ডেঞ্জারাস মামাতো বোন । পর্ব -০২



দেখ পেন্তী, একদম আমাকে রাগাবি না।

আমি মেয়েদের অনেক সম্মান করি তাই চুপ করে আছি।
মুখ বুজে তোর অত্যাচার সহ্য করছি।
তাছাড়া আমি চাই না খামোখা তোর সাথে গন্ডগোল বাঁধুক।
কিন্তু তুই যদি আমাকে মারিস তাহলে আমিও কিন্তু ছেড়ে কথা বলবো না, হু.! (আমি)
.
আমার এসব কথা শুনে রিমি ভয় পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো ও হেসে উড়িয়ে দিল।
নাক কুঁচকে বলল,
.
-- এসব ভয় অন্য কাউকে দেখাইস।
এই রিমি এসবে ভয় পায় না।
আজ তোকে মেরে আমি ভর্তা বানাবো...!
আমাকে পেন্তী বলার সাধ মিটিয়ে দিব.! (রিমি)
.
রিমি এসব বলে আমার কাছে খানিকটা এগিয়ে এলো। আমি কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম।
রিমি আমার কাছে এসেই আচমকানআমার কান টেনে ধরলো।
আমি ব্যথা পেয়ে চিৎকার দিলাম।
.
-- আউচ.! ছাড় কুত্তী, লাগছে তো। (আমি)
.
রিমি শয়তানি হাসি হেসে বলল,
.
-- কুত্তা, আর আমাকে পেত্নী বলবি.? (রিমি)
.
-- পেত্নীকে পেত্নী বলবো না তো কি বলবো.?
তুই তো পেত্নী-ই.! তেঁতুল গাছের পেন্তী.! (আমি)
.
-- কুত্তা, তুই আবার আমাকে পেত্নী বললি.? (রেগে)
.
-- হ্যা বললাম। কি করবি.? (আমি)
.
-- ভালো হচ্ছে না কিন্তু। স্যরি বল... (রিমি)
.
-- কিসের সরি রে.? যা এখান থেকে।
চুপ করে আছি বলে যা ইচ্ছা তাই করবি নাকি.? (আমি)
.
অনেক রেগে কথাগুলা বললাম।
কিছু বলছি না বলে পেত্নীটা মাথায় উঠে বসেছে।
আমার কথাগুলো শুনে রিমি কিছু সময় আমার দিকে চেয়ে থাকলো।
তারপর ঝাঝালো গলায় বললো,
.
-- কুত্তা, একে তো আমাকে পেত্নী বলিসনআবার আমাকেই গরম দেখাস.!
তোকে আজ শেষ করে ফেলবো। (রিমি)
.
কথাগুলো বলেই রিমি আমার কান আরো জোরে টেনে ধরলো।
আমি এবার আরো জোরে চিৎকার দিলাম।
রিমি অন্য হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরলো।
রাগী গলায় বলল,
.
-- আরো পেত্নী বলবি আমাকে.? (রিমি)
.
আমি নিরুপায় হয়ে বললাম,
.
-- না, আর বলবো না... (আমি)
.
-- স্যরি বল... (রিমি)
.
-- আচ্ছা সরি, এবার কানটা ছাড় প্লিজ.!
খুব লাগছে। (আমি)
.
-- না, আগে বল, 'আমি খুব সুন্দর'
তারপর ছাড়বো। (রিমি)
.
-- আজব মেয়ে তো তুই.! সুন্দর না হওয়া
সত্তেও জোর করেই আমাকে দিয়ে সুন্দর
বলাতে চাস.? (আমি)
.
-- একদম মিথ্যা বলবি না। আমি জানি, আমি
দেখতে খুব সুন্দর.!
তুই আমাকে রাগানোর জন্য এসব বলছিস।? (রিমি)
.
-- ভুল জানিস। তুই আসলেই সুন্দর না।
আর তাছাড়া আমি কারো মিথ্যা প্রশংসা করি না। (আমি)
.
-- কি আমি সুন্দর না.? (ভ্রু-কুঁচকে)
.
-- উহু, না। (আমি)
.
রিমি আমার মাথায় জোরে ঠুঁয়া মারলো।
তারপর জোরে ধমক দিয়ে বলল,
.
-- তাড়াতাড়ি চোখের চিকিৎসা করা। তুই অল্প বয়সেই কানা হয়ে গেছিস।
না হলে আমার মত সুন্দরী, রুপবতী মেয়েকে এসব বলতি না। (রিমি)
.
-- বালের সুন্দরী.! (আস্তে করে বললাম)
.
-- ওই, বান্দর কি বললি.? (রিমি))
.
-- কই... কই, কিছু না তো। (আমি)
.
-- ওহ্। ঠিক আছে, এখন ভালো করে বল, "রিমি তুই দেখতে খুব সুন্দর.!
মোটেও পেন্তী না।" (রিমি)
.
-- আরে, বললাম তো বলবো না। (আমি)
.
-- না বললে আমি কিন্তু কান্না করবো না না সুইসাইড করবো.! (রিমি)
.
-- পাগল হলি নাকি.? কি বলিস এসব। (আমি)
.
-- ঠিক ই বলছি। বল আমি দেখতে
খুব সুন্দর.! (রিমি)
.
-- আচ্ছা, তুই সুন্দর.! (আমি)
.
-- ভালো করে বল। (রিমি)
.
-- তুই দেখতে খুব সুন্দর.! হইছে এবার.? (আমি)
.
-- আরেকবার বল না, প্লিজ.! (রিমি)
.
-- তুই দেখতে খুব সুন্দর.! (আমি)
.
-- আরেক বার বল, প্লিজ.! প্লিজ.! প্লিজ.! (রিমি)
.
-- বললাম তো, তুই দেখতে সুন্দর।
এক কথা আর কতবার বলবো.? (আমি)
.
আমার কথা শুনে রিমি খুশিতে লাফিয়ে উঠলো।
রিমিকে এভাবে দেখে আমি অজান্তেইসহেসে দিলাম।
মনে মনে বললাম, "পাগলী একটা"
.
রিমি খুশিতে কিছুক্ষণ লাফালাফি করে
মিষ্টি হেসে বললো,
.
-- এখন থেকে আমাকে আর পেত্নী বলবি না।
পরী বলবি.! ঠিক আছে.? (রিমি)
.
রিমি কথা শুনে সামান্য হাসলাম।
মনে মনে বললাম, "তুই তো সত্যি-ই পরী.!
বারবার বলার কি আছে। তোর রূপের কাছে পরীরাও হার মানবে.!"
.
-- এই কুত্তা, কি ভাবিস.? (রিমি)
.
রিমির কথায় ভাবনায় ছেদ ঘটলো।
বললাম,
.
-- কিছু না। (আমি)
.
- ভালো। আমি কি বললাম কানে ঢুকেছে তো.?
আমাকে আর পেত্নী বলবি না, পরী বলবি.! (রিমি)
.
-- যদি না বলি.? (আমি)
.
- তাহলে মাইর একটাও মাটিতে পড়বে না, সব তোর এই বাঁদর মার্কানমুখে পড়বে।
আর মাথার চুলের কথা তোনবাদ-ই দিলাম।
এই বয়সে টাকলানবানিয়ে ফেলবো।
সবশেষে তোর চুপসানোনগাল দু'টো চড় মেরে ফুলিয়ে দিবো.!
এখন বল, পরী বলবি নাকি পেত্নী.? (রিমি)
.
রিমির এমন ভয়ংকর কথা শুনে গলা শুকিয়ে উঠলো।
লম্বা ঢোক গিলে বললাম,
.
-- ঠিক আছে, আর পেত্নী বলবো না।
এখন থেকে পরী বলবো.! (আমি)
.
-- এই তো আমার শাশুড়ী আম্মার ভালো ছেলে.!
I Love You.! (রিমি)
.
-- কি, শাশুড়ী আম্মার ভালো ছেলে মানে.? (আমি)
.
-- কিছু না। তোর গোবরওয়ালা মাথায়
এসব ঢুকবে না। (রিমি)
.
-- লাগাবো কানের নিচে.! শ্বাশুড়ি আম্মার ভালো ছেলে মানে কি.?
আমার মা তোর শ্বাশুড়ি হলে আমি তোর কি হবো ভেবেছিস.? (আমি)
.
-- হুমম, আমার স্বামী.! (রিমি)
.
-- তাহলে বললি কেন.? আবার I Love You ও বললি.!
তুই আমার বোন হইস না.? (আমি)
.
-- হুমম কিন্তু মামাতো বোন, নিজের না। (রিমি)
.
-- আবার মুখের উপর কথা বলিস.!
এবার কিন্তু সত্যি-সত্যি মাইর দিবো.! (চোখ পাকিয়ে)
.
-- স্যরি.! আমি ওসব মজা করে বলেছি। (মাথা নিচু করে)
.
-- দেখ রিমি, তুই আমাকে মারেক, ঝগড়া করেক আমি কিচ্ছু বলবো না কিন্তু খবরদার আমাদের সম্পর্ক'টা
অন্যদিকে নিয়ে যাইস না।
কারণ আমি চাই না, আমাদের মাঝে অন্য কোনো সম্পর্ক হোক।
আর হ্যা, আমার সাথে এসব বিষয় নিয়ে মজা একটু কম করবি।
আমি এসব ফাতরামি একদম পছন্দ করি না।
তুই আমার বোন তাই বোনের মত থাকবি.! (আমি)
.
-- নিজের না, মামাতো বোন... (রিমি)
.
-- আবার এক কথা... মামাতো বোন তো কি হইছে, বোন তো.! (রেগে)
.
-- স্যরি... (মুখ ভার করে)
.
-- হুমম। এখন যা, আমি গোসল করবো। (আমি)
.
রিমি আর কিছু না বলে চলে যাচ্ছিল হটাৎ দরজার কাছে গিয়ে থেমে গেল।
তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে কেমন করে যেন তাকালো।
আমি মনে সংশয় নিয়ে বললাম,
.
-- কি হলো যা, থামলি কেন.? (আমি)
.
রিমি আমার কথায় কর্ণপাত না করে আমার সামনে এসে দাড়ালো।
তারপর সজোরে আমার মাথায় একটা চাটা বসিয়ে দিল।
আমি 'ও মাগো' বলে বড়সড় একটা চিৎকার দিলাম।
.
মাথাটা কেমন জানি ঝনঝনিয়ে উঠলো।
চোখ দু'টো ঝাপসা হয়ে এলো।
মনে হচ্ছে এক্ষুণি মাথা ঘুরে পড়ে যাব।
কোন মতো মাথাটা চেপে ধরে বিছানার উপর বসলাম।
মাথাটা এখনো চরকির মত বনবন করে ঘুরছে।
.
আমি একটু দম নিয়ে, মনে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে রিমির দিকে তাকালাম। রিমিও আমার দিকে
ভ্রু-কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
রিমির চোখ-মুখ দিয়ে যেন রাগের ফুলকি ঝরছে।
চেহেরা দেখে মনে হচ্ছে আমি মস্তবড় কোনো অপরাধ করে তার সামনে বসে আছি।
.
কিন্তু আমি একটা জিনিস ভেবে পাচ্ছি না হটাৎ রিমির কি হলো.?
৫ সেকেন্ড আগেও তো সবকিছু ঠিকঠাক ছিল।
কত সুন্দর করে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছিল।
তাহলে এই অল্পসময়ে ওর এত পরিবর্তনের কারণ কি.?
হটাৎ এমন রণমূর্তী ধারণ করার কোন বিশেষ কারণ তো থাকবেই কিন্তু সেটা কি.?
.
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে অবাক হয়ে রিমিকে বললাম,
.
-- মারলি কেন.? আমি কি করেছি.? (আমি)
.
চলবে...... ?
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url