ম্যাম যখন বউ । পর্ব -৩
রোমান্টিক আর রসিক ছেলে ভালো লাগে।
যাক, তাহলে এক্ষেত্রে আমাকে বিবেচনায় নিতে পারেন।
ম্যাম একটা ছোট রিকুয়েষ্ট করতে পারি?
হ্যাঁ করো।
ম্যাম আপনার নাম্বারটা দেওয়া যাবে?
নাম্বার দিয়ে কি করবে?
নাম্বার দিয়ে তো অনেক কিছুই করা যায়।
যেমন।
আপনার সাথে কথা বলব, কোন পড়া না বুঝলে আপনাকে ফোন দিয়ে বুঝে নিবো,
আর তাছাড়া আপনার যদি কোন কিছু লাগে ফোন করে আমাকে জানাবেন আমি দিয়ে আসব।
তাই?
জ্বী।
তো তোমার বাসা কোথায়?
আপনার বাসার কাছাকাছি।
আমার বাসা থেকে আপনার বাসায় যেতে 10 মিনিট সময় লাগে।
এত কাছাকাছি আমাদের বাসা তাহলে তোমাকে তো কোনো দিনই আমার বাসার আশেপাশে দেখিনি।
দেখবেন কি করে আমরা তো এখানে নতুন বাসা করেছে, সবে মাত্র দুই মাস হল আমরা এসেছি এখানে।
তাহলে তুমি জানলে কিভাবে আমার বাসা ওখানে?
জানছই একভাবে। ইচ্ছা হলেই উপায় হয়। মানুষ ইচ্ছা করলে সবকিছুই পারে।
তা ঠিক আছে। তবে তুমি কিভাবে জানলে আমার বাসার ঠিকানা সেটা বলো।
আচ্ছা ম্যাম বলছি, কলেজের বৈশাখী অনুষ্ঠানে আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম।
.সেদিন বাঙালি সাজে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছিল।
প্রথম দেখাতেই আপনার প্রতি ফিদা হয়ে গিয়েছিলাম।
আপনার সাথে অনেকবার কথা বলতে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠেনি।
তখন বুঝতে পারেনি আপনি আমাদের কলেজের টিচার।
ভাবলাম হয়তো আপনি আমার এক ক্লাসের সিনিয়র হবেন।
সত্যি বলতে কি আপনাকে অল্প বয়সের লাগে।
বুঝলাম। তো এবার মুল কথা বলো।
হ্যাঁ বলছি, সেদিন আমরা চার বন্ধু একসাথে ছিলাম।
বন্ধুদের বললাম যেভাবেই হোক এই মেয়েটার বাসার ঠিকানা জানতে হবে।
.বন্ধু জনি বললো আরে বাসার ঠিকানা জানা তো ওয়ান টুর ব্যাপার।
কিভাবে জানতে পারব সেটা বল।
বলবো কিন্তু কথা আছে।
কী কথা?
ট্রিট দিতে হবে।
ঠিক আছে ট্রিট না হয় দিলাম কিন্তু বাসার ঠিকানা যেভাবেই হোক জানতে হবে।
আরো চিন্তা করিস না।আজকেই তোর শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে দিব।
কিভাবে সম্ভব সেটা বল।
আমরা মেয়েটার কিছু নিব। আর এইভাবে ওর বাসার ঠিকানা জানতে পারবো।
গুড আইডিয়া।
আমরা আপনাকে চোখে চোখ রাখলাম।
প্রোগ্রাম শেষে আপনি বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।
আগের পরিকল্পনা মাফিক আমরা আপনার পিছু নিলাম।
আপনি রিক্সায় উঠলেন আমরাও রিক্সায় উঠলাম।
এক পর্যায়ে আপনি আপনার বাসায় গেটে নামলেন আর আমরা বুঝে নিলাম এটাই আপনার বাসায।
যাই হোক দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল।
তারপর ক্লাসে প্রথম দিন আপনাকে টিচার হিসেবে দেখে আমি তো পুরাই টাস্কি খেলাম।
এটা কিভাবে সম্ভব? আপনি আমাদের ম্যাম।
বন্ধু ইমন বলে উঠলো কিরে শেষমেষ তুই ম্যামের প্রেমে পড়লি?
আরে আমি জানতাম না কি?
জানলে তো আর এই কাজ করতাম না।
তোরা যাই বলিস আমি আর তোদের সাথে নাই।
ম্যাম যদি জানতে পারি তুই ম্যামের সাথে লাইন মারতে চাস তাহলে তোর খবর করে ছাড়বো সাথে আমাদেরও।
.
না না বন্ধু এমন কথা বলিস না। ম্যামকে আমার লাগবই।
সে যে আমার মন প্রাণ কেঁড়ে নিয়েছে, বুকের ঘরের শুন্য জায়গাটা দখল করে বসেছে।
এখন তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবা পসিবল না।
ভাই আবেগ দিয়ে দুনিয়া চলে না। বাস্তবের সাথে মিলিয়ে দেখ।
আরে দেখছি। যে যাই বলুক আমি ম্যামকে চাই। সে আমার থেকে খুব বেশি বড় হবে না।
.বড় ছোট ম্যাটার না। সে যে আমাদের ম্যাম। ছাত্র হয়ে ম্যামকে কিভাবে প্রস্তাব দিবি?
আর ম্যাম যদি প্রিন্সিপাল স্যার কে বলে দেয় তখন কী করবি?
এত কিছু ভাবার সময় নেই, পরিস্থিতি অনুযায়ী এগিয়ে যাব।
আর ম্যাম কে বিয়ে করে নতুন ইতিহাস গড়বো।
তুমি কোন ইতিহাস গড়বে আমার জানা হয়ে গেছে।
তুই বন্ধু নাকি শত্রু রে? কৈই তুই আমারে বুদ্ধি দিবি, সাহস দিবি তা না করে উল্টাপাল্টা কি সব বলতেছিস?
আরে বন্ধু তুই ম্যামকে বাদে অন্য কাউকে পছন্দ কর, তার জন্য যা যা করা দরকার আমি সব করব।
অন্য কাউকে পছন্দ হবেনা। আচ্ছা ঠিক আছে তোদের কিছুই করতে হবে না,
যা করার আমি একাই করব।
তোরা সাথে না থাকলি, সাহস না দিলি কিন্তু পিছু হটার কথা বলিস না।
এই আবিদ তুমি তো দেখি ইতিহাস শুরু করেছো।
ম্যাম আপনি শুনতে চাইলেন তাই একটু বললাম আর কি।
আপনার সাথে কথা বলতে অনেক অনেক ভালো লাগে।
তাই?
জ্বী,ম্যাম।
খাওয়াতো শেষ পর্যায়ে আরো কিছু খাবে নাকি?
চাইলে খাওয়াতে পারেন, না থাক আজ আর খাব না, অন্যদিন খাওয়াবেন।
তাহলে যাও বিলটা দিয়ে আসো।
ম্যাম খাওয়ালেন আপনি আর বিল দিব আমি এটা কেমন কথা?
আরে আমি টাকা দিচ্ছি তুমি দিয়ে আসো, এটা বলছি।
.ও, বিল দিয়ে আসলাম।
তাহলে চলো এবার যাওয়া যাক।
হ্যাঁ, চলেন।
ম্যাম আরেকটা কথা ছিল।
কী কথা বলো।
আমরা এখানে আসছি দুই মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনও কারো বাসায় নিমন্ত্রণ পেলামনা।
তাই ভাবছি আপনার বাসায় নিয়ন্ত্রণ খাব। বলেন কবে আসব?
হাহাহা তাই নাকি?
নিজেই যেহেতু নিমন্ত্রণ নিলে তাহলে নিজের ইচ্ছামত একদিন চলে আসবে।
ম্যাম আপনার এই কথা শুনে মনে হলো আপনি পটে গেছেন।
আরে না,পটা কি এতো সহজ নাকি?
আচ্ছা। আসল কাজটাই তো হলো না।
ম্যাম আপনার নাম্বারটা দেন...
চলবে...
