প্রেম মানে পাগলামি । পর্ব - ০৪
লাবন্য শরীরে জড়ানো তোয়ালে খুলে ফেলে দিলো আয়ান ঘুরে তাকাতেই। আয়ান ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। লাবন্য বললো— দেখেই যখন ফেলেছো আরও দেখে নাও মন ভরে, বাকী জীবন তো জেলে কাটাতে হবে।
আয়ান দুপা এগিয়ে লাবন্যর সামনে এসে দাড়িয়ে লাবন্যর বুকের মাঝখানে তিলটা আঙুল দিয়ে স্পর্শ করে বললো—
তোমার বুকের মাঝখানে যেমন তিলটা অসাধারণ,
আমার হৃদয়ের মাঝে ঠিক তুমিও তেমন।
জেলে থাকি আর যেখানেই থাকি বুকের ভেতর তুমি থাকবেই।
আর হ্যাঁ তোমার মতোই নত স্বীকার করতে আমিও শিখিনি।
তবে বিয়ের পরে কিন্তু তিলে রোজ চুমু খাবো বলে রাখলাম।
তাচ্ছিল্যের সুরে লাবন্য বললো— দিবাস্বপ্ন।
আয়ান বেরিয়ে চলে আসলো।
সকাল সকাল আয়ানের বাসার সামনে পুলিশের গাড়ি।
আয়ানের নামে জোর করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে কেস করেছে লাবন্য।
আয়ান চুপচাপ, কোনো প্রতিবাদ না করে পুলিশের গাড়িতে উঠে বসলো।
থানায় এনে একটা সেলে ঢুকিয়ে রাখা হলো।
দুপুরের পরে কেউ একজন দেখা করতে আসলো আয়ানের সাথে।
একটা সুন্দরী যুবতী স্মার্ট মেয়ে এগিয়ে এসে আয়ানকে বললো—
হাই, আমি মৌসুমি।
আয়ান বললো—
আমি তো ওমর সানি নই আপনার হিরো অথবা স্বামী। আপনি ভুল যায়গায় এসেছেন।
: হা, হা, হা, এমন পরিস্থিতিতেও আপনি এমন ফুরফুরে মুডে আছেন দেখে ভালো লাগলো আয়ান।
: ধন্যবাদ মৌসুমি। আসলে বিষয় কি জানেন?
ছোটবেলায় শরীরে জ্বর আসলে যখন কিছু খেতে ইচ্ছে হতনা, তখন মা বলতো—
জ্বর অবস্থায় কিছু না খেলে শরীর দূর্বল হয়ে যাবে, জ্বরের কাছে হেরে গেলে হবেনা,
জ্বরকে হারিয়ে দিতে হবে।
জীবনে সবক্ষেত্রেই এরকম ভাবা উচিৎ। বিপদে ভেঙে পড়লে সমস্যা আরও বাড়ে, চারদিক থেকে হতাশা ঘিরে ধরে। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে আমাদের মনোবল মজবুত রাখা উচিৎ।
: বাহ সুন্দর কথা বলেছেন, আপনি হয়তো আমাকে চিনতে পারেননি!
আপনি আমেরিকায় লেখাপড়া করতে যাবার আগে এক রাতের ঘটনা।
হয়তো আপনার মনে নেই। আপনাদের সামনের ফ্ল্যাটে আমার থাকতাম।
এক রাতে আমার বাবা হার্ট অ্যাটাক করে।
আপনি বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলেন, সবকিছু করেছেন আমার বাবার জন্য।
সেই থেকে আপনার কাছে ঋণী।
খুব ইচ্ছে ছিল একদিন সুযোগ পেলে যদি আপনার উপকারে লাগতে পারি।
সেই সুযোগটা এসেছে। আমিও লেখাপড়া করে একজন উকিল এখন।
আমার উকিল জীবনের প্রথম কেসটা আপনার হয়ে লড়তে চাই।
: বাহ! তুমি সেই মৌসুমি! শুনে ভীষণ ভালো লাগলো।
আসলে এই কেসে আমি যেকোনো মূহুর্তে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারি।
কারণ গত রাতে আমাকে ফাঁসানোর কথাগুলো লাবণ্য বলার
সময় তা আমার ফোনে রেকর্ড করেছি আমি।
মোবাইল বের করে রেকর্ড চালু করলো আয়ান, রেকর্ড লাবন্য বলছে—
আয়ান যে শরীর তুমি দেখেছো এবং স্পর্শ করেছো, সে শরীর আর কোনো পুরুষ
কোনদিন দেখবেনা এবং স্পর্শও করতে পারবে না।
তাই শুধু আজকের জন্যই তোমার কাছে নিজেকে পুরোপুরি উজাড় করে দিয়ে
জীবনের প্রথম এবং শেষবারের মতো সেই সাদ পেতে চেয়েছিলাম যেটা একজন নারী
পুরুষের কাছ থেকে পায়। কিন্তু তুমি তা হতে দিলেনা।
যা-ই হোক এই লাবন্য হেরে যাবার মেয়ে নয়। আমার কাছে আমার জেদ আমার অ
হঙ্কার সবকিছুর চেয়ে বড়ো। সুতরাং তোমাকে হার মানানো আমার একমাত্র লক্ষ্য।
শেষে আমি তোমার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার অভিনয় কেন করেছি জানো?
কারণ রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে।
ঐ অংশটুকু দেখালেই জেলের ভাত তোমার জন্য রেডি হয়ে যাবে।
এভাবে একটা মেয়ের রুমে ঢুকে তার ইজ্জত নষ্ট করার কেস মারাত্মক,
আর তারচে বেশি মারাত্মক এই লাবন্য। পারলে নিজেকে বাঁচাও।
যোগ্যকে পেতে হলে যোগ্যতা লাগে, দেখি তোমার কি যোগ্যতা আছে।
রেকর্ড শুনে মৌসুমি বললো— বাহ! তাহলে তো আর আদালতে যাবার দরকারই নেই।
আমি দারোগার সাথে আলাপ করে আপনাকে এক্ষুনি নিয়ে যাবো সঙ্গে করে।
আয়ান বললো— আমারও সেই প্ল্যান, এর জন্যই চুপচাপ পুলিশের গাড়িতে উঠে চলে আসি, যাতে লাবণ্য বুঝতে পারে আমি হাজতে। রাতে বের হবো ভাবছি।
—তাহলে আমিও অপেক্ষা করি— মৌসুমি বললো।
আসলে আগেই দারোগাকে রেকর্ড শুনিয়ে সবকিছু মিটমাট করে রেখেছিল আয়ান।
রাতে বেরিয়ে মৌসুমিকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে নিজের বাসায় এসে অবাক আয়ান।
বাসায় তালা ঝুলছে। মা বাবার ফোনে কল দিয়ে দেখলো ফোন বন্ধ।
সামনের বাসার একজনের কাছে জিজ্ঞেস করতেই বললো
আয়ানকে পুলিশ নিয়ে যাবার পরেই লাবন্য লোকজন নিয়ে এসে আয়ানের মা
বাবাকে ভয় ডর দেখিয়ে ধমকে বাসা থেকে বের করে দিয়ে তালা মেরে যায়।
আয়ানের মা বাবা গ্রামের বাড়িতে চলে যায় তারপর।
লাবন্য আয়ানকে মিথ্যা অপরাধে ফাসিঁয়েছে তাতেও আয়ান একটুও কষ্ট পায়নি।
কিন্তু মা বাবার সাথে এমন আচরণ করায় মাথায় রক্ত চেপে যায় আয়ানের।
আয়ান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে লাবন্যর দম্ভ অহঙ্কার চূর্ণবিচূর্ণ করে তবেই মা বাবার কাছে ফিরবে।
কোটিপতির মেয়ে হওয়ায় দু'হাতে টাকা ওড়ানো অভ্যাস লাবন্যর।
ইদানীং প্রায়ই বান্ধবীদের নিয়ে শহরের নাম্বার ওয়ান ক্লাবে আড্ডা মারে লাবন্য।
বান্ধবীদের নিয়ে বিয়ার খাচ্ছে আর আড্ডায় মশগুল লাবণ্য।
হয়তো প্রতিসোধের নেশায় বুদ হয়ে আছে।
রাত অনেক হওয়ায় বান্ধবীরা চলে যেতে চাইলে লাবণ্য তাদের যেতে বলে ওয়েটারকে
ডেকে আরও কড়া বিয়ার দিতে বলে।
ওয়েটার আয়ানের কথা মতো বিয়ারের গ্লাসে ম*দ ঢেলে দেয় লাবন্যর গ্লাসে।
লাবণ্য ম*দ খেয়ে দিকবিদিকশুন্য হয়ে পড়তেই আয়ান লাবন্যকে তুলে নিয়ে আসে।
এর জন্যই গল্পের শুরুতে বলা হয়েছিল—
ম*দ খাইয়ে মাতাল করে লাবন্যর সাথে কয়েকবার শারীরিক মেলামেশা শেষে লাবন্যর ন*গ্ন শরীরের দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি হাসলো আয়ান।
মনে মনে ভাবছে এত অহঙ্কার এত বড়াই কোথায় গেল আজ।
লাবণ্য আবারও আয়ানকে টেনে কাছে এনে আয়ানের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়ে মাতাল হয়ে উঠলো আয়ানকে একান্তে পেতে।
নিজেকে সেচ্ছায় বারবার মেলে ধরে উজাড় করে দিচ্ছে আয়ানের কাছে।
আয়ানও সুযোগটা নিয়ে নিচ্ছে ইচ্ছে মতোই, কারণ লাবন্যর নে*শা কেটে গেলেই হয়তো অনেক বড়ো কিছু হবে। কোটিপতি বাবার একমাত্র আদরের মেয়ে বলে কথা।
যাই হোক বর্তমানে ফিরি—
লাবন্যর নেশার ঘোর এখনও কাটেনি পুরোপুরি।
আয়ান বললো— তোমার এত অহঙ্কার এত বড়াই আজ তোমার সর্বনাসের কারণ হলো লাবণ্য।
আমি তোমাকে ভালোবেসে আপন করে পেতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি তার যোগ্য নও।
আর কি আছে তোমার? একটা মেয়ের সবচেয়ে বড়ো সম্পদ তার দেহ,
আর তোমার দেহটা আমার পাওয়া হয়েই গেল।
আমার মা বাবাকে অপমান আমি কখনোই মেনে নেবোনা।
নগ্ন লাবন্য কাপড় দিয়ে নিজের শরীর ঢাকতে ঢাকতে ধীরে ধীরে
বিছানায় বসে রহস্যময় হাসি হেসে বললো...
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com