Breaking News

গল্প: ত্যাগ । পর্ব- ১৩

শোনো বাবা, সবাই না আমাদের মায়ের মতোন মা।

আর কেউ চাইলেও পারবেনা আমাদের মায়ের মতো হতে।
খালামণি, খালামণি'ই তুমি দয়া করে আবার মায়ের সাথে গুলিয়ে ফেলো না তাকে।" ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
- "তোমার এই ধরনের কথা-বার্তা শুনলে, তোমার খালামণি খুব কষ্ট পাবে।"
- "পাবে তো পাক,যেটা সত্যি সেটাই বলা উচিত আর সেটাই বলতে হবে।"
তখন সকাল নয়টা, সকলেই নাস্তা করছে হলে বসে।
মিমের বড় ননদ, আর্শি তাকে ডেকে একটা শাড়ি দেখাতে দেখাতে বললো,
- "এই শাড়ি টা তোমার জন্য অবন্তি নিজে পছন্দ করে কিনেছে আর এটা পরলে তোমাকে খুব সুন্দর লাগবে।"আবন্তি পাশেই বসে ছিল সে মিটিমিটি হেসে আয়েশা কে ফিসফিস করে বললো,
- " বুঝলে বড় মামণি? কাক কে ময়ূরপুচ্ছ লাগানোর চেষ্টা চলছে।" আয়েশা তাকে থামিয়ে দিয়ে হাসতে হাসতে বললো,

- "এখন চুপ থাকো, কাজ টা ভালোয় ভালোয় মিটে যাক। তারপর না হ'য় না যা ইচ্ছে তাই করে বেরিয়ো ঠিক আছে? আমি ছেলেকে দেখেছি, ভীষণ সুন্দর। তোমার সাথে খুব মানাবে।" মিম তখন আর্শি কে সরা -সরি জিজ্ঞেস করলো,
- "আপনার কি মতলব আপা? একটু খোলাসা করে বলুন, আমিও শুনি...! হঠাৎ করেই আমাকে এতো তেল মালিশ করার মতোন কি হয়েছে ?" আর্শি হাসি মুখে'ই বললো,
- "আমি ময়ূখের ব্যাপারে শুনলাম, তোমার দুলাভাই কে ও খোঁজ নিতে বলেছি। ছেলেটার ব্যাপারে যা শুনলাম,
তাতে আমরা সন্তুষ্ট এবং আমাদের অবন্তীর জন্যে এই ছেলে'র বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে চাইছি।"
- "তো?"
- "না মানে ছেলের বাবা-মা তোমার বন্ধু তাই আমরা সকলে'ই তোমার পূর্ণ সহযোগিতা কমনা করছি।"
- "আমি দুঃখিত আপা, জেনে-শুনে ওই ছেলেটার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে পারবোনা আমি।" আর্শি মিমের দু'হাত চেপে ধরে বললো,

- "এভাবে বলছ কেন ছোটো বউ? ডিভোর্সি মানেই সে কি খারাপ না কি?"
- "দেখুন, আর কারোর কথা আমি জানি না। কিন্তু, আপনার মেয়ে যেসব নোংরামো গুলো করে বেড়াচ্ছে সে সব সম্পর্কে খুব ভালো করেই অবগত আমি।" তখন অবন্তি উঠে দাঁড়িয়ে ঝাড়ি মে'রে বলে উঠলো,
- "তুমি কি বলতে চাইছ ছোটো মামণি?"
- "তোমার ডিভোর্স দু'টো যে পরকীয়ার জন্য হয়েছে সেসব খুব ভালো করেই জানি আমি।" তখন আয়েশা বললো,

- "সো হোয়াট, তাই বলে ও সারা জীবন একই কাজ করে যাবে না কি?"
- "দেখুন বড় আপা, কে কাক? আর কে ময়ূর? সে সম্পর্কে খুব ভালো করেই অবগত আমি। কাজেই এতো কাঁদুনি গেয়ে কোনো লাভ হবে না,
এ বিয়ে কখনো সম্ভব না। আশা করি সকলকে'ই বোঝাতে পেরেছি আমি।"তখন আনিশা এগিয়ে এসে
মিম কে জিজ্ঞেস করলো,
- "অবন্তী আপুর জায়গায় আমি থাকলে আমাকেও ঠিক এভাবেই বলতে তুমি?"
- "অবশ্যই, প্রয়োজনে ভবিষ্যতে ও বলবো। কোনো সন্দেহ আছে না কি?" ইমান গিয়ে মিমের মথায় হাত বুলোতে বুলোতে বললো,

- "ময়ূখ কে তুমি আমাদের মেয়ের জামাই করতে চেয়েছিলে, সেখানে ময়ূখ আমাদের অবন্তীর জামাই হয়ে এলে ক্ষতি কি?"
- "বাহ! রে, জেনে বুঝে ছেলে টা কে নরকে ঠেলে দেবো না কি? কি হয়? তোমাদের মতো সুবিধাবাদী আর স্বার্থপর আমি?"
- "তুমি রেগে যাচ্ছো কেন?"
- "কেন রাগবো না? দয়া করে আমাকে বোঝান, এখানে আমার রাগ হওয়ার মতো, কি কিছুই ঘটেনি?
- ?" নেহা মিমকে টানতে টানতে রান্নাঘরে নিয়ে এলো, বললো,
- "বাদদেও মা দেখ, আজ আমি জীবনে প্রথমবারের মতো গুড়ের পায়েস রান্ন করেছি।" মিম রেগে গিয়ে বললো,
- "হ্যাঁ তো? আমাকে কি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এখন এই পায়েসের চেহারা দেখতে হবে?" সে মিম কো জড়িয়ে ধরে হাসতে হাসতে বললো,
- "আরেহ না মা, তুমি শুধু মিষ্টি টা টেস্ট করবে আর বলবে স্বাদ কি ঠিকঠাক আছে?" মিম একটু পায়েস মুখে দিয়ে বললো,

- "না নেই মিষ্টি কম হয়েছে, একটু চিনি দিয়ে দাও আর লবণ দিয়েছিলে পায়েসে?"ও মুখ কাচুমাচু করে ফেললো, জিজ্ঞেস করলো,
- "মা পায়েসে লবণ কেন দিতে হবে?"
- "লবণ দেওয়ার কারণ এতে তোমার খাবারের স্বাদ আরও বেড়ে যাবে।"
- "ইট'স ইন্টারেস্টিং মা,
বিশ্বাস করো। আমি জানতাম না এর আগে।" মিম তার কথা মাথায় হাত বুলিয়ে চলে চলে এলো। ইমান হাসপাতালে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে হতে মিমকে বললো,
- "খবর শুনেছ? কাল তোমাদের ময়ূখ আমাদের আবন্তী কে দেখতে আসছে? বিয়ে টা হ'য়ে যাবে বোধহয়?"
- "তো? তোমার ওই, ওই নষ্টা ভাগ্নীর কপাল খুলতে চলেছে দেখে নিশ্চয়ই তোমার খুব'ই আনন্দ হচ্ছে?" ইমান হঠাৎ মিমের গায়ে হাত তুলতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিলো, মিম বললো,
- "কি হলো মা*রুন? থেমে গেলেন কেন? আমি যে এটাই চাই, কারণ আমার ধৈর্য্য এবং অপেক্ষার বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
আমি আপনার সাথে সংসার করতে চাই না, আমার
ভালো লাগে না আপনাকে।"
ইমান এলো-মেলো ভাবে পা ফেলে বিছানায় গিয়ে মায়ানের পাশে বসলো স্থির হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো মিমের দিকে। মিম মায়ান কে ঘুম থেকে তুলে
বাথরুমে নিয়ে গেলো,

ফিরে এসে দেখলো ইমান বিছানায় শুয়ে আছে। ও মায়ান কে তার বাবার পাশে শুইয়ে দিলো। মায়ান
উঠে মায়ের কোলের মধ্যে বসে আছে। মিম ছেলেকে আদিত্য করতে করতে বললো,
- "তুমি বাবার কাছে বসো,আমি তোমার জন্য খাবার বানিয়ে নিয়ে আসছি। যাই?"সে চোখ, নাক, মুখ লাল করে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
অগ্যতা, মিম ছেলেকে কোলে নিয়ে স্যারিলাক রেডি করে ফেললো, তাকে খাওয়াতে খাওয়াতে নাট বল্টুর গল্প শোনাতে লাগলো সে। গল্প শুনতে শুনতে, মায়ান এর খাওয়া শেষ হয়ে গেলো। মিম আদর করে ঘুম পারিয়ে দিলো তাকে। কিছুক্ষণ পর, ইমান বিছানা ছেড়ে উঠে পরলো, সে বললো,
- "বিয়ে টা হোক বা না হোক, তুমি নিশ্চয়ই কাল
ওরা দেখতে আসলে নিচে আমাদের সাথে উপস্থিত থাকবে?"
- "আমার বয়ে'ই গেছে, আপনার বোন ভাগ্নীর শ্রাদ্ধ বরং আপনি'ই পরান, এখন যেতে পারেন আমার ঘর থেকে।" তখন আর্শি একটা লিস্ট করে নিয়ে এলো। মিম কে বললো,
- "এখানে যে যে খাবারের নাম উল্লেখ আছে কাল মেহমান এলে এগুলোই তাদের নাস্তায় এবং খাবার টেবিলে পরিবেশন করা হবে।"

- "বুঝলাম,তবে তা জেনে আমি কি করবো? আপনি কি করে ভাবলেন এতোকিছুর পর, আমি গায়েগতরে খাটবো তা ও আপনার ওই মেয়ের জন্য? আমার কি মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে?"
- "অবন্তী যদি তোমার সন্তান হতো?"
- "একরকম সন্তান, আমার হলে আমি মে'রে মাটি চাপা দিয়ে রাখতাম তাকে। হুহহ, যেখানে কখনো নিজের সন্তানদের বিয়ের কোনো ব্যাপারে কখনো থাকিনি সেখানে ইনি চলে এলেন, কি চাই?
ওনার মেয়ের জন্য না কি আমাকে খেটে ম*রতে হবে
শুনুন, বড় আপা। নিজের কাজ নিজে করতে শিখুন
আপনার কেন মনে হলো? আমি এতো কিছু করতে যাবো?
আমার কি দায় পরেছে?" তখন রাবেয়া এসে বলল,
- "শোনো, ছোটো বউ মা।"

- "আপনার এতো বাজে কথা শোনার ধৈর্য্য আমার নেই। আপনার মেয়েকে বলুন, সে যেন শশুর বাড়িতে চলে যায় আর নয়তো কাজ গুলো নিজে'ই যেন করে নেয়, ঠিক আছে?"
- "তোর নিজের সন্তান হলে, তুই কি এভাবে বলতে পারতি ছোটো?"
- "আমার সন্তান, হুহহ! আমার সন্তান হলে মিসেস আয়েশা আপনি কখনো'ই নিজের বলে দাবী করতে পারতেন না তাদেরকে।
আর হ্যাঁ, এখানে বারবার আমার সন্তানদের কথা উঠছে কেন?
আমার সন্তান কি বাড়িতে বউ বর রেখে পরকীয়া করতে গেছিলো নাকি বড়লোকের মেয়েছেলে দেখে?
শুনুন, মিসেস আয়েশা। বড়বড় কথা না বলে গিয়ে কাজ করুণ। এতে আশাকরছি আপনার এই ননদের বেশ উপকার হবে? দেখুন, আমি আপনাদের সাথেও নেই পাছেও নেই। আমার শরীর টা ও ভালো নেই আমাকে বিশ্রাম নিতে হবে।"

আয়েশা তখন গিয়ে ইমানে'র পাশে বসলো, ইমান বললো,
- "ছোটো যখন চাইছে না, তোমরা দয়া করে বিরক্ত করো ওকে আর তাছাড়া ওর শরীর টাও ভালো নেই প্রয়োজন সব খাবার আনিয়ে নাও রেস্টুরেন্ট থেকে"
- "মানে কি? তুমি একটু ছোটো কে বুঝিয়ে বলো?"
- "কি বুঝিয়ে বলবো? কারোর ইচ্ছে বিরুদ্ধে গিয়ে আমি জোরজবরদস্তি করতে পারিনা তার সাথে আর তাছাড়া, তুমি দিব্যি বাড়িতে বসে আছো। তুমি বড় আপার হাতেহাতে কাজ করে দাও, দেখতেই পাচ্ছ
ওর শরীর ঠিক নেই, ও কি করে এতো রাজ্যের কাজ করবে?"
এ যেন ভূতের মুখে মুখে রামনাম, দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে নেহা মিটিমিটি হাসছে। সকলেই ব্যার্থ হয়ে মিমের ঘর থেকে ফিরে গেলো। ইমান দরজা লাগাতে লাগাতে বললো,
- "চলো ঘুমোবে চলো, শরীর ভালো নেই তোমার আমি ও চাই না তুমি থাকো এই সবের মধ্যে।" মিম গিয়ে চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পরলো, ইমান এসে গা ঘেঁষে শুয়ে পরলো তার পাশে।
সকালে সকল আয়োজন শুরু হলো, মেহমানদের জন্য সকল খাবার ঢাকার কিছু নামি-দামি রেস্টুরেন্ট থেকে আনানো হয়েছে। সন্ধ্যায়,

মুগ্ধ ওরা চলে এলো, সে এসেই মিমের কথা জিজ্ঞেস করলো ইমানের কাছে। ইমান কোনো জবাব দেওয়ার আগে'ই নেহা কি ভেবে মিটিমিটি হেসে বলে উঠলো
- "আসলে মা। এই বিয়েতে রাজি না,তাই তার গোস্বা হয়েছে।" ময়ূখ সঙ্গে সঙ্গেই হাসি-মুখে
বলে উঠলো,
- "দেখতে আসলেই যে বিয়ে হ'য়? এটা কে বলেছে মিঠি মা কে?
দেখুন ভাবি, এখনো কিন্তু ফাইনাল কোনো কথাবার্তা হয়'নি। আমার মিঠি মা কিন্তু, শুধুশুধুই রাগা-রাগি করছে। অবশ্য তিনি মা,আমি জানি না যে তিনি ঠিক কোন অনিশ্চয়তার আশংকায় এমন বিহেভিয়ার করছে?
তবে আমরা আপনাদের মেয়ে'র ব্যাপারে কোনো খোঁজ খবর না নিয়ে আগাবো না। এতটুকু, নিশ্চয়তা টুকু আমি দিতে পারি আমার মিঠি মা কে।" ওর কথা শুনে আয়েশা বলে উঠলো,
- "এটা তুমি কেমন কথাবার্তা বলছো বাবা? আমার মুখের কথায় কি তুমি একটুও ভরসা করতে পারছনা আনিকা কে?" সে ধূর্ত হেসে বললো,
- "আজকাল মুখের কথায় কি হয়? বলুনতো আন্টি? মুখের কথায় কিচ্ছু হয় না, ভিত্তিহীন কথা-বার্তা বলে কোনো লাভ আছে?
আমি আপনাকে আজ ক'দিন মাএ চিনেছি আর আমার মিঠি মায়ের গল্প বাবা-মায়ের মুখ থেকে শুনে আসছি আমার বুঝ হওয়ার পর থেকে। তিনি আমার আরেক মা আর মা আমার এই বিয়ের কথা টা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়েছে শুনে আমার মনটা খুব খচখচ করছে

সকলে এবার কিছুটা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পরলো, কিছু ক্ষন পর, সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে আসা হলো আনিকা কে।
আনিকা এনে ময়ূখের পাশে বসানো হলো,আর্শি বলে উঠলো,
- "মাশাআল্লাহ্, দু'জন কে পাশাপাশি বসে অনেক সুন্দর লাগছে।"
তারপর, বাড়ি'র বড়রা মিলে আলাপ-আলোচনা করতে লাগলো। দু'জন কে আলাদাভাবে কথা বলার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হলো বাড়ির ছাঁদে। মিম মায়ান কে কোলে নিয়ে বারান্দায় পায়চারী করছিলো গান গেয়ে ঘুম পারানোর চেষ্টা করছিলো তার ছোট্ট ছেলে টা কে....!
হঠাৎ সে খেয়াল করে দেখল, আয়েশা বাগানে একটু আড়ালে দাঁড়িয়ে তাদের ঔষধ কোম্পানির একজন কর্মকতার সাথে কথাবার্তা বলছে। সেটা যেন কিছু টা অস্বাভাবিক,
মিমের আরও অস্বাভাবিক লাগতে লাগলো, যখন সে দেখলো তারা দু'জনেই দু'জনকে বেশ অদ্ভুত ভাবে দেখছে। তারা দু'জনেই হঠাৎ এদিক-ওদিক তাকিয়ে

একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো। এ দৃশ্য দেখে মিমের অনেক দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
সে কিছুক্ষণ, বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকে ঘরে যেতে লাগলো। হঠাৎ সে ধাক্কা খেলো ইমানের সাথে। ইমান তাকে ধরে ফেললো। মিম ইমান কে আমতাআমতা করে বললো,
- "আমি রহমতুল্লাহকে দেখলাম, বড় আপার সাথে বাগানে কি যেন কথাবার্তার বলছে?
তারা ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলো, জড়িয়ে ধরে ছিল। আমার মনে হচ্ছে, যেন তাদের মধ্যে কোনো কিছু একটা চলছে?" হঠাৎ করেই ইমান রেগে বলে উঠলো,
- "নিজের মনগড়া কিছু একটা বানিয়ে বললেই হলো
? তুমি এই সংসারে নিজের কতৃত্ব ফলানোর জন্য আর কি কি করবে?
কারো ভালো দেখতে পারোনা না তুমি? তালাক চাও না তুমি? চিন্তা করো না, পেয়ে যাবে। ঠিক ছয় মাস পর। আমি তালাক দিচ্ছি তোমাকে। তোমার বাবাকে আসতে বলছি, এসে নিয়ে যাবে। আমি তোমার জন্য আর অন্তত কোনো অশান্তি চাই না এ বাড়িতে।"
- "তাহলে এতোদিন ধরে যে কথা গুলো বলছিলেন? সে গুলো কি ছিলো জাস্ট আই-ওয়াশ? সকলে মিলে একটা জমজমাট নাটক করছিলেন আমার সাথে?"
- "তোমার যা ইচ্ছে তাই ভাবতে পারো, আমার আর কিচ্ছু যায় আসে না তাতে।আমি আমার বড় বউয়ের অপমান অসম্মান কখনোই মেনে নিতে পারবোনা।"
- "অথচ,

আমার অপমান অসম্মান সবকিছু'ই এক্সেপ্টেবেল আপনার কাছে। আসলে আপনি হলেন, একটা কা-
পুরুষ। আমার মনে হয় না, আমার আপনার মতো এক টা লোকের পেছনে অহেতুক কথা খরচ কারার কোনো প্রয়োজন আছে। আমি নিজে'র চোখে যা দেখেছি, তাই বলেছি। আর এটাই সত্যি, যদিও বা এর স্ব-পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই আমার কাছে। তবে আপনি চাইলে একবার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দেখতে পারেন৷ আশাকরছি, আপনার চোখের নকল পট্টি টা সরে যাবে।" ইমান প্রচন্ড রাগ নিয়ে মিম কে বললো,
- "এখনো সময় আছে,আমার সাথে চলো আর গিয়ে
ক্ষমা চাও আয়েশার কাছে। একটা কথা তুমি ঠিক বলেছ, আমি ওর ভালোবাসায় অন্ধ কারণ আমাদের বিয়ে টা ভালোবাসার বিয়ে ছিলো আর তোমাকে সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য এই বাড়িতে আনা হয়েছে।
ওর আমার বিয়ের বয়স চল্লিশ বছর আর তুমি কি ভেবেছিলে?
মাএ পঁচিশ বছরে সংসার করে তুমি সব কিছু এতো সহজে পেয়ে যাবে? তুমি না কি আমার আয়েশার ডিভোর্স চাও না?

তুমি নিজেও এতদিন ধরে শুধু নাটক করেছ আমার সাথে। যদিও বা, তোমার প্রতি আমি ততটা কঠোর হতে পারছিনা। একবার শেষ সুযোগ টা আমি দিতে চাই তোমাকে। মিম দৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠলো,
- " আপনার দয়া, করুণা, ভিক্ষা চায় কে? আমি কি চেয়েছি? ডিভোর্স টা হয়ে যাওয়াই উচিত আমাদের, এতো দু'জনের ভালোই হবে।
আপনি বরং আমার বাবাকে ফোন করুণ, তাকে এ বাড়িতে ডেকে পাঠান আজ এর একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে। আর হ্যাঁ, সত্যি টা নিজের মুখে স্বীকার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অন্তত, আর কখনো অযথা অপরাধী বলে মনে হবেনা নিজেকে।"

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com