Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড | পর্ব -২৩



ঈশার ধমকানো শুনে আকাশ উঠে! ঈশার হাত ধরে টেনে ঈশা’কে দেয়ালে চেঁপে ধরলো।ঈশার একদম কাছে চলে এলো আকাশ।ঈশা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।
ঈশাঃ আকাশ লিভ মি!
আকাশঃ হাউ ডেয়ার ইউ? আমাকে ধমকে জোরে কথা বলছো আমার সাথে তুমি?
ঈশাঃ তাহলে তুমি উল্টো-পাল্টা কথা বলছো কেনো?
আকাশঃ চাইলে আমি এখনি চ্যালেঞ্জে জিততে পারি।কারন চ্যালেঞ্জে ডিল হলেছিলো।তুমি আমার উপর রাগ দেখাতে পারবে না।
ঈশাঃ ফাইন! তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ্।আমাকে আর কষ্ট করে এই বাড়িতে আসতে হবে না।
আকাশঃ তাহলে তুমি বয়ফ্রেন্ডের বাইকে করে প্রতিদিন ঘুরতেও পারবে না।বাইকে বয়ফ্রেন্ডের গাঁ ঘেঁষেও বসতে পারবে না।
.
ঈশার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে এবার।ঈশা জোরে এক ধাঁক্কা দিলো।আকাশ দু হাতের বাহু ছেড়ে দিলো ঈশার।ঈশার ধাঁক্কায় আকাশ একটু দূরে সরে গেলো।
ঈশাঃ তোমার সাহস কিভাবে হলো আমাকে স্পর্শ করার?
আকাশঃ এখানের সাহসের কি আছে।
আকাশ ইচ্ছে করেই কথাটা বললো ঈশা’কে।ঈশা রেগে গিয়ে আকাশের বুকের দু পাশের গেঞ্জি খাঁমচে ধরলো।আকাশ একবার নিচে নিজের বুকের দিকে তাকালো।তারপর ঈশার দিকে তাকালো।
ঈশাঃ আমাকে কি তোমার অন্যসব মেয়েদের মতো মনে হয়?
আকাশঃ আমার গেঞ্জি ছাড়ো ঈশা।
ঈশাঃ আমি বেশি কথা বাড়াবো না আকাশ।শুধু এতটুকু’ই বলবো! আমাকে তুমি অন্যসব মেয়েদের সাথে গুলিয়ে ফেলো না।তাহলে সেটা তোমার ভুল ধারণা হবে।
কথাটা বলে ঈশা ছেড়ে দিলো আকাশের গেঞ্জি।তারপর ঈশা আরো বললো!
ঈশাঃ ওয়েট এ মিনিট! আমি যদি রিলেশন করেও থাকি।তাতে তোমার কি প্রবলেম? আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে আমি বাইকে ঘুরলেও কি আসে যায় তোমার?
আকাশঃ আই হ্যাভ নো প্রবলেম।এ্যান্ড আই ডোন্ট কেয়ার এবাউট ইউ।
ঈশাঃ দ্যাট’স গুড।
.
আকাশঃ আমার রুম পুরো ক্লিন দেখতে চাই আমি।
আকাশ ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।ঈশা একবার আকাশের পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিলো।এখন ঈশা চোখে পুরো ধাঁধা দেখছে।চারিপাশে আকাশের জামাকাপড় ছড়ানো-ছিটানো।বেড সাইড টেবিলে খালি কফির মগ ৩টা।টেবিলে বিভিন্ন রকম কাগজ-কলম এলোমেলো।বিছানায় বালিশ,কম্বল ওলট-পালট।এক কথায় পুরো রুম একটা ডাস্টবিনের সমতূল্য।
ঈশাঃ রুম না ময়লার বাক্স কে জানে।ইয়াককক থুউউউউ!
ঈশা এক-এক করে পুরো রুম গুছিয়ে দিলো আকাশের।পুরো ঘর পরিষ্কার করে গুছিয়ে ফেললো।এখন ঈশা আবার পুরো রুম দেখলো!
ঈশাঃ নাহ্ এখন রুম’টা মানুষের বলে মনে হচ্ছে।
আকাশ গোসল করে শুধু টাওয়াল প্যাঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো।ঈশা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চুল ঠিক করছিলো।তখনি আয়নায় দেখতে পেলো।আকাশ শুধু টাওয়াল প্যাঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে।ঈশা রেগে গিয়ে আকাশের সামনে দাঁড়ালো।
ঈশাঃ আজব ছেলে তুমি।তোমার মিনিমাম সেন্স টুকুও নেই? তোমার রুমে একটি মেয়ে রয়েছে।
আকাশঃ তোমার লজ্জা থাকলে তুমি রুম থেকে বের হয়ে যেতে দৌড়ে।আমার সামনে দাঁড়িয়ে পকপক করতে না।
ঈশাঃ ইউউউউ আহ্! [রেগে]
.
আকাশঃ গেট আউট! আমার রুম থেকে বের হয়ে যাও। [জেদ দেখিয়ে]
আকাশ আর ঈশা যখন ঝগড়া করছিলো।তখনি সুমু এসে দাঁড়ায় আকাশের রুমের সামনে।আসলে সুমু আকাশের রুমে ঢুকতে গিয়েও থেমে যায়।আকাশ আর ঈশা’কে একসাথে দেখে।সুমুর সন্দেহ হয় ওদের দু’জন কে নিয়ে।
ঈশা রেগে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য যেই আকাশের সামনে থেকে সরে আসতে নেয়! তখনি পাপসে পাঁ বেজে পরে যাচ্ছিলো।আকাশ সামান্য এগিয়ে ঝুঁকে ঈশার কোমড় নিজের দু হাত দিয়ে জরিয়ে ধরলো।ঈশা বাঁকা অবস্থায় আধশোয়া হয়ে আকাশের গলা জরিয়ে ধরলো।সুমু আকাশের রুমে ঢুকে তালি বাজালো।আকাশ আর ঈশা’কে এই অবস্থায় দেখে।আকাশ সুমু’কে দেখে ঈশা’কে ছেড়ে দিলো।বেচারা ঈশা ফ্লোরে ঠাসসসসস্।ঈশা ফ্লোর থেকে উঠে দাঁড়ালো।
সুমুঃ বাহ্ আকাশ! তুমি খালি গাঁয়ে।ঈশা তোমার বেড রুমে।বাড়ি পুরো ফাঁকা।
আকাশঃ সুমু কি বলছো এগুলো তুমি? তোমার মাথা ঠিক আছে?
সুমুঃ আমার চোখে সবকিছু দেখলাম আমি।এখনো কিভাবে নিজের চোখ’কে অবিশ্বাস করি আমি?
ঈশাঃ দেখো সুমু…!
সুমুঃ ইউ জাস্ট সাট আপ। [চিল্লিয়ে ঈশা’কে উদ্দেশ্য করে]
আকাশঃ সুমু তুমি ভুল বুঝছো।
সুমুঃ হাউ ডেয়ার ইউ টু কল্ড মি সুমু? [ঈশা’কে উদ্দেশ্য করে]
আকাশঃ সুমু.‌..!
.
সুমুঃ নিজের দিকে কখনো একবার তাকিয়েছো? বস্তির বাজে নোংরা মেয়ে কোথাকার।আমার নাম নিজের মুখে নেওয়ার সাহস কিভাবে পেলে? তোমাকে তো আমি…!
সুমু নিজের একহাত উঠিয়ে ঈশা’কে চড় মারতে গেলো।আকাশ সুমুর হাত ধরতে যাবে তার আগেই ঈশা নিজে সুমুর হাত শক্ত করে চেঁপে ধরলো।
ঈশাঃ মুখে অপমান করেছেন ঠিক আছে।কিন্তু ভুলেও আমাকে স্পর্শ করার কথা স্বপ্নেও ভাব্বেন না।আর হ্যাঁ! আ’ম এক্সট্রিমলি স্যরি আপনার নাম ধরে ডাকার জন্য।দ্বিতীয় বার এরকম ভুল হবে না আমার।
ঈশা সুমুর হাত ঝাড়া মেরে ফেলে দিলো।আর এক মুহূর্ত ঈশা ওখানে দাঁড়ালো না।চলে গেলো রুম থেকে বেরিয়ে।আকাশ নিজের ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুম থেকে চেঞ্জ করে বের হলো।
আকাশঃ সবকিছু না শুনে কেনো রিয়্যাক্ট করো তুমি সুমু।
সুমুঃ ওহ্ দ্যাট’স মিন! সব দোষ আমার?
আকাশঃ আমি তা বলিনি।
সুমুঃ তাহলে কি বলতে চাচ্ছো তুমি?
আকাশ হাল্কা হেসে পিছন থেকে সুমু’কে জরিয়ে ধরলো।সুমুর রাগ কিছুটা কমলো।আকাশ বললো!
আকাশঃ তুমি ভুলে গেলে?
সুমুঃ কি?
.
আকাশঃ আর এক সপ্তাহ্ পর আমাদের সম্পর্কের ৮ মাস পূর্ন হবে?
সুমুঃ ভুলে গেলে তোমার সাথে দেখা করতে আসতাম না আমি।
আকাশঃ মানে?
সুমুঃ মানে সেদিন একটা ছোটো-খাটো পার্টি রাখবো তোমাদের বাসায়।
আকাশঃ ডান! এখন একটা কিস করো আমাকে।
সুমুঃ নো ওয়ে!
আকাশ আর সুমু দুষ্টুমি করছিলো রুমের ভেতরে।ঈশা রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে আকাশ আর সুমুর সব কথা শুনে নিলো।ঈশা ভেবেছিলো আকাশ সব মেয়ের সাথে যেমন রিলেশন করে! তেমনই সুমুর সাথে আকাশের রিলেশন।কিন্তু ঈশা যে ভুল ছিলো।সেটা আজ প্রমান হয়ে গেলো।আকাশ খুব বেশি সিরিয়াস সুমুর আর ওর রিলেশন নিয়ে।সেটা আকাশের কথায়,কান্ডে বোঝা যায়।ঈশা নিজের চোখের পানি মুছে নিচে নেমে এলো।
ঈশাঃ ঈশা তোর জন্য এটাই বেটার।তুই আকাশ’কে ভুলে যা।কারন আকাশ কখনোই তোর হবে না।আকাশ অন্যকারো আমানত।আর অন্যকারো আমানতের দিকে নজর দেওয়া ঠিক না।নিজেকে কন্ট্রোল কর ঈশা।
ঈশা নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরলো।ঈশা কখন কিভাবে আকাশের খারাপ রূপ দেখেও আকাশ’কে ভালোবেসে ফেললো।সেটা ঈশা নিজেও জানে না।হয়তো ভালোবাসা এরকম’ই হয়।ভালো-খারাপ,গরিব-বড়লোক এসব ভেদাভেদ দেখে হয় না।ব্যাস ভালোবাসা হয়ে যায় হঠাৎ করে।
.
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com