গল্পঃ পাত্রী দেখা । পর্ব -০২



একটা ভালো মেয়ের সন্ধান পেয়েছি ইশ্ মা একটা মেয়ে দেখে তোমার শিক্ষা না হলেও
আমার শিক্ষা হয়ে গেছে আমি আর কোন মেয়ে দেখতে যেতে পারবো না।
চুপ বেয়াদব আমার মুখের উপর কথা বলিস তোর এত বড় সাহস।
এক থাপ্পর দিয়ে সব দাঁত ফেলে দেবো বেয়াদব কোথাকার।
পাশে থেকে মনি বলে উঠলো তাহলে আর এ জনমে তোমার ছেলেকে বিয়ে দিতে হবে না।
এমনিতেই মাথার চুল সব পড়ে চান্দু স্টেডিয়াম হয়ে গেছে। যেটা দেখে পাত্রীরা সব অজ্ঞান হয়ে যায়।
তার মধ্যে যুদি থাপ্পড় দিয়ে দাঁত গুলো ফেলে দাও।
তাহলে মেঘা যা একটু ভাইয়ার পিছন পিছন ঘুরঘুর করে সেও দেখবে পালিয়ে গেছে।
মা চিৎকার দিয়ে বলল এই তুই চুপ কর।
তোর জন্যেই ওই মেঘা বাচ্চা মেঘা আবার ছেলের পিছনে লেগেছে।
আমার ভদ্র ছেলেকে অভদ্র বানিয়েছে।

মনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বললো excuse me!
অন্ধকার জগত থেকে আগে বাইরে আসো। আমার বান্ধবী প্রথমে তোমার ছেলের পিছে লাগেনি।
তোমার ওই গুনোধর ছেলেই প্রথমে আমার বান্ধবীর পিছনে লেগেছিল।
আমি বারবার মনিকে থামানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু কে শোনে কার কথা
ঐ শয়তান ছুরি(বগুড়ায় মেয়ে কে ছুরি বলে) বলছে তো বলেই যাচ্ছে।
থামার কোনো নামি নিচ্ছে না।
তোমার আদরের ছেলে কে তো মেঘা প্রথমে পাত্তাই দিতো না।
তখন তো মাছির মত সারাদিন মেঘার পিছে পিছে ভো ভো করে বেড়াতো।
দেখতে না আগে যখন মেঘা আমাদের বাসায় আসত তোমার টোটো
কোম্পানীর ম্যানেজার ছেলে ঘরকুনো হয়ে যেত।একদম যেন নতুন বউ।
.
মা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল আমি তো লজ্জায় শেষ।
চোখ নিচের দিকে করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি আর মনে মনে ভাবছিলাম মনির
বাচ্চা ফণী তোরে আগে পায় তারপরে বুঝাবো মজা।
মনি আবার বলতে শুরু করল চোখে চোখে কথা বইয়ের ভেতর
চিঠি দেওয়া নেওয়া আহ সে কি প্রেম পুরো জমে ক্ষীর।
মা উৎসুক দৃষ্টিতে মনির দিকে তাকিয়ে বলল থামলি কেনো বল
থাক তুমি বুড়ি মানুষ বাচ্চাদের প্রেম কাহিনী শুনে কি করবে।
ওমনি মা ফোশ করে মনির এক কান ধরে বললো কি বললি আমি বুড়ি হুম আমি বুড়ি
ওই সুজুকে আমিও মনির আরেক কান ধরে মোচড়াতে লাগলাম।
ইশ্ মা লাগছে তো মা দেখো ভাইয়া কিন্তু অনেক জোরে কান মলা দিচ্ছে।
মার বাম হাতে থাকা ঝাড়ু দিয়ে আমাকে দুইটা বাড়ি দিয়ে বলল ওই হারামজাদা ছাড় ছাড় ওর কান ছাড়।
কি আর করার দিলাম কান ছেড়ে।
.
মনি কান ছাড়া পেয়ে কান ডলতে ডলতে বলল জানো মা ভাই আগে কি করত
তোমার কাছে মিথ্যা বলে টাকা নিয়ে মেঘার জন্য সুন্দর সুন্দর গিফট কিনতো।
একদিন তো হাত কেটে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে পাঠিয়েছিল মেঘার কাছে।
হাত কাটার কথা শুনে মা হা হয়ে গেছেন। মা এটা কোনো দিন কল্পনাও করেনি হয়ত।
মা আমাকে গুতো দিয়ে বলল তলে তলে এতদূর আর আমি কিছু জানি না?
মনি মাকে থামিয়ে দিয়ে বলল এরপর কি হল তা তো শোনো।
ভাইয়ার সেই চিঠি পড়ে মেঘা তো সেই কান্না। এরপরেই তো মেঘার মন গলাতে শুরু কররল। তোমার আদরের ছেলের উপর একটু মায়া হল তারপর তোমার ছেলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল। তাছাড়া তোমার এই চাঁন্দু স্টুডিয়াম ছেলের সাথে প্রেম করতে মেঘার বয়েই গেছে।
আমি বললাম মা ঐ মনি বাচ্চা ফনি কিন্তু আজ আমার হাতে মার খাবে। ও কিন্তু চান্দু স্টেডিয়াম বলে বারবার আমাকে অপমান করছে।
ভাইয়া তুই থাম মনি আমাকে ধমক দিয়ে বলল আমার কথা এখনো শেষ হয়নি। সব সময় বেশী বুঝিছ , তুই আসলেই একটা হেবলা কান্ত।
মনির ধমক খেয়ে আমি চুপ।
মা আমি বলি কি এসব পাত্রী দেখা বাদ দাও তোমার চান্দু স্টেডিয়াম ছেলেকে
মেঘা ছাড়া আর কেউ বিয়ে করবে বলে আমার মনে হয় না।
মা চিৎকার করে বললেন এই তুই চুপ কর তোর মুখে যদি মেঘার নাম আর
একবার শুনেছি তাহলে তোর মুখ সেলাই করে দিব বুঝছিস।আর খবদ্দার আমার
ছেলেকে চান্দু স্টেডিয়াম বলবিনা।
মনি জোরে করে ইয়েস হিটলার বলেই আর্মিদের মতো করে মাকে একটা ছেলুট দিল ।
মনির মুখে হিটলার ডাক শুনে মা তো ক্ষেপে ফায়ার।
.
মনির পিছন পিছন ঝাড়ু নিয়ে তাকে মারার জন্য দৌড়াতে লাগলো।
আর আমি বসে বসে তাদের কান্ডকারখানা দেখি।
যেমন মা তেমন মেয়ে শুধু মাঝখান থেকে ফেঁসে গেছি আমি আর বাবা।
যাই হোক শেষ মেষ পাত্রী দেখতে আসলাম।
আজকের পাত্রী কে যে মার মনে ধরেছে তা মার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
যদিও পাত্রীর চোখ একটু টেরা (সবাই আল্লাহর সৃষ্টি তাই কাউকে নিয়ে উপহাস করা ঠিক না।
আমি শুধু গল্পের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছি) কিন্তু দেখতে বেশ সুন্দরী।
মেয়েটি নাম স্নিগ্ধা নামের সাথে চেহারার অনেক মিল আছে। একটু হাসলেই গালে টোল পড়ে
এক কথায় অসম্ভব সুন্দরী।এই মেয়ে যে আমাকে বিয়ে করবে না তা আমি ১০০% সিওর।
সব দেখাদেখি শেষ করে সোফা থেকে আমরা উঠতে যাবো তখনই
মেয়ের মা বলল আপা মেয়েকে কি আপনাদের পছন্দ হয়নি।
মা হাসিমুখে বললেন আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে আপনারা চাইলে আমি আজি আংটি পরিয়ে যেতে পারি।
মায়ের এমন কথা শুনে আমার বুকের ভেতর ধক করে উঠল। আমি মনির কানে কানে বললাম প্লিজ বোন আমার কিছু একটা কর।
মনি কিছু বলবে তার আগেই ঐ মেয়েটা লাফ দিয়ে উঠে বলল। মা আমি কিছুতেই এই চান্দু স্টেডিয়াম কে বিয়ে করতে পারবোনা….
.
চলবে…
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url