গল্পঃ অবহেলা | ২য় অংশ | লেখকঃ এস.এ

পরদিন সকালে ফজরের আজানের ডাকে আমার ঘুম ভেংগে গেলে আমি উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম,ফ্রেশ হয়ে এসে রিয়াকে নামাজ পড়তে ডাক দিলাম,
:-রিয়া,এই রিয়া।(আমি)
:-উমমম,,,(রিয়া)
:-নামাজ পড়তে উঠ।
:-আমি পারবো না।তুমি গিয়ে পড়ে নাও।
:-তোমাকে নামাজ পড়তে হবে।নামাজ পড়ে নাহয় আবার ঘুমাও।
:-এই তোমার সমস্যাটা কি,হুম।একটু ঘুমাতেও দিবে না,নাকি।তোমার ইচ্ছে হলে,তুুমি গিয়ে নামাজ পড়,আমারটা নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না।যত্তসব,উটকো ঝামেলা।
গরম হয়ে কথাগুলো আমাকে বলল রিয়া।আর আমিও আর কোন কথা না বলে মসজিদের দিকে রওয়ানা দিলাম।আর যেতে যেতে ভাবতেছি,আমিও তো তার মতো অফিস করি।কই আমিতো তার সাথে এইরকম ব্যবহার করি না।তাহলে আমিই কি তার জন্য আসলে ঝামেলা?
এসব ভাবতে ভাবতে আমি মসজিদে চলে এলাম।
নামাজ শেষ করে আমি একটু ঘোরাপেরা করে প্রায় সাড়ে ৮ টার সময় বাসায় পিরলাম।বাসায় এসে দেখি রিয়া এখনও ঘুমিয়ে আছে।এদিকে খুদায় আমার পেটে জ্বালা শুরু হয়ে গেল।তাই আমি রিয়াকে ডাক দিলাম,
:- এই রিয়া,রিয়া,এবারতো উঠো।উঠে নাস্তা তৈরি করে নাও।আমার না খুব খুদা লাগছে।(আমি)
:-আবার,এই তোমার সমস্যাটা কি?আমাকে একটু শান্তিতে তো ঘুমাতে দাও,তুমিতো ঠিকই ঘুমাও আর আমাকে কেন এইরকম ডিস্টার্ব কর?যত্তসব।(রিয়া আমাকে ঝাড়ি দিয়ে কথাগুলো বলে সে উঠে গেল ফ্রেশ হতে)
আমি আজকাল,কিছুই বুঝতেছিনা কেনযে রিয়া আমার সাথে এমন করে।সে তো সকলের সাথে ঠিকই ভালোমত কথা বলে,আমার সাথে যে কেন সে এইরকম করে?কিছুই বুঝতেছি না।
আপনারা অনেকে হয়তো আমাকে বলছেন,আমি কি রকম ছেলে,যে বউয়ের ঝাড়ি খায়?
আবার কেউবা বলছেন,এই মেয়েকে কেন যে আমি দুগালে দুটো করে চারটা থাপ্পড় মারতেছি না।
আপনাদের মনোভাব যেরকমই হোক না কেন,আমার মনোভাব কিন্তু তেমন নয়।
আসলে আমি মেয়েটার এসকল আচরন কে,ভালোবাসা হিসেবে ধরে নিতেছি।আমার ধারনা রিয়া কোন একসময় তার আচরন পরিবর্তন করবে।
যাইহোক,রিয়া এখন ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা তৈরি করতে গেছে।আর আমি কালকে রাতের খাবার না খাওয়ায় এখন প্রচুর খুদা লেগেছে।তাই আমি রুমে এসে কিছুক্ষনের জন্য শুয়ে রইলাম।
কখন যে আমি ঘুমিয়ে গেলাম,বলতেই পারতেছি না।যখন ঘুম ভাংলো তখন দেখি দুপুর হয়ে গেছে।এখন পর্যনত কিছু না খাওয়ায় আমি নিজেকে খুব দুর্বল অনুভব করতেছি।অথচ,রিয়া আমাকে ডেকে তুলতে পারতো।কিন্তু না সে,আমাকে ডাকলোই না।
যাইহোক আমি নামাজ পড়ে,দুপুরের খাবার খেয়ে রেস্ট নিয়ে উঠে দেখি রিয়া টিভি দেখতেছে।তাই আমি আর কিছু না বলে পার্কে চলে আসলাম।পার্কে এসে নিজে কেমন যেন একাকিত্ত্ব বোধ করতেছি।বসে বসে রিয়ার সাথে বিয়ের পরের দিনগুলোতে কাটানো সময়ের কথা ভাবতেছি। আর এখনকার রিয়া আর কিছুদিন আগের রিয়ার সাথে মিল খোজার চেষ্টা করতেছি।
এসব ভাবতে ভাবতে আমি আমার চোখে পানির অস্তিত্ব অনুভব করলাম।
এভাবে চলতেছে আমার আর রিয়ার দিনগুলো।
আজ অফিস থেকে ফেরার পরে,দেখলাম রিয়াক কেমন যেন খুশি খুশি লাগছে,তাই আমি তার এই খুশির কারণ জানতে চাইলাম,
:-রিয়া,তোমাকে আজ কেমন যেন খুশি খুশি লাগতেছে।কারণ টা কি জানতে পারি?(আমি)
:-হুমম,অবশ্যই জানতে পার।তাহলে শুনো,
আগামী কাল থেকে আমাদের অফিস কয়েকদিনের জন্য বন্ধ থাকবে।তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম,কালকে বাবার বাসায় যাবো।আসলে অনেকদিন হলো,তাদের কাছে যাইনি।তাই আরকি?(রিয়া)
:-ওহহ,সাথে কি আমিও যেতে পারবো নাকি?(আমি)
:-তুমি কি করে যাবে,তোমার তো অফিস খোলা।
:-আরে অফিস খোলা হয়েছে তো কি হয়েছে,আমি দরকার হয় কয়েকদিনের জন্য ছুটি নিয়ে নিবো।কি বলো?

(চলবে,,,,,,,)
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url