মুখোশের আড়ালে। পর্ব - ০৭
আফিয়া অন্যদিকে চলে যেতে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়তেই যাবে, তখনি কেউ তাকে ধরে নেই।
ছেলেটি আফিয়ার যাওয়ার দিকে তাকাতেই তাকাতেই(বিরবির করে বলে, কি এটিটিউট একটা ধন্যবাদ ও দিলো না)এই বলে পিছন ঘুরতেই নিচে কিছু পড়ার আওয়াজ পেয়ে নিচে তাকিয়ে দেখে একটা কানের দুল, ছেলেটি হাঁটু গেড়ে বসে কানের দুল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে, একটা মুচকি হাসি দিয়ে সে ও সিঁড়ি বেয়ে আফিয়ার খোঁজে চলে যায়।
কর্নিয়া একটা ওয়েটারের থেকে জুস নেওয়ার সময় সামনে সিঁড়ির দিকে চোখ পড়তেই দেখে রাফিন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে, কর্নিয়া আরেকটু সামনে তাকিয়ে দেখে রাফিনের থেকে কিছুটা দূরে একটা মেয়ে কোথাও যাচ্ছে।
কর্নিয়া জুসটা হাতে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে রাফিনে উদ্দেশ্য চলে যায়।
আফিয়ার পিছন রাফিন,রাফিনের পিছন কর্নিয়া,
আফিয়া দ্রুত মোবাইল হাতে কাউকে কল দিয়ে কিছু একটা কলটা কেটে দিয়ে একটা রুমে ডুকে ওয়াশরুমে চলে যায়।
--রাফিন একটা রুমে এসে চারপাশে আফিয়াকে খোঁজতে থাকে, রাফিন সেখানে এসে বলে একটু আগে তো ও এই রুমে ছিলো এখন কোথায় গেলো? এই রুমে চারপাশে চারটি দরজা একটা,ছাঁদের দিকে যায়, একটা নিচের দিকে কিছু রুমের দিকে, অন্যটা স্টোররুমের দিকে। রাফিন চারপাশে ঘুরে সে ছাঁদের দিকে চলে যায়।
--কর্নিয়া ও সে রুম এসে আঁটকে যায়, যে রাফিন কোন দিকে গেছে, আর ওই মেয়েটা বা কোন দিকে গেছে, সে নিচের দিকে সিঁড়ি বেয়ে নেমে করিডোর দিয়ে রুম গুলো দেখছে, যে রাফিন আবার,কর্নিয়া মনে মনে বলে ( তোমার সব কিছু মেনে নিয়েছি,কিন্তু আজ যদি কোন উল্টো পাল্টা কিছু কর,তাহলে আমাদের এত বছরের ভালোবাসা, ও বন্ধত্ব সব নষ্ট করে দিবো) এসব ভাবছে আর হাঁটছে,
এমন সময় কেও কর্নিয়ার হাত ধরে টেনে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে যায়। যেখানে শুধু একটা ডিমলাইট জ্বলছে, ডিমলাইটটা একবার অন হচ্ছে আবার অপ হচ্ছে,
--কে আপনি? আমার হাত ছাড়ুন,নাহলে আপনার ভালো হবে না। এই বলে হাত ছাড়ার চেষ্টা করছে।
-লাল,লাল,লাল,লালা,লালা,লাল,লাল,লাল,লালা,লা লা,লা,লা,ছেলেটি মুখে এই টিউনটি বাজিয়ে বলে, আমি কে? এই বলে উচ্চ স্বরে হাসতে থাকে
--আরে অসভ্য, আমার হাত ছাড়ুন, নাহলে কিন্তু (কর্নিয়া)
--কি করবে তুমি?
--কর্নিয়া তার অন্য হাতে থাকা জুস গুলো ছেলেটির মুখে ছুঁড়ে মারে,আর দেয়ালের সাথে গ্লাসটি ভারি দিয়ে ভেঙ্গে এক টুকরো গ্লাসের কাঁচ হাতে নিয়ে ছেলেটির দিকে ধরে বলে আমার হাত ছাড়ুন নাহলে এই কাঁচ দিয়ে আপনার গলাটা কেঁটে দিবো(কর্নিয়া)
--এটা শুনে ছেলেটি কর্নিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে বলে,, তবে তোমাকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। এই বলে তার পকেট থেকে একটা চুরি বের করে কর্নিয়ার দিকে এগুতে থাকে, ডিমলাইটের অল্প আলোতেই কর্নিয়া ছেলেটির মুখ দেখার অনেক চেষ্টা করছে,ছেলেটি চুরি নিয়ে কর্নিয়ার দিকে এগুতে দেখে কর্নিয়া কাঁচে টুকরো হাতে নিয়ে পিছুতে পিছুতে বলে, কে আপনি? আর এসব কেনো করছেন? আমি তো আপনাকে ছিনি না, তাহলে এসব কেনো করছেন?দেখুন আমার দিকে আসবেন না। আমি কিন্তু সত্যি সত্যি এই কাঁচ দিয়ে আপনাকে আঘাত করে দিবো।
--কে মানা করছে? আমি তো মানা করি নায়, তোমার ওই সামন্য কাঁচ দিয়ে, আমাকে কত টুকু আঘাত করতে পারবে? যতটা আঘাত আমার মনে আছে, এতটা বছর আমি এই আঘাত নিয়ে বেঁচে আছি, আর নয় একে একে সবাই কে শেষ করবো, মনে আছে তোমার ফ্রেন্ডদের কথা তর্নিশা,ক্যাথিয়ার কথা?
---কিইই? তুই খুন করছিস আমার ফ্রেন্ডদের? ওরা তোর কি ক্ষতি করছে? এটা বলতে না বলতে কর্নিয়া হাতে থাকা গ্লাসের কাঁচের টুকরো দিয়ে দিয়ে হাতে আঘাত করে দেয়। তাও ছেলেটি একটা টু শব্দ করে নি। ছেলেটির হাত থেকে রক্ত পড়া শুরু করছে ছেলেটি তাও চুরি নিয়ে কর্নিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,
কর্নিয়া পিছুতে পিছুতে দেওয়ালের সাথে ঠেকে যায়, ছেলেটি কর্নিয়ার একদম কাছে এসে চুরিটা কর্নিয়ার গলার কাছে এনে বলে, তোমার জন্য আমি সব হারিয়েছি, সেদিন রিসোর্টে আমি তোমাকে মারতে গিয়েছিলাম কিন্তু সেদিন তর্নিশা আমাকে দেখে নিয়ে ফেলেছিলো তাই তর্নিশা আমার প্রথম শিকার হয়ে যায়। আর তুমি সেদিন বেঁচে গিয়েছিলে, কিন্তু আর নয়
কিন্তু আজ তোমাকে মারবো তারপর একে একে বাকিদের মারবো , সবাই দোষী কাউকে আমি ছাড়বো না।
--কর্নিয়া এটা শুনে আবারো তার হাতের গ্লাসের টুকরো দিয়ে ছেলেটির পেটে আঘাত করে দেয়। ছেলেটির পেট থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে, কিন্তু ছেলেটি একটা ও শব্দ করে নি।
--ছেলেটি চুরিটা কর্নিয়ার গলায় চেপে ধরে বলে অনেক সুযোগ দিয়েছি আর নয়, এবার মৃত্যুর জন্য তৈরি হয়ে নাও।
-- কর্নিয়ার ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে, গলায় চুরি চেপে ধরায় গলা থেকে রক্ত বের হতে শুরু করছে।
কর্নিয়া চোখ দিয়ে টপটপ টপটপ পানি পড়তে আছে, পানির ফোঁটা ছেলেটির হাতে গিয়ে পরতেই, ছেলেটি চুরিটা গলা থেকে একটু সরিয়ে বলে, না, তোমাকে এত সহজ মৃত্যু আমি দিবো না। এত সহজে তোমাকে মরতে ও দিবো না। যতটা কষ্ট আমি পেয়েছি তার থেকে দ্বিগুণ কষ্ট দিয়ে তোমাকে মারবো। তৈরি হয়ে সামনের দিন গুলোর জন্য, এই বলে ছেলেটি অন্ধকার রুম দিয়ে কোথাও মিলিয়ে যায়।
কর্নিয়া গলায় হাত দিয়ে দেখে অনেক রক্ত পড়ছে। তাই সে দ্রুত তার ওড়নাটা গলায় পেঁচিয়ে, সে রুম থেকে বের হয়ে নিচে নেমে দ্রুত সে বাসা থেকে বের হয়ে একা গাড়ি ড্রাইভ করে বাসায় চলে আসে।
রুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গলা থেকে ওড়নাটা খোলে দেখে রক্ত এখনো বন্ধ হয় নায়।
কর্নিয়া দ্রএত ফাস্টএইড বক্স নিয়ে গলার কাটা জায়গায় ওয়াশ করে ব্যান্ডেজ করে নিয়ে ওড়না দিয়ে আবার পেঁচিয়ে নিয়ে, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিচ্ছবির সাথে কথা বলছে,কে সে? যে আমাকে আর আমার সব বন্ধুদের মারতে চাই?
এই বলে কর্নিয়া রুমে পায়চারি করতে থাকে।
অন্যদিকে পার্টি শেষ হতেই সবাই বাসায় চলে আসে।
কামরুল, অর্নিয়া কর্নিয়াকে কোথাও না দেখে তার মোবাইলে কল দেয়। কিন্তু কর্নিয়া কল দরছে না।
---আমার মনে হয় কর্নিয়া চলে গেছে(অর্নিয়া)
দুজনে বাহিরে এসে দেখে তাদের একটা গাড়ি নেই, তাই তারা সিউর হয়ে যায়।
তাই দুজনে বাসার উদ্দেশ্য চলে আসে।
বাসায় এসে কামরুল সোফায় মাথায় হাত দিয়ে বসে, আজকের পার্টির সব কিছু ভাবতে থাকে। আর মনে মনে বলে তাহলে আইমান কি সেই, কিন্তু ও তো আগুনে পুড়ে মারা গেছে, তাহলে?
আর চোখ বন্ধ করতেই পুরানো সব স্মৃতি ভেসে উঠতেই দ্রুত চোখ খোলে নেই। আর ঘনঘন নিশ্বাস নিতে থাকে।
সে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে।
কর্নিয়ার কিছুতেই ঘুম আসছে না। গলায় খুব ব্যাথা করছে তাই বিছানায় হেলান দিয়ে সুয়ে আছে।
আর চোখ বন্ধ করে ওই ছেলেটির সব কথা মনে করতে থাকে।
ঘুমানোর অনেক চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না।
তাই বিছানা থেকে উঠে রাফিনের কাছে কল দেয়। কিন্তু রাফিন কল তুলছে না দেখে বারবার কল দিতেই থাকে।
কর্নিয়ার টেনশন হতে শুরু করে আবার রাফিনের কিছু হয় যায় নি।
সারারাত আর ঘুমাইনি,
সকাল হতেই
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com