জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৫৩
তারপর থানা থেকে কয়েকজন পুলিশ নিয়ে আদিত্যকে ধরতে,আদিত্যর বাড়িতে চলে এলেন...
এ রকম কিছু একটা হবে,সেটা আদিত্য আগে থেকেই আন্দাজ করতে পেরে ছিলো,,,
তাই আদিত্য কয়েকজন উকিল ডেকে ড্রয়িং রুমে তাদের সাথে শলা-পরামর্শ করছিলো...
মিসেস মেহরাব আর পুলিশের লোকজনকে দেখে,,,
আদিত্য তাই বলে উঠলো-আরে আসুন আসুন,,,
বসুন আপনারা...
মিসেস মেহরাব-আমরা এখানে বসতে আসিনি...
আদিত্য-ওহ,তাহলে আপনারা এখানে কেনো এসেছেন আন্টি...???
মিসেস মেহরাব-অফিসার...???
আমরা এখানে কেনো এসেছি,সেটা ওকে ভালো করে বুঝিয়ে দিন...
পুলিশ অফিসার-মিষ্টার আদিত্য
মিস জয়ার থেকে কমপক্ষে ৫০ ফিট দূরে থাকার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়ে ছিলো,আপনার উপরে,,,
কিন্তু সেই রেস্ট্রিকশন অর্ডার ভাঙার অভিযোগে,,,
আমরা আপনাকে এরেষ্ট করতে এসেছি...
আদিত্য-উকিল সাহেব...???
আপনিও একটু পুলিশ অফিসারকে বুঝিয়ে দিন...
উকিল-জি স্যার...
উকিল তারপর পুলিশ অফিসারকে বুঝিয়ে বললো-শুনুন পুলিশ অফিসার...???
রেস্ট্রিকশন অর্ডার অনুযায়ী,,,
মিস জয়ার কাছ থেকে,মিষ্টার আদিত্যর কমপক্ষে ৫০ ফিট দূরে থাকার কথা ছিলো ঠিকই,,,
কিন্তু মিষ্টার আদিত্য আর জয়া বাসে যখন ছিলেন,,,
তারা দুজনেই তখন চলমান অবস্থায়, গাড়িতে বা বাসে কাছাকাছি ছিলেন,,,
কিন্তু চলমান অবস্থায় রেস্ট্রিকশন অর্ডার বহাল কি না,সেটা নিষেধাজ্ঞায় উল্লেখ নেই,,,
তাই মিষ্টার আদিত্যকে আপনারা এই অপরাধে এরেষ্ট করতে পারেন না...
পুলিশ অফিসার-ইয়ে মানে,মিসেস মেহরাব
উকিল সাহেব হয়তো কথাটা ঠিকই বলেছেন...
মিসেস মেহরাব,আদিত্যকে বললেন-উকিলের মারপেঁচে আজ হয়তো তুই বেঁচে গেলি,,,
কিন্তু এরপর আমি এমন ব্যবস্থাই করবো,,,
যাতে তুই আর কোনোদিনও জয়ার ধারেকাছে ঘেঁষতে না পারিস...
জবাবে আদিত্য বললো-আরে আন্টি...???
আমাকে এই সব ভয় দেখিয়ে আর কোনো লাভ নেই,,,
এসব আইনি মারপেঁচ কষেই আমি না আজকের এই আদিত্য খাঁন হতে পেরেছি,,,
কিন্তু আমি আর আগের সেই আদিত্য নেই...
আমি যদি আগের সেই আদিত্যই থাকতাম,,,
তাহলে কবেই আপনাদের এমন কেইসে ফাঁসাতাম যে,,,
সারাজীবন লেগে যেতো সেই কেইস থেকে আপনাদের বের হতে...
কিন্তু আমি তা করছি না কেনো জানেন
কারন,এখন আমি বদলে গিয়ে নতুন আদিত্য 2.0 হয়ে গেছি,,,
তাই আপনাদের কিছুই বলছি না...
মিসেস মেহরাব-তুই যদি বুনো ওল হয়ে থাকিস,,,
তাহলে আমিও বাঘাতেতুল...!!!
আমিও দেখবো তুই কি কি আর করতে পারিস...
মিসেস মেহরাব,পুলিশের লোকজনকে নিয়ে চলে গেলেন,,,
উকিলরাও চলে গেলো...
আদিত্য নিজের রুমে এসে জয়াকে ফোন করলো,,,
জয়া ফোন রিসিভ করে বললো-আবার কেনো ফোন করেছো তুমি...???
আদিত্য-তোমার সাথে কিছু কথা আছে আমার...
জয়া-কিন্তু আমার,তোমার সাথে আর কোনো কথা নেই,,,
আমার যা বলার তা আমি বাসেই বলে দিয়েছি...
আদিত্য-তুমি কিভাবে আমার সাথে এইভাবে কথা বলতে পারছো...???
মানছি,আমার ভুল হয়ে ছিলো,,,
তার জন্য তো আমি ক্ষমাও চেয়েছি,,,
তারপরও তুমি কেনো এমন করছো...???
জয়া-আমারও এটাই মনে হয়ে ছিলো যে,,,
তুমি হয়তো ভুল করছো
তাই আমি এতকিছুর পরও,,,
আমার পরিবারের সবার অমতে গিয়ে,,,
তোমার বাড়িতে বেহায়ার মতো গিয়ে উঠে ছিলাম...
তোমাকে শোধরানোর জন্য আমি অনেক বার চেষ্টাও করে ছিলাম,,,
কিন্তু তুমি বারবার এটাই আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছো যে,,,
তোমার সাথে আমার ঠিক মিলবে না...
আদিত্য-জয়া প্লিজ...???
তোমার বড় মামি বাড়িতে পুলিশ নিয়ে এসে ছিলো,,,
তোমার থেকে দূরে থাকার হুমকি দিয়ে গেলো,,,
এখন আবার তুমিও এসব বলছো...???
জয়া-দেখো
তুমি অনেক বার আমার প্রাণ বাঁচিয়েছো,,,
তার জন্য আমি তোমার কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ,,,
তাই আমি চাই না,আমার জন্য তুমি কোনো ঝামেলায় পরো,,,
আর এজন্যই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি,,,
তোমার থেকে আমি দূরে থাকবো,,,
এতে আমাদের দুজনেরই ভালো হবে...
আদিত্য-তুমি কেনো আমার সাথে এমন করছো...???
আমি তো বলছি যে,আমি আর আগের মত নেই,,,
আমি এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছি...
জয়া-তুমি আমার সাথে যা করেছো,,,
তারপর আমি তোমাকে আর ক্ষমা করতে পারবো না...
এটা বলে জয়া ফোনটা কেটে দিলো,,,
আদিত্য ভাবতে লাগলো কি করা যায়...
পরেরদিন,,,
সকাল বেলা হঠাৎ করে জয়ার বাড়ির সামনে হইহুল্লোড় শুনতে পেয়ে,,,
জয়া আর তার পরিবার বাইরে এসে দেখলো...
প্রেস-মিডিয়ার অনেক লোকজন নিয়ে আদিত্য এসেছে,,,
মিষ্টার সোরাব আদিত্যকে দেখামাত্রই বলে উঠলেন-দেখো,,,
আবারও নতুন তামাশা করতে হাজির হয়ে গেছে...
আদিত্য প্রেস-মিডিয়ার লোকজনদের মাইকের সামনে এসে বলতে শুরু করলো-আজ আমি আপনাদের সবাইকে এখানে ডেকেছি একটা কারনে,,,
আমি চাই যে সেটা মিস জয়া আর তার পুরো পরিবারও শুনুক...
আমার রেস্টুরেন্ট "হোটেল প্যারাডাইসের" আজ এত সুনাম,এত পাবলিসিটি,,,
এর পেছনে রয়েছে জয়া আর তার পরিবারের অবদান,,,
আমার রেস্টুরেন্টের যত রেসিপি আছে,,,
সেগুলো আমার নয়,,,
এই সব রেসিপি আসলে,জয়ার স্বর্গীয় মা "মিসেস জাহানারার"
এ কথা গুলো শুনে জয়া আর তার পরিবার চমকে উঠলো...
প্রেস-মিডিয়ার লোক-মিষ্টার আদিত্য...???
তাহলে কি আপনি মিস জয়া আর তার পরিবারের কাছ থেকে,এই রেসিপি গুলো কিনে নিয়েছেন...???
আদিত্য-জি না,,,
আমি বিয়ে করার স্বপ্ন দেখিয়ে,,,
মিস জয়ার কাছ থেকে তার মায়ের রেসিপি বইটা চুরি করে নিয়ে ছিলাম...
আর আমি পরে বুঝতে পারি যে,,,
এটা আমি একটা অনেক বড় ভুল করেছি,,,
সেই ভুলটা শোধরানোর জন্যই,,,
আর মিস জয়ার স্বর্গীয় মাকে সম্মানিত করার জন্য,,,
আজ থেকে এই মহল্লার,এই রাস্তাটির নাম হবে "জাহানারা রোড"
এই নামেই সবার কাছে পরিচিতি পাবে...
আমি যোগাযোগ মন্ত্রীর কাছ থেকে এই ব্যাপারে অনুমোদন নিয়ে নিয়েছি,,,
আর তাই আমি আজ এই রাস্তাটার নাম "জাহানারা রোড" এই নামে শুভ উদ্ভোদন করছি...
আদিত্য,রাস্তার উদ্ভোদন মোড়ক উন্মোচন করলো,,,
প্রেস-মিডিয়ার লোকজন হাত তালি দিলো...
এই সবকিছু দেখে আনন্দে জয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড়িয়ে এলো,,,
কিন্তু মিসেস মেহরাব জয়ার হাত ধরে টেনে,,,
বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলেন...
জয়ার পুরো পরিবারও বাড়ির ভেতরে চলে এলো,,,
মিসেস মেহরাব-আমি তোমাদের সবাইকে একটা কথা বলতে চাই...???
মিষ্টার সোরাব-কি কথা ভাবি...???
আর তাই আমি আজ এই রাস্তাটার নাম "জাহানারা রোড" এই নামে শুভ উদ্ভোদন করছি...
আদিত্য,রাস্তার উদ্ভোদন মোড়ক উন্মোচন করলো,,,
প্রেস-মিডিয়ার লোকজন হাত তালি দিলো...
এই সবকিছু দেখে আনন্দে জয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড়িয়ে এলো,,,
কিন্তু মিসেস মেহরাব জয়ার হাত ধরে টেনে,,,
বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলেন...
জয়ার পুরো পরিবারও বাড়ির ভেতরে চলে এলো,,,
মিসেস মেহরাব-আমি তোমাদের সবাইকে একটা কথা বলতে চাই...???
মিষ্টার সোরাব-কি কথা ভাবি...???
মিসেস মেহরাব-আমি মনির আর ওর মায়ের সাথে কথা বলেছি,,,
ওনাদের আমি অনেক কষ্টে এ বিয়েতে রাজি করিয়েছি,,,
ওনারা আজ সন্ধ্যায় আসছেন জয়াকে আংটি পরাতে,,,
আর তিনদিন পরই বিয়ে...
জয়া চমকে উঠে বললো-বড় মামি,,,
তুমি যদি চাও,,,
তাহলে আমি আর কোনদিনও ওই আদিত্যর সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখবো না,,,
তবুও তুমি আমাকে এ বিয়েটা করতে বলো না প্লিজ...!!!
মিসেস মেহরাব-বিয়ে করবি না তো কি করবি তুই...???
সারাজীবন ঘরে বসে থাকবি নাকি...???
ওই আদিত্য বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে গেছে বলে কি,,,
তুই আর জীবনে বিয়েই করবি না...???
জয়া-বড় মামি প্লিজ..
আমি ওই আদিত্য বা অন্য কাউকেই এখন বিয়ে করতে চাই না আর...
মিসেস মেহরাব-দেখ জয়া,,,
জীবনটা কাটাতে হলে একজন জীবনসঙ্গী দরকার হয়,,,
এভাবে একা একা সারাজীবন থাকা যায় না...
জয়া-বড় মামি...???
আমার কথাটা একটু বোঝার চেষ্টা করো প্লিজ,,,
আমি এখন বিয়েটা করতে চাচ্ছি না...
মিসেস মেহরাব-জয়া...???
তুই কি আমাকে তোর মায়ের মত ভাবিস...???
নাকি শুধু বড় মামি হিসাবেই ভাবিস...???
যদি তুই আমাকে তোর মায়ের মতই ভেবে থাকিস,,,
তাহলে আমার উপর ভরসা রাখ,,,
আমি যা করছি তা তোর ভালোর জন্যই করছি...
জয়া-কিন্তু বড় মামি...???
মিসেস মেহরাব-আর কোনো কিন্তু নয়...
মিষ্টার সোরাব-ভাবি...???
মনির তো এই বিয়েটা করবে না বলে জানিয়ে দিয়ে ছিলো...???
মিসেস মেহরাব-হে মানা করে দিয়ে ছিলো কারন,,,
আদিত্য ওকে বিয়ে না করার জন্য ভয় দেখিয়ে ছিলো,,,
বেচারা হয়তো ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলো,,,
তাই এ বিয়েটা করতে চায়নি,,,
কিন্তু এখন আমি ওকে বোঝানোর পর,ও রাজি হয়েছে...
মিষ্টার সোরাব-ভাবি.
আরও একটা সমস্যা কিন্তু আছে,,,
ওই আদিত্য তো জয়ার পিছুই ছাড়ছে না,,,
ও যদি কিছু করে বসে তখন...???
মিসেস মেহরাব-মনির আর ওর মায়ের সাথে আমার কথা হয়েছে,,,
বিয়ের পর জয়াকে নিয়ে মনির চিটাগাং চলে যাবে,,,
ওই আদিত্য আর কিছুই করতে পারবে না তখন...
খুশি-কিন্তু চাচি মা...???
মিসেস মেহরাব-এ নিয়ে আমি আর কারো কোনো কথাই শুনতে চাই না,,,
আমি যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি,,,
সেটা যদি কেউ এ বাড়িতে না মানে,,,
তাহলে আমি ব্যগপত্র নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো ব্যস...
জয়া-বড় মামি
এসব কি বলছো তুমি
ঠিকাছে আমি রাজি...
মিসেস মেহরাব-সুতরাং আজই ওরা আসবে আর জয়াকে আংটি পরাবে,,,
আর এটাই ফাইনাল...
অনিচ্ছা সত্যেও সবাইকে এটা মেনে নিতে হলো,,,
বিকেল বেলা...
মিসেস মেহরাব,জয়ার ঘরে এসে বললেন-কি রে জয়া...???
তুই এখনও তৈরি হোসনি...???
খুশি...???
নীলা
যা তোরা জয়াকে সাজানোর ব্যবস্থা কর...
অনিচ্ছা সত্যেও জয়াকে তৈরি হতে হলো,,,
আয়নার সামনে জয়াকে খুশি আর নীলা সাজিয়ে দিচ্ছে...
জয়ার মুখে কোনো কথাই নেই,,,
জয়ার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে...
মিসেস মেহরাব জয়ার ঘরে এসে বললেন-কি রে তোদের হলো...???
একটু পরেই তো মনির ওর বাবা-মাকে নিয়ে চলে আসবে...
খুশি-চাচি মা
একটা কথা না বলে পারছি না,,,
এভাবে জোর করে দিদির বিয়েটা দিলে,,,
দিদি হয়তো মুখে কিছু বলবে না ঠিকই,,,
কিন্তু ভেতরে ভেতরে দিদি শেষ হয়ে যাবে...
মিসেস মেহরাব-চুপ কর তোরা,,,
এত কথা না বলে চুপচাপ জয়াকে তারাতারি তৈরি করে নিয়ে আয়...
মিসেস মেহরাব চলে গেলেন,,,
খুশি আর নীলা মিলে জয়াকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করলো...
কিন্তু জয়া বললো-বড় মামি যা বলবেন,সেটাই করতে হবে,,,
আমার কোনো কিছু করার নেই...
কোনো উপায় না দেখে,,,
খুশি আড়ালে গিয়ে চুপিচুপি আদিত্যকে ফোন করলো,,,
আদিত্য ফোন রিসিভ করে বললো-হ্যালো...???
খুশি-দুলাভাই...???
আদিত্য-কি হয়েছে...???
খুশি-ওই মনির আর ওর মা,,,
একটু পরেই আসছে দিদিকে আংটি পরাতে...
আদিত্য-What...???
খুশি-হে,,,
আর তিন দিন পরেই বিয়ে করে দিদিকে চিটাগাং নিয়ে চলে যাবে,,,
আপনি তারাতারি কিছু একটা করুন প্লিজ...
আদিত্য-Ok,Ok,,,
আমি দেখছি কি করা যায়...
সন্ধ্যার পর,,,
মনির তার মা-বাবাকে নিয়ে জয়ার বাড়িতে চলে এলো...
মিসেস মেহরাব-বসুন...বসুন...
ড্রয়িং রুমে তাদের চা-নাস্তা খেতে দেওয়া হলো,,,
জয়ার পরিবারের লোকজন মনির আর তার মা-বাবার সাথে কথা-বার্তা বলতে লাগলো,,,
একটু পরে খুশি আর নীলা,ড্রয়িং রুমে জয়াকে নিয়ে এলো...
মনিরের মা,জয়াকে দেখে বললেন-বসো মা,,,
আমার কাছে এসে বসো...
জয়া বসামাত্রই আদিত্য এসে পরলো,,,
মিষ্টার সোরাব-তুই এখানে কেনো এসেছিস আবার...???
রেস্ট্রিকশন অর্ডারের কথা ভুলে গেছিস নাকি...???
আদিত্য-আপনারা আমার বউয়ের আবারও বিয়ে দিচ্ছেন,,,
আর আমি আসবো না..
মিসেস মেহরাব-এক্ষুনি থানায় ফোন করে পুলিশকে এখানে আসতে বলো...
মিষ্টার সোরাব-হে হে,আমি এক্ষুনি থানায় ফোন করছি,,,
আদিত্য...???
আজ দেখবো তুই পুলিশের হাত থেকে কিভাবে বাঁচিস...
জয়া উঠে আদিত্যকে বললো-আর কোনো তামাশা করো না এখানে,,,
প্লিজ তুমি এখান থেকে চলে যাও...
আদিত্য-আরেহ তুমি দাঁড়িয়ে পরলে কেনো...???
বসো বসো...
আমি এখানে কোনো তামাশা করতে আসিনি,,,
আমি তো এখানে এসেছি ইন্টারভিউ নিতে...
আদিত্য তারপর মনিরের কাছে গিয়ে বললো-কি খবর মনির...???
তোমার সাথে তো আমার সামনাসামনি কথা হয়নি সেদিন,,,
তাই আজ সরাসরি তোমার সাথে কথা বলতে চলে এলাম...
আদিত্য ফোনে মনিরকে কি কি হুমকি দিয়ে ছিলো,,,
তা মনিরের মনে পরতেই,,,
মনির ঘাবড়ে গেলো...
মিসেস মেহরাব-আদিত্য...???
কোনো ঝামেলা না করে,,,
এখান থেকে চুপচাপ চলে যাও বলছি...
আদিত্য-আরেহ আন্টি
আপনি আমার বউয়ের সেকেন্ড বিয়ে করাতে চাইছেন,,,
আর আমি এখান থেকে চুপচাপ চলে যাবো...???
তাই কি কখনো হয় বলুন...???
আদিত্য তারপর মনিরের কাছে গিয়ে বললো-মনির...???
তুমি যে আমার বউকে আবারও বিয়ে করতে এসেছো,,,
তুমি কি জানো,জয়ার সারারাত ঘুম হয়না...???
তুমি কি পারবে পুরো রাত জেগে কাটাতে...???
মনির-এসব আপনি কি বলছেন...???
আদিত্য-তোমার ইন্টারভিউ নিচ্ছি আমি,,,
মনির...
তুমি কি জানো,জয়া সব থেকে বেশি তার ফ্যামিলিকে ভালোবাসে,,,
তাই তুমি কি দুদিন পর পর,,,
জয়াকে তার পরিবারের সাথে দেখা করার জন্য আসতে দেবে...???
জয়া কিন্তু আমার বাড়ি থেকে প্রায়ই এ বাড়িতে চলে আসতো...
জয়া উঠে বললো-প্লিজ,তুমি এখান থেকে চলে যাও এখন...
আদিত্য-যাবো,,,
কিন্তু তার আগে আমি আজ এখানে সবাইকে দেখিয়ে দিয়ে যাবো যে,,,
তোমার আর আমার রিলেশন কতটা গভীর,,,
এটা বলেই আদিত্য জয়ার হাত ধরে টেনে কাছে এনে,,,
সবার সামনে আদিত্য জয়াকে লিপ কিস করলো...
এই দৃশ্য দেখে,লজ্জায় জয়ার পুরো পরিবারের মাথা হেট হয়ে গেলো,,,
জয়া ঠাস করে সবার সামনে আদিত্যর গালে একটা থাপ্পড় মারলো,,,
মিষ্টার সোরাব,পুলিশের লোকজন আসছে দেখে বললেন-ওই তো পুলিশ এসে পরেছে...
মিসেস মেহরাব-অফিসার..
এই দেখুন,রেস্ট্রিকশন অর্ডার ভেঙে,,,
আদিত্য কিভাবে আমাদের বাড়িতে এসে ঝামেলা শুরু করেছে...
এক্ষুনি আপনি এই বেয়াদবটাকে থানায় ধরে নিয়ে যান,,,
আর দেখবেন,এর যেনো কিছুতেই জামিন না হয়...
পুলিশ অফিসার-মিষ্টার আদিত্য...???
আজ তো আপনি চলমান অবস্থায় গাড়িতেও নেই,,,
আর রেস্ট্রিকশন অর্ডার অনুযায়ী মিস জয়ার থেকে ৫০ ফিট দূরেও নেই,,,
সুতরাং,আজ আমরা আপনাকে এরেষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছি...
আদিত্য-জয়া...???
প্লিজ তুমি এদের বলে দাও যে,,,
আমরা দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসি...
জয়া চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো..
কয়েকজন পুলিশ এসে আদিত্যর হাত ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য,টানাটানি করতে লাগলো...
আদিত্য চিৎকার করে বললো-মনে রেখো জয়া...???
আমার মত তোমাকে কেউ কোনোদিন এতটা ভালোবাসতে পারবে না...
আজ এখানে যা হলো,,,
এরপর আমার নামের সাথে তোমার নামটা আরও জুড়ে গেলো,,,
আমাকে ছাড়া তুমি আর অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারো না জয়া...
পুলিশের লোকজন আদিত্যকে জোর করে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো,,,
এই ঘটনা দেখে মনিরের মা বললেন-ছিঃ মিসেস মেহরাব...!!!
আপনার আগেই আমাদের বলা উচিৎ ছিলো যে,,,
আপনার মেয়ের জন্য এমন একজন পাগল পেমিক আছে,,,
আমাদের ডেকে এনে এসব দেখানোর আগে আপনার দশবার ভাবা উচিৎ ছিলো,,,
ছিঃ...ছিঃ...ছি...
চলে আয় মনির,,,
এখানে আর এক মুহূর্তও না...
মনিরের বাবা-মা,মনিরকে নিয়ে চলে গেলো,,,
জয়া লজ্জায় মাথা নীচু করে নিজের ঘরে দৌড়ে চলে গেলো...
এদিকে খবর পেয়ে,,,
মিসেস খাঁন,রাজনকে নিয়ে তারাতারি থানায় চলে এলেন...
পুলিশকে মিসেস খাঁন বললেন-অফিসার...???
প্লিজ,আমার ছেলেকে ছেড়ে দিন...
পুলিশ অফিসার-Sorry মিসেস খাঁন,,,
রেস্ট্রিকশন অর্ডার ভাঙার কারনে,,,
আমরা মিষ্টার আদিত্যকে কিছুতেই ছাড়তে পারবো না আর...
মিসেস খাঁন,পুলিশ অফিসারকে অনেক অনুরোধ করতে লাগলো,,,
এই ফাঁকে রাজন লকাপের বাইরে থেকে,,,
আদিত্যর কাছে গিয়ে বললো-ভাই...???
আপনি ঠিক আছেন তো...???
আদিত্য-রাজন...???
ভাই আমার,,,
যেভাবেই হোক আমাকে এখান থেকে তারাতারি বের কর ভাই,,,
উকিলদের খবর দে তারাতারি...
রাজন-ভাই...???
আমরা উকিলের সাথে কথা বলেই মাত্র এলাম,,,
উকিল সাহেব বলেছেন,,,
জামিন হতে দু-চার দিন সময় লাগবে...
আদিত্য-দু-চার দিন নয়,,,
যেভাবেই হোক,আজকের মধ্যেই আমাকে এখান থেকে বের কর,,,
সেটা আইনিভাবে হোক বা বে-আইনি যেভাবেই হোক,,,
কিছু একটা প্লান করে আমাকে আজকেই জেল থেকে ছাড়িয়ে নে...
রাজন-ভাই...???
আমার কাছে একটা উপায় আছে,,,
কানে-কানে বলছি শুনুন...
রাজন তারপর আদিত্যর কানে-কানে প্লানটা বললো,,,
আদিত্য শুনে বললো-যা করার তারাতারি কর...
রাজন বাইরে গিয়ে কি যেনো একটা নিয়ে এলো,,,
তারপর আদিত্যকে সেটা চুপিচুপি খাইয়ে দিলো...
আদিত্যর পেট মোঁচড়ানো শুরু হয়ে গেলো,,,
আদিত্য রাজনকে বললো-তুই আমাকে এসব কি খাওয়ালি...???
আমার পেট এত মোঁচড়াচ্ছে কেনো...???
রাজন-ভাই এটা তো পেট মোঁচড়ানোরই জিনিস,,,
একটু কষ্ট করুন ভাই,সব ঠিক হয়ে যাবে...
রাজন তারপর পুলিশকে ডেকে বললো-অফিসার...???
দেখুন ভাইজান কেমন যেনো অসুস্থ হয়ে পরেছে,,,
ওনাকে তারাতারি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে...
পুলিশ আর মিসেস খাঁন দৌড়ে এসে দেখলো,,,
সত্যি সত্যি আদিত্য অসুস্থ হয়ে পরেছে,,,
পুলিশ অফিসার-হাবিলদার...???
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছো কি...???
লকাপটা খুলে দাও...
হাবিলদার তারাতারি করে লকাপের তালা খুলে দিতেই,,,
মিসেস খাঁন বললেন-বাবুই তোর কি হয়েছে...???
এমন করছিস কেনো...???
আদিত্য লকাপ থেকে বের হয়ে বললো-টয়লেট কোথায়...???
আদিত্য তারপর টয়লেটের দিকে ছুটে চলে গেলো,,,
আদিত্য একটু পর পর টয়লেটে যাচ্ছে,,, আবার টয়লেট থেকে বেরুচ্ছে...
রাজনের দেয়া ওটা খেয়ে আদিত্যর ডায়রিয়া হয়ে গেছে,,,
মিসেস খাঁন এসব দেখে বললেন-আমার ছেলেটার কি হলো...???
রাজন,মিসেস খাঁনকে ইশারা করলো,,,
তারপর রাজন পুলিশ অফিসারকে বললো-অফিসার...???
ভাইজানের এই অবস্থায় থানায় থাকাটা ঠিক হবে না,,,
আমরা বরং ভাইজানকে হসপিটালে নিয়ে যাই...???
পুলিশ অফিসার দেখলো,সত্যিই আদিত্যকে এ অবস্থায় থানায় আর আটকে রাখা যাবে না...
তাই পুলিশ অফিসার বললো-হে...হে...
নিয়ে যান ওনাকে...
রাজন আর মিসেস খাঁন,আদিত্যকে নিয়ে গাড়ি করে বাড়িতে ফিরে এলো,,,
বাড়িতে এসেও আদিত্য বারবার টয়লেটে যাচ্ছে আর আসছে...
এ অবস্থা দেখে রাজন হেসে কুটিকুটি হয়ে বললো-ভাই...???
হসপিটালেই মনে হচ্ছে যেতে হবে আপনাকে...
আদিত্য রেগে গিয়ে রাজনকে মারতে শুরু করলো,,,
মিসেস খাঁন এসে আদিত্যকে থামিয়ে বললেন-তোরা কি শুরু করেছিস...???
রাজন-দেখুন চাচি মা,,,
আমি কত বুদ্ধি করে,,,
কত কষ্ট করে ভাইকে থানা থেকে বের করে আনলাম,,,
আর ভাই আমাকে বিনিময়ে মারতে আসছে...
আদিত্য-মারবো নাতো কি তোকে আদর করবো...???
তুই আমাকে কি সব খাইয়েছিস,,,
এই নিয়ে আমি ১৬ বার টয়লেটে গেলাম,,,
উফফফ আবারও যেতে হবে...
আদিত্য আবারও টয়লেটে চলে গেলো,,,
মিসেস খাঁন-রাজন...???
তুই আদিত্যকে কি খাইয়েছিস...???
রাজন-জামাল গোটার ডাবল ডোজ...
মিসেস খাঁন-কিইইইহ...???
শিগগিরই ডাক্তার ডাক,,,
ডাক্তার ছাড়া এ ভালো হবার নয়...
রাজন-ঠিকাছে আমি এক্ষুনি ফোন করছি...
রাজন ডাক্তারকে ফোন করে বাড়িতে নিয়ে এলো,,,
ডাক্তার আদিত্যকে দেখে কিছু ওষুধ আর স্যালাইন খেতে দিলো...
সেগুলো খেয়ে আদিত্য কিছুটা সুস্থ হয়ে গেলো,,,
এদিকে মিসেস খাঁন,জয়াকে ডেকে বললেন-আজ আমার মান-সম্মান ওই আদিত্য সব ডুবিয়ে দিয়ে গেছে,,,
ছিঃ...ছিঃ...ছিঃ...
সবার সামনে কি অসভ্যতামিটাই না করলো...
মিসেস খুশবু-দিদি...???
এইজন্যই বলে ছিলাম যে,,,
জয়ার বিয়েটা এখন দেওয়ার চেষ্টা করো না...
দেখলে তো হিতে বিপরীত হয়ে গেলো...???
মিসেস মেহরাব-এর একটা উপযুক্ত ব্যবস্থা আমাকে নিতে হবে...
জয়া...???
তুই এখন বিয়ে করতে চাস না তাইতো...???
ঠিকাছে তোকে এখন বিয়ে করতে হবে না আর,,,
কিন্তু তার বদলে তোকে আমি যা বলবো,সেটাই শুনতে হবে...
জয়া-হে,আমি শুনবো,,,
বলো কি করতে হবে আমাকে...???
মিসেস মেহরাব-তোকে এই শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে...
জয়া চমকে উঠে বললো-কিইইইহ...???
মিসেস মেহরাব-হে,,,
তোকে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে,,,
দেখ জয়া,,,
এই শহরে আদিত্যর অনেক ক্ষমতা আছে,,,
সেই ক্ষমতা দিয়ে আদিত্য দু-একদিনের মধ্যেই জেল থেকে বেড়িয়ে যাবে,,,
আর এই শহরে থাকলে,,,
আদিত্য বারবার তোকে বিরক্ত করতেই থাকবে,,,
এই জন্যই আমি অনেক ভেবে-চিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com