কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা


বাংলাদেশের যতগুলো উপকারী ফল জন্মে তারমধ্যে কাঁঠালের নাম সবার ওপরের দিকে রয়েছে । কাঁঠাল বাংলাদেশে জন্মানো এমন একটি ফল যাতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ, ওষুধিগুণ ও উপকারিতা । মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান যেমন থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন প্রকারের পুষ্টি উপাদান।

চলছে মধু মাস। আম, কাঁঠালে ভরপুর চারদিক। নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় এই ফল থেকে। কাঁঠাল, যা তার স্বতন্ত্র সুগন্ধ এবং বিশাল আকারের জন্য পরিচিত, একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল যা বহু শতাব্দী ধরে বহু সংস্কৃতিতে লালিত হয়ে আসছে। ভারতের রেইনফরেস্টের আদি নিবাস, কাঁঠাল কেবল সুস্বাদুই নয় বরং পুষ্টিতে ভরপুর যা অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। এই ব্লগে, আমরা কাঁঠাল খাওয়ার দশটি অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং কেন এটি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত তা অন্বেষণ করব।

কাঁঠালের সুমিষ্ট স্বাদ পুষ্টিগুণ ও উপযোগিতার ফলে এটিকে আমাদের দেশে বলা হয় জাতীয় ফল। এক কাপ কাঁঠালে ১৫৭ ক্যালোরি, ২ গ্রাম ফ্যাট, ৩ গ্রাম প্রোটিন, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৪০ গ্রাম ক্যালসিয়াম এবং আরো অনেক ইম্পরট্যান্ট মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট আছে। কাঁঠালের প্রোটিনে বেশিরভাগ অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড অন্তর্ভুক্ত। কলা, আপেল এমনকি বিদেশি ফল অ্যাভোকাডোর থেকেও অনেক বেশি পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায় এই কাঁঠালে।

কাঁঠাল খাওয়ার কয়েকটি আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • হার্টের স্বাস্থ্য বাড়ায়
  • হজমের উন্নতি ঘটায়
  • ত্বকের স্বাস্থ্য সমর্থন করে
  • হাড়ের স্বাস্থ্য প্রচার করে
  • রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
  • শক্তি প্রদান করে
  • পুষ্টিতে সমৃদ্ধ
  • পানিশূন্যতা বা মাথাব্যথা প্রতিরোধ করে

আসুন জেনে নেই কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

  • কাঁঠাল খেতে মিষ্টি। কিন্তু এই ফল খেয়ে ডায়াবিটিস বেড়ে যাওয়ার তেমন আশঙ্কা নেই। বরং শরীরে শক্তি জোগাতে এর জুড়ি মেলা ভার।

  • কাঁঠাল ফাইবার-সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে।

  • এই ফলে রয়েছে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম যা শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্টও ভাল থাকে।

  • এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন। চোখ ভাল রাখতে ভিটামিন এ যে অপরিহার্য, তা কে না জানে।

  • কাঁঠালে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকার ফলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে। বলিরেখাও কমে।

  • কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন বি৬ এবং প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি। তবে এতে কোনও রকম কোলেস্টেরল নেই।

  • কাঁঠালে আয়রন থাকে যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। রক্তাল্পতায় যাঁরা ভুগছেন তাঁদের কাঠাল খাওয়া উচিত।

  • এই ফল নিয়মিত খেলে পাইলস এবং কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা কমে।

  • উচ্চমানের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ ফল কাঁঠাল। এতে ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই কাঁঠাল খেলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এমনকি ক্যানসার এবং টিউমারের বিরুদ্ধেও শরীরে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে।

  • কাঁঠালে ক্যালশিয়াম থাকে যা হাড় শক্ত রাখে।

কাঁঠালের ওষুধিগুণ:

কাঁঠালের রয়েছে বিভিন্ন ওষুধি গুনাগুন কাঁঠাল গাছের শিকড় বিভিন্ন রোগের নিরাময় প্রতিষেধক এবং উপশমকারী।

এজমা: কাঁঠালের শেকড় হাঁপানি নিরাময় করতে সাহায্য করে। যাদের হাঁপানি সমস্যা রয়েছে তারা কাঁঠালের শেকড় সিদ্ধ করে তার পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করলে তা তাদের রোগ এর প্রকোম কমাতে সহায়তা করে।

কাঁঠালের শেকড় চর্ম রোগের সমস্যার সমাধান ও খুবই কার্যকরী ।

এছাড়া জ্বর এবং ডায়রিয়া নিরাময় ও কাঁঠালের শেকড় খুব ভালো উপকার করে।

কাঁঠালের অপকারিতা:

কাঁঠালের এত এত উপকারিতার মাঝেও তা খেতে কিছু জিনিশ মাথায় রাখতে হবে। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণ আমিষ থাকায় কাঁঠাল একটি গুরুপাক ফল। মানে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি হজম হতে সময় বেশি নেয়। অধিক পরিমাণে কাঠাল খেলে তা বদহজম হতে পারে। এছাড়া ডায়েবেটিক আক্রান্ত রোগীদের কাঁঠাল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিৎ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url