বিশ্বাসঘাতক



রাত এগারোটার দিকে নাঈম তার বন্ধু তামিমকে কল দিয়ে বললো,
- দোস্ত আমার বোনকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। বিকেলে কোচিং থেকে বাসায় আসেনি।
তামিম তখন বেলকনিতে বসে ছিল।
বললো,
- কি বলিস? এতো রাত হয়ে গেছে এখনো তোর বোন বাসায় আসেনি? 
ওর সব বান্ধবীর বাসায় খোঁজ নিয়েছিস?
- সবজায়গা খোঁজ করা হয়েছে, তোকে কল দিচ্ছি তুই কল রিসিভ করিস নাই।
- আমার শরীর বেশি ভালো না তাই সন্ধ্যা থেকে বাসায় ঘুমিয়েছিলাম। এইমাত্র ঘুম থেকে উঠে চা নিয়ে বেলকনিতে এসেছি।
- তুই কি একটু আসতে পারবি? থানায় জানানো হয়ে গেছে, এখন আর কোথায় কোথায় খুঁজবো কিছু বুঝতে পারছি না আমি।
- ঠিক আছে আমি এখনই বের হচ্ছি।
কল কেটে দিয়ে পোশাক পাল্টে দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে যায় তামিম। তামিরের মা জিজ্ঞেস করে কোনো উত্তর না পেয়ে ছেলের চলার পথে চেয়ে রইল। তামিমের বাবা ব্যবসার কাজে দেশের বাইরে গেছে। কল্যাণপুরের এই পুরনো ডুপ্লেক্স বাড়িটা তামিমের দাদা তৈরি করেছেন। সম্পুর্ণ বাড়ির মধ্যে শুধু তামিম ও তার মা-বাবা থাকে।
নিচতলার গ্যারেজের পাশের রুমে পুরোনো কিছু জিনিসপত্র রাখা আছে। তামিম সেখানে প্রবেশ করলো। হাত পা বাঁধা অবস্থা পুরোনো একটা তোষকের উপর পড়ে আছে রিয়া। তামিমের বন্ধু নাঈমের একমাত্র বোন রিয়া। যাকে খুঁজে পাবার জন্য একটু আগেই নাঈম কল করেছে।

রিয়া অসহায় হয়ে তাকিয়ে রইল। তামিম তার দিকে তাকিয়ে বললো,
- তোমার ভাই কল করেছে, তার সঙ্গে তোমাকে খুঁজতে যাবো।
রিয়ার মুখও আটকে দেওয়া, সে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না। শুধু চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে এলো। শরীরে শুধু একটা চাদর জড়ানো। সন্ধ্যা থেকে দুবার তামিম তার কাছ থেকে সব কেড়ে নিয়েছে। তার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে নিজের ভাই নাঈমের সবচেয়ে ভালো বন্ধু এতবড় বিশ্বাসঘাতক।
তামিম বললো,
- যাই! তোমার ভাইকে সান্ত্বনা দিয়ে আসি। আর কিছুক্ষণ এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে নিজের দায়িত্ব পালন করে আসি৷ তারপর এসে তোমার সঙ্গে আবারও দেখা হবে।

তামিম শিষ দিতে দিতে বেরিয়ে গেল। রিয়া তার ঝাপসা চোখে তখনও তাকিয়ে আছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url