নবী (ﷺ)-এর প্রতি দরুদ পাঠের যেসব উপকারিতা
“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মজিদ।”
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর শান্তি বর্ষণ করুন, যেমন আপনি ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর শান্তি বর্ষণ করেছেন। আপনি প্রশংসার যোগ্য এবং মহিমাময়। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর বংশধরদের বরকত দিন, যেমন আপনি ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের বরকত দিয়েছেন। আপনি প্রশংসার যোগ্য এবং মহিমাময়।”
দরুদ পাঠ করা একটি ইবাদত, এটি এক অপূর্ব নিয়ামত, যা মুমিনের জীবনকে আলোকিত করে। এটি আল্লাহর আদেশ পালনের পাশাপাশি অফুরন্ত রহমত ও বরকতের মাধ্যম। নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রতি দরুদ পাঠের রয়েছে অসংখ্য কল্যাণ ও সুফল, যা আমাদের পার্থিব জীবন থেকে পরকাল পর্যন্ত বিস্তৃত। নিম্নে দরুদ পাঠের ৪০টি উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
- দরুদ পাঠের মাধ্যমে সরাসরি আল্লাহর আদেশ পালন করা হয়।
- আল্লাহ নিজেও নবী (ﷺ)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করেন, যদিও মানুষের দরুদ ও আল্লাহর দরুদ প্রকৃতিগতভাবে ভিন্ন।
- ফেরেশতাদের দরুদ পাঠের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জিত হয়।
- একবার দরুদ পাঠ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে দশটি দরুদ লাভ হয়।
- এতে বান্দার মর্যাদা দশগুণ বৃদ্ধি পায়।
- প্রতিটি দরুদের মাধ্যমে দশটি নেকি লাভ হয়।
- একইসঙ্গে দশটি গু-নাহ মোচন করা হয়।
- এটি দোয়া কবুলের অন্যতম মাধ্যম।
- নবী (ﷺ)-এর সুপারিশ লাভের গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
- পা-প মোচনের এক বিশুদ্ধ পন্থা।
- দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আল্লাহর সাহায্য লাভের মাধ্যম।
- কি-য়ামতের দিন নবী (ﷺ) -এর নৈকট্য লাভের সুযোগ সৃষ্টি করে।
- আর্থিক কষ্টে থাকা ব্যক্তির জন্য এটি সদকা হিসেবে গণ্য হয়।
- প্রয়োজন পূরণের এক মহান উপায়।
- আল্লাহ ও ফেরেশতাদের প্রশংসা ও দোয়া লাভের সুবর্ণ সুযোগ।
- এটি আত্মশুদ্ধি ও হৃদয়ের পরিচ্ছন্নতার অন্যতম মাধ্যম।
- মৃ-ত্যুর পূর্বে জান্নাতের সুসংবাদ লাভের উপায়।
- কি-য়ামতের ভ-য়া'বহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির সোপান।
- ভুলে যাওয়া বিষয় সহজেই স্মরণ করার সহায়ক।
- নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং সালাম ফিরিয়ে দেন, যা এক বিরল সৌভাগ্য।
- যে পরিবেশে দরুদ পাঠ করা হয়, তা কি-য়ামতের দিন আফসোসের কারণ হবে না।
- দরিদ্রতা দূর করার এক গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
- কৃপণতা দূর করে উদারতার গুণ বৃদ্ধি করে।
- নবী (ﷺ) -এর প্রতি দরুদ পাঠ না করা ব্যক্তির জন্য এটি অভি-শা'প থেকে রক্ষার উপায়।
- জান্নাতের পথে চলার সহায়ক।
- যে মজলিসে আল্লাহ ও নবী (ﷺ) -এর স্মরণ নেই, সেখানকার দু-র্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়।
- বক্তৃতা ও ভাষণের সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতা বৃদ্ধির কারণ।
- সিরাত সেতু পার হওয়ার সময় অধিক নূর (আলো) লাভের মাধ্যম।
- অন্তরের ক-ঠোরতা দূর করে কোমলতা ও ইবাদতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে।
- আসমান ও জমিনের মাঝে প্রশংসিত হওয়ার সুযোগ লাভ।
- বরকতের অফুরন্ত ধারায় সিক্ত হওয়ার কারণ।
- আল্লাহর রহমত লাভের অন্যতম উপায়।
- নবী (ﷺ) -এর প্রতি ভালোবাসা ও ভক্তি বৃদ্ধি পায়।
- নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ভালোবাসা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম।
- অন্তরের জন্য হেদায়েত ও সজীবতার উৎস।
- নবী (ﷺ) এর দরবারে দরুদ পাঠকারীর নাম উপস্থাপিত হয়।
- সিরাত সেতু পার হওয়ার সময় দৃঢ়তা ও নিরাপত্তার কারণ।
- নবী (ﷺ) -এর হক আদায়ের অন্যতম মাধ্যম।
- এতে রয়েছে আল্লাহর জিকির ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সৌন্দর্য।
- এটি এক প্রকার দোয়া, যা আল্লাহর প্রশংসা ও নিজের প্রয়োজন পূরণের জন্য করা হয়।
দরুদ পাঠ মুমিনের হৃদয়ের প্রশান্তি, পা-পমোচনের হা-তিয়ার এবং জান্নাতের পথে চলার অন্যতম সোপান। আমাদের উচিত, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে নবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা এবং এর অফুরন্ত কল্যাণ অর্জনে সচেষ্ট হওয়া।
(সূত্র: ইমাম ইবনুল কাইয়িমের রহ. রচিত গ্রন্থ "جلاء الأفهام في فضل الصلاة و السلام على خير الأنام ﷺ" গ্রন্থের আলোকে )
অনূদিত
জোবায়ের বিন মুজিবুর রহমান
মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়
তারিখ: ২১/০৩/২০২৫ ইং