বাইশের বন্যা । ডাকাতের রাত । পর্ব - ০৬ । লিখা- তাসরিফ খান



হ্যাঁ, আমরা সিদ্ধান্ত নিছি দিরাইয়ের দিকে যাবো ।
সাব্বিরের সাথে কথা শেষ করে মেজর আহসাব স্যারকে দুইশত পঞ্চাশ বস্তা ত্রাণ বুঝিয়ে দিয়ে আমরা দিরাইয়ের দিকে রওনা হলাম । এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে দিরাই রাস্তার মোড়ে আরেকটি অস্থায়ী ক্যাম্পে থামি। কারণ এখান থেকে ট্রলার দিয়ে দিরাইয়ে পৌঁছাতে হবে । এছাড়া আর কোনো উপায় নেই । কিন্তু ট্রাক থেকে নেমে বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরেও কোনো ট্রলার পেলাম না। 

আরো পড়ুনঃ
ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট সাকিব। আমরা তাঁকে অনুরোধ করি, তিনি যেন আমাদের একটা নৌকার ব্যবস্থা করে দেন। তিনি আমাদের অপেক্ষা করতে বলে তাঁর অধীনস্থ কয়েকজন সৈনিককে নৌকার ব্যবস্থা করতে বললেন । আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর শুনলাম, একটা বড়ো ট্রলারের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু ট্রাক থেকে আমরা ত্রাণ নামাতে পারছি না, কারণ ট্রাকের আশেপাশে অনেক মানুষ ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা লেফটেন্যান্ট সাকিবের কাছে জানতে চাইলাম,
স্যার, এখানকার কী অবস্থা? মানুষ কি ত্রাণ পাচ্ছে?
কিছু সরকারি ত্রাণ এসেছে তবে আরো অনেক ত্রাণ প্রয়োজন । দিরাইয়ের কোনো আপডেট আছে আপনার কাছে?

না ঐদিকে এখনো যাওয়া হয়নি।
আমরা কি তাহলে এখানে পঞ্চাশ বস্তা ত্রাণ দিয়ে যাবো?
দিয়ে যেতে পারলে খুব ভালো হয়।
ঠিক আছে, আমরা পঞ্চাশ বস্তা দিয়ে যাচ্ছি। যদি সম্ভব হয় তবে আপনারা একটু হেল্প করুন প্লিজ।
সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসিমুখে পঞ্চাশ বস্তা এখানে রেখে বাকি সাতশো বস্তা ত্রাণ কাঁধে করে নিয়ে ট্রলারে পৌঁছে দেন ।

আমরা রওনা হই দিরাইয়ের উদ্দেশ্যে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার পথ পারি দিতে হবে আমাদের। যাওয়ার আগে লেফটেন্যান্ট সাকিব আমাদের অনুরোধ করেন, আমরা যেন সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসার চেষ্টা করি ।
ছয়দিন পর সূর্যের দেখা পেয়েছি। প্রখর রোদ। কোনোভাবেই আজ বৃষ্টিতে ভিজতে চাচ্ছিলাম না কারণ গতরাত থেকেই আমার শরীরটা বেশ খারাপ লাগছে। বুঝতে পারছি ভেতরে ভেতরে হয়তো কিছুটা জ্বর এসেছে। কিন্তু কাউকে বিষয়টা বলতে চাচ্ছি না কারণ ওরা অযথা টেনশন করবে।

চলবে...
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url