করবেরর আজাবের ধরণ
পর্দার আড়ালের জগতে মানুষের দেহের শারীরিক অংশ এবং আধ্যাত্মিক অংশ
পৃথক জায়গায় অবস্থান করে। যেমন- ঘুমের সময় মানুষের দেহ থেকে নফস
পৃথক হয়ে অবস্থান করে। পর্দার আড়ালের জগতে মু'মিনদের নফস ও রূহগুলি
ইল্লিইন নামক জায়গায় অবস্থান করে এবং কাফিরদের নফস ও রহুগুলি সিজ্জিন
নামক জায়গায় অবস্থান করে। মু'মিন কাফির উভয়ের দেহগুলি পৃথিবীর সীমানার
মধ্যে মাটি, পানি, আগুন ও বাতাসের মধ্যে বিলীন হয়ে অবস্থান করে।
কাজেই পর্দার আড়ালের জগতে কারো উপর যদি শান্তি অবধারিত হয় তাহলে তিনটি
সংযোগের মাধ্যমে সে শাস্তি ভোগ করবে যথা জাহান্নাম, আধ্যাত্মিক, দেহ ও
শারীরিক দেহ। জাহান্নাম থেকে আধ্যাত্মিক অংশের সাথে সংযোগ হবে,
আধ্যত্মিক অংশ থেকে শারীরিক অংশে সংযোগ আসবে। যেমন- পৃথিবীর কোন
এক প্রান্তে একটি রেডিও ষ্টেশন বা টিভি ষ্টেশন আছে। পৃথিবীর যে কোন স্থানে
বসে তিনটি সংযোগের মাধ্যমে তা উপভোগ করা যায়, যথা- ষ্টেশনের সাথে
রেডিও টিভির সংযোগ, রেডিও টিভির সাথে শ্রোতা ও দর্শকের সংযোগ। মোট
কথা তিনটি সংযোগ, ষ্টেশন, টিভি, দর্শক।
উক্ত তিনটি সংযোগের মাধ্যমে একজন মানুষ পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্তের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে
সক্ষম হয়। তেমনি জাহান্নাম দেহের আধ্যাত্মিক অংশ, শারীরিক অংশ, মোট তিনটি অংশের সংযোগের
মাধ্যমে মানুষেরা কবর আজাব উপলব্ধি করবে। বিষয়টি স্বপ্নের মত।
নফসগুলি দেহ থেকে ঘুমের ঘোরে পৃথক হয়ে গিয়ে দুর থেকে দেহকে যা সরবরাহ দেয়,
তার নাম হচ্ছে স্বপ্ন। আবার পর্দার আড়ালের জগতে দেহের আধ্যাত্মিক অংশ,
দেহের শারীরিক অংশকে দূর থেকে যা সরবরাহ করে তার নাম কবর আজাব।
কবর আজাবের অনুভূতি স্বপ্নের মত।
সূরা ইয়াসিনের ৫২ আয়াতে বলা হয়েছে-
হায় দুর্ভোগ! আমাদেরকে আমাদের নিদ্রা হতে কে জাগাল?
বিচারের মাঠে মানুষ উপস্থিত হয়ে এভাবে উক্তি করবে। পর্দার আড়ালের
জগতটা তাদের কাছে তখন নিদ্রারজগত বলে মনে হবে। পর্দার আড়ালের
জগতে কোন মানুষের ব্যাপারে যদি শান্তির ফয়সালা হয় তাহলেও সে তিনটি
সংযোগের মাধ্যমে পর্দার আড়ালের জগতে শান্তি অনুভব করবে। যথা- জান্নাত,
দেহের আধ্যাত্মিক অংশ, দেহের শারীরিক অংশ, তিনটি সংযোগ ঠিকই থাকবে।
তবে কবর আজাবের জন্য সংযোগ সৃষ্টি হবে জাহান্নামের সাথে এবং কবরের
শান্তির জন্য সংযোগটা হবে জান্নাতের সাথে।