যৌন স্বাধীনতার ক্ষতিকর দিক

যৌন স্বাধীনতার ফলে নারী-পুরুষের মধ্যে মারাত্মক ব্যাধির সৃষ্টি হয়, যার চিকিৎসা করতে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানও অকৃতকার্য হচ্ছে। বিষয়টি পর্যায়ক্রমে আরও পরিষ্কার করে আলোচনা করা হবে। আল্লাহ তায়ালার ওহীতে লৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ নিহিত। 

আল্লাহর ওহী ষোঘণা করে-

ولاتقربوا الزنى إنه كان فاحقة وتانسيلان

‘যৌন স্বাধীনতা তথা যেনার ধারে কাছেও যেও না; নিশ্চয়ই ইহা অশ্লীল কাজ ও খারাপ পথ'। 
[সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত : ৩২]

‘যেনার ধারে কাছে না যাওয়ার’ অর্থ হলো পর্দার বিধান মেনে চলা।
নারী-পুরুষ কেহই যেন পর্দার বিধানের বিপরীত না চলে। 
পর্দা প্রথার খেলাফ বা উল্টো চলাফেরা করলেই যেনার কাছে যাওয়া হবে। 
আল্লাহর ওহী সকল নারী পুরুষের জন্য পর্দা ফরয করে দিয়েছে। 
বিশেষ ঘনিষ্ঠ ও রক্তের সম্পর্কযুক্ত কিছু আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে পর্দার হুকুম রহিত করা হয়েছে।
যেমনঃ পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, ফুপু-খালা, ভাগনা-ভাতিজা, নানা-নানী এ ধরনের আরো কয়েকজন। 
এদের মধ্যে পর্দার বিধান রহিত করার কারণ হচ্ছে মানুষের রক্তের মধ্যে চুম্বক আছে এবং একই জাতীয় চুম্বক বিকর্ষণ করে। 
কাজেই পিতা ও কন্যার মধ্যে পর্দার হুকুম রহিত করা হয়েছে। 
কেননা পিতার রক্ত ও কন্যার রক্ত একই রক্ত, অতএব এখানে আকর্ষণ হবে না। 
মা ও ছেলের মধ্যে পর্দার হুকুম রহিত করা হয়েছে কেননা মায়ের রক্ত ও ছেলের রক্ত একই। 

সুতরাং এখানে আকর্ষণ হবে না। আকর্ষণতো হবেই না বরং আকর্ষণ থাকলেও তা রহিত হবে। 
যেমন কোন যুবকের মধ্যে যথাযথ কারণে যৌন উত্তেজনা বিরাজ করছে এই মুহূর্তে যদি আকস্মিকভাবে তার মায়ের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়ে যায় তবে মাকে দেখার সাথে সাথে তার আকর্ষণ প্রশমিত হয়ে যাবে কেননা মায়ের রক্ত ছেলের রক্তের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। 
তাই আকর্ষণ দূরীভূত হয়ে সেখানে বিকর্ষণ চলে এসেছে। 
অতএব স্রষ্টার আইন তার সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত যুক্তিসংগত। 
তাই রক্তের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত
আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বিবাহ প্রথা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

যেমনঃ (১) মা, (২) নানী, (৩) দাদী, (৪) খালা, (৫) ফুফু, (৬) শাশুড়ী, (৭) স্ত্রীর আগের স্বামীর কন্যা, (৮) বোন, (৯) ভাগিনী, (১০) ভাতিজী, (১১) পুত্র বধু, (১২) বাবা-দাদারা যাদের বিবাহ করেছেন, (১৩) স্ত্রী জীবিত থাকাকালীন সময়ে তার বোন, (১৪) অপর পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ মহিলা।
এছাড়াও রয়েছে দুধমাতা ও তার সাথে সম্পর্কযুক্ত কিছু আত্মীয়। 
মোট কথা উল্লেখিত মহিলাদের সাথে বিবাহ হারাম। 
তাই তাদের সাথে দেখা সাক্ষাতের অনুমতি আছে এবং পর্দার হুকুম রহিত করা হয়েছে। 
আরেকটি বিষয় হলো পবিত্র কুরআন যাদেরকে মুহাররম ঘোষণা করেছে তাদের মধ্যে স্ত্রীর বোন,
সৎ শাশুড়ী এবং অপর পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ মহিলাদের সাথে পর্দা করা ফরয। 
কেননা এরা চিরতরে মুহাররম নয়। 

কোন একটি কারণে মুহাররম হয়েছে কারণটা দূর হয়ে গেলে তাদেরকে বিবাহ করা জায়েয
বিধায় তাদের ব্যাপারেও পর্দার বিধান পালন করা ফরয। 
অন্যদিকে সকল নারীদের সাথে পর্দার হুকুম মেনে চলা ফরয। 
বিশেষ প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে তাদের সাথে কথা বলা যাবে বা তাদের কথা শোনা যাবে। 
কিন্তু অবাধে তাদের সাথে চলা-ফেরা, ওঠা-বসা, গল্প-গুজব করা সম্পূর্ণ হারাম বা অবৈধ। 
কেননা উল্লেখিত চৌদ্দজন ব্যতীত সকল নারীদের মধ্যে রয়েছে  বিপরীত রক্ত আর বিপরীত রক্তে আকর্ষণ করবেই। আকর্ষণ একদিক থেকে নয়, নারী-পুরুষ উভয় দিক থেকেই আকর্ষণ সৃষ্টি হবে। কাজেই ওহীর বিধানগুলো প্রকৃতির সাথে সম্পর্কযুক্ত। প্রকৃতির সাধারণ নিয়মকে রক্ষার
জন্যই মনে হয় যেন আইনগুলো করা হয়েছে। 
উল্লেখিত ১৪ জন মুহাররম সম্পৰ্কীয় আত্মীয় ছাড়া সকলের সাথে বিবাহ হালাল করা হয়েছে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url