সুখের খনি / কাঞ্চনকন্যা
সুখের খনি
মনের উদ্ভট ইচ্ছে গুলো দিচ্ছে যে হাতছানি,
হয়ত যে তা হচ্ছে ভালোই এটাও আমি মানি,
এসব কিছু তারাতে যে ভাই লাগবে সুখের খনি।
সুখের খনির সন্ধানে তাই বের হলাম একদিন,
সুখের খনি খুঁজে পেলে মেটাব সকল ঋণ,
এদিক খুঁজি ওদিক খুঁজি অক্লান্ত বিরামহীন,
বাস্তবতার মুখে পরে সবই হলো বিলীন।
এদিক খুঁজি ওদিক খুঁজি খোঁজার অন্ত নাই,
যেদিকে তাকাই দুঃখ ছারা কিছুই না দেখতে পাই,
যে যার মত সুখের খোঁজে ছুটছে যে সবাই,
অন্যের দুঃখ দেখার সময় কারো কাছেই নাই।
ভালো খারাপ না বুঝেই করছে, টাকা আহরণ,
টাকাই নাকি সব সুখ দেয়, প্রফুল্ল করে মন,
ভালোভাবে থাকতে গেলে টাকার, খুবই প্রয়োজন,
এসব ভেবে আমিও করলাম তাদের, পথে পদার্পণ।
টাকার পিছন ছুটছি তখন অক্লান্ত বিরামহীন,
টাকাই বোধহয় এনে দেবে, আমার সেই সুখের দিন,
কোনো কিছু না ভেবেই ভাই, ছুটছি টাকার পেছন,
ভালো খারাপের বোধ যেন, হারিয়ে ফেলেছি কখন।
এত কিছু করেও কোথায়, পেলাম সুখের খনি,
দুঃখ আমার জিবন সঙ্গি, দুঃখ চোখের মনি,
কেউ নাই যাকে দুঃখের কথা, বলি একটুখানি,
মানুষের মন হয়ে গেছে যেন, আস্ত বিষের খনি।
নির্জন নিরালায় একাকীত্বের মাঝে বসে,
ফেলে আসা দিন গুলোর কথা আজও মনে ভাসে,
শূন্য হাতে দীপ্ত পায়ে কাটতো যে দিন, মহা আনন্দে হেঁসে,
খুশিটাকে হয়তো বারিয়ে দিতো, ছোট্ট দুঃখের দলগুলো এসে।
সেই দুঃখই আমার কাছে ছিলো অনেক ভালো,
এই আঁধারে তারাই এখন জোনাকির আলো,
নদী ছেড়ে আসতে গিয়ে পরেছি সমুদ্র জলে,
হাবুডুবু খেতে খেতে জীবনটা যাচ্ছে চলে।
কোথায় ফেলে আসলাম সেই দুঃখ_সুখের দিন,
কোথায় পরে রইলো আমার প্রকৃতি মায়ের ঋন,
চারপাশে শুধু দুঃখ হাহাকার, এখন দেখি সারাক্ষণ,
হায়রে বাস্তবতা তুই এতই কঠিন, নষ্ট করিস মন।
মানুষের যত খারাপ স্বভাব, দুঃখ কষ্ট যত অভাব,
ভালোবাসার বড্ড অভাব, মিষ্টি কথাতে মনের কুভাব,
পরেছে মনে বিরূপ প্রভাব, বদলে গেছে আমার স্বভাব,
তাইতো একদিন ছেরে দেই সব, কাটাতে মনের বিষের প্রভাব।
সব ছেরে,এলাম ফিরে,প্রকৃতি মায়ের কোলে,
তোকে ছেরে আর যাবো না মাগো, অন্য কোথাও চলে,
মনের উদ্ভট চিন্তা এসে, এখনো অনেক কিছুই বলে,
যে সুখের খনি পেয়েছি আমি, সেটা ছারা, আমার কি আর চলে।
কাঞ্চনকন্যা
দার্জিলিঙ থেকে মিরিকের পথে
পড়ন্ত গোধূলির রক্তিম আভা মেখে -
কাঞ্চনকন্যা !
ধূসর সন্ধ্যার কালো চাদরে মুড়ে
নিঃস্ব অসহায় মুখে
কৃত্তিম হাসি মেখে
দাঁড়িয়ে ছিল সে।
গহীন রহস্যময়ী ইশারা
অপ্রতিরোধ্য তার আবাহন !
একটু কাছাকাছি এসে
একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে তাকাতেই ,
ড্রাইভার বলে ওঠে -
"নষ্ট মেয়েছেলে,
যাবেন না বাবু ওদিকে "।
আমি বললাম "আরে না না
এক পাহাড় অন্ধকার বুক চেরা
অবাধ্য সূর্যের আত্মা জ্যোতি, দেখছি আমি ! "
ক্যামেরা হাতে একটু এগোতেই
সেই মেয়ে বলে ওঠে -
"চলুন না বাবু
এই কাছেই আমাদের পার্লার
ফুল বডি সার্ভিস করি আমি "।
আমি বললাম " আরে না না
এক পাহাড় অন্ধকার ঢাকা
অবাধ্য সূর্যের অমোঘ জ্যোতি -
দেখছি আমি ! "
অসহায় সুন্দরের ছটা
নিস্পলক চোখে একটু চেয়ে থাকতেই
সে বলে ওঠে -"চলুন না বাবু
করোনায় স্বামী নেই , চারটে পেট -
বাধ্য হয়েই নেমেছি আমি। "
আমি মৃদু হেসে হাতে গুঁজে দিলাম
মিরিকের তিনদিন , সিকারা
লেক সাইড হোটেলের বিল -
ডিনার - লাঞ্চ - পুরোটাই।
বললাম - "শুরু করে দাও
ছোটোখাটো ব্যবসা একটা ",
দেখি - ওর দুচোখের কোণে
পাহাড়িয়া মেঘ ,
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে -
কখন সূর্যও ভিজে গেছে !
হঠাৎ দখিনা বাতাসের ঝটকায়
মেঘের ওড়না সড়িয়ে
উঁকি মারে চাঁদ ,
কাঞ্চনজঙ্ঘার কোল জুড়ে
আজ আবার পূর্ণিমা ,
জ্যোৎস্নার জোয়ার !
অন্তহীন অনাবিল সোনালী আলোর স্রোতে - জলকেলী ------ !
কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রানোচ্ছল শৃঙ্গগুলি !
দার্জিলিঙ হয়ে মিরিকে থাকা
হলো না সেবার।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com