Breaking News

পরী যখন বউ । পর্ব - ০১


রাত এগারোটা বাজে, বাসায় গিয়ে খাবার খাবো এখনো তা নসিব হয় নি,আর ভালোলাগে না এই দুনিয়ায় কোলাহল, তার মধ্যে সৎমার পেঁচাল একদম সহ্য হয় না,দিনভর কাজ করে রোজগার করি তাও উনার হয় না,আরো টাকা চাই উনার,মনে হয় আমি টাকার মেশিন,
হেটে হেটে বাসায় যাচ্ছি, কোন গাড়ি নাই যে গাড়ি করে বাসায় যাবো,
আর গাড়ি করে বাসায় গেলে মা দেখলেও শুরু করবে যে লাট সাহেব পায়ে চলাচল করে আসতে পারে না গাড়ি লাগে উনার...!
উহ সারাদিন কাজ করে পা আর চলছে না,পায়ের গোড়ালি গুলো মনে হয় এখনি খুলে পড়ে যাবে,নাহ আর সম্ভব না হেটে যাওয়া একটু বসে জিড়িয়ে নেই তারপর না হয় আবার বাসায় যাওয়া যাবে,রাস্তার ধারে একটা জায়গায় বসে আছি পাশে ধান খেত, তারপর পাশে আবার পুরো জঙ্গল,ভয় ও করছে কিন্তু ভয় করলেও কিছু করার নেই পা যে আর চলছে না, হটাৎ মনে হলো পাশে কেউ একজন বসে আছে আমার,পাশে ফিরে দেখলাম নাহ কেউ তো নেই,

হটাৎ কাধে কারো মাথা রাখার উপস্থিতি টের পেলাম,
এবার তো ঘাবড়ে গেলাম,কে কে কিন্তু কাউকেই তো দেখছি না,
নাহ এখানে আর থাকা যাবে না, তাড়াতাড়ি উঠে চলে যেতে
নিলাম,কিন্তু কেউ একজন পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে মনে হচ্ছে,
এবার ভয় পেয়ে গেলাম,ভয়ের চোটে কপাল বেয়ে ঘাম ঝরে পড়ছে,
কিন্তু কাউকেই দেখতে পাচ্ছি না,প্লিজ কে আপনি সামনে আসুন আমার খুব ভয় করছে,

অদৃশ্য থেকে একটা আওয়াজ আসলো,ভয় পাওয়ার কিছুই নেই,
আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না,আর আমি তোমার সামনে আসলে তুমি সহ্য করতে পারবে না,আমার রুপ দেখলে তোমার চোখের জুতি নষ্ট হয়ে যাবে,
এবার ভয়ের মাত্রাটা যেন আরো বেড়ে গেলো,
কে আপনি....?
আর আপনি সামনে আসলে কেন সহ্য করতে পারবো না..?
অদৃশ্য থেকে আবার আওয়াজ আসলো কারন আমি পরী....!
পরী কথাটা শুনার পর তো মনে হয় এবার সত্যি আমার পেন্ট নষ্ট হয়ে যাবে,চুপ করে আছি ভয়ে,
অদৃশ্য থেকে আওয়াজ আসলো,এই কথা বলছো না কেন...?
কি বলবো বুঝতে পারতেছি না,কি বলবো আমি...?

অদৃশ্য থেকে আওয়াজ আসলো চলো আমরা ঐদিক টাতে গিয়ে বসি,ঘাসের উপরে,
আচ্ছা,ভয়ে ভয়ে বললাম, কারন কথা না শুনলে আমার ঘাড় মটকাবে,
আমি,আচ্ছা কোথায় আপনি...?
আমি এসে বসেছি তো ঘাসে..?
পাশে থেকে আওয়াজ আসলো এই তো আমি পাশে,
আমি,আচ্ছা একটা কথা বলি...?
পাশে থেকে আওয়াজ আসলো হা বলো,

আমি,দেখুন আপনি সামনে না আসলে আমি কথা বলবো কি ভাবে,আপনি প্লিজ আমার সামনে আসুন...!
আচ্ছা আসবো তবে তার আগে বলো,তোমার কেমন মেয়ে পছন্দ, মানে তোমার স্বপ্নের রানী টা কেমন হবে,
আমি,আমার পছন্দ সাদাসিধা একটা মেয়ে, যে সাদা একটা সিম্পল ড্রেস পড়বে,যাকে এক দেখায় আমি ভালোবেসে ফেলবো,ওর রুপে পাগল হয়ে যাবো আমি...!
আচ্ছা ওয়েট

হটাৎ দেখলাম সাদা একটা আলোক রশ্মি জ্বলতে জ্বলতে উপরের দিক থেকে নামছে,আলোক রশ্মিটা হটাৎ বড় হয়ে গেলো, আলোক রশ্মিটা বড় হওয়ার পর এত আলোকিত হয়ে গেলো যে জায়গাটা আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না,

হটাৎ সব কিছু আবার আগের নায় ক্লিয়ার হয়ে গেলো,সব স্বাভাবিক হয়ে গেলো,পাশে ফিরতেই দেখলাম সাদা ড্রেস পড়া একটা মেয়ে আমার পাশে বসে আছে,মেয়েটার দিকে নজর পড়তেই আমার দুনিয়ায় দাড়ি পালটে গেলো, এত সুন্দর মেয়ে এই জমিনের বুকে এর আগে কখনো আমি দেখি নাই,মনে হচ্ছে জান্নাতের কোন হুর ভুল করে জমিনে নেমে এসেছে
আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,
এই এই কি দেখ আমার লজ্জা করে তো, এমন করে তাকিয়ে থেকো না,
মেয়েটার কথায় আমার ধেয়ান আসলো,
কিন্তু আমার সব কিছু যেন উলট পালট হয়ে গেলো,মাথায় কিছুই কাজ করছে না,আপনার নাম কি? আপনার বাসা কোথায়..?
আপনি কি করেন...?আপনার বাসায় কে কে আছে,এক গাদা প্রশ্নে ছুড়ে মারলাম,

মেয়েটা এই এই স্টপ স্টপ আস্তে আস্তে একটা একটা করে জিজ্ঞেসা করো, না হয় এক সাথে এত গুলোর উত্তর আমি কি ভাবে দিবো,
আমি
মেয়েটা, আমার নাম মাবশূরাতুন নূর
তবে সবাই আমাকে মাবশূরাহ বলে ডাকে,
আর আমার বাসা হচ্ছে পরী-পালকে.আর আমার বাসায় আমার বাবা-আর মা আছে,
আমি,আপনি পরী হলে জমিনে কি করছেন....?
এখন আর তেমন ভয় করছে না,
মেয়েটা,আমি জমিনে আমার অর্ধাঙ্গিনী খুজতে এসেছি,
কারন আমার ছোটকাল থেকে একটাই ইচ্ছে আমি মানুষকে বিয়ে করবো,আর আমার বাবার সিংহাসনের অধিকারী বানাবো,
আমি মানে বুঝলাম না,

মেয়েটা,মানে মাবশূরাহ আমার বাবা পরী-পালকের রাজা,
আমার বাবা চায়,আমার বাবার পরে আমার বাবার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী আমাকে বানাবে,কিন্তু পরী-পালকের কিছু অসৎপরী এটা চায়না, তারা চায় উত্তরাধিকার কোন পুরুষকে দেওয়া হোক,
কেননা আমার বাবার কোন ছেলে সন্তান নাই,তাই তারা বুদ্ধি করে উত্তরাধিকারী হাতিয়ে নিতে চায়,
আমি,ওহহহ
মাবশূরাহ,আজকে আমার সময় হয়ে এসেছে আমি উঠি,
কালকে আবার কথা হবে...?

আমি,এত সময় ধরে বেশ ভালোই লাগছিলো মেয়েটার সাথে কথা বলতে, যেই না বললো মেয়েটা চলে যাবে তখন মনটা খারাপ হয়ে গেলো,আচ্ছা এরপর কি আমাদের আর কখনো কথা হবে...?
মাবশূরাগ,হা হবে কালকে আমি আবার একই সময়ে এই খানে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো,তুমি এসো কেমন...?

আমি আচ্ছা,
মাবশূরাহ,আর মাত্র তিন মিনিট সময় আছে, আমার যেতে হবে তুমি তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করো,
আমি,চোখ কেন বন্ধ করবো...?
মাবশূরাহ,আরে করতে বলেছি করো না,আর আমি বলার আগ পর্যন্ত চোখ খুলবে না,
আমি,আচ্ছা চোখ বন্ধ করতেই হটাৎ মনে হলো ঠোঁট জোড়া কেউ নিজের দখলে করে নিয়েছে,কারো ঠোঁটের উষ্ণতা অনুভব করলাম,
আমারো কেন যেন ভালো লাগছে,
মাবশূরাহ, এই চোখ খুলবে না কিন্তু,

আমি,আচ্ছা
মাবশূরাহ,একটু পর আমাকে ছেড়ে দিলো,আর বললো আমি আমার রুপ পরিবর্তন করছি চোখ খুললে কিন্তু তোমার ক্ষতি হবে,
আমি,চোখ বন্ধ করে আছি একটু পর মেয়েটা বললো এবার চোখ খুলো,তারপর আমি চোখ খুললাম তারপর মাবশূরাহ কে আর দেখতে পাচ্ছি না,মেয়েটা গেলো কোথায়...?
অনেক ডাকাডাকি করলাম নাহ কেউ নাই,তারপর মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে দেখলাম কয়টা বাজে,ঘড়ির টাইম দেখে মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো রাত দুইটা বাজে,আজকে বাসায় গেলে মা আমাকে মেরেই ফেলবে, তাড়াতাড়ি করে উঠে ঘরের দিকে হাটা দিলাম,কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে ঠোঁট জোড়া মিষ্টি হয়ে আছে,
মনে হয় মিষ্টির গোডাউনে ধুকে কয়েকশত কেজি মিষ্টি খেয়েছি,

বাসায় প্রায় পৌঁছে গিয়েছি আর একটু পথ বাকি,
(ওহ আচ্ছা আমার পরিচয় দিতে তো ভুলেই গেছি,
আমার নাম আকাশ,পড়ালেখা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পরে আর পড়া হয়নি,কারন মা মারা যায়,পরে বাবাও আরো একটা বিয়ে করে নেয়,তিনি চায়না আমি আর পড়ালেখা করি,সো অফ করে দিয়েছি,
আর একটা ছোট খাটো দোকানে কাজ করি,এই পরিচয় টা খালি গল্পের ক্ষেত্রে)

এবার গল্পে আসি,
বাসায় পৌছাঁতেই মাকে ডাক দিলাম,
মা, এসে দরজা খুলে দিলো,সাথে আরো এক গাদা কথা শুনিয়ে দিলো,লাট সাহেবের ছেলে এত রাত অব্দি কোথায় ছিলি,
তোর কি ঘর বাড়ি নাই নাকি,রাতের বেলায় ঘুমটা নষ্ট করে তোর জন্য দরজা খুলতে হচ্ছে,কাল থেকে এমন হলে ঘরে জায়গা পাবি না,
আকাশ,কি আর করা কথা শুনা তো আমার নসিবে সব সময় লিখা আছে,
মাথা নিচু করে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম,কিন্তু একটা জিনিস লক্ষ করলাম গায়ে পড়নের শার্টাটা যখন খুললাম,তখন একটা ঘ্রান আসলো নাকে, মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাবো,ঘ্রানটা আমাকে একদম পাগল করে দিচ্ছে,তারপর খেয়ে শুয়ে পড়লাম,

শুয়ে শুয়ে ভাবছি একটু আগের ঘটনা,
মেয়েটাকে এক দিনেই মনে ধরে গেছে আমার, আচ্ছা মাবশূরাহ কি কালকে আমার জন্য ঐ জায়গায় অপেক্ষা করবে,
কিছুতেই ভুলতে পারছি না,মাবশূরাহ কে...!
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম,
অন্যদিকে মাবশূরাহ ওর পরী-পালকে যায়,
মাবশূরাহ এর বাবা কিরে বলির পাঠা পেলি...?
মাবশূরাহ, হা বাবা বলির পাঠা পেয়ে গেছি...

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com