পড়ুন এক টাকার মেশিনের গল্প।

যিনি আত্মহত্যার আগে লিখে গেলেন নিজের
জীবনের কাহিনী।
শেয়ার অবশ্যই অবশ্যই করবেন?.
যাদের সন্তান বা স্বামী বিদেশে থাকেন
তারা অবশ্যই দেখবেন কত কষ্টকরে
আপনাদের জন্য।.
ছবিতে ঝুলে থাকা লোকটা কে দেখছেন,উনি ছিলো আপনাদের সোনার বাংলার রেমিটেন্স যোদ্ধা, একটি পরিবারেরটাকার মেশিন।
কাতার প্রবাসী হিসাবে প্রবাসীদের সহযোদ্ধা, জীবন যুদ্ধেহার মেনেই ফাঁসিতে ঝুলে আছেন।.
মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান কেএকটু
ভাল ভাবে রাখার জন্য, ফ্যামিলিমানুষ
গুলোর একটু সুখের জন্য সবমায়া ত্যাগ
করে প্রবাসে আসছিল।জানিনা এবার
কার সুখের আসায়দুনিয়ার মায়া ও ত্যাগ
করে পৃথিবীথেকে চলে গেছেন।
বাড়ি ছিলো রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জে।
উনার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি, মানুষ টা
অনেক সহজ-সরল টাইপের ছিলেন,
সবসময়ই সোজা সাপ্টা কথা বলতে
পছন্দ করতেন। নিজের মনের কথাটা
ঠিকমতো প্রকাশ করতেও পারতেন না,
সিগারেট কিংবা কোন বাজে অভ্যাসও
ছিলোনা।নয় মাস আগেই ছুটিতে দেশে
গিয়ে বিয়ে করে এসেছিলেন। বাড়িতে মা-বাবা,ছোট ভাই-বোন, স্ত্রী নিয়ে ই উনার
যৌথ ফ্যামিলি ছিলো।.উনার রুমমেটদের
মাধ্যমে জানা গেছে,কিছুদিন থেকেই নাকি
উনি বেশ উদাস আর মন খারাপ করে থাকত। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করত না, রাতে সবাই ঘুমাইত ওনি বেডে শুয়ে কেঁদে বালিশ ভিজাইতো।.সুইসাইড করার কারণ টা আর শেষইচ্ছে টা মরার আগে চিরকুটে লিখেগেছিলেন.. “মাস দুয়েক আগে উনার
ভিসা নিয়ে একটু প্রবলেম হয়েছিল,দুইমাস
ধরে বাড়িতে কোন টাকাপাঠাতে পারেনি। সেলারীর সব টাকাই ভিসার ঝামেলা মিটাইতে শেষ হয়ে গেছিলো।.ফ্যামিলির সবাই ভাবছিল, ওনি টাকা টাবৌয়ের পারসোনাল একাউন্টে পাঠাচ্ছে,বাড়িতে ফোন দিলে সবাই উনার সাথেউল্টাপাল্টা কথা বলত, কল কেঁটে
ফোনবন্ধ করে রাখত। শেষ পনেরদিন মা
উনার সাথে কথা বলেনি। বৌ ভাবছে টাকা
বাজে পথে খরচ করতেছে, বৌও এসবনিয়ে ঝগড়া করে বাপের বাড়ি চলে গেছিলো।
উনার সমস্যা টা কাউকে বুঝাতে পারেনি,
কিংবা কষ্ট টা কেউ বুঝেনি, ঘরের বৌ
এমন কি গর্ভধারিনী মা ও না।ফ্যামিলির
কাছ থেকে পাওয়া আঘাত টাসহ্য করতে না পেরেই পৃথিবীর মায়াওত্যাগ করে নিজ রুমে ফাঁসি দিয়েছেন।.চিরকুটে লেখা শেষ ইচ্ছে টা ছিলো,“লাশ টা যাতে দেশে না পাঠানো হয়,এখানেই দাফন কাফনের ব্যবস্থাকরা হয়।”…শেষ ইচ্ছে টা হয়ত পূরণ করাসম্ভব হবেনা
কারণ কোম্পানি থেকে লাশ টা দেশে
পাঠিয়ে দিবে। তবে কি পরিমাণ আঘাত
আর কতোটুকু কষ্ট পাইলে একটামানুষ
মরার আগে এরকম আবদার করতে পারে ???.ভাই সিরিয়াসলি একটা কথা বলি, প্রবাসীরা ভোগ- বিলাসিতা কিংবা নিজেদের সুখের জন্য বিদেশ আসেনি, ফ্যামিলির কথা চিন্তাকরেই এসেছে।.দেশে যারা আছে তারা
মনে করে প্রবাসীরা অনেক সুখে আছি, টাকার পাহাড়ে কিংবাটাকার গাছ নিয়ে বসে আছে,
ছিঁড়ে ছিঁড়েশুধু টাকা পাঠাবো। কিন্তু
আমরাতো বুঝিমাস শেষে টাকা পাঠানোর
জন্যে কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয়।
আপনার ভাই, ছেলে,স্বামী, বাবার
প্রবাস লাইফের একদিনের কষ্ট যদি কখনো দেখতেন, সাথে সাথেবলতেন বাড়িতে চলে আসতে প্রয়োজনেনা খেয়ে থাকব তবুও
প্রবাসে থাকতে হবেনা।.প্রবাসীদের কষ্ট
বুঝতে বেশি কিছু করতে হবেনা,
“ভোররাত চার টায়ঘুম থেকে উঠে 45° সেলসিয়াস তাপমাত্রারসারাদিন রৌদে পুঁড়ে 15/16 ঘন্টা ডিউটি করে রাত নয় টায় রুমে গিয়েকিচেনে গরম পাতিলের ছ্যাঁকা খেয়ে রান্নাকরার কষ্ট টা একটু আন্দাজ করুন।
অবশ্যই, দেশে থেকে আপনারা কি করে
বুঝবেন/ দেখবেন আর বলবেন।
আপনারা তো প্রবাসীদের রক্তশুষে
ভালোই মৌজে আছেন। আমরা যারাই
প্রবাসে আছি,আমরা তো দুনিয়ার সবচেয়ে
বড় মিথ্যাবাদী,হাজারো কষ্ট বুকে নিয়েও বলি অনেকভাল আছি। কোন দিন বুঝতে দেইনি আপনারসুখের জন্য আমাদের জীবনের
মূল্যবান দিন গুলোকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছি।.দেশের মানুষ গুলোর কাছে একটাই অনুরোধ,বিদেশে আপনার ফ্যামিলির যেই
থাকুক বাবা,ভাই, স্বামী, বন্ধু, অন্যকোন
সম্পর্কের আত্মীয় হোক তাদের সাথে একটু ভালব্যবহার করেন, তাদেরকে একটু ফোনে
সময় দেন, একটু ভালো ভাবে কথা বলুন।
তারা আপনাদের কাছে এরচেয়ে বেশি কিছু আশাও করেনা।কোন রকম মেন্টালি
পেইন দিবেন না, কাছের মানুষের ছোট
একটা কথাও ধনুকের তীরের মতো বুকে বিঁধে। সেসব ব্যথায় মেন্টালি সার্পোট কিংবা সান্ত্বনা দেওয়ার মতো এখানে ওনাদের কেউ নাই, সবরকম পেইন একাই নিতে হয়।
.প্রবাসী ভাই-বন্ধু, দেশ থেকে যে যাইবলুক না কেন, মনে কিছু নিবেন না।সামর্থ্য যতটুকু
আছে ফ্যামিলির জন্য ততটুকুই করবেন।
কোন রকম আঘাতে ভেঙ্গে পড়বেন না।
আর কোন রেমিটেন্স যোদ্ধা / সহযোদ্ধা কে এভাবে আমরা হারাতে চাই না।.সত্যিকারের কাহিনীটা পড়ার পর আপনার অনুভুতি
কেমন তা কমেন্টে জানানোর অনুরোধ করছি..

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url