গল্পঃ পিঠার ভূত



তেলের পিঠা খেয়ে পানি পান না করেই বাড়ি থেকে একা বের হলো রালফ। হাতে মুঠোফোনে লাইট অন করে কাঁচা রাস্তা দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন তিনি। কিছুদূর পথ পাড়ি দিতেই তালগাছের নিচ থেকে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটি কালো অবয়বের আগমন ঘটে। তার সঙ্গে পা মিলিয়ে হাঁটছে।

ব্যাপারটি রালফ বুঝতে পেরেও চুপ আছে। তার গা থেকে পঁচা গন্ধ ভেসে আসতে লাগলো। নাকে ঠিক মালুম করলেও মুখে কিছু বলল না রালফ। সে তার নানি বাড়ির গন্তব্যে এগিয়ে যাচ্ছে। আচমকা ভাঙা মোটা কণ্ঠে অবয়বটি শুধালো,

'কিরে তেলের পিঠা খেয়ে পানি খাসনি কেন?'
রালফ স্বাভাবিক হয়ে বিরক্তি কণ্ঠে জবাব দিলো,
'তাতে তোর কি?'
'এখন যে আমি তোকে ধরমু। আমি পিঠার_ভূত! '
'তো ধর!' বলে ডানে হাতে মুঠোফোনটি নিয়ে বাঁ হাত তার দিকে এগিয়ে দিলো।
পিঠার ভূতটি কিছুটা অবাক হলো। বিস্ময়তা কাটিয়ে বললেন,
'তোর ওপর ভর করমু।'
'কাঁধেচাপা যাবে না। প্রচুর ব্য*থা। বউ মেরে বেহাল করে দিয়েছে।'
'আমি তোর ভেতরের কথা বলছি মানুষের বাচ্চা।' রাগ নিয়ে খেঁকিয়ে বলল।
'আসিস না! কেলিয়ে নাজেহাল অবস্থা করে দিবে আমার বউ।'
'তুই তোর বউরে এত ভয় পাস?'
'তারে দেখলে শশাঙ্কের কাইল্লা ভূতও ভয়তে পালাবে।'
'দেখতে সুন্দরী না?'

'ডাইনির চেয়েও ভ*য়ংক*র!'
'কস কি।'
'সত্য বলছি।'
সে ভাবছে। রালফ বলল,
'কি ভাবতাছিস?'
'তোরে ধরমু কি-না।'
'ভাই ভালো কথা হোন, তোরে একটা ভালো বুদ্ধি দেই। আমার বউয়ের হাতে মরতে না চাইলে আগের রাস্তায় গিয়ে বামে মোচড় দে।'
'ক্যা?'
'সেই পথে আরো লোক পাবি।'
'তুই তেলের পিঠা খা*ই*ছ*স।'
'তাতে হইয়ে কোন বালডা, সর তো।' ঝাড়ি দিয়ে বলল।
'তোরে ধরমু।'
'তুই এক কাজ কর। আমার লগে চল হাতিম ডাক্তারের কাছে নিয়া যাই তোরে।'
'ক্যা?'
'তুই তো একটা বয়রা। তোর কানের চিকিৎসা করা লাগব তাই।'
'কি কইলি?' উঁচু কণ্ঠে বললেন।
'এতক্ষণ কি কইছি শুনস নাই পাডা ভূতের বাচ্চা।'
'গালি দিলি ক্যা।'
'কেন তুই তো মানুষের বাচ্চা না, ভূতের বাচ্চাই।'
'তোরে ধরমুই!'
'ওরে ভূতের*পু*ত! তোরে আজ পিডাইয়া ধরা রোগ সারামু। বউয়ের রাগ তোর ওপর উঠামু।' উত্তেজিত হয়ে বলেই লাইটের সাহায্যে লাঠি খুঁজছে রালফ।
ভূতটি ভীতিকর চোখে মুখে বলল,
'খারা, খারা ধরমু না। যাইতাছি গা আমি।'

<>সমাপ্ত<>
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url