃতীয় দৃষ্টি ছিল তার।
এদিকে রোহানকে অনেক মারধর করায় ও অনেক অসুস্থ হয়ে গেছে, উঠে দাঁড়াতে পারছে না,
সেদিন রুহি চলে যাওয়ার পর ও ফ্রেশ হয়ে বাহিরে গেলেই কয়েকজন লোক ওকে ধরে নিয়ে যায়।খুব মারধর করে।
ওর ফেসবুক আইডি জেনে নিয়ে ফোনটি ভেঙে ফেলে।প্রায় কতদিন ও বন্দি ছিল তা মনে করতে পারছে না।এদিকে কত কিছু হয়ে গেছে তার কিছুই রোহান জানে না।কোনমতে বাসায় গেল,ওর আপু দুলাভাই এতদিন পর ওকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছে।ওনারা এতদিন ওকে অনেক খুঁজেছে।খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল।রোহান বেঁচে আছে নাকি নেই এই ভেবে।ওকে একটা হসপিটালে নিয়ে গেল ওর আপু
.
এখানে ওর আপুর কাছেই থাকে।বাবা মা দেশের বাড়ি তে থাকে।আপু ওকে নিজের সন্তানের মত ভালোবাসে।
ডাক্তার দেখল শুনলো সব ঘটনা ঔষধ দিয়ে দিল আর রেস্ট নিতে বললো।
রোহানের খুব মনে পড়ছে ওর ভালোবাসার মানুষটির কথা,কি ভেবেছে রুহি ওর সম্পর্কে।আসলে ও তো এতদিন বন্দি ছিল কি করে রুহির খোঁজ নিবে।আপুর কাছ থেকে ফোন নিয়ে রুহির আইডিতে সার্চ দিল।খুঁজে পেল না।রুহির নাম্বারে ফোন দিল বন্ধ বলছে।কিভাবে খোঁজ নিবে রুহির কিছু ভাবতে পারছে না।রোহান এটাও বুঝলো না কেন ওকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কি অপরাধ ছিল তার।
এদিকে রুহির বিয়ের তোড়জোড় চলছে।রায়হান এখন রুহিকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়।বেশিরভাগ সময় রুহির মন খারাপ থাকে।ওর বাবার কত ইচ্ছে ছিল খুব ধুমধাম করে বিয়ে দিবে ওর,আর আজ চোরের মতো লুকিয়ে বিয়ে দিতে হচ্ছে।রুহি কাউকে বলে নি একমাত্র সায়মা ছাড়া।যেহেতু সায়মা সব জানে তাই ওকে বিষয়টি খুলে বললো।সায়মা বললো
.
__হারামজাদাটা কই এখন?
ওকে একটা শিক্ষা দেয়া উচিত
__না রে দোস্ত আমার কপালে যা হওয়ার তাই হবে।এত জানাজানি হলে বাবাকে আর থামাতে পারব না।খুব কষ্ট করে বাবার মনে জায়গা করেছি।
__এটা তুই কি বললি এমনি এমনি ছেড়ে দিবি শয়তানটাকে
__থাক বাদ দে,দেখ রায়হান আমাদের ড্রাইভার কত ভালো আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে,নইলে বাবা অনেক টেনশনে পড়ে যেত।
__এটা ঠিক বলেছিস,ছেলেটি সব জেনে রাজি হয়েছে
এটাই অনেক কিছু।
__আচ্ছা তুই আসিস বিয়ের দিন।বেশী কোন লোককে জানানো হবে না
__অবশ্যই আসবো।
.
ও চলে যাবার পর রুহি মনে মনে ভাবল যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন একজন প্রকৃত মেয়ে আর স্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করবে।আর কোন কষ্ট ও বাবাকে দিতে পারবে না।রুহির মা আসল বললো
__দেখ তোর বিয়ের শাড়ি রায়হান পছন্দ করে কিনেছে।ও বলেছে ওর বেতনের টাকা দিয়ে তার বৌয়ের শাড়ি কিনবে।
__ভালোই শাড়িটা সুন্দর হয়েছে
__তাহলে তুই ওর বিয়ের শেড়ওয়ানিটা পছন্দ করিস
__আচ্ছা মা করবো তবে কাল আজ ভালো লাগছে না
রোহানের কাছে একটা লোক এসে বললো
__আপনি কি রোহান
__জী বলুন
__আপনি জানেন রুহির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে
__কবে কার সাথে?
__ওদের ড্রাইভার এর সাথে
__কেন ও তো আমাকে ভালোবাসে,আর আপনি কে?
এসব বলছেন
__আমাকে চিনবেন না আপনার ভালোর জন্য বলছি।
লোকটি চলে গেল।
রোহান লোকটির কথা বিশ্বাস করলো না।তারপরেও ওর মন মানছে না।রুবির বাড়ি ও চিনে।ওখানে গিয়ে লুকিয়ে দাড়িয়ে আছে।কখন রুহি বের হবে
ঐ দিন রুহিকে পেল না।
.
পরের দিন রুহির পিছন পিছন ছুটল,একটা গলিতে গিয়ে রোহান ওর হাত ধরল
রুহি ফিরে দেখল এ তো কালপ্রিট টা
বসিয়ে দিল কয়েকটা চড়,আর বললো
__আবারও ব্লাকমেইল করবি।
সেই সুযোগ আর পাবি না।আর কোনদিন সেই সুযোগ পাবি না।হাত ছাড় দে বলছি
__প্লিজ আমার কথা শোনো কি করেছি আমি বলো
__এতবড় অপরাধ করার পর বলছিস কি করেছি
রুহি আর কথা না বাড়িয়ে হেঁটে চলে গেল।
রায়হান দুর থেকে সব খেয়াল করল।কিছু বললো না।রুহিকে ও কিছু জিজ্ঞেস করলো না,কারন ও চায় ওদের দুজনের মিল হোক।ও যেটা চেয়েছে সেটা হয়ে গেছে।বাকিটা হবে বিয়ের দিন
রুহি তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরল কারন ওর ভয় করছিল
কখন শয়তানটা এসে পড়ে ওর সামনে।কোথ থেকে জোগাড় হলো এতদিন পর।আর ওর সামনেই আসল কেন।রুহি ওর কথা ভাবতেও চায় না।ও এখন একজনের কথাই শুধু ভাববে।
বিয়ের দিন ঘনিয়ে এল
.
সবকিছু ঠিকঠাক রায়হান এর বাবা মা এসেছে।রুহিদের কিছু আত্মীয় এসেছে।সায়মা ও ছিল।
রুহির সাজ শেষ হলে রুহি আসল খুব চমৎকার লাগছে
এত সুন্দর একটি মেয়েকে পেয়ে ও ছেড়ে দিতে হচ্ছে কারন রায়হান জানে রুহি এখনও মনে প্রাণে রোহানকে ভালোবাসে।
আর ওর কি ও যা চেয়েছিল তা একটু পরেই ঘটবে।কাজী সাহেব আসতেই রায়হান বলে উঠল
__আমি এই বিয়ে করতে পারবো না,এত বাজে একটা মেয়েকে আমি স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবো না।গরীব বলে এই লোকটি আমাকে তার মেয়ে কে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করেছে
__হায় হায় এসব কি বলছো কখন আমি তোমাকে বাধ্য করলাম
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com